
বলিউডে (Bollywood) দশকের পর দশক সিনেমা করে আজ বহু অভিনেতারা (Actors) প্রতিষ্ঠিত। তাঁদের এখন নাম-ডাক, যশ-প্রতিপত্তি সবই হয়েছে। মাঝে মধ্যেই নানা প্রতিবেদনে তাঁদের আর্থিক উপার্জন, সম্পত্তির হিসেব নিয়ে আলোচনা করা হয়। অভিনেতারা হয়তো তাঁদের সম্পত্তির হিসেবে খতিয়ে দেখেন না। আজ যারা এই ক্ষমতার শীর্ষে, একসময় তাঁদের দিন কেটেছে দারিদ্রতায়। বলিউডে আসার পর অবশ্য ভাগ্যের চাকা ঘুরে গিয়েছিল।
অভিনেতা জ্যাকি শ্রফ ২০০৩ সালে প্রবল অর্থ কষ্টে ভুগেছিলেন। তাঁর অভিনীত সিনেমা 'বুম' মুক্তি পাওয়ার পরই এমন সমস্যায় পড়েছিলেন অভিনেতা। তাঁর সঙ্গে সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, গুলশন গ্রোভার, জিনাত আমান, ক্যাটরিনা কাইফ সহ প্রমুখ অভিনেতারা। অর্থ সঙ্কট এতটাই বেড়েছিল যে জ্যাকিকে নিজের বাড়ি বিক্রি করতে হয়েছিল।
অভিনেতা অনুপম খেরও আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন। ২০০৫ সালে তাঁর প্রযোজনায় মুক্তি পেয়েছিল 'ম্যায়নে গান্ধীকো নেহি মারা' সিনেমাটি। এই সিনেমার জন্য নাকি ২০০৪ সালে নিজের ব্যাঙ্ক প্রায় খালি করে দিয়েছিলেন অনুপম।
অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, '২০০০ সালে সকলে নতুন দশক উদযাপন করছিলেন আর আমি আমার খারাপ সময়। আমার কাছে কোনও সিনেমা ছিল না, অর্থ ছিল না।' বাবার আর্থিক অনটন দেখে নাকি অভিষেক বিদেশে লেখাপড়া মাঝপথে ফেলে বাবাকে সাহায্য করতে দেশে ফিরে এসেছিলেন।'
অভিনেতা আমির খানও বহু সাক্ষাৎকারে নিজের খারাপ সময়ের কথা স্বীকার করেছিলেন। অভিনেতার বাবা তাহির হুসেন একজন পরিচালক ছিলেন। তিনি সিনেমা তৈরির জন্য বহু অর্থ ধার করেছিলেন। সেই অর্থ চোকাতে প্রায় ৯ বছর অর্থ কষ্টে ভুগতে হয়েছিল আমিরকে।
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের (Economic Crisis) মুখে পাকিস্তান (Pakistan)। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার গোটা দেশ। বেড়ে গিয়েছে আটা-ময়দার দাম। একমুঠো আটার জন্য রীতিমতো লড়াই চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারও তলানিতে ঠেকেছে। এর মধ্যেই আরও বড় ধাক্কা পাকিস্তানের জন্য। এখন প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়ার জন্যও কসরত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধ (Medicine) এবং দেশে ওষুধ তৈরিতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমদানি করার ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়েছে। ওষুধ ও চিকিৎসাগত সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে ডাক্তাররা অস্ত্রোপচার করতে প্রস্তুত নয়। পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটারে মাত্র দু’মাসেরই অ্যানস্থেশিয়া করার সামগ্রী রয়েছে। এর ফলে হাসপালের কর্মীরা চাকরিহীন হয়েও পড়তে পারেন।
বর্তমানে ঋণের দায়ে ডুবেছে পাকিস্তান। এই বিপদ থেকে পাকিস্তানকে উদ্ধারের পথও দেখা যাচ্ছে না। একেবারে বিপর্যস্ত দেশ। জনসাধারণও নেই দেশের পাশে।আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল থেকে ঋণ পাওয়ার বিষয়ে এখনও নিশ্চয়তা পায়নি পাকিস্তান। ধীরে ধীরে আরও অন্ধকারে ডুবছে সে দেশ। এই অর্থনৈতিক সঙ্কটের ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থাতেও।
উল্লেখ্য, এদিকে ইতিমধ্যেই তা দেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার বা জিডিপি পার করে গিয়েছে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই পাকিস্তানকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ মেটানোর কথা। গোটা অর্থবর্ষে মোট ২২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ মেটাতে হবে। যেখানে পাকিস্তানের ফরেক্স লেভেল বা বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডার ৩ বিলিয়নের নীচে নেমে গিয়েছে, সেখানে এই বিপুল পরিমাণ ঋণ মেটানো কার্যত অসম্ভব।
