ভূপতিনগরে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ওপর হামলার ঘটনায় এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনে পুলিস প্রশাসনের বিরুদ্ধে নালিশ বিজেপির। মূলত পুলিস সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার গ্রামীণ পূর্ব মেদিনীপুর, মহকুমা পুলিস অফিসার কন্টাই এবং ভূপতিনগরের ওসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করছে পুলিস। কিন্ত পুলিসের এই পক্ষপাতিত্ব কাম্য নয়। তাই পুলিস প্রশাসনের বিরুদ্ধে কমিশনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি বিজেপির।
প্রসঙ্গত, ভূপতিনগরকাণ্ডের তদন্তে অভিযোগ উঠেছিল অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে আটক করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছিল এনআইএর তদন্তকারী আধিকারিকরা। বাঁশ-লাঠি নিয়ে সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর হামলার ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছে সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর শাসকদলের দুষ্কৃতিদের ধেয়ে আসার ঘটনা। কিন্তু বঙ্গে সত্য উদঘাটন করতে গেলে কেন বার বার আক্রান্ত হতে হবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকেই? স্থানীয় পুলিস প্রশাসন কেন নিরুত্তাপ এই ঘটনায়। তবে কি সত্যিই প্রশাসনের অঙ্গুলিহেলনেই চলে পুলিস? কমিশনের হস্তক্ষেপেই মিলবে সব প্রশ্নের জবাব তা বলাই বাহুল্য।
বৃহস্পতিবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে বিস্ফোরক বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি ইউসুফ পাঠান ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। যদিও ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন আক্রমণের জন্য দিলীপ ঘোষকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন।
তৃণমূল এবার রেকর্ড গড়ার আশায় বহরমপুরে প্রার্থী করেছে ইউসুফ পাঠানকে। এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষের সুরে বলেন, ইউসুফ পাঠান থাকেন গুজরাতে। একটা শব্দ বোঝেন না, বাংলায় তাঁকে নিয়ে এসেছে। তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের টিকিটে কেউ দাঁড়াতে চাইছে না। প্রার্থী পাচ্ছে না শাসক দল।
দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেছেন, পুরনোরা রিজেক্ট হয়ে যাচ্ছে তাও কিছু লোককে পাল্টাতে পারেনি, রেখেছে। তাঁদের হোয়াইটওয়াশ করার চেষ্টা হচ্ছে। আর প্রার্থী খুঁজতে খুঁজতে বিহার পার হয়ে গুজরাত চলে গিয়েছে। তৃণমূলের অবস্থা বোঝাই যাচ্ছে, যার টিকিট কেউ দাঁড়াতে চায় না, তারা জিতবে টা কী করে! অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার ডায়মন্ড হারবারে হাই প্রোফাইল দলীয় বৈঠক করেছেন। সেখানে একলক্ষের বেশি ভোটে জেতার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ওখানে সবার সব সময় হাই প্রোফাইল থাকে, লো প্রোফাইল হয় না। ওখানে একটা আলাদা অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চলে, ওয়েস্ট বেঙ্গল গর্ভমেন্টের থেকে আলাদা।
নাম না করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রকে উনিও আলাদা দেখাতে চান। তিনি বলেন, সরকারের টাকা নেই, ওখানে বিলিয়ে দেয় কী করে? এত খরচা করেছেন। একটাই লোকসভা আছে নাকি? বাকি ৪১ টার কী হয়েছে, কেন সরকার দেখে না। এদিক ওদিক লুটপাট করে সব লোককে দেখাচ্ছেন! দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, ডায়মন্ড হারবারের মানুষের জীবনে কী উন্নতি হয়েছে, সামাজিক কি পরিবর্তন হয়েছে, বড় বড় কথা বলেন।
শান্তনু ঠাকুর, রেখা পাত্রকে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাধা দেওয়া ছাড়া কী করবে তারা? রেখা পাত্রকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছিল, সন্দেশখালি তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। রেখা পাত্রকে বুকে টেনে নিয়েছে। এই ধরনের রাজনীতি এবার বাংলা থেকে বিদায় নেবে, বলেছেন তিনি।
