রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফতারির পরই একাধিক জায়গায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতারিতরা প্রতারকদের বাড়ি গিয়েও চড়াও হয়েছে, কিন্তু ফল কিছুই হয়নি। যে টাকা গিয়েছে তা আর ফেরত পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছেন বেশ কিছু জায়গায়, আবার অনেকেই পলাতক। সেই তালিকায় এবার নাম জুড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুর (Sonarpur) থানা এলাকা। বুধবার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার (arrest) করা হয় একই সঙ্গে বাবা ও ছেলেকে।
পুলিস (police) সূত্রে খবর, সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ১৫৬ জনের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার মতো এই দুই অভিযুক্ত নিয়েছিল, এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিস। এরপর মঙ্লবারই এই ঘটনায় আটক করা হয়েছিল পেশায় চিকিৎসক উত্তম মুখোপাধ্যায় ও তার ছেলে অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে। সেদিন তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ২২ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। পাশাপাশি অশোকস্তম্ভ দেওয়া প্রচুর সরকারি নথি উদ্ধার হয়েছে। এরমধ্যে চাকরির নিয়োগপত্রও রয়েছে। যদিও সেগুলি নকল নাকি আসল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তবে ধৃতরা তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে।
তবে ধৃত অভিযুক্তদের সঙ্গে আর কারও যোগাযোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
ফুড ইন্সপেক্টর (Food Inspector) নিয়োগে বেনিয়মের মামলা এক যুগ পরে ফের বিচারের জন্য ফিরল স্যাটে (SAT)। ওই নিয়োগে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি (Corruption) হয়েছে কি না, আগামী দু মাসের মধ্যে তা খতিয়ে দেখে রায় দিতে হবে স্যাটকে।
এর আগে ২০১০ সালে ৬৫০ জন ফুড ইন্সপেক্টর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০১২ সালে স্যাট মামলায় কোনও সমস্যা নেই বলে জানিয়ে দেয়। হাইকোর্টে মামলা এলে ডিভিশন বেঞ্চ স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির তদন্ত করতে নির্দেশ দেয় স্যাটকে। সেই মামলায় গত বছর স্যাট আগের নিয়োগ তালিকা বাতিল করে নতুন তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়। ফের মামলা আসে হাইকোর্টে। আজ বিচারপতি ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির বিচার করতে হবে স্যাটকে।
উল্লেখ্য, এর আগে ফুড ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগের চূড়ান্ত প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চরম অস্বচ্ছতা, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কাট অফ মার্কস না প্রকাশ করা, রিজার্ভেশন নীতি প্রয়োগ না করা ইত্যাদি কারণের জন্য এই চূড়ান্ত প্যানেল বাতিল করে ট্রাইবুনাল।
৯৫৭ টি শূন্য পদে ফুড ইন্সপেক্টর নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার বেনিয়মের অভিযোগ তুলে মামলা হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই চূড়ান্ত প্যানেল বাতিল করে দেয় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল। ওই নির্দেশের ফলে ৯৫৭ জনের চাকরি নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
টেট (TET) নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) ফের তলব করল ইডি। আজ দুপুর দুটো পর্যন্ত তাঁকে হাজিরা দেওয়ার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাত্ ১৫ আগস্ট তাঁকে তলব করে ইডি(ED)। কিন্তু স্বাধীনতা দিবস থাকায় তিনি হাজিরা দেননি। এবার নির্দিষ্ট সময় পর হাজিরা না দিলে সেক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপের(legal step) সম্ভাবনা তীব্র হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। আজ পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে বিকেলে মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সম্ভাবনা ইডির, এমনটাই সূত্র মারফত জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুলাই টেট মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন মানিক ভট্টাচার্য। সেদিন তিনি নির্ধারিত সময়ের আগেই সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে যান। তারপর চলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। ইডি সূত্রে জানা গেছে, মানিক ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে তল্লাশিতে মেলে একটি সিডি, যাতে ছিল সংশোধিত তালিকার ২৬৯ জনের নাম ও তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। মানিক ভট্টাচার্যকে ওই সংশোধিত তালিকা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে ইডি সূত্রে খবর।
আজ পরিবর্তিত পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন তদন্তকারী ইডি আধিকারিকরা। তারপরই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।