গত সপ্তাহে চিন (China) সফরে গিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। তখনই চিনের তরফ থেকে পাকিস্তানকে (Pakistan) আর্থিক সহায়তার ইঙ্গিত মিলেছিল। সোমবার তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping)। তবে এখন প্রশ্ন হচ্ছে কত টাকা আর্থিক সাহায্য করছে (financial crisis) চিন সরকার? সূত্র মারফত খবর, পাকিস্তানকে ৯০০ কোটি ডলার (প্রায় ৭৩ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা) সাহায্য প্রদান করতে চলেছে চিন।
গত বৃহস্পতিবার শাহবাজ়ের চিন সফরের সময় চিনা প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, জবাবে পাক অর্থমন্ত্রী ইশাক দার বলেন, ‘‘চিন্তার কারণ নেই। আমরা হতাশ করব না।’’ এর পর তিনি শনিবার বলেছিলেন, ‘‘দুর্বল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার চেষ্টায় চিনের থেকে ৯০০ কোটি এবং সৌদি আরবের থেকে ৪০০ কোটি ডলার সাহায্য পাবে পাকিস্তান।’’
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সোমবার বেইজিংয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, "পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য যতটা সম্ভব সহায়তা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে চিন। আমরা তা করে আসছি, এবং আমরা তা অব্যাহত রাখব।" পাক রাজনীতিতে সাম্প্রতিক অস্থিরতা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উপর গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করে ঝাও বলেন, ‘‘আমরা ওঁর (ইমরান) দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’’
শরিফের বেইজিং সফরের সময়, শি জিনপিং প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সার্বভৌম ঋণ, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ঋণের ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পুনঃঅর্থায়ন এবং প্রায় ১.৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মুদ্রার অদলবদল বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
অর্থসঙ্কটে (Financial Crisis) ভুগছে পাকিস্তান (Pakistan)। পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে গিয়েছে যে লাহোর (Lahore) চিড়িয়াখানার সাফারি পার্কের সিংহদের (Lion) খাবার জোগাড় করাও অসাধ্য হয়ে উঠেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের। তাই পাকিস্তান সরকারের অনুমোদন নিয়ে ১২টি সিংহকে নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পশুপ্রেমীরা। তাঁরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার পাকিস্তানে আর্থিক সঙ্কট ক্রমশ বাড়তে থাকায় ব্যয়সঙ্কোচের নীতি নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী। পশুদের জন্য সরকারের তরফে যে অর্থ বরাদ্দ করা ছিল তাতেও দেখা দিয়েছে টানাপোড়েন। এই পরিস্থিতিতে লাহৌর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সেখানকার সাফারি পার্কের বাসিন্দা ২৯টি আফ্রিকান সিংহের মধ্যে ১২টিতে নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, লাহোর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি সিংহের জন্য বেসিক মূল্য নির্ধারণ করেছেন ৭০০ ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় দেড় লক্ষ টাকা । আশা করা যাচ্ছে ১২ টি সিংহ বিক্রি করে পাওয়া যাবে প্রায় ২ মিলিয়ন টাকা । নিলামে অংশ নিতে পারবেন যে কেউ। তবে ক্রেতাকে প্রমাণ দিতে হবে তিনি নিলামে কেনার পর বন্যপ্রাণের উপযুক্ত যত্নআত্তি করতে পারবেন।