দীর্ঘ অপেক্ষার পরে ভট্টাচার্য ও ছেত্রী পরিবারে এলো খুশির খবর। বাবা হলেন ফুটবলার সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri)। তার স্ত্রী সোনম, পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। স্ত্রী ও সন্তান দুজনেই সুষ্ঠ আছেন বলে খবর। খুশির আবহে প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য, দাদু হলেন বলে কথা। সকলকে অবাক করে দিয়ে ফুটবলের মাঠে অভিনব পদ্ধতিতে সোনমের (Sonam Bhattacharya chhetri) অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর দিয়েছিলেন সুনীল। সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি ভাইরাল হয়েছিল।
তবে সম্প্রতি সোনমের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন সকলে। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন সুনীল-পত্নী। বেঙ্গালুরুর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। যদিও চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন সোনম। স্ত্রীয়ের পাশে থাকার জন্য জাতীয় দল থেকে ছুটি নিয়েছিলেন সুনীল। এই সিদ্ধান্তের সমর্থনেও সামাজিক মাধ্যম নানা পোস্টে ছয়লাপ হয়েছিল। ফুটবলারের বাবা হওয়ার খুশি ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়।
পার্থ ভৌমিক (সেচমন্ত্রী,পশ্চিমবঙ্গ সরকার)ঃ মহম্মদ হাবিব চলে গেলেন স্বাধীনতা দিবসের বিকেলে। অসুস্থ ছিলেন দীর্ঘদিন। আলজাইমা এবং নানা রোগে মাঠের সিংহ যেন নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছিলেন। ১৯৬৬-তে আমার প্রিয় ক্লাব ইস্টবেঙ্গলে যখন এলেন, তখন আমি নেহাতই শিশু। কিন্তু খেলা মানে ইস্ট-মোহনের খেলা থাকলেই বাড়ির বড়রা রেডিওর সামনে বসে যেতেন। আমি অত না বুঝলেও এটা বুঝেছিলাম আমার ভবিষ্যৎ যাই হোক না কেন, ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন করাটা আমার পারিবারিক কর্তব্য। মাঠে যাওয়া শুরু করি ১৫ বছর থেকে ১৯৭৮ থেকে। কি দল ছিল তখন। খেলা বোঝার সময় থেকে কয়েকজন খেলোয়াড়ের অন্ধ ভক্ত ছিলাম, যার অন্যতম বড় মিঞা মানে হাবিব।
সিএন পোর্টালে হাবিব নিয়ে লিখতে বসলে উপন্যাস হয়ে যাবে তাই বেছে নিলাম ১৯৮০। ভয়ঙ্কর ফুটবল বছর ছিল ওই বছরটা। সেবার ইস্টবেঙ্গল থেকে ৯/১০ জন নিয়মিত খেলোয়াড় দল ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। থাকার মধ্যে স্টপারে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য আর তেমন কেউ নেই। ক্লাবের সম্পাদক ছিলেন প্রয়াত নিশীথ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় নাকি সব বেরিয়ে গিয়েছিলো। আমাদের মতো কট্টর সমর্থকদের তো মাথায় হাত। নিশীথবাবু বুদ্ধি করে কোচ করে নিয়ে আসলেন প্রদীপদাকে। পিকে ব্যানার্জি। পরে প্রদীপদার কাছে শোনা কিছু গল্প শোনাই।
প্রদীপদা প্রথমেই দলে নিলেন পড়ন্ত বিকেলের সুধীর কর্মকার ও হাবিবকে। এরপর অবশ্য দলে আসলেন চ্যালেঞ্জের মজিদ বাসকার, জামশেদ নাসিরীকে। মোটামুটি একটা দল দাঁড়ালো। সেবার এপ্রিল, মে-তে কলকাতায় ফেডারেশন কাপের খেলা ছিল ইডেনে। মজিদ জামশেদ এবং হাবিবের ট্রাওতে দল দুর্দান্ত খেলে ফাইনালে উঠলো। মাঠেতো নিয়মিত গেছিই । বুক দুরুদুরু। কিন্তু প্রথম থেকেই হাবিব খেলা ধরে নিলেন। বয়স হয়েছে কিন্তু নিজের ফরোয়ার্ডের জায়গা ছেড়ে লিঙ্কম্যানে খেলতে শুরু করলেন। প্রবল গরম অন্যদিকে তখন রামজান মাস চলেছে। হাবিব কিন্তু চিরকাল রোজা করে এসেছেন, এবারেও তাই। এক বিন্দু জল না খেয়ে ৯০ মিনিট খেলা ভাবা যায় না। এরমধ্যে একটা আক্রমণ মোহনবাগানের গোলরক্ষক প্রতাপ ঘোষ কোনও রকমে কর্নার করে বাঁচালেন। কর্নার থেকে কলার মতো বাঁকানো শট এলো জামশেদের মাথায়। জামশেদ ফ্লিক করে দিলেন হাবিবের দিকে। স্পট জাম্প করে ওদের স্টপারকে বোকা বানিয়ে বল গোলে। তারপর সম্মিলিত চিৎকার। আর মনে নেই।
কিন্তু সেই বছর আজকের দিনে অর্থাৎ ১৬ অগাস্ট ইডেনে ফের মোলাকাত ইস্ট-মোহনের। প্রথম থেকেই প্রবল গন্ডগোল মাঠে। মজিদকে কাঁচি করে মাঠে বাবলুদা ফেলতেই ইট বৃষ্টি শুরু। তারপর বিদেশ বসুকে (বর্তমানে আমাদের বিধায়ক) আমাদের রাইট ব্যাক দিলীপ পালিত ট্যাকেল করার পর বিদেশদা মাথা গরম করে লাথি মারলেন দিলীপদাকে। ব্যাস স্টেডিয়ামে উত্তাল গন্ডগোল। মৃত্যু হলো ১৬টি তাজা প্রাণের। শোনা যায় প্রশাসনের মারাত্মক ভুলেই নাকি দু দলের সমর্থকদের একসাথেই বসার ব্যবস্থা করেছিল ক্রীড়া বিভাগ।
তবুও সেদিন খেলা পুরো হয়েছিল ওই হাবিবের জন্যই। তিনিই দর্শকদের শান্ত হতে গ্যালারির কাছে দৌড়ে গিয়েছিলেন। আজ সেই মাঠের সিংহ নেই। স্মৃতিতে ছবি হয়ে গিয়েছেন। হাবিব মিঞা অমর রহে। (অনুলিখন- প্রসূন গুপ্ত)
পিকে, চুনি, বলরাম, এই ত্রয়ীর প্রথম দু'জন কবেই অমৃতলোকে যাত্রা করেছেন। এবার ৮৬ বছরে প্রয়াত হলেন তুলসীদাস বলরাম (Tulsidas balaram)। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে এই প্রবীণ ফুটবলারের (Veteran Footballer)। দীর্ঘ দিন ধরেই রোগে ভুগে শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। শেষের দিকে কিছুটা স্মৃতিভ্রম হয়েছিল। এবার ময়দানকে ফাঁকা ফেলে অভিন্ন হৃদয় দুই বন্ধু পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামীর মতোই তুলসীদাস বলরামের মৃত্যু (Death) হল নীরবে।
১৯৫৬ সালে ভারতে যে দল অলিম্পিক্সে খেলেছিল, সেই দলের শেষ জীবিত সদস্য ছিলেন বলরাম। ভারতীয় ফুটবলে একসঙ্গে উচ্চারণ করা হতো পিকে, চুনী এবং বলরামের নাম। ভারতের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার ছিলেন তিনি। দুই কাছের বন্ধুকে শেষ কয়েক বছরে হারিয়ে ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে মিলিয়ে গেল 'পিকে-চুনী-বলরাম’ ত্রয়ীর যুগ।
বলরামের প্রয়াণে শোকবার্তা পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, 'কিংবদন্তি ফুটবলার তুলসীদাস বলরামের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তাঁর প্রয়াণে ইতিহাসের একটি অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগের অন্যতম সেরা ফুটবলার তুলসীদাস বলরাম অলিম্পিক্স-সহ বহু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অধিনায়কও হয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১৩ সালে 'বঙ্গবিভূষণ' সম্মান প্রদান করে। এছাড়া তিনি অর্জুন-সহ অজস্র সম্মানে ভূষিত। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়াজগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি তুলসীদাস বলরামের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।'
রাস্তায় বন্ধুর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ার জেরে খুন (Footballer Murder) হলেন অস্ট্রিয়ার প্রাক্তন ফুটবলার। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এই খবর প্রকাশ্যে এনেছে। দিনে দুপুরে রাস্তায় গুলি করা হয়েছে ভকলান কাহরামান নামে প্রাক্তন এই ফুটবলারকে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে অস্ট্রিয়ার (Austria Incident) হয়ে খেলেছেন তিনি।
পুলিস সূত্রের খবর, রাজধানী ভিয়েনার একটি পানশালার বাইরে প্রাক্তন বন্ধু তথা ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলছিলেন ভকলান। কোনও একটি বিষয় নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা তর্কাতর্কিতে জড়ান। হঠাৎই বন্দুক বের করে গুলি চালিয়ে দেন ফুটবলারের সেই প্রাক্তন বন্ধু। তারপরে নিজেকেও গুলি করার চেষ্টা করেন বলে পুলিস সূত্রে খবর। অস্ট্রিয়ার পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
ভলকান যে ক্লাবে খেলেন, সেই অস্ট্রিয়া ভিয়েনা টুইটে বলেছে, 'যেখানেই থেকো ভাল থেকো ভলকান। যাঁদের রেখে গেলে, তাঁরা যেন এই সময়টা কাটিয়ে ওঠার মতো শক্তি পায়।' নেদারল্যান্ডসের ফেয়েনুর্ড অ্যাকাডেমি থেকে ফুটবল খেলা শুরু করলেও অস্ট্রিয়ার ক্লাবেই পেশাদার ফুটবলজীবন শুরু ভকলানের। ২০০২-এ অস্ট্রিয়ার হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেন। তার মধ্যে ইউরো ২০০৪-এর যোগ্যতা অর্জন পর্বে বেলারুশের বিরুদ্ধে খেলেছেন। ২০০৯-এ অবসর নেন তিনি।
কুয়েত ফুটবলার (Kuwait Footballer) বদর আল মুতাওয়া-কে চেনেন? মেসি, রোনাল্ডো (Messi-Ronaldo), নেইমারদের তারকা দুনিয়ার বাসিন্দা নয়। কিন্তু বিশ্ব ফুটবলের (International Football) এক অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী ছিলেন বদর। দেশের জার্সিতে সর্বোচ্চ ১৯৬টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড ছিল তাঁর দখলে। বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) থেকে বিদায়ের রাতে সেই সাম্রাজ্যে ভাগ বসিয়ে গেলেন আরেক কিংবদন্তী। এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গিয়েছেন কার কথা বলা হচ্ছে।
ক্রিশ্চিয়ানা রোনাল্ডো, দেশের জার্সিতে তাঁরও তো ১৯৬ ম্যাচ খেলা হয়ে গেল। বদর আল মুতাওয়ার (Badr Al Mutawa) প্রায় হারিয়ে যাওয়া নামটা তোরঙ্গ থেকে এরাবিয়ানে বেরিয়ে এল। আরব্য রজনীর দেশে রূপকথার জন্ম দিয়েছে মরক্কো। কিন্তু এমন রাতেও রোনাল্ডোময় কাতার বিশ্বকাপ। বয়স ৩৭, ধরেই নেওয়া হচ্ছে পরের বিশ্বকাপে তিনি নেই। মানে বিশ্বকাপে শেষবার খেলে ফেলেছেন দেশের জার্সিতে। কিন্তু বিদায় বেলাতেও এত করুণ আবহ জন্ম নেবে সেটা নিজেও ভেবেছিলেন কি?
কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের সঙ্গে মন কষাকষি। সুইৎজারল্যান্ড ম্যাচের মতো কোয়ার্টার ফাইনালের তিনি প্রথম এগারোয় নেই। দলের রাশ হাতে রাখতে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হয়েছিল কোচকে। ব্যক্তির চেয়ে প্রতিষ্ঠান বড়। শৃঙ্খলার চেনা তত্ত্ব প্রয়োগ করেছিলেন কোচ। মরক্কোর কাছে প্রথমার্ধে দল পিছিয়ে, নামলেন রোনাল্ডো। কিন্তু কামব্যাক হলো না। গোল পেলেন না। গোল করার মতো বল কি পেলেন?
রোনাল্ডো জোন থেকে ফ্রি কিক নিলেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। পর্তুগিজ মহাতারকা এখানেও ব্যর্থ। শেষ বাঁশি বাজার পরেই মরক্কোর উদ্দাম উৎসব শুরু। রোনাল্ডো ফিরে চললেন টানেলে। চোখের জল বাঁধ মানলো না। তামাম ফুটবল দুনিয়ায় ভাইরাল হল কান্নার ছবি। পায়ে পায়ে ড্রেসিংরুমের পথে সিআর-সেভেন।
দেশের হয়ে ২২ বছরের কেরিয়ারে কি দাঁড়ি পড়বে? আশঙ্কা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে পর্তুগালের সাজঘরে। পাঁচটা বিশ্বকাপে ৮ গোলের মালিক কি বুটজোড়া তুলে রাখবেন? ইউসেবিওর পর পর্তুগাল ফুটবলের সেরা পোস্টার বয় কী করবেন?