১২ নভেম্বর, দীপাবলির দিন মুক্তি পেয়েছে 'টাইগার ৩'। সলমান খানের বহু প্রতীক্ষিত ছবি টাইগার ৩ দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন তাঁর অনুরাগীরা। প্রথম দিনেই ৪৪ কোটির ব্যবসা করেছে এই সিনেমা। জানা গিয়েছে, তাঁর ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পরই দর্শকদের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু তাঁদের এই উচ্ছ্বাস মুহূর্তের মধ্যেই আতঙ্কের পরিবেশে পরিণত হয়। সম্প্রতি এক ভিডিও ভাইরাল হতে শুরু হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে, ছবিতে এন্ট্রি নিচ্ছেন ভাইজান, আর সেসময়ই প্রেক্ষাগৃহের মধ্যেই শুরু হয় বাজি ফাটানো। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দর্শকরা। অনেকে বেড়িয়েও যান প্রেক্ষাগৃহ থেকে। ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার মালেগাঁওয়ের একটি সিনেমাহলের। ভিডিও ভাইরাল হতেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। অভিযোগ দায়ের করা হলে, আটকও করা হয় ২ জনকে।
Salman Khan Fans bursted fire crackers inside the cinema hall in Malegaon which caused stampede like situation.
— Rishi Bagree (@rishibagree) November 13, 2023
pic.twitter.com/LA0uaye96z
বিগত কয়েক বছর ধরেই সলমানের খানের ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। কিন্তু টাইগার ৩ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন অনুরাগীরা। ফলে এই ছবির মুক্তি নিয়ে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু অনুরাগীদের এমনই উন্মাদনা যে, প্রাণ সংশয়ের মধ্যে পড়তে হয় অনেককেই। আচমকা হলের মধ্যে তুবড়ি, রকেট জ্বালানোর ফলে সেখানে আগুন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তেমনটা না ঘটলেও হলের মধ্যেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় যায়। সেই ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সংবিধানের ১১২ ধারায় চবনী পুলিস স্টেশনে প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার পাশাপাশি দুই ব্যক্তি আটকও হয়। এবার সেই প্রেক্ষিতেই মুখ খুললেন ‘টাইগার’ সলমান।
এদিন নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ভাইজান লেখেন, "আমি 'টাইগার ৩' চলাকালীন প্রেক্ষাগৃহের মধ্যে আতসবাজি ফাটানোর কথা শুনলাম। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। নিজেদের ও অন্যদের জীবন বিপদে না ফেলে বরং সকলে মিলে সিনেমাটা উপভোগ করুন। সাবধানে থাকুন।"
I'm hearing about fireworks inside theaters during Tiger3. This is dangerous. Let's enjoy the film without putting ourselves and others at risk. Stay safe.
— Salman Khan (@BeingSalmanKhan) November 13, 2023
দুর্গাপূজা শেষ হয়ে গেলেও উৎসবের মরশুম এখনও শেষ হয়নি। কিছুদিন পরই শুরু হবে দীপাবলি, ছটপুজো ইত্যাদি। আর এই উৎসবের মরশুমে বাজি ফাটানো হবে না, এমনটা হতেই পারে না। কিন্তু এবারে এই বাজি ফাটানোর ক্ষেত্রেই সময় বেঁধে দিল ছত্তিশগড় সরকার। জানা গিয়েছে, ছত্তিশগড় সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, সে রাজ্যে দীপাবলিতে মাত্র দু'ঘণ্টার জন্য বাজি ফাটানো যাবে। এর অন্যথা হলেই কড়া পদক্ষেপও নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
ছত্তিশগড় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, দিওয়ালি, ছটপুজো থেকে বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষের দিন বাজি ফাটানোর নির্দিষ্ট সময় স্থির করে দিয়েছে ছত্তিশগড় সরকার। যেমন দিওয়ালিতে রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজি ফাটানো যাবে। ছটপুজোয় সকাল ৬টা থেকে সকাল ৮টা এবং বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষে দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাজি ফাটানো যাবে। বাজি ফাটানোর অনুমতি দিলেও শব্দবাজি ফাটানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ছত্তিশগড় সরকার।
ছিল ৯০। এবার থেকে হবে ১২৫। রাজ্যে বাড়তে চলেছে শব্দবাজির মাত্রা। চলতি সপ্তাহে এই নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এবার থেকে ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটানো যাবে।
তবে একইসঙ্গে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সবুজ বাজি ছাড়া আর কোনও বাজি ফাটানো যাবে না। এবং বাজি ফাটাতে হবে বসতিহীন ফাঁকা জায়গায়। কিন্তু প্রশ্ন হল রাজ্যে সবুজ বাজি তৈরির কারখানা কোথায় ?
সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক জায়গায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল একাধিক মানুষের। শুরু হয় পুলিশের ধরপাকড়। উদ্ধার হয়েছিল লক্ষাধিক কেজি বাজি। পুলিশকে এই ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও।
তারপরেও শব্দবাজির মাত্রা বাড়ানোর ঘটনায় নানা মহল থেকেই প্রশ্ন উঠছে। ইতিমধ্যেই অনেকের অভিযোগ শব্দবাজি ব্যবসায়ীদের খুশি করতেই এই সিদ্ধান্ত। যদিও সরকারের অন্দরের খবর এই নির্দেশিকা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিজস্ব নয়। এই ব্যাপারে রাজ্যের পরিবেশ দফতরের সঙ্গে কথা বলেই এবং আইনি দিক খতিয়ে দেখেই তৈরি করা হয়েছে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদের যুক্তি, শব্দবাজির ক্ষেত্রে মাত্রা কত হবে, তা শীর্ষে আদালতের নির্দেশে তা নির্দিষ্ট ভাবে মাপা নেই। এতদিন চিকিৎসক দুলাল বসুর নেতৃত্বে তৈরি কমিটি রাজ্য শব্দবাজির মাপকাঠি ৯০ ডেসিবেলে বেধে রেখেছিল। সাধারণ মানুষের আশঙ্কা, এবার কালীপুজোতে যে চকোলেট বোমা লুকিয়ে বিক্রি করা হত, তা হয়তো এখন থেকে ফের প্রকাশ্যেই বিক্রি করা হবে।
লক্ষ্য কুটির শিল্প বৃদ্ধি। অভুক্ত, দরিদ্র মানুষগুলোর মুখে একমুঠো অন্ন জোগানো। সেই কুটির শিল্প কি? 'বাজি হাব'। এর আগে এগরা, দত্তপুকুরের মতো বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের সাক্ষী থেকেছে বাংলা। তবে এটা বেআইনি নয়, উত্তর ২৪ পরগনার (North24Parganas) বনগাঁ মহকুমা চৌবেড়িয়া (Chowberia) এলাকায় একটি বাজি হাব তৈরির পরিকল্পনা করেছে খোদ প্রশাসন। চৌবেড়িয়া এলাকায় জেলা পরিষদের অধীনে থাকা ৮ একর জমিতে তৈরি হবে বাজি (Fire Crackers) হাব। সুরক্ষিতভাবে তৈরি হবে পরিবেশ বান্ধব সবুজ বাজি। মানুষের আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই নাকি এই সিদ্ধান্ত। তবে এলাকার মানুষ ঠিক কী বলছেন, কী চাইছেন.. ঘুরে দেখল সিএন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাজি কারখানা নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই হয়নি প্রশাসনের। পঞ্চায়েত অফিসে বসেই তৈরি হয়েছে বাজি হাব তৈরির ম্যাপ। এমনকি প্রশাসনিক কর্তারা এসেও জমি দেখে গিয়েছে। রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন চৌবেড়িয়া গ্রামের মানুষ। তাঁরা কোনওমতেই চাইছেন না আরেক দত্তপকুর, এগরাকাণ্ড ঘটুক চৌবেড়িয়ার মাটিতে।
যমুনা-পার্বতী নদীর সংযোগস্থল এলাকাতেই বাজি হাব হওয়ার কথা। এলাকার মানুষদের প্রশ্ন, তাহলে বর্জ্য পদার্থ যাবে কোথায়? মৎস্যজীবীদের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। একইসঙ্গে গ্রামবাসীদের বক্তব্য, প্রয়োজনে জনমত তৈরি করে রোখা হবে বাজি হাব নির্মাণ। যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে গ্রামে সচেতনামূলক অভিযান প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য।
প্রায় কয়েক মাসের ব্যবধানে রাজ্যের একাধিক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। রক্তাক্ত হয়েছে দত্তপুকুর, এগরা, চম্পাহাটি। এই অবস্থায় চৌবেড়িয়ায় সরকারি উদ্যোগে বাজি হাব করা কতটা যথাযথ, প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরাও।
দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহেই আসানসোলের বার্নপুর থেকে বিপুল বাজি উদ্ধার করল পুলিস। এই বিপুল পরিমাণে বাজি মজুতের আদেও অনুমতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইতিমধ্যেই নীলগঞ্জ ফাঁড়ির ওসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দত্তপুকুরের ঘটনার পরেই খবর পেয়ে বার্নপুরের রামবাঁধ এলাকায় একটি গুদামে তল্লাশি অভিযান চালায় হীরাপুর থানার পুলিশ। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণে বাজি। পলাতক ওই গুদামের মালিক।
