বাড়ি সন্দেশখালি। মাথায় সন্ত্রাসের ছাদ। আতঙ্কের তাড়ায় বদলেছে ভিটে। অনিশ্চিত বেঁচে থাকার ভবিষ্যৎ। সন্তানদের সুরক্ষা দিতে সন্দেশখালি থেকে সন্তানদের পাঠানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলে। নাটশাল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমই আপাতত ঠাঁই সন্দেশখালি ছাড়া ছোট্ট ছোট্ট মুখগুলোর। আর পড়াশুনো স্থানীয় নাটশাল হাইস্কুলে।
আন্দোলন, বিক্ষোভের মধ্যদিয়ে কাটছে সময়। অশান্তিকর পরিবেশ গড়ে উঠেছে গোটা সন্দেশখালি জুড়ে। অশান্তির আঁচ যাতে বাচ্চাদের মধ্যে না পড়ে তার জন্য এলাকার বহু মানুষ বাচ্চাদের রুপনারায়ন নদী পার করিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলে। মহিষাদল ব্লকের নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম। সম্প্রতি সেই আশ্রমে সন্দেশখালির বেশ কয়েকজন বাচ্চা আবাসিক হিসাবে এসেছে। তারা নাটশাল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম থেকে স্থানীয় নাটশাল হাইস্কুলে পড়াশোনা করছে। বাড়ি ছেড়ে এখানে পড়াশোনা করলেও এলাকার অশান্তি ও পরিবারের লোকজনদের কথা ভেবে খুব চিন্তায় ও ভয়ে রয়েছে তারা।
নাটশাল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সভাপতি শুভজিৎ মাইতি জানান, 'উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের শাখা রয়েছে। তাদের মারফত কয়েকজন আশ্রমে আবাসিক হিসাবে আবেদন করে পরিকাঠামো অনুসারে আমরা ৯ জনকে রাখতে পেরেছি। তাঁরা আবাসিক হিসাবে থাকবে এবং পাশে নাটশাল হাইস্কুলে পড়াশোনা করবে। সন্দেশখালির অশান্তির কারনেই এখানে পরিবারের লোক পাঠিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছি আমরা। অনেকে আবেদন করেছিলেন কিন্তু সকলকে আমরা নিতে পারিনি।'
নাটশাল হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক বিপ্রনারায়ণ পণ্ডা জানান, 'বর্তমান শিক্ষাবর্ষে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৩০ জন টিসি নিয়ে এসে আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৭ জন সন্দেশখালির। সরকারি নিয়ম রয়েছে টিসি নিয়ে যারা পড়াশোনার জন্য আসবে তাদের স্কুলে ভর্তি করা হবে। তাই আমরা আবেদন অনুসারে ভর্তি করিয়েছি।'
ছাত্ররা জানিয়েছে, ওখানে পড়াশোনা হচ্ছে না। তাই তারা তাদেরকে বাবা-মা এখানে পাঠিয়েছে। এখন দেখার কবে শান্ত হয় সন্দেশখালি। আতঙ্ক কাটিয়ে কবে সন্দেশখালি ফিরবে পড়ুয়ারা। যে রাজ্যে অবাধ বিচরণ করে ক্ষমতাধারীরা, সেখানে খুদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। 'শৈশব ছুটছে বাঁচার আশায়।' জীবনের নিশ্চয়তাটুকু নেই সন্দেশখালিতে? কোন আইনশৃঙ্খলার বড়াই করে শাসক-প্রশাসক? যে নিরাপত্তার বেষ্টনী শৈশবকে নিশ্চিন্তে বেড়ে উঠতে দেয় না!
এবারে এক তৃণমূল বিধায়ককে নোটিশ পাঠাল আয়কর দফতর। অভিযোগ, কোটি কোটি টাকার গরমিল করেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিককে নোটিশ পাঠিয়েছে আয়কর দফতর। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে নিজে অথবা আইনজীবী মারফৎ আয়কর দফতরের সব নথি নিয়ে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক কোটি টাকা গরমিলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। তাঁর ২টি সংস্থার ক্ষেত্রে ১ কোটি টাকার কিছু লেনদেনের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমা না পড়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে এবার তৃণমূল পরিচালিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিককে আয়কর নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও বিধায়ক বা জেলা পরিষদ সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন '২০১৬ থেকে ২০১৮-এর মধ্যে কোন তথ্যটা তাঁদের কাছে নেই, সেই তথ্য আমার অ্যাকাউন্ট সেকশন যিনি দেখেন তিনি বিষয়টি সাবমিট করবেন।'
এবার বেপরোয়া গতির শিকার বিশেষভাবে সক্ষম এক শিল্পী। গুরুতর আহত হয়েছেন আরেক শিল্পী। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে দ্রুতগতিতে আসছিল বালিবোঝাই ট্রাক। আর সেই ট্রাকের ধাক্কায় (Accident) প্রাণ হারিয়েছেন বছর ২৭-এর দীনেশ মাহাতো। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) তমলুক থানা এলাকায় ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর নিমতৌড়িতে।
পুলিস সূত্রে খবর, গুরুতর আহত অবস্থায় অন্য এক বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পীকে ভর্তি করা হয়েছে তাম্রলিপ্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এদিন ভোরবেলা ভগবানপুর এলাকায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে নিমতৌড়িতে ফিরছিলেন ওই দুই শিল্পী। বাস থেকে নেমে রাস্তার ধার ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন তাঁরা। আচমকা মেচেদা থেকে নন্দকুমারগামী একটি বালি বোঝাই ট্রাক তাঁদের ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যান। ট্রাকের চাকায় পিষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীনেশের।