প্রসূন গুপ্তঃ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যের কিংবা লোকসভা ভোটে প্রচারের নানান রূপ দেখা যায়। পন্ডিত নেহেরু অবিশ্যি এসবে বিশ্বাস করতেন না, কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী ভোট প্রচারে গেলে সারা দেশ জুড়ে তাঁকে ঘুরতে হত এবং একেকটি রাজ্যে গেলে পারদপক্ষে সেখানকার পোশাক (অবশ্যই শাড়ি) পড়তে দেখা যেত। রাজীব গান্ধীর প্রচারের সময়ে দেখা যেত নিজেই গাড়ি চালিয়ে এক স্থান থেকে অন্য কেন্দ্রে যেতেন। বাংলাতেও তাই দেখা যেত। জ্যোতি বসু অবিশ্যি কটাক্ষ করে বলতেন যে, পাইলট ছিলেন তাই অভ্যাসটি যায়নি, এখনও দেশটিকে এরোপ্লেন বলে মনে করেন। যাই হোক না কেন রাজীব কিন্তু ওসব পরোয়া করেননি। একই অভ্যাস অবশ্যই নরেন্দ্র মোদীরও রয়েছে। আসলে এঁরা যথেষ্ট সুদর্শন, কাজেই সেগুলো তাঁদের ইউএসপি বলেই ধরে নেওয়া হতো বা হয়।
তবে এই রাজ্যে বিভিন্ন পোশাকের বহর প্রথম দেখা গিয়েছিলো সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের মধ্যে। এরপর কমিউনিস্ট সরকারে পোশাক আশাক ইত্যাদি নেতাদের মধ্যে একেবারেই দেখা যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবিশ্যি জেলা ভিত্তিক নানান ব্যবহার করেছেন। জঙ্গলমহলে তাঁর সাঁওতালদের সঙ্গে নাচ বা গানে তাঁকে দেখা গিয়েছে। যদিও ভোটের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী একেবারেই ভিন্ন মুডে থাকেন। রাজ্য বিজেপিতে ভিন্ন রূপে নেতাদের দেখা গিয়েছে বিস্তর।
এবারের নির্বাচনে দেখা গেল, দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রচারে সবকটি দলই রং খেলায় মেতেছেন। দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর থেকে হুগলি বা বীরভূম সহ প্রায় প্রতিটি জায়গায় প্রার্থীরা মেতেছিলেন আনন্দ উৎসবে। বাদ নয় সিপিএম প্রার্থীরাও। আজকের প্রচারে কাঠখোট্টা ভাষণে মানুষ বোধহয় আনন্দ পায় না। এখন জমজমাট ভাষণ দিতে পারে হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র। সোশ্যাল নেটের যুগে নতুনত্ব আনতেই আজকের রাজনৈতিক দলে সেলিব্রেটিদের আনাগোনা। তাঁরা কোথাও খাবার পরিবেশন করছেন, কোথাও নিজেরাই খেতে বসেছেন। কোথাও পুজোতে খঞ্জনি বাজাচ্ছেন আবার আসন্ন ঈদ উপলক্ষে হাজিরা দিচ্ছেন ইফতারে। করতেই হবে, ভোট যে বড়োই বালাই।
রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের দামামা ইতিমধ্যেই বেজেছে। লাগু হয়েছে আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধিও। রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীদের তাই বাকসংযম, ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে বিরত থাকা, ভাষণে ভুয়ো তথ্য পরিবেশন না করা, ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার না করা, নারীর সম্মান-মর্যাদা বজায় রাখার মতো নানাবিধ নির্দেশিকা কঠোরভাবে পালনের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের। আর এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন তাপপ্রবাহকে ঘিরে একাধিক সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের।
বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বৈশাখ এবং জ্যৈষ্ঠ মিলিয়ে গ্রীষ্মকাল। নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত ৭ দফার ভোট নির্ঘন্ট অনুযায়ী, আগামী ১৯ শে এপ্রিল রাজ্যে প্রথম দফার ভোট, চলবে ১ লা জুন পর্যন্ত। গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহে যাতে ভোটারদের প্রাণ ওষ্ঠাগত না হয় তার জন্য নেওয়া হল একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। কী আছে সেই নির্দেশিকায়?
১) ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের মাথার উপরে ত্রিপল অথবা শেডের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২) দুপুর ১২ টা- দুপুর ৩ টে পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রের বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে।
৩) বেশি করে জলপান।
৪) জামা-কাপড় থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া এমনকি ছাতা বা টুপি ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই নির্দেশিকায়। প্রার্থীদের জন্যও রয়েছে একগুচ্ছ উপদেশ।
অতীতে দীর্ঘক্ষণ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার মতো একাধিক উদাহরণ রয়েছে এ রাজ্যে। এবার তাই আগেভাগেই সতর্কতা অবলম্বনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে এই ব্যবস্থাপনা পালনের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। গত পুর নির্বাচনেও কৃষ্ণনগর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের লাইনে অসুস্থ হয়ে লক্ষ্মী সাহা নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর সামনে এসেছিলো। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই আগাম সতর্কতা নির্বাচন কমিশনের।
আজই, শনিবার ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। শনিবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে ভোটের দিন ঘোষণা কমিশনের ফুল বেঞ্চের। এবার ৭ দফায় ৫৪৩ আসনে হতে চলেছে ভোট। লোকসভা ভোটের পাশাপাশি দেশজুড়ে ২৬টি কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে ভোট। ৪ জুন ভোট গণনা।
বাংলায় কবে কোথায় ভোট?
প্রথম দফা (১৯ এপ্রিল)-কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি
দ্বিতীয় দফা (২৬ এপ্রিল)-রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, দার্জিলিং
তৃতীয় দফা (৭ মে)- মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর
চতুর্থ দফা (১৩ মে)- বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বোলপুর, বীরভূম, বর্ধমান পূর্ব, বর্ধমান-দুর্গাপুর, আসানসোল
পঞ্চম দফা (২০ মে)- শ্রীরামপুর, ব্যারাকপুর, হুগলি, বনগাঁ, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, আরামবাগ
ষষ্ঠ দফা (২৫ মে)- পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, কাঁথি, তমলুক, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, বিষ্ণুপুর
সপ্তম দফা (১ জুন)- উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর, জয়নগর, বসিরহাট, বারাসত, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, দমদম
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এদিন জানিয়েছেন, গোটা দেশে ভোট কেন্দ্রের সংখ্য়া ১০ লক্ষ। দেশে মোট ভোটারের সংখ্য়া ৯৭ কোটি। তার মধ্য়ে মহিলা ভোটার ৪৭ কোটি এবং পুরুষ ভোটার ৪৯ কোটি। ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্য়ে ভোটারের সংখ্য়া ২১ কোটি। ১ কোটি ৮২ লক্ষ নতুন ভোটার। আজ থেকেই চালু নির্বাচনী আচারবিধি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে রাজ্যের ৪২টি আসনে মোট ৭ দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছিল। ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত চলেছিল বঙ্গের লোকসভা ভোট। তিনটি রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশে সাত দফায় লোকসভা ভোট হয়েছিল ২০১৯ সালে।
২০১৯-এ পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি লোকসভা আসনের প্রায় সবকটিতেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল মূলত তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যেই। ভোট প্রাপ্তির নিরিখে বাম-কংগ্রেস পিছিয়ে ছিল অনেকটাই। তৃণমূল জিতেছিল ২২টি আসনে। আর বিজেপির দখলে ছিল ১৮টি সিট।অন্যদিকে কংগ্রেস জিতেছিল দুটি আসনে। বামেরা খাতা খুলতেই পারেনি। এবারও লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে বিজেপি এবং তৃণমূলই।
২০২৪-র লোকসভা ভোট কবে? অবশেষে সেই দিনক্ষণ ঘোষণা করতে চলেছে, এমনটাই শুক্রবার জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। আগামীকাল অর্থাৎ শনিবারই লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হবে। শুক্রবার এই নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
শনিবার বিকেল ৩টের সময় সাংবাদিক বৈঠক করে লোকসভা ভোটের সূচি ঘোষণা হবে। সেই সঙ্গে সম্ভবত অরুণাচল প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও সিকিমের বিধানসভা ভোটের দিনও জানা যাবে। প্রসঙ্গত, একদফায় রাজ্যে ভোট করানোর দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অশান্তির আশঙ্কায় প্রতিবার সবচেয়ে বেশি দফায় ভোট হয় পশ্চিমবঙ্গে। এবার কত দফায় ভোট হবে সেটাই দেখার।
এদিকে মোদী সরকার রাষ্ট্রপতির কাছে এক দেশ এক নির্বাচনের প্রস্তাব পেশ করেছে। লোকসভা ভোটের সঙ্গে ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের ভোটের দিন ঘোষণার মধ্য দিয়ে কি বিজেপি সরকার সেই পথে পা বাড়াবে তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এদিকে সব রাজনৈতিক দলই ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এবার ৪০০ আসনে ভোটে জেতার দাবি করেছে বিজেপি।
দেশের নতুন দুই নির্বাচন কমিশনার হলেন জ্ঞানেশ কুমার এবং সুখবীর সিং সান্ধু। নতুন নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে তাঁর বাসভবনে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীও। বৈঠকে নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে জ্ঞানেশ কুমার এবং সুখবীর সিং সান্ধুর নাম বেছে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে কার্যত একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, নাম আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। আমাকে শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্য ডাকা হয়েছে।
লোকসভা ভোটের মুখে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনারের পদে ইস্তফা দেন অরুণ গোয়েল। তাঁর ইস্তফা নিয়ে সরগরম হয় জাতীয় রাজনীতি। অরুণ গোয়েলের ইস্তফায় সাধারণ নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশন কি কিছুটা ধাক্কা খেল? সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করে। এই আবহেই বৃহস্পতিবার দুই নতুন নির্বাচন কমিশনার পেল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
বেজে গিয়েছে লোকসভা ভোটের বাদ্যি। তবে নির্ঘন্ট প্রকাশের সম্ভাবনা মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, তামিলনাড়ু, জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তর প্রদেশের প্রাক নির্বাচনী প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পর দিল্লি ফিরে সবদিক বিচার করেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করবে কমিশন। ৩ থেকে ৫ মার্চ বঙ্গ সফরে ফুলবেঞ্চ। দেশের সব প্রান্তের পরিস্থিতি তাঁরা খতিয়ে দেখেছেন। স্বীকৃত আটটি রাজনৈতিক দল সহ প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন।তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এবার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকেই বিশেষভাবে কাজে লাগাতে চাইছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য অনুযায়ী আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কে কাজে লাগালে একেবারেই মসৃণ ভাবে পরিচালনা করা যাবে লোকসভা নির্বাচন।
ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্ঘণ্ট প্রকাশের অনেক আগেই এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হবে। সেই মোতাবেক ১লা মার্চ ১০০ কোম্পানি এবং ৭ই মার্চ ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে বাংলায়। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের মধ্যে একদিকে ভয় কাটানো, সাহস যোগানো, থেকে শুরু করে এলাকায় রুট মার্চ করার পাশাপাশি এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার কাজ করবে বাহিনী। ইতিমধ্যেই বাজারে নির্ঘন্ট প্রকাশ নিয়ে অনেক ভূয়ো খবর ছড়িয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক-এর দফতর থেকে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয়েছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যে।খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ থেকে সব রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা সকলেই এখন তাকিয়ে আছেন দেশের জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দিকে। আর সবকিছুর জল্পনার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন আগামী ১৩ ই মার্চের পর নির্ঘণ্ট ও প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে। এখন দেখার বিষয় একটাই অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন কী ভূমিকা পালন করে এবং কতটা তৎপর হয়।
লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। মাছের ভেড়ি নষ্ট, জমি দখল, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, মাঠ দখল, হাজার হাজার গাছ কেটে সাফ করার মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে শেখ শাহজাহান ও তাঁর দুই অনুগামী উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরার বিরুদ্ধে। প্রতিদিনই জনরোষ প্রকাশ্যে আসছে। এর মধ্যেই সন্দেশখালিতে বিশেষ নজর রাখছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন, এমনটাই জানা গিয়েছে।
সন্দেশখালির বিষয়ে নজর দিয়েই নতুন করে স্পর্শকাতর বুথ তৈরীর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা রয়েছে, ২০১৯ এবং ২১ এর নির্বাচনের সময় ছাড়াও বিগত কিছুদিন রাজ্যের যে যে জায়গাগুলিতে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে সেই জায়গাগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে যেন তালিকা তৈরি করা হয়। আর এখানেই কমিশন সূত্রে খবর, নতুন স্পর্শকাতর তালিকায় সন্দেশখালীর বুথ গুলোকে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৪ মার্চ রাজ্যে আসছে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তার আগেই সম্পূর্ণ স্পর্শকাতর বুথের তালিকা তলব কমিশনের।
সূত্রের খবর, সন্দেশখালির ঘটনায় প্রতিদিনের রিপোর্ট চাইছে কমিশন। অন্যান্য জেলারও সার্বিক রিপোর্ট তলব সিইও দফতরের। সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে একাধিক জেলায় অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিশেষ নজর কমিশনের, এমনটাই খবর। ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। সব মিলিয়ে নির্বাচনের আগে কমিশনের নজরে উত্তপ্ত সন্দেশখালি তা বলাই যায়।
আসন্ন ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নজরকাড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আসন্ন লোকসভার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে প্রত্যেক বুথেই থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যদিও ২০১৯ এবং ২০২১ সালে এই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলেও তা সম্পূর্ণভাবে মনিটর করেছে বিএসএফ। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সবকিছুই মনিটর করবে সিআরপিএফ। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত সব বিষয়ে কমিশন এবং মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে লিয়াঁজোর কাজ করবে সিআরপিএফ।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে এই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলেও তাকে সম্পূর্ণভাবে মনিটর করেছিল বিএসএফ। শাসক থেকে বিরোধী প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময়ে আঙ্গুল তুলেছে বিএসএফের দিকে। এছাড়াও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধি এবং অতি সক্রিয়তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন করেছিল রাজ্যের শাসক দল। আর তাই এবার সবকিছু পর্যালোচনা করেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের মুখ্য-নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বা রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী, যেখানে যেখানে মোতায়েন হবে তার সবকিছুই মনিটার করবে একমাত্র সিআরপিএফ। ২৪-এর লোকসভার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার আগে থেকেই সব দিকের সবকাজ আগে থাকতেই শেষ করে রাখতে চাইছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
তবে এখন দেখার বিষয় একটাই, সম্প্রতি রাজ্যের শেষ হওয়া পঞ্চায়েত ভোটে মানুষের মাথায় যে ছবি এখনও রয়ে গেছে সেই আতঙ্ককে দূর করতে সিআরপিএফ কতটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের গরিমাকে ধরে রাখতে কতটা তৎপর হতে পারে। তবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের যে ভূমিকা এখন থেকেই সাধারণ মানুষ দেখছে তাতে আশায় বুক বাঁধছে সাধারণ মানুষ। তাঁদের আশা হয়তো এবার রাজ্যে অবাধ শান্তিপূর্ণ এবং রক্তপাতহীন লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হবে।
চলতি বছরই লোকসভা নির্বাচন, সম্ভবত এপ্রিলেই। তার আগেই দেশের ১৫টি রাজ্যের ৫৬টি রাজ্যসভা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সোমবার ওই ৫৬ আসনের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রয়েছেন ৫ সদস্য। তাঁরা হলেন, অভিষেক মনু সিংভি, শান্তনু সেন, নাদিমুল হক, শুভাশিস চক্রবর্তী, আবির রঞ্জন বিশ্বাস।
নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৭ ফেব্রয়ারি রাজ্যসভার নির্বাচন হবে। ১৫টি রাজ্যের ৫৬টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে স্থির হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যসভার নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি।
উল্লেখ্য, ১৩টি রাজ্যের ৫০টি আসনের সদস্যদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২ এপ্রিল। আর দুই রাজ্যের ৬টি আসনের সদস্যদের মেয়াদ শেষ হবে ৩ এপ্রিল। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও যে সব রাজ্যে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভা নির্বাচন হবে, সেগুলি হল উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, কর্ণাটক, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, হরিয়ানা এবং হিমাচল প্রদেশ।
আদালত অবমাননা মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে উত্তর দেওয়ার আরও সময় দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের করা মামলায় আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে রাজীব সিনহার (Rajiv Sinha) বিরুদ্ধে। আদালতের নির্দেশ না মেনে অবমাননা করা হয়েছে বলেই পর্যবেক্ষণ ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে রুল জারি হয় ও আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ অর্থাৎ শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ আদালত অবমাননার রুলের উত্তর দিতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিল রাজীবকে।
আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ আদালতে সশরীরে হাজিরা দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ২৪শে নভেম্বর সশরীরে হাজিরা দিয়ে আদালত অবমাননার বিষয়টি ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু এদিন অর্থাৎ শুনানির দিন রুলের উত্তর দেওয়ার জন্য সময়ের আর্জি জানালে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তাঁকে সময় দেয়। এছাড়াও জানানো হয়েছে, হলফনামার মাধ্যমে তাঁকে দিতে হবে উত্তর।
