মেঘভাঙা বৃষ্টি-হড়পা বানে বিপর্যস্ত সিকিম (Sikkim)। হড়পা বানে (Flash Floods) মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৬-এ। সিকিম সরকারের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে সিকিমে ২৬জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিস্তা নদীর অববাহিকা থেকে ৩০জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। তাই সিকিমে বন্যায় এখন মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬।
সিকিমে বিপর্যয়ের প্রায় চারদিন পার, কিন্তু এখনও এর প্রভাব কাটেনি। প্রসঙ্গত, কয়েক মিনিটের বিপর্যয়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে সিকিম। হড়পা বানে বিধ্বস্ত সিকিমের চুংথাং, রংপো, মানগান সহ একাধিক অঞ্চল। তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে বিপর্যয়ের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে এখনও বেশ খানিকটা সময় লাগবে। তিস্তার জলে এখনও ভেসে আসছে মৃতদেহ। কার্যত মৃত্যপুরীতে পরিণত হয়েছে তিস্তা।
সূত্রের খবর, সিকিম সরকারের মতে, মাঙ্গান থেকে ৪ জনের মৃতদেহ এবং গ্যাংটক থেকে ৫ জনের মৃতদেহ এবং পাকিয়ং জেলা থেকে ১৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা নদীর অববাহিকা শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলা থেকে ৩০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ জওয়ান সহ ১৪২ জন। সিকিমে আটকে বহু পর্যটক।
মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান (Flash Floods), ধসে একেবারে তছনছ হয়ে গিয়েছে সিকিম (Sikkim)। বুধবার তিস্তায় হড়পা বানের ভেঙে-চুরে যায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। আবার এসবের মধ্যেই ফের ধস নামল সিকিমে। জানা গিয়েছে, ২৯ মাইল এলাকার কাছে বড়সড় ধস নামে। ধসের ফলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিস্তা ব্রিজ থেকে সিকিম যাওয়ার পথে বেশ কিছু জায়গায় ধস নামে। এর কারণে জাতীয় সড়ক নিচের দিকে বসে গিয়েছে। বুধবার দুপুর নাগাদ ২৮ মাইল এলাকায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের রাস্তায় ধস নামে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাংকে ফোন করে সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, বুধবারের মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়েছে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তা নদীতে। ওই জলের তোরেই ভেসে গিয়েছে একটি সেনা ছাউনি। এই ঘটনায়, ২৩ জন জওয়ান নিখোঁজ এখনও। পরে একজনের খোঁজ পাওয়া যায়। যদিও সিকিমের প্রশাসন সূত্রে খবর, ছোট ও বড় কংক্রিট ও লোহার মোট ১৪টি বাঁধ ভেঙেছে। অসমর্থিত সূত্রের খবর, এখন পর্যন্ত হড়পা বানে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের, নিখোঁজ প্রায় ১০০ জনের বেশি। এছাড়াও প্রায় ৩ হাজারের মতো পর্যটক সিকিমে আটকে রয়েছে। সিকিম সেনা সূত্রে খবর, বিপর্যস্ত জায়গাগুলিতে আটকে থাকা পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে সেনা ছাউনিতে রাখা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও সিকিমের পরিস্থিতি আগের মতই রয়েছে। বৃষ্টি এখনও কমেনি। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বৃষ্টি না থামলে তিস্তার ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। মৃত এবং নিখোঁজের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিকিমের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং-এর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম (Sikkim)। বুধবার সকালের মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফুলে ফেঁপে উঠেছে ও সেই জল নেমে আসে তিস্তায়। ইতিমধ্যেই জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ২৩ জন জওয়ান। এবারে তিস্তার প্রবল জলোচ্ছাসের ফলে ভেঙে ডুবে গেল ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। ফলে সড়কপথে গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিকিম।
Prayers for the safety of 23 missing army jawans, during a flash flood in Sikkim. pic.twitter.com/IxQYMLApX4
— Go Northeast (@GoNorthEastIN) October 4, 2023
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই উত্তর সিকিমে অনবরত বৃষ্টি হয়েই চলেছে। এরপর বুধবার হঠাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি নামে উত্তর সিকিমে। এর ফলে সেখানকার লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়ে ও তিস্তায় জল আসতে শুরু করলে হঠাৎ হড়পা বান দেখা যায়। তিস্তার এমন রুদ্র রূপ ধারণ করার পরই ভেসে গিয়েছে নদীর দু'পাশের সমস্ত কিছু। মেঘভাঙা বৃষ্টির জল ধরে রাখতে পারেনি লোনক হ্রদ। ফলে বাঁধ ভেঙে তিস্তায় জল প্রবল গতিতে নেমে আসে ও ধ্বংসলীলা চালায় তিস্তা। তিস্তার জল নিমেষের মধ্যে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সিকিমের সঙ্গে অবশিষ্ট ভারতের মূল সংযোগরক্ষাকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ ভেঙে যাওয়ায় সড়কপথে দেশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিকিম। তিস্তার জলস্তর আরও বৃদ্ধি পেলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণভাবে জলের তলায় চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গেও সিকিমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ভয়ঙ্কর বিপর্যের মুখে উত্তর সিকিম (Sikkim)। মেঘভাঙা (Cloud Burst) বৃষ্টি শুরু হয়েছে সিকিমে। বুধবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে ও এর পরই সেই জল নেমে আসে তিস্তায়। আচমকাই হড়পা বান আসায় তিস্তার জলস্তর বেড়ে যায়। আর তাতেই ভেসে নিখোঁজ হয়ে যান সেনার ২৩ জওয়ান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে ওই ২৩ জন সেনা কর্মীর কোনও খোঁজ মিলছে না। ফলে ২৩ সেনা কর্মীর খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। সেই সঙ্গে সিকিম জুড়ে গোটা এলাকায় বহু বাড়ি জলের নীচে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, গতরাত থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে সিকিমে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে গতরাতেই ৬টি সেতু ধুয়ে যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, সিংথামে তিস্তার উপর একটি ফুটব্রিজ ছিল। নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার জেরে সেই সেতুটি ভেঙে পড়েছে। আর আজ তিস্তা নদীর জলে তলিয়ে গেল সেনাবাহিনীর ৪১টি গাড়ি। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়েছে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তা নদীতে। এর ফলে মুহূর্তে তিস্তার জলস্তর প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে যায়। আর তিস্তার এই প্রবল জলোচ্ছাসেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেনা ছাউনি। তিস্তা নদীর জলের তোড়ে ভেসে যান ২৩ জন জওয়ান।
ইতিমধ্যেই নিখোঁজ জওয়ানদের খোঁজে শুরু হল উদ্ধারকাজ। বৃষ্টি কমলে আরও জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালানো হবে বলেই জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। তিস্তা, নামচিতে জারি করা হল লাল সতর্কতা। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এখই কাটছে না দুর্যোগ।
প্রবল বর্ষণ (Heavy Rainfall) ও ভূমিধসে (Landslide) লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) একাধিক জেলা। এই মরসুমেই হিমাচলে মৃত্যু হয় ২৪২ জনের। এর পর বৃহস্পতিবার নতুন করে হিমাচলের কুলুতে ভেঙে পড়ে সাত তলার এক বিল্ডিং। মুহূর্তের মধ্যে ধূলিসাৎ হয়ে যায় সেটি। মৌসম ভবন থেকে আগেই পুরো রাজ্যজুড়ে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। আর সেই সতর্ক বার্তার পরই প্রবল বর্ষণে নতুন করে ধস নামে কুলু শহরে। রাস্তা বন্ধ হওয়ায় আটকে রয়েছেন বহু মানুষ। তবে এখানেই শেষ নয়, এখনও সেই রাজ্যে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাস মৌসম ভবনের। ফলে রাজ্যে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ২৯ অগাস্ট পর্যন্ত সেখানে এমনই টানা বৃষ্টি, হড়পা বান, বন্যা দেখা যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, ভূমিধসের ফলে হিমাচলের প্রায় ৭২৯ টি রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। প্রায় ২হাজার ৮৯৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আবার বন্যা ও ধসের ফলে শতাধিক মানুষ মান্ডির রাস্তায় আটকে পড়েছিল। জানা গিয়েছে, হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডি জেলার খোলনালা গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। তাতে প্রায় ৫১ জন আটকে পড়ায় তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে এনডিআরআফের বিশেষ দল। প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই আটকে থাকা মানুষদের কুলু-মান্ডি হাইওয়ে থেকে রিলিফ ক্যাম্পে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অগাস্টে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১২০ জন। ১৪ অগাস্ট থেকেই এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের। ২৪ জুনে বর্ষার আগমণের পর থেকেই এই রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৪২ জনের।
শহরের রাস্তায় ভয়াবহ হড়পা বান (Flash flood)। হড়পা বানের জেরে ভেসে চলেছে একের পর এক যাত্রীবাহী গাড়ি। প্রাণে বাঁচাতে যাত্রীরা গাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে গাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু তাতেও কোনও উপকার হচ্ছে না। স্রোতের টানে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে গাড়িগুলিকে, ঠিক এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল (Viral Video) হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, রাস্তায় লাইন দিয়ে দাঁড়ানো গাড়িগুলিকে একের পর এক ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে হড়পা বান। কেউ কেউ গাছ ধরে এই দুর্ঘটনা থেকে কিছুটা রক্ষা পেলেও অনেকেই গাড়ির সঙ্গেই ভেসে গিয়েছেন।
এই ঘটনাটি ঘটেছে স্পেনের (Spain) জারাগোজায়। এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার জারাগোজায় ভারী বৃষ্টি হয়। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই শহরের মধ্যে হড়পা বানের সৃষ্টি হয়। স্পেনের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, খুব অল্প সময়ের জন্য বৃষ্টি হয়েছিল। তবে বৃষ্টির মাত্রা অনেক বেশি ছিল। যার ফলে এলাকায় হড়পা বানের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই ভেসে যাওয়া সেই যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়েছে, এমনটাই জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চাকরি ফিরিয়ে দিলেন মালবাজারের (Malbazar) হড়পা বানে নিহতের ভাই। ইতিমধ্যেই সেই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে (Chief Minister) চিঠি পাঠিয়েছেন সুদীপ পোদ্দার নামে ওই যুবক। গত ৫ই অক্টোবর ঠাকুর বিসর্জনের দিন মালনদীতে হড়পা বান বিপর্যয়ে দুই শিশু সহ ৮ জনের মৃত্যু (death) হয়। তার মধ্যে একজন ছিলেন সুস্মিতা পোদ্দার। সুদীপ তাঁরই ভাই। অক্টোবরে উত্তরবঙ্গ সফর চলাকালীন মালবাজারে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মৃতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন তিনি। সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি কী প্রয়োজন সেই কথাও জানতে চান। এরপরের দিন অর্থাত্ ১৮ই অক্টোবর প্রশাসনিক বৈঠক করে মৃতদের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেই মোতাবেক ইতিমধ্যেই কয়েকজন সেই কাজে নিযুক্তও হয়েছেন। একইসঙ্গে মৃত সুস্মিতা পোদ্দারের ভাই, সুদীপ পোদ্দারকে পুলিসের হোমগার্ডে চাকুরির জন্য মনোনীত করা হয়। কিন্তু তাঁর হাতে পুলিস সুপার, হোমগার্ডের তরফে ইস্যু করা যে এনরোলমেন্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয় তাতে উল্লেখ রয়েছে "ভলেন্টিয়ার ইন নেচার" এবং তা সম্পূর্নরুপে অস্থায়ী বলে দাবি সুদীপের। পাশাপাশি সুদীপের দাবি, ওই কাগজে উল্লেখ রয়েছে "এজ এন্ড হোয়েন নিডেড"। অর্থাৎ প্রয়োজন পড়লে তবেই কাজে ডাক পাবেন। এরপরই চাকরি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুদীপ।
মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে সুদীপ জানিয়ে দিয়েছেন অস্থায়ী হোমগার্ডের চাকরি নিতে অরাজি তিনি। পাশাপাশি, তিনি চিঠিতে এও আবেদনে জানিয়েছেন, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী মালবাজার শহরে কোনও সরকারি দফতরে স্থায়ী চাকরির সুযোগ দেওয়া হলে তিনি করতে রাজি রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপি, জলপাইগুড়ি জেলাশাসক, জেলা পুলিস সুপার, পুলিস সুপার (হোমগার্ড), মালবাজারের মহকুমাশাসক, মালবাজার মহকুমা পুলিস আধিকারিকেও পাঠিয়েছেন। তাঁর এমন সিদ্ধান্তে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এদিকে সুদীপের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন জলপাইগুড়ির বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদের বক্তব্য, মৃত্যুর কোনও ভর্তুকি হয়না। তারপরও যদি মৃতদের পরিবারের পাশে দাড়াতে চান মুখ্যমন্ত্রী, তাহলে যোগ্যতা অনুযায়ী স্থায়ী সরকারি চাকরি দেওয়া হোক। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যুব তৃণমূলের জেলা সম্পাদক সৈকত চ্যাটার্জীর দাবি, কেউ ভুল বুঝিয়ে থাকতে পারে ওই পরিবারকে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সঙ্গে কথা বললেই সমস্যা মিটে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উত্তরবঙ্গে মাল নদী (Mal Incident) দুর্ঘটনায় সাহসিকতার পরিচয় দেওয়া মানিক-সহ ৭ জনকে পুরস্কৃত করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সাত জনই প্রাণের তোয়াক্কা না করে দশমীর (dashami Mishap) সন্ধ্যায় হড়পা বানের (Flash Floods) মধ্যেই নদীতে ঝাঁপ দিয়ে একাধিক প্রাণ বাঁচিয়েছেন। তাঁদের হাতে সাহসিকতার শংসাপত্র তুলে দেওয়ার পাশাপাশি এক লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সাহসী এই ৭ জনকে চাকরির প্রস্তাবও দেন। এই প্রসঙ্গে মাল দুর্ঘটনার পর সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত হওয়া মহম্মদ মানিক জানান, আমি খুব আপ্লুত। মুখ্যমন্ত্রী আমার নাম ধরে ডাকবেন ভাবতেই পারিনি। উনাকে কাছ থেকে দেখতে পাবো ভাবতেই পারিনি। আগামি দিনেই সামাজিক কর্মে এগিয়ে যাবো। উনি চাকরির ব্যাপারে বলেছেন। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবদার করেছি যদি হোমগার্ডের চাকরি আমাকে দেওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এদিন সরকারির চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে মাল-কাণ্ডে নিহতদের পরিবারের একজন করে সদস্যদের হাতে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিষয়টা তদারকি করেন।
শব দাহ করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নিমতলা শ্মশানঘাটে (Nimtala Burning Ghat)। গঙ্গার বানে (Flash Flood in Ganga) তলিয়ে গিয়েছিলেন ৩ জন। একজনের দেহ উদ্ধার মঙ্গলবার সকালে। বাকি দু'জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। বেলেঘাটা থেকে নিমতলায় দেহ দাহ করতে যায় একটি দল। রাত ১১টা ১৫ নাগাদ বান আসার পর সবাই উঠে এলেও ৮ জন উঠছিলেন না। জানা গিয়েছে, বানের পূর্বাভাস নিয়ে ঘাটের কর্তব্যরত পুলিস তাঁদের বাধা দিলেও, সেই বাধা তোয়াক্কা না করে ৮ জন পাড়ে বসে ছিলেন। স্রোতে ৮ জন তলিয়ে গেলেও, ৫ জন লোহার রড ধরে বেঁচে যান। তিন জন তলিয়ে যান। তাঁদের খোঁজ শুরু করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই ডুবুরি নামিয়ে চলে তল্লাশি। তবে সকাল ১১টা নাগাদ একজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ তিন জনের মধ্যে কার দেহ উদ্ধার? সেই শনাক্তকরণের কাজ চলছে। জানা গিয়েছে, মৃত এবং নিখোঁজ যুবকদের প্রত্যেকের বয়স ২৮-৩২ বছর। স্থানীয়দের দাবি, পুলিস এসে আগেই জানিয়ে গিয়েছিল ১০টার পর বান আসবে কেউ পাড়ে বসবেন না। প্রশাসনের তরফে বান আসার খবর ঘোষণা করতেও তোয়াক্কা করেনি ওই আট জন। জল বাড়তে থাকায় কেউ দুর্ঘটনার সময় গঙ্গায় নামতে সাহস পায়নি। এমনটাই সংবাদ মাধ্যমকে জানান এক প্রত্যক্ষদর্শী।
ভাসানের সময় মাল নদীর (Mal River) হড়পা বানে (Flash Flood) তলিয়ে গিয়ে মৃত ৮ জন। সেই ঘটনা এখনও দগদগে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলাজুড়ে। কিন্তু এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার চেয়েও লোকমুখে ঘুরেফিরে আসছে তিন যুবকের কীর্তি। যারা প্রাণের তোয়াক্কা না করে উপস্থিত বুদ্ধির জোরে দশমীর সন্ধ্যায় বাঁচিয়েছেন প্রায় ৫০টি প্রাণ। এই তিনজোনে মহম্মদ মানিক, রামমানকি মুন্ডা এবং বিনু গঞ্জু। মাল নদীর পাগলা বানে ঝাঁপ দিয়ে শিশু,মহিলা-সহ ১০ জনকে বাচান মালবাজারের পশ্চিম তেশিমিলা গ্রামের মহম্মদ মানিক। প্রতিবছরের মতো এবারও পরিবার-সহ ভাসান দেখতে এসেছিলেন মানিক।
সন্ধ্যার অন্ধকার সঙ্গে ঢাকের শব্দ, ধুপ-ধুনোয় নদীপাড়ে এক অন্য বিদায়ের বার্তা। তার মধ্যেই হঠাৎ হড়পা বানের তোড়ে তলিয়ে যাওয়ার আর্তনাদ। সেই দৃশ্য দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি মহম্মদ মানিক। পরিবার পাশে থাকলেও এক বন্ধুর হাতে ফোন দিয়ে জলে ঝাঁপ দেন তিনি। উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বাঁচান ১০ প্রাণ। যেহেতু মাল নদীর সঙ্গে পরিচিত আছে মানিকের এবং সাঁতার ভালোই জানেন তিনি। তাই প্রকৃতির রোষের বিরুদ্ধে লড়ে এখন জলপাইগুড়ির গর্ব মহম্মদ মানিক। সূত্রের খবর, অভিশপ্ত সন্ধ্যায় প্রায় ৬-৮ হাজার মানুষ বিসর্জন দেখতে জমায়েত করেছিলেন।
সেই ভিড়ে ছিলেন রামমানকি মুণ্ডা, বিনু গঞ্জুও। প্রতিমা নিরঞ্জনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন চা বাগানের এই দুই বাসিন্দা। এই দু’জন মিলে মানিকের মতোই হড়পা বানের স্রোত থেকে একের পর এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন। অন্তত ৪০ জনকে সেদিন পাড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছিলেন রাম এবং বিনু। তাঁদের অবশ্য দাবি, পুলিস-প্রশাসনের সাহায্য সময় মতো পেলে আরও কয়েক জনকে প্রাণে বাঁচানো যেত। যেহেতু ছোট থেকেই এই নদীর সঙ্গে তাঁদের পরিচিতি, তাই প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়তে বেগ পেতে হয়নি। এমনটাই জানান রামমানকি এবং বিনু গঞ্জু।
প্রসূন গুপ্ত: দশমীতে উত্তরবঙ্গের মালে যে দুর্ঘটনা হয়ে গিয়েছে, তার রেশ এখনও কাটেনি। ৮ ব্যক্তির মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি শুক্রবারও কলকাতা এবং শহরতলির একাধিক পুজোর ভাসান। বৃহস্পতিবার প্রতিবেদককে কলকাতার মেয়র ববি হাকিম জানান, কলকাতার গঙ্গার ঘাট নিয়ে চিন্তার কারণ নেই। বেশ কয়েক বছর গঙ্গা পাড়ের সামান্য আগেই পুজো কমিটির সদস্যদের আটকে দিচ্ছে পুলিস। প্রতিমার সঙ্গে জলে নামতে পারছেন এক-দু'জন। কলকাতা পুরসভা নিজে দায়িত্ব নিয়েছে প্রতিমা নিরঞ্জনের। দশমী থেকে ববি নিজের পুজো চেতলা অগ্রণী ছেড়ে গঙ্গার ঘাটগুলি পরিদর্শন করছেন।
বৃহস্পতিবারও ঘুরেফিরে কলকাতার একাধিক ঘাট পরিদর্শন করেন মেয়র। মহানাগরিক জানেন, একাদশীতেও পুজোর ভাসান হয়। যদিও তার সংখ্যা নগন্য। তারই মাঝে কাল সকাল থেকে বারবার তিনি বিসর্জনের ঘাটগুলিতে গিয়েছেন। কলকাতা পুলিসও যথেষ্ট সক্রিয়। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ এবছরও পুজোর ক'টি দিন অসাধারণ দক্ষতার সাথে কাজ করেছে। বুধবার থেকে শুক্রবার, এখানেও কাজে খামতি নেই পুলিসের। এরপরেও মাল নদীর দুর্ঘটনায় আরও সতর্ক প্রশাসন।
শুধুমাত্র কলকাতা বা শহরতলি নয়, সারা বাংলার তথাকথিত সব ছোট-বড় পুজো, যেগুলি কার্নিভালের অংশ নয়, সেসব পুজোর ভাসান আজকের মধ্যে করতেই হবে বলে নির্দেশিকা রয়েছে। অবশ্য বাম আমল থেকেই এই নিয়ম চালু। কলকাতার বাইরে আলিপুরদুয়ার থেকে সুন্দরবন অবধি কয়েক হাজার পুজো আছে যার ভাসান শুক্রবার। কাজেই মালের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আরও সতর্কতা বেড়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিধায়ক, কাউন্সিলর থেকে পঞ্চায়েত নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা অবশ্যই নিরঞ্জনের সময় যেন ঘাটে থাকে। একইসঙ্গে পুলিস ও প্রশাসনের দায়িত্বও একইভাবে বণ্টন করা হয়েছে। সকাল থেকেই ববি হাকিম গঙ্গার ঘাটগুলি পরিদর্শন করছেন। যদিও দায় প্রশাসনের, তবুও জানা গিয়েছে যে বাম দলের কর্মীদের নির্দেশ গিয়েছে, তাঁদের দলের যেন তাঁরাও দায়িত্ব নিয়ে বিসর্জনের ঘাটগুলিতে উপস্থিত থাকে। শেষ খবর জলপাইগুড়িতে আজ কোনও কার্নিভাল হচ্ছে না।
দশমীর রাতে বিসর্জনের (Immersion Incident) সময় মাল নদীর হড়পা বানে (Flash Flood) মৃত্যুর ঘটনায় জলপাইগুড়িতে বাতিল পুজো কার্নিভাল (Puja Carnival)। অংশ নেওয়া পুজো কমিটিগুলোকে জানিয়ে দিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। প্রায় ১৬টি পুজো কমিটি জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) পুর এলাকায় শুক্রবারের বর্ণাঢ্য কার্নিভালে অংশগ্রহণের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছিল। শহরের কিং সাহেবের ঘাট এবং সংলগ্ন এলাকায় মঞ্চ বাঁধা এবং সাজিয়ে তোলার কাজ চলছিল। বৃহস্পতিবার বিকেল পাচটায় কার্নিভাল আয়োজন নিয়ে একটি বৈঠকও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার রাতের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর থেকেই সমাজের বিভিন্নস্তর থেকে কার্নিভাল বাতিলের দাবি ওঠে। অনেকে জেলাশাসককে ই-মেইল করে অনুষ্ঠান বাতিলের অনুরোধ করেন। এই আবেদন-নিবেদন খতিয়ে দেখে অংশগ্রহণকারী পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং কোতোয়ালি থানা। চূড়ান্ত প্রস্তুতি হয়ে যাওয়া স্বত্ত্বেও এই শোকের আবহে কার্নিভাল না করার বিষয়েই সম্মতি দেয় পূজো কমিটিগুলিও।
এরপরই জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা একটি মেসেজ বার্তায় কার্নিভাল বাতিলের সিদ্ধান্ত জানান। একাধিক মহল থেকে আবাদেন জানানো হয়েছে, কার্নিভালের জন্য বরাদ্দ অর্থে যদি দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানো যায়। একাধিক পুজো কমিটিও জানিয়েছে, তারা কার্নিভালের জন্য বরাদ্দ অর্থ নিয়ে ওই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াবেন।
এদিকে, হড়পা বান-কাণ্ডের পর ২৪ ঘণ্টা পার। এখনও নতুন কোনও দেহ উদ্ধার হয়নি। জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নতুন কোন দেহ উদ্ধার করেনি। এখনও পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় মৃত ৮। এমনকি অসমর্থিত একটি সূত্র দাবি করেছিল, অন্তত ৪০ জন নিখোঁজ। সেই দাবি ভিত্তিহীন বলেই মনে করছে জেলা প্রশাসন। কারণ স্থানীয় থানায় এখনও পর্যন্ত নতুন কোনও নিখোঁজ ডায়রি হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছে, হড়পা বানে যারা তলিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের সকলকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এই দুর্ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৩। এলাকার পরিবেশ এখনও থমথমে। শুক্রবার নয় সদস্যের বিজেপির প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল অর্থাৎ মাল নদীর বিসর্জন ঘাট পরিদর্শনে আসছে। কথা বলবেন আহত এবং মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সকাল সাড়ে ১০-১১টা নাগাদ তাঁরা এসে পৌঁছন। এই দলে রয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, মনোজ টিগগা-সহ অন্যরা।
বিসর্জনের ((Idol Immersion) সময় মালবাজারের (Malbazar Incident) হড়পা বানে মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) এবং মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata)। নরেন্দ্র মোদীর দফতর পিএমও থেকে ট্যুইট করে লেখা, 'দুর্গাপুজোর আনন্দোৎসবের মধ্যেই জলপাইগুড়ির দুর্ঘটনায় মর্মাহত । যাঁরা প্রিয়জন হারিয়েছেন তাঁদের জানাই সমবেদনা।' পাশাপাশি মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে এককালীন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।'
একইভাবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ট্যুইট করে বলা, 'মাল নদীর দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে জানাই সমবেদনা। এই সংকটের সময় তাঁরা লড়াইয়ের শক্তি পাক। এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ১৩ জন মাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা এককালীন অনুদান এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হবে।'
এদিকে দশমীর রাতের এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে প্রশাসনিক উদাসীনতাকে। উঠছে একাধিক প্রশ্ন। উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও কেন সতর্ক হয়নি প্রশাসন? ভাসানের জন্য কেন একসঙ্গে এত মানুষকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল? হড়পা বান প্রবণ এই মাল নদী, জেনেও কেন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন? কেন প্রস্তুত ছিল না রিভার ট্রাফিক কন্ট্রোল? এই প্রশ্নগুলো এখন ঘুরেফিরে আসছে।
টানা ভারী বৃষ্টিতে (Heavy Rain) জলের তলায় নেপালের (Nepal) পশ্চিমে অবস্থিত আছাম জেলার বিভিন্ন জায়গা। এরই মধ্যে শনিবার ভূমিধসের ফলে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু (Death) হয়েছে। এখনও ১০ জন নিখোঁজ (Missing) রয়েছেন। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নিখোঁজ মানুষদের খোঁজ চালাচ্ছেন।
আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই দুর্যোগ ঘটেছে যে জেলায় তা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ৪৫০ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত। মাটির বাড়ি একেবারে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, নেপালের পূর্ব কৈলালী জেলায় বন্যায় তলিয়ে গিয়েছে ৬০০ বাড়ি। বন্যা কবলিত লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। এছাড়াও, নেপালের দারচুলা জেলার বঙ্গবগাদ এলাকায় গত শনিবার বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ২ জন নিহত ও ১১ জন নিখোঁজ হয়েছেন। অবিরাম বর্ষণের ফলে নেপালের লস্কু ও মহাকালী নদী প্লাবিত হওয়ার ফলে বিস্তীর্ণ অংশ বন্যার কবলে পড়েছে। টানা বর্ষণে বন্যা এবং ধস নামার ফলে এসব জেলার বিস্তীর্ণ অংশে বিদ্যুৎ-সড়ক বিঘ্নিত হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে।
কোথাও প্রবল বৃষ্টি (Heavy Rain), কোথাও আবার জলের স্রোতে ভেসে গেল ব্রিজ। প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত বানভাসি (Flood) দশা হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh), ঝাড়খণ্ড (Jharkhand), ওড়িশা (Odisha), উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) বিস্তীর্ণ এলাকায়। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে কার্যত ধস, প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার জেরে মৃত্যু (Death) হয়েছে মোট ৩১ জনের। আহত বেশ কয়েকজন, নিখোঁজ আরও অনেকে।
হিমাচল ছাড়াও উত্তরাখণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) আগামী দিনে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে।
শুক্রবার থেকে ভারী বর্ষণের জেরে হিমাচল প্রদেশে কমপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে একটি পরিবারের আট জন। জখম হয়েছেন আরও ১০ জন। মান্ডি জেলায় ছ’জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরাখণ্ডে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ হয়েছেন আরও ১০ জন। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নদীর জল। একাধিক গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরানো হয়েছে। ওড়িশায় বৃষ্টি বিপর্যয়ে চার জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে।
#WATCH | J&K: Flash-flood-like situation as Darhali river in Rajouri district overflows due to torrential rainfall in upper reaches of Pir Panjal mountain range (20.08) pic.twitter.com/oqANiF1pks
— ANI (@ANI) August 21, 2022
দুর্যোগ ঝাড়খণ্ডেও। প্রবল বর্ষণে ভেঙে পড়েছে একাধিক গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। একাধিক জেলার নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পশ্চিম সিংভূমে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ ও পূর্ব রাজস্থানে রবিবার অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।