স্থানীয়রা দেখতে পান অন্য আরেকজন শিল্পী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় থানায়। ঘটনাস্থলে পুলিস এসে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
বাড়িতেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী (suicide) কোলাঘাটের এক শিক্ষক। চোর অপবাদ, না চাকরি (job) চলে যাওয়ার আতঙ্কে এই এই পথ বেছে নেওয়া? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পরিবারে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে পুলিস (police)। কোলাঘাট (Kolaghat) থানার দেঁড়িয়াচ গ্রামে এই ঘটনায় শোকের ছায়া।
জানা গিয়েছে, মৃত শিক্ষকের নাম বাপ্পা বর্মণ। তিনি কাঁথির ভবানীচক অঘরচাঁদ হাইস্কুলের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক ছিলেন। মঙ্গলবার সাতসকালই বাড়িতে কেউ না থাকায় পাশের টালির চালের ঘরে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।প্রাথমিক তদন্তে এমনটা জানতে পেরেছে পুলিস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চোর অপবাদ থেকে বাঁচতে কিংবা চাকরি যাওয়ার ভয়, যেকোনও একটি বিষয়ে এই আত্মহত্যা হতে পারে।
কিন্তু কেন এই প্রসঙ্গ। জানা গিয়েছে, তাঁর ফোনে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা তিনি ভুয়ো-শিক্ষক। তাঁর তিন বছরের শিক্ষকতার চাকরি চলে যাওয়ার ভয়েই হয়তো এই আত্মহত্যা। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন রকম মানুষ তাঁকে চোর অপবাদ দিয়েছে। এর জেরেও এই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হতে পারেন তিনি। তবে আদতে কী বিষয়ের উপর তাঁর এই সিদ্ধান্ত, তার উত্তর মিলবে না। মৃতের স্ত্রীয়ের দাবি, তাঁর স্বামীর ফোন কেউ বা কারা হ্যাক করে এই ম্যাসেজ ছড়িয়েছে। ওই একই ম্যাসেজ শিক্ষক বাপ্পা বর্মণ-সহ তাঁর গ্রামে একাধিক লোকের কাছে পৌঁছয়। এমনকি তাঁদের অত্মীয় পরিজনদের হোয়াটসঅ্যাপেও এই ম্যাসেজ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রসূন গুপ্ত: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখনই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন তখনই তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এই তরজা বেশিরভাগ সময়ে স্বাস্থ্যকর থাকেনি। এমনটিও দেখা গিয়েছে, শুভেন্দু মমতা বা অভিষেককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলেছেন, তার ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই কুণাল আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দুকে। এ কি এক অলিখিত নিয়ম? বোধহয় না, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতি আস্থাভাজন কুণাল ঘোষ। এমনটিও দেখা গিয়েছে, শুভেন্দু কোথাও সভা করেছেন তো তার কিছুদিনের মধ্যে সেই স্থানে সভা করতে গিয়েছেন কুণাল।
কুণালের অনেক দায়িত্ব। একদিকে সারা বাংলার বিভিন্ন জেলায় তিনি যান। মূলত প্রচারের কাজটি সারেন। এছাড়া দলীয় মুখপাত্রর দায়িত্বে যেই থাকুন না কেন আসলে সম্পাদকীয়র কাজটি কুণালই করে থাকেন। এছাড়া পৌর বা পুরসভার ভোটেও তাঁকেই বিভিন্ন জেলায় যেতে দেখা গিয়েছে। এবারে দায়িত্ব পূর্ব মেদিনীপুরের। কোনও লিখিত পদ নয় কিন্তু দল (পড়ুন অভিষেক) তাঁকেই পঞ্চায়েতের সংগঠন ও প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছে।
কুণালের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছিল কালীপুজোর রাতে। তিনি জানিয়েছিলেন পয়লা ও দোসরা নভেম্ববর তিনি বিশেষ জেলার কাজে যাচ্ছেন। ফিরবেন হয়তো ৩ নভেম্বর। কিন্তু ফিরেই আবার জেলা সফর। শেষ পর্যন্ত জানা গেল সাম্প্রতিক ভোটের আগে ও পরে তিনি নিয়মিত গিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরে। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে অভিমান করে থাকা দলের নেতা শেখ সুফিয়ানকে ডেকে এনে সভা করেছেন তিনি। ওই সভায় চোখে লাগার মতো ভিড় দেখা গিয়েছে।
অন্যদিকে কোনও সময়েই শুভেন্দু অধিকারী আমল দেন না কুণালকে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিরোধী নেতা সটান বলে দেন, 'ওই লোকের কথার উত্তর দিতে তাঁর রুচিতে বাঁধে।' কিন্তু বাস্তবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন কিন্তু আরও একবার বিজেপির কাছে লোকসভার আগে সেমিফাইনাল। দিল্লি থেকে কড়া নির্দেশ, পঞ্চায়েতে ভালো ফল করতে হবে। ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের লড়াই এখন শুভেন্দু বনাম কুণাল। কুণাল দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন হলদিয়ার অফিসে, যা একসময়ে শুভেন্দুর চারণ ভূমি ছিল।
পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) কোলাঘাট ব্লকের সমবায় নির্বাচনে ফের ধরে রাখল বাম-কংগ্রেস প্রগতিশীল মোর্চা (Left-Congress)। তৃণমূল (TMC) একেবারে ধরাশায়ী হয়েছে এই নির্বাচনে। মোট ৪৩টি আসনের মধ্যে বাম-কংগ্রেস প্রগতিশীল মোর্চা পেয়েছে ৩৮টি আসন। এই ভোটে তৃণমূল পