ফের ট্রেনে (Train) ভয়াবহ ঘটনা। ট্রেনে উঠতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন একের পর এক মানুষ। এমনকি দু'জনের মৃত্যুও ঘটল। রবিবারের ঘটনাটি পাটনা-কোটা এক্সপ্রেস ট্রেনের (Patna-Kota Express Train)। সূত্রের খবর, এসি ট্রেনের কামরার ভেতরে ঢুকতেই একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়েন যাত্রীরা। বারাণসী থেকে মথুরার পথে যাওয়ার সময় এই ট্রেনে ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। এসি কামরার ভেতরে সুস্থ মানুষদের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাকি যাত্রীরা।
সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যায় উত্তর মধ্য রেলওয়ের আগ্রা বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) প্রশস্তি শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, রবিবার পাটনা-কোটা এক্সপ্রেস-এর যাত্রীদের হঠাৎ করে শরীর ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। এই সম্পর্কে আগ্রার রেলওয়ে কর্মকর্তাদের কাছে খবর পাঠানো হয়। এরপরই এক ৬২ বছরের বৃদ্ধা ও ৬৫ বছরের বৃদ্ধকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ওই কামরায় মোট ৯০ জন যাত্রী ছিলেন।
জানা গিয়েছে, ট্রেনে ওঠার পর থেকেই ওই বৃদ্ধা বমি বমি ভাব এবং অসুস্থতা অনুভব করতে শুরু করেন। তাঁকে সামাল দিতে অন্যান্যরা ছুটে আসার পর একজন বৃদ্ধও একইভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের সাহায্য় করার জন্য ট্রেনের আরপিএফ ও রেল আধিকারিকরা ছুটে আসেন। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। ৬২ বছরের এক বৃদ্ধা ও ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ যাত্রীর মৃত্যু হয়। এছাড়াও এই ঘটনায় ৬ জন অসুস্থও হয়ে পড়েন। আগ্রা রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছনো মাত্রই তাঁদের রেলওয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়।
তবে যাত্রীদের ঠিক কারণে মৃত্যু হয়, তা এখনও জানা যায়নি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই তা জানা যাবে। তবে প্রশস্তি শ্রীবাস্তবের মতে, খাবারে বিষক্রিয়া বা ডিহাইড্রেশনের জন্য হতে পারে মৃত্যু। এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
বুধবার হাওড়া (Howrah) থেকে বাতিল প্রায় ৩৩টি এক্সপ্রেস ট্রেন (Express Train)। সেই তালিকায় রয়েছে পুরুলিয়া-সাঁতরাগাছি রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, হাওড়া-টিটিলাগড় ইস্পাত এক্সপ্রেস, শালিমার-পুরী ধৌলি এক্সপ্রেস-সহ একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। সেইসঙ্গে বেশ কিছু লোকাল ট্রেন ও মেমু ট্রেন বাতিল করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। আবার কিছু, ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি খড়্গপুর পর্যন্ত আসবে। হাওড়া বা শালিমারে আসবে না। এছাড়া, ডাউন ট্রেন দেরিতে আসায় কিছু ট্রেনের সময় সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। এর জেরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
১২৭০৩ হাওড়া-সেকেন্দ্রবাদ ফলকনুমা এক্সপ্রেস, ২২৯০৬ শালিমার-ওখা এক্সপ্রেস, ১৫০২১ শালিমার-গোরখপুর এক্সপ্রেস, ১২৮১০ হাওড়া-ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস (মুম্বই) মেলের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে ।
বাতিল ট্রেনের তালিকা-
১২৮৮৪ পুরুলিয়া-সাঁতরাগাছি রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস
১২৮৭১ হাওড়া-টিটিলাগড় ইস্পাত এক্সপ্রেস
১২৮৮৩ সাঁতরাগাছি-পুরুলিয়া রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস
২২৮৬২ কাঁটাবাঞ্জী-হাওড়া ইস্পাত এক্সপ্রেস
১২৮২১ শালিমার-পুরী ধৌলি এক্সপ্রেস
১২৮২২ পুরী-শালিমার ধৌলি এক্সপ্রেস
১২৮১৪ টাটানগর-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেস
১২৮২৮ পুরুলিয়া-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস
২২৮৯১ হাওড়া-রাঁচি ইন্টারসিটি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস (ভায়া টাটানগর)
বাতিল লোকাল ট্রেন-
৩৮৭০৩ হাওড়া-খড়্গপুর লোকাল
৩৮৮০৫ হাওড়া-মেদিনীপুর লোকাল
৩৮৮১৫ হাওড়া-মেদিনীপুর লোকাল
৩৮৫০১ হাওড়া-বালিচক লোকাল
৩৮৭১৭ হাওড়া-খড়্গপুর লোকাল
৩৮৮০৯ হাওড়া-মেদিনীপুর লোকাল
৩৮৭০৪ খড়্গপুর-হাওড়া লোকাল
৩৮৭১৪ খড়্গপুর-হাওড়া লোকাল
৩৮৫০২ বালিচক-হাওড়া লোকাল
৩৮৭০৮ খড়্গপুর-হাওড়া লোকাল
৩৮৮১২ মেদিনীপুর-হাওড়া লোকাল
দুয়ারে পুরী! নেপথ্যে দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। রাজ্য পেতে চলেছে দ্বিতীয় বন্দে ভারত (Vande Bharat) এক্সপ্রেস। বাংলায় এবার শীঘ্রই হাওড়া-পুরী (Howrah-Puri) রুটে এই সেমি হাইস্পিড ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত। বাঙালির প্রিয় ডেস্টিনেশন 'দীপুদা'-র দা অর্থাৎ দার্জিলিংকে ইতিমধ্যে জুড়েছে হাওড়া-এনজেপি বন্দে ভারত। এবার পু অর্থাৎ জগন্নাথ ধাম পুরীকেও জুড়তে চলেছে বন্দে ভারত। এই রুটে বন্দে ভারত চালু হলে মাত্র সাড়ে ছয় ঘন্টায় পৌঁছানো যাবে পুণ্যধাম পুরীতে।
শুক্রবার, প্রথম পর্বে হাওড়া এবং পুরীর মধ্য়ে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ফুল ফেইজ ট্রায়াল রান চলে। সকাল ৬:১০-এ হাওড়া থেকে পুরীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং দুপুর ১২:৩৫-এ পুরী পৌঁছয় বন্দে ভারত। এ রাজ্যে একমাত্র খড়গপুর স্টেশনে দাঁড়াবে অত্যন্ত দ্রুতগতির এই ট্রেন।
সূত্রের খবর, ফুল ফেজ অপারেশনের আগে আরও দুই দফায় ট্রায়াল রান হওয়ার কথা। দ্বিতীয় ট্রায়াল ৩০ এপ্রিল হাওড়া থেকে ভদ্রক এবং এরপর ভদ্রক থেকে হাওড়া পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। মে মাস থেকেই হাওড়া পুরী রুটে যাত্রা শুরু করতে পারে বন্দে ভারত।
এবার চলন্ত ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় (AC Coach) মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে কাঠগড়ায় খোদ রেলকর্মী। তবে এই ঘটনার (Rape Attempt) সময় মদ্যপ ছিলেন অভিযুক্ত। এমনটাই রেল পুলিস সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, দিল্লিগামী ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার সেই মদ্যপ রেলকর্মী (Drunken State)। উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের এই ঘটনায় স্পষ্টতই যাত্রী সুরক্ষা প্রশ্নচিহ্নের মুখে। পুলিস ধৃতের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে। মহিলার বয়ান রেকর্ড হয়েছে।
জানা গিয়েছে, আত্মীয়র সঙ্গে দেখা করতে সুলতানপুর থেকে দিল্লিগামী এক এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপেছিলেন এক তরুণী, সঙ্গে ছিল তাঁর মেয়েও। বাতানুকূল সংরক্ষিত আসনেই বসেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, রাত বাড়তেই এক ব্যক্তি এসে তাঁর সঙ্গে গায়ে পড়ে কথা বলতে চান। তিনি ওই ব্যক্তিকে এড়ানোর জন্য নিজের স্বামীকে ফোন করেন।
সে সময় ফিরে গেলেও গভীর রাতে আবার ফিরে আসেন ব্যক্তি। মহিলা জানান, 'সেই সময় ট্রেনের কামরায় আলো জ্বলছিল না। তিনি মেয়ের পাশেই শুয়েছিলেন। তাঁদের কামরায় ছিলেন আরও ৭ জন। প্রত্যেকেই ঘুমোচ্ছিলেন। সেই সুযোগ নিয়ে ওই ব্যক্তি মত্ত অবস্থায় মহিলার গায়ে হাত দেন। মহিলা বাধা দিলে হাত চেপে ধরা হয়। চিৎকার-চেচামেচিতে অন্য সহযাত্রীরা জেগে গেলে, ওই ব্যক্তিকে ঠেলে বার করে দেওয়া হয়। টিটিইর কাছে গিয়ে অভিযোগ জানালে জানা যায়, ওই ব্যক্তি সেই বাতানুকূল কামরার দায়িত্বে ছিলেন। পরিভাষায় ‘কোচ অ্যাটেন্ডেন্ট’। রেলপুলিস তাঁকে গ্রেফতার করেছে।'
শুক্রবার চারদিনে পড়লো কুড়মি (kurmi) সমাজের রেল রোকো আন্দোলন। পুরুলিয়া (Purulia) কুস্তাউর রেল স্টেশনে (railway station) হওয়া এই রেল অবরোধ জেরে বিপাকে সাধারণ রেল যাত্রীরা। প্রায় ৭২ ঘণ্টা অতিক্রম, তবুও নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। যতক্ষন না সিআরআই (CRI) রিপোর্ট সংশোধন করে রাজ্যে সরকার কেন্দ্র সরকারকে পাঠাচ্ছে ততক্ষণ তাঁদের এই আন্দোলন চলবে।
শুক্রবার অবশেষে সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠালো রাজ্য সরকার। তবে সেই রিপোর্ট এ কী আছে, তা দেখে আলোচনা করে রেল অবরোধ প্রত্যাহর করবে কুড়মি সমাজ, এমনটাই জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যে তার একটি প্রতিলিপি আদিবাসী কুড়মি সমাজের সদস্যদের হাতে তুলে দেয় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের দেওয়া চিঠিতে বরফ গলেনি, তাই আন্দোলন তুলতে ব্যর্থ প্রশাসন। ফলে অব্যাহত পুরুলিয়া রেল অবরোধ। বৃহস্পতিবার পর শুক্রবার সকাল থেকে আন্দোলনে মধ্য দিয়ে রেললাইনে বসে চলছে খাওয়া দাওয়া। রেলট্র্যাকেই ঘুমোচ্ছেন আন্দোলনকারীরী। এক কথায় চারদিনের এই রেল অবরোধের জেরে পুরুলিয়া জনজীবন বিপর্যস্ত। যদিও রেল আধিকারিক থেকে জেলা প্রশাসন ধাপে ধাপে কুড়মি সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করলেও তাতে কাজ হয়নি। রেল অবরোধের জট কাটাতে ব্যর্থ প্রশাসন। এর জেরে সার দিয়ে একাধিক স্টেশনে দাঁড়িয়ে দূরপাল্লার ট্রেন। বাতিল হয়েছে কয়েকজোড়া এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেন।
অন্যদিকে ঝাড়গ্রামে কুড়মি সমাজের অবরোধ আন্দোলনের জেরে জাতীয় সড়কে ট্রাকের লম্বা লাইন। ধাপে ধাপে প্রায় ওড়িশা বর্ডার জামশোলা পর্যন্ত ট্রাক দাড়িয়ে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন সাধারণ যাত্রীরা। রাস্তায় লাইন দিয়ে দাড়িয়ে পিয়াজের ট্রাক। যা ইতিমধ্যে নষ্ট হতে শুরু করেছে। আরও নানা ধরনের সামগ্রীর একই হাল। ঝাড়গ্রাম বাজারের কাঁচামালের অবস্থাও একই রকম। এখান থেকে ঝাড়খন্ড, ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে সব্জী পাইকারি করা হত। যা এই মুহুর্তে পুরোটাই বন্ধ। বাইরের সব্জিও ঢুকছে না ঝাড়গ্রামে। ফলে পুজোর আগে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা।