এবার রাজ্যে ২০১৬ সালের SLST- তে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। পাশাপাশি ২০১৬-র RLST-তে চাকরি পাওয়া গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-তে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের তালিকাও প্রস্তুত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিক্ষা দফতরের তরফে। এই বিষয়ে প্রতিটি জেলার ডিআইকে বিজ্ঞপ্তি পাঠাল SSC। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে প্রতিটি প্রধান শিক্ষকের কাছে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে, তাঁদের স্কুলে কতজন ২০১৬-তে পাওয়া চাকুরিরত রয়েছেন তার তালিকা প্রস্তুত করতে। পাশাপাশি যাঁরা স্কুলে থাকবেন না, তাঁদের বাড়িতেই পাঠাতে হবে এই বিজ্ঞপ্তি, এমনটাই নির্দেশ শিক্ষা দফতরের।
৯ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে, ২০১৬-তে চাকরি পাওয়া শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীর তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য শিক্ষা দফতর। এছাড়াও সোমবার অর্থাৎ ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যেক প্রধান শিক্ষককে সংশ্লিষ্ট SI অফিস থেকে অন্যান্য নথি-সহ শিক্ষা দফতর দ্বারা জারি করা নোটিশ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিটি স্কুল এবং সংশ্লিষ্ট অফিসকে তাদের নোটিস বোর্ডে ওই 'পাবলিক নোটিস' প্রদর্শন করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ওই দিনই সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের অন্যান্য নথির সাথে নোটিশ প্রদান করবেন প্রধান শিক্ষক, এমনটাই নিদের্শ রাজ্য শিক্ষা দফতরের। পাশাপাশি ওই সংশ্লিষ্ট কর্মচারী বা শিক্ষককে ই-মেলও করা হবে এবং প্রমাণও রাখা হবে ওই বিজ্ঞপ্তির, এমনটাই সূত্রের খবর। সবশেষে আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ফরওয়ার্ডিং লেটার-সহ ওই বিজ্ঞপ্তি পরিষেবার প্রতিবেদন জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট এসআই অফিসে। তবে এক্ষেত্রে ২০১৬-র SLST এবং RLST-তে চাকরি পাওয়া ব্যক্তির মধ্যে কেউ পদত্যাগ করে থাকলে বা কারও মৃত্যু হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে তাঁদের ওই বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর জন্য বিবেচনা করা হবে না বলেই সূত্রের খবর।
তবে এই তালিকা প্রকাশের বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে।
ধরণা প্রসঙ্গে মমতাকে কটাক্ষের পর রাজ্য শিক্ষা দফতরকেও এক হাত নিলেন রাজ্যপাল বোস। দিল্লি থেকে বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষাকে দুর্নীতি মুক্ত করার বার্তা দেন। তিনি বলেন,'শিক্ষাক্ষেত্রকে মাফিয়া মুক্ত করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দুর্নীতির আখড়া চলতে পারে না’ তবে এ দিন ইংরেজিতে নয়, আচার্য বোসকে দেখা গেল বাংলা বলতে।
এর আগে আচার্যের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বাংলার একটি প্রবাদ উল্লেখ করে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, “রাজ্যপাল বাংলা প্রবাদকেই মান্যতা দিলেন। যাহা চালভাজা, তাহাই মুড়ি। যিনি আচার্য, তিনিই উপাচার্য।” আজ রাজ্যপাল পাল্টা পুরো বাংলা ভাষাতেই ৫ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি বার্তা পাঠান রাজভবন থেকে। সেই বার্তাতেই স্পষ্ট কেন তিনি সরকারের পছন্দ মত উপাচার্য নিয়োগ করতে চান নি।
সি ভি আনন্দ বোস বলেছেন, “হিংসামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত হওয়া প্রয়োজন। বাংলার শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে এটা বেআইনি-বেআইনি-বেআইনি। সব উপাচার্যকে ইস্তাফা দিতে হয়েছে।” বোস বলেন, “আমি চ্যান্সেলার হিসাবে নিয়োগ করেছি উপাচার্যদের। সরকার বলেছে সেগুলি বেআইনি নিয়োগ। হাইকোর্ট বলেছে আমি ঠিক।' এরপরেই তিনি বলেন, ' রাজ্য সরকারের পছন্দ মত উপাচার্যদের মধ্যে কেউ ছিল দুর্নীতি পরায়ণ, আবার কেউ ছাত্রী নিগ্রহে অভিযুক্ত। কিংবা কেউ রাজনীতির খেলা করছে।'
রাজ্যের সিলেবাস কমিটির (Syllabus Committee) নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভীক মজুমদারের স্থলাভিষিক্ত হলেন। দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি সময়ের পর সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান পদে বদল আনা হল। এমনটাই প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। অভীক মজুমদার নিজেই তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। পুনরায় যোগ দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপনার কাজে। সেই মোতাবেক অব্যাহতি চেয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হলে সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ব্রাত্য বসু।
যদিও সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান পদে বদল আসলেও উপদেষ্টা পদে অভীক মজুমদারকে রেখে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সিলেবাস পরিবর্তনে মুখ্যমন্ত্রী ২০১১ সালে সিলেবাস কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির সুপারিশ মেনে ধাপে ধাপে বদলেছে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সিলেবাস। এমনকি মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বদলও আনা হয়েছে সিলেবাস কমিটির সুপারিশে।
বদলি (Teacher Transfer) চেয়ে এক শিক্ষক হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ, 'তিনি বদলি চাইছেন। কিন্তু শিক্ষা দফতর ইচ্ছে করে তাঁকে বদলি করছে না।' শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে গোটা শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়া নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এদিন বিচারপতি বসু স্পষ্ট সুরে বলেন, ‘এই জঙ্গলের নিয়ম চলতে পারে না। এটা শেষ হওয়া দরকার। শিক্ষা দফতরের নিয়ম কার্যকর করা প্রয়োজন।’ যদিও কেন ওই শিক্ষকের বদলির আবেদনে শিক্ষা দফতর (Education Department) সায় দেয়নি। আদালতকে সে ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে।
দফতরের যুক্তি, 'ওই স্কুলে অঙ্কের আর কোনও শিক্ষক নেই। তাই তাঁকে বদলি দেওয়া যাচ্ছে না।' এই সওয়াল-জবাব শুনে হাইকোর্ট দুটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, ১) একটি স্কুলে অঙ্কের শিক্ষক থাকছে না, সেটা যেমন বিপজ্জনক। ২) ছাত্রহীন স্কুলে শিক্ষকদের ফেলে রাখাও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক।
বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, 'একটি জেলায় যদি কোনও ছাত্র-শূন্য স্কুল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি করে অন্য কোনও পার্শ্ববর্তী জেলার ভরা স্কুলে পাঠানো হয়, তাহলে তাঁকে সেখানে গিয়েই পড়াতে হবে।' অর্থাৎ আসি যাই, মাইনে পাই বন্দোবস্ত চলবে না। এমনটাই মত দিয়েছে হাইকোর্টের।
এদিন রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, 'শিক্ষা দফতর ট্রান্সফার দিলে অনেক সময়ে আদালতের নির্দেশে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তা কার্যকর করছেন না। আবার অনেক সময়ে আদালতে মামলা করে নিজেদের সুবিধা মতো বদলি নিয়ে নিচ্ছেন কেউ কেউ।'
এ ব্যাপারে আদালত রাজ্য সরকারকে আরও কড়া হওয়ার কথা বলেছে। হাইকোর্টের নির্দেশ, 'কাউকে বদলি করা হলে সাত দিনের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। না হলে বিভাগীয় পদক্ষেপ করতে পারবে শিক্ষা দফতর।' রাজ্য সরকার শিক্ষক বদলির জন্য ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল চালু করেছিল। আপাতত সেখানে আবেদন জানানোও বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যেই এদিন শিক্ষক বদলি নিয়ে এহেন কড়া পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের।
শুক্রবার সকন্যা সিজিও কমপ্লেক্সে এলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী (Paresh Adhikary)। চলতি সপ্তাহে প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ইডি (ED) দফতরে দ্বিতীয় হাজিরা। সোমবার প্রায় ৪ ঘণ্টা নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের (Recruitment Case) তদন্তে পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এদিন সকাল ১১টা নাগাদ মেয়ে অঙ্কিতাকে নিয়ে সিজিওয় হাজিরা দেন প্রাক্তন মন্ত্রী। যে অভিযোগে পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়ে বিদ্ধ, সেই অভিযোগ আদৌ টাকার লেনদেন হয়েছিল কিনা? হলে কত টাকার লেনদেন হয়েছিল? কারা এই লেনদেনের সঙ্গে জড়িত?
এসব প্রশ্নের উত্তর বাবা-মেয়ের থেকে জানতে পারে ইডি। শিক্ষক নিয়োগের মেধাতালিকায় বাবার প্রভাবে অঙ্কিতার চাকরি পাওয়ার ঘটনায় সরগরম হয়েছিল বাংলার রাজনীতি। হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে চাকরি গিয়েছে অঙ্কিতার। সোমবার পরেশ অধিকারী মূলত ইডির থেকে কিছু নথি ফেরত নিতে এসেছিলেন। তাঁর বাড়ি থেকে ইডি অভিযান চালিয়ে যে যে নথি বাজেয়াপ্ত করেছিল, সেগুলো ফেরত নিতে এসেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী। এমনটাই সূত্রের খবর।
এদিন আবার পরেশ অধিকারীকে মানিক ভট্টাচার্যের বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারে ইডি। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ-কাণ্ডে ব্যাপক বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। সে বিষয়ে পরেশ অধিকারী কিছু জানতেন কিনা, প্রশ্ন করতে পারে ইডি। পাশাপাশি অঙ্কিতা এবং পরেশের বয়ান পৃথকভাবে রেকর্ড করে, পরে সেই বয়ান খতিয়ে দেখতে পারেন কেন্দ্রীয় সংস্থা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Calcutta University) উপাচার্য পদে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুনর্বহাল খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এবার উচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে (Spureme Court) যাচ্ছে রাজ্য। মঙ্গলবার হাইকোর্টের রায় সামনে আসতেই বৈঠক করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং শিক্ষামন্ত্রী। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (Vice Chancellor) রাখতে শীর্ষ আদালতে দরবার করবে তাঁরা।
এদিকে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় দফার নিয়োগ অবৈধ। মঙ্গলবার এই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরানোর নির্দেশ আদালতের।
২০২১ সালের ২৭ অগাস্ট তাকে পুনরায় উপাচার্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিক্ষা দফতর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সিদ্ধান্ত খারিজ করলো হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে। দ্বিতীয় দফায় উপাচার্য হিসেবে সোনালীদেবীর পুণরায় নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। তাঁর অভিযোগ, 'নিয়োগ প্রক্রিয়া মেনে দ্বিতীয় দফায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় বহাল করা হয়নি। এই নিয়োগ নিয়ে অজ্ঞাত রাজ্যপালও।'
যদিও বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষের আইনজীবী তাঁদের মতো করে যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু মামলাকারীদের যুক্তি এবং তথ্য-প্রমাণকে মান্যতা দিয়ে পুনরায় নিয়োগ খারিজ করে মহামান্য আদালত।