এগরা, বজবজের পর মালদহ (Maldah)। এবার মালদহের বাজির গুদামে বিস্ফোরণের (Firecrackers blast) জেরে আগুন (Fire) ধরে যায়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ২ শ্রমিকের মৃত্যু (Death) হয়েছে। সূত্রের খবর, এ ঘটনায় এখনও অবধি ২ জন গুরুতর আহত অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থলে দমকলের আটটি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সূত্রের খবর, মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার নেতাজি পুরবাজার এলাকায় মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ বিস্ফোরণ হয়। এই বিস্ফোরণের পর ওই গুদামে আগুন লেগে যায়। এখন দমকলের ইঞ্জিন ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে বলে খবর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বাজির গুদাম ঘিরে একাধিক বাজির দোকানও ছিল। মঙ্গলবার সকালে গুদামের সামনে গাড়ি থেকে কার্বাইড নামানো হচ্ছিল। সেই কার্বাইড অসাবধানতায় নীচে পড়ে যায়। তার পরেই হয় বিস্ফোরণ।
বিস্ফোরণের ফলে গুদামে আগুন ধরে যায়। দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ঘটনাস্থলে বাজির এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তিন জন শ্রমিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় আরও ১ শ্রমিকের।
কালীপুজোর (kali pujo) আগেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার অভিযানে নেমেছে পুলিস প্রশাসন। বাদ পড়েনি শহর কলকাতার একাধিক জায়গায় তল্লাশি করা। আর এই তল্লাশি করেই সোমবার ফের উদ্ধার ১১৫ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি (fireworks)। উদ্ধার করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিস (police), ঘটনায় গ্রেফতার এক। সল্টলেকের (salt lake) ইসি মার্কেট থেকে গ্রেফতার (arrest) করা হয় ধৃতকে।
জানা যায়, রবিবার রাতে ইসি মার্কেটের সামনে একটি গাড়ি থেকে মাল নামাচ্ছিল বেশ কয়েকজন। সেই সময়ই টহলরত পুলিসের সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারা যায়, ওই বাক্সগুলিতে নিষিদ্ধ শব্দবাজি রয়েছে। এরপর ঘটনাস্থল থেকে নিমতার বাসিন্দা শুভাশিস মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিস। সোমবার তাঁকে বিধাননগর আদালতে তোলা হয়।
এদিকে, মুর্শিদাবাদেও (Murshidabad) একই ঘটনা। কালীপুজোর আগেই একাধিক আতসবাজি-সহ এক ব্যক্তিকে আটক করে রেজিনগর থানার পুলিস। জানা যায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে একটি দোকানে অভিযান চালায় রেজিনগর থানার পুলিস। আর সেখান থেকেই উদ্ধার হয় এই আতসবাজি। সেখানে মজুত থাকা পাঁচ হাজার চকলেট বোম, তিন হাজার কালিপটকা ও আরও সাড়ে তিন হাজার অন্য আতসবাজি উদ্ধার করেছে পুলিস।
কালীপুজোর আগে একাধিক জায়গায় তল্লাসি চালাচ্ছে পুলিস (police)। এতেই উদ্ধার হয়েছে একাধিক নিষিদ্ধ বাজি (Banned fireworks)। গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। এবার ফের বিপুল পরিমাণে নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করল পুলিস। কলকাতার (Kolkata) বিভিন্ন এলাকা থেকে ১ হাজার কেজিরও বেশি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করা হয়েছে বলে সূত্রে খবর।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে মেদিনীপুরে (Medinipur) নিষিদ্ধ আতসবাজি পাচার হওয়ার আগেই মোট ৮৪০ কেজি বাজি-সহ পরিবহণ সংস্থার মালিককে গ্রেফতার করেছে পোস্তা থানার পুলিস। উক্ত সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল ও আশপাশে তীব্র তল্লাশি চালানো হয়। অনেকক্ষণ অনুসন্ধানের পর প্রায় ৮৪০ কেজি আতসবাজি উদ্ধার! বড় বাজারের কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট থেকে মেদিনীপুরে পাচারের জন্য এই বিপুল পরিমাণে বাজি মজুত হচ্ছিল। উদ্ধার হয় ২৮ বাক্স নিষিদ্ধ আতসবাজি। ধৃতদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা রুজু করেছে পোস্তা থানার পুলিস।
প্রসূন গুপ্ত: প্রায় প্রতি বছর নিয়ম করে একটি নির্দিষ্ট ডেসিবেল বেঁধে দিয়ে শব্দবাজি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা মানে কতজন? মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ রায়ের আমলে নকশাল আন্দোলন দমন করে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আপাতত শব্দবাজি বন্ধ থাকুক। সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের বক্তব্য পরিষ্কার ছিল, কোনটা শব্দবাজি আর কোনটা বোমা বোঝা মুশকিল। কাজের কাজ হয়েছিল, ৭২-এর কালীপুজোয় সতর্ক ছিল বাঙালি। এরপর শব্দবাজি নিয়ে যথেষ্ট আইন আদালত নিয়ম কানুন হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রয়াত বিচারপতি ভগবতী প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইনজীবী গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায় শব্দবাজিতে একেবারে নিষেধাজ্ঞা না বসিয়ে শব্দের পরিমান কমিয়েছিলেন। ৯০ ডেসিবল থেকে কমে ৬৫ ডেসিবল করা হয়েছিল। প্রথম প্রথম এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে ভালোই কাজ হয়েছিল। ধরপাকড়, চিহ্নিত শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত ইত্যাদি ইত্যাদি।
বাম আমলে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু একবার ১৯৯৭-এ নির্দেশ দিয়েছিলেন কোনও শব্দবাজি ফাটানো যাবে না। সে বছর বাংলায় একটিও শব্দবাজি পাওয়া যায়নি কালীপুজোয়। ব্যস ওই একবছর, পরের বছর থেকে ফের কালীপুজোর দিন কয়েক আগে থেকেই দুমদাম শব্দ।
ভোট বরাবর রাজনীতিতে বড় বালাই, কাজেই বাজি ফাটানো আটকাবে কে? মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অবশ্য এসব বিতর্ক থেকে দূরে থাকতেন চিরকাল। ২০১১-তে বাংলার রাজনীতিতে শাসকের পালা বদল। বিপুল জনসমর্থন নিয়ে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাথমিকভাবে এই শব্দবাজি, আতসবাজি নিয়ে সরকার খুব একটা মাথা গলায়নি। কিন্তু একটা সময় ক্রমেই বাড়তে থাকে শব্দের তাণ্ডব। ৬৫ ডেসিবেল ছেড়ে প্রবল শব্দবাজির আওয়াজে গমগম করতো দীপাবলি উৎসব।
এখন তো কালীপুজোর উদ্যোক্তা কোনও না কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাই শব্দবাজি আটকানোয় খানিকটা গড়িমসি প্রশাসনের। এই অভিযোগ হামেশাই করে আম জনতা। সম্প্রতি কোর্টের আদেশ তো ছিলই, তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছেন জনগণের কাছে বাজির ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত করতে। পুলিসকে দিয়েছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশ। শনিবার বিরাটি-সহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিস পথে নেমেছে। মাইকিং করে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে শব্দবাজির বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। এসব তো ঠিক আছে কিন্তু রাত বাড়লে কে আটকাবে বাজি? দক্ষিণ দমদম এই বিষয়ে প্রায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবু আশায় অসুস্থ, বৃদ্ধ মানুষ, যদি কালীপুজোর আগে একটু সতর্ক এবং সক্রিয় হয় প্রশাসন।
বাজি ফাটানো নিয়ে কড়াকড়ি সত্ত্বেও গত বছর অন্য চিত্রই দেখা গিয়েছিল রাজধানী দিল্লিতে। দীপাবলিতে (Diwali) দিল্লিতে সবরকমের বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ (Firecrackers banned) করেছিল পরিবেশ আদালত। কিন্তু সেসব তোয়াক্কা না করেই দেদার দীপাবলির রাতে দিল্লির আকাশ ঢেকেছিল কালো ধোঁয়ায়। দূষণ মাত্রায় বিশ্বের মধ্যে দিল্লি (Delhi Pollution) রয়েছে প্রথমে। আর তাই এবার আরও কড়াকড়ি দিল্লি সরকার।
দিল্লিতে আগামী বছরের ১ লা জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে বাজি, পটকা বিক্রি এবং ডেলিভারি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যে কোনও ধরনের বাজি উৎপাদন, স্টোরেজ, বিক্রি এবং ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী (Delhi Environment Minister) গোপাল রাই (Gopal Rai) এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, “দিল্লির মানুষকে দূষণের বিপদ থেকে বাঁচাতে গত বছরের মতো এবারও সব ধরনের পটকা উৎপাদন, মজুদ, বিক্রি ও ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যাতে দূষণের হাত থেকে মানুষের জীবন বাঁচানো যেতে পারে। এ বার দিল্লিতে অনলাইনে পটকা বিক্রি এবং ডেলিভারি নিষিদ্ধ করা হবে। এই নিষেধাজ্ঞা ১ জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর করার জন্য দিল্লি পুলিস, ডিপিসিসি এবং রাজস্ব বিভাগের সঙ্গে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।”