এদিন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রুলের উত্তর দিতে আরও সময় দেওয়া হল নির্বাচন কমিশনারকে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হল কমিশনারকে। তার মধ্যে তাঁকে উত্তর দিতে হবে। ৮ জানুয়ারির মধ্যে শুনানি শেষ করতে হবে। ওই দিন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারে ডিভিশন বেঞ্চ। তবে প্রয়োজনে ফের তাঁকে হাইকোর্টে ডাকা হতে পারে এমনটাই জানিয়েছে হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থেকে আদালতের একাধিক নির্দেশ অবমাননা করেছেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা বিরুদ্ধে এমনটা দাবি করেই আদালতে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা আদালত অবমাননা করা হয়েছে বলেই পর্যবেক্ষণ ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা এবং মিজ়োরাম রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। দিল্লির নির্বাচন সদনে সাংবাঠিক বৈঠক করে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। রাজ্যগুলির মধ্যে মিজ়োরাম বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে ১৭ ডিসেম্বর। বাকি রাজ্যগুলিতে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে জানুয়ারিতে।
১৭ নভেম্বর এক দফায় ভোট গ্রহণ মধ্যপ্রদেশে। রাজস্থানেও এক দফায় ২৩ নভেম্বর ভোট গ্রহণ। তেলঙ্গানায় ভোট হবে ৩০ নভেম্বর। মিজ়োরামেও এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে ৭ নভেম্বর। ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের মধ্যে কেবল ছত্রিশগড়ে হবে দু’দফায় ভোট। ৭ নভেম্বর এবং ১৭ নভেম্বর। সব রাজ্যের ভোটের ফলঘোষণা হবে ৩ ডিসেম্বর। ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে ভোটপ্রক্রিয়া।
নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, পাঁচ রাজ্যের মোট ৬৭৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এ বার নতুন ভোটারের সংখ্যা ৬০ লক্ষ। মোট ভোটারের সংখ্যা ১৬.১ কোটি। কমিশনার জানিয়েছেন, পাঁচ রাজ্যেই নারী-পুরুষ লিঙ্গ অনুপাত ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। পাঁচ রাজ্যের প্রতিটিতে ক’জন মহিলা প্রার্থী রয়েছেন, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে সাংবাদিক বৈঠকে। নির্বাচনী প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে পাঁচটি রাজ্যে গিয়েই ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। বেড়েছে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যাও। মিজ়োরামে থাকছে ১,২৭৬টি ভোটকেন্দ্র। ছত্রিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং তেলঙ্গানায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা যথাক্রমে ২৪,১০৯, ৬৪,৫২৩, ৫১,৭৫৬, ৩৫,৩৫৬।
লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিতে সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর জেলাশাসক এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) ও তাঁর দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা কমিশনের প্রতিনিধিদলের। রবিবার থেকেই কমিশনের সদস্যরা আসতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই শহরে এসে পৌঁছেছেন সিনিয়র ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার বা উপনির্বাচন কমিশনার ধর্মেন্দ্র শর্মা। তিনিই এই প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দেবেন। সঙ্গে থাকার কথা আরও তিন উপনির্বাচন কমিশনারের। তার মধ্যে থাকবেন এ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপনির্বাচন কমিশনার নীতিন ব্যাসও।
বৈঠকে আরও চারজন কমিশনের কর্তারও হাজির থাকার কথা। জোনাল সেক্রেটারি রাকেশ কুমার, ভোটার তালিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত বটুলিয়া-সহ আরও দুই শীর্ষস্তরের আধিকারিকের থাকার কথা।
ভোটার তালিকার কাজের কেমন অগ্রগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কীভাবে হবে ‘অশান্ত’ এলাকার ম্যাপিং, ইভিএম-ভিভিপ্যাটগুলির পরীক্ষানিরীক্ষা কেমন এগোচ্ছে সবকিছুই এই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সোমবার দীর্ঘ সময় ধরে এই বৈঠক হবে, তেমনই স্থির রয়েছে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবেন কমিশনের কর্তারা।
লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ফের রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল। রবিবারই তারা রাজ্যে আসবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে। ওই দলে থাকবেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার নীতেশ ভ্যাস এবং ধর্মেন্দ্র শর্মা। আগামী সোমবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সহ কমিশনের অন্য অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তাঁরা।
এর আগেও ২২ জুলাই রাজ্যে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। কলকাতার একটি হোটেলে সব জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। আগামী সোমবারের বৈঠকে ভোটার তালিকায় নাম সংযুক্তিকরণ এবং বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আনতে পারে বলে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী নীতিশ কুমারের গলাতেও একই সুর শোনা গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তৎপরতা দেখে রাজনৈতিক মহলের ধারণা অন্য বারের তুলনায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের সময় পরিবর্তন করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। আর সেকাণেই এত দ্রুত তৎপরতা শুরু হয়েছে।
যদিও কমিশনের অন্য একটি সূত্রের দাবি, নির্বাচন কমিশনের এই সফর সম্পূর্ণ রুটিন মাফিক হচ্ছে। এর সঙ্গে লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আনার যে জল্পনা উঠেছে তার কোনও সম্পর্ক নেই।