হাওড়ার মেয়েদের স্কুলে (Howrah Girls School) নেই নিরাপত্তারক্ষী। সিভিক পুলিসকে (Civic Police) নিরাপত্তারক্ষীর কাজে লাগাতে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। জেলা পুলিস সুপারকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High School)। বোর্ডের উদ্দেশে মন্তব্য, 'আপনারা স্কুলগুলোর ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাবুন। তাঁদের ভবিষ্যত আপনাদের হাতে। এই অচলায়তন ভাঙতে গেলে সময় লাগবে। কিন্তু বোর্ড, আপনারা শুরু করুন। আমি তিন সপ্তাহ পর ফল পেতে চাই।'
হাওড়া আমতা রসপুর বালিকা বিদ্যালয়ে অঙ্কের শিক্ষিকা ২০১৬ থেকে নেই। স্কুলের মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য জায়গা নেই। খেলার মাঠ থাকলেও, সেটা ব্যবহার হয় সাইকেল রাখতে। এই স্কুলে শিক্ষিকার সংখ্যা আট জন, ৫৪৮ জন ছাত্রী। পড়ুয়া-শিক্ষিকা এই অনুপাত দেখেও উদ্বিগ্ন কলকাতা হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের মন্তব্য,'শিক্ষকদের বদলি পছন্দ না হলে পরে মামলা করুন। না গেলে পরের মাস থেকে বেতন বন্ধ করে দেব।' বিচারপতি জানান, 'রাজনৈতিক চাপের কথা ভুলে যান, রাজ্যের যে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম তার অনুমোদন প্রত্যাহার করুন।' রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরকে এই পরামর্শ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর।
হাওড়ার রসপুর স্কুলের মামলার প্রেক্ষিতে দেখা গিয়েছে, একটি বিদ্যালয়ে ১৩ জন পড়ুয়ার জন্য ৫ জন শিক্ষক। অন্যদিকে অপর একটি স্কুলে প্রায় ৫৫০ জন পড়ুয়া আছে, কিন্তু বাংলার শিক্ষক নেই। ২০১৬ থেকে গণিতের শিক্ষক নেই। তারপরেই বিদ্যালয়ের অনুমোদন প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষা দফতরকে পরামর্শ দেন বিচারপতি বসু। উত্তরে শিক্ষা দফতরের আইনজীবী জানান, 'এটা করতে গেলে একটু সমস্যা আছে। স্থানীয়স্তরে সমস্যা হতে পারে, রাজনৈতিক চাপ আসতে পারে।'
নিম্নমানের মিড ডে মিলে (Mid day meal) খাবার পরিবেশন ও অপরিষ্কার স্কুল ক্যাম্পাস নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকার হাতে আক্রান্ত শিক্ষিকা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দমদমের মতিঝিল গার্লস স্কুলে (Motijheel Girls School, Dumdum)। তারই প্রতিবাদে শুক্রবার সরব ছাত্রীরা। উত্তাল স্কুল ক্যাম্পাস।
বৃহস্পতিবার স্কুলের নিম্নমানের মিড ডে মিল পরিবেশন ও স্কুল ক্যাম্পাস অপরিষ্কার নিয়ে প্রতিবাদে সরব হন স্কুলেরই বাংলা শিক্ষিকা (teacher) গার্গী মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ, স্কুলের মিড ডে মিলের খাবারে কখনও মেলে টিকটিকি তো কখনও আরশোলা। এমনকি, স্কুলের শৌচালয় ব্যবহারেও দ্বিধা বোধ করে ছাত্রীরা। তিনি প্রতিবাদ করতেই তাঁকে মারধর করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পায়েল দে। এরই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা স্কুল ক্যাম্পাস।
ছাত্রীরা আহত শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়ে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে নিম্নমানের মিড ডে মিল পরিবেশন করা হচ্ছে। এছাড়াও স্কুলের একমাত্র খেলার মাঠটি অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
অন্যদিকে আহত স্কুলশিক্ষিকার অভিযোগ, তাঁকে মারধর করা হলে থানায় অভিযোগ করতে যান তিনি। কিন্তু থানা কোনও অভিযোগ নেয়নি। পুরো বিষয়টি তিনি এখন বর্তমানে স্কুল বোর্ডের কাছে জানাবেন বলে দাবি করেছেন। এই ঘটনা নিয়ে পরিচালন কমিটির সভাপতি তিমিরবরণ পাল জানান, এটি একটা নিন্দনীয় ঘটনা। আগে কখনও দেখিনি। প্রধান শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হোক না হলে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হোক।
এই ঘটনা খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্কুল শিক্ষা দফতরকে প্রতিনিধিরা স্কুলে এসে পৌঁছয়। তারা নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠক করে। যদিও প্রধান শিক্ষিকা এই বিষয় নিয়ে সেভাবে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি। তবে এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানান, সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। কোনও শিক্ষিকাকে মারধর করা হয়নি। উল্টো তাঁকে ঘেরাও করে রাখা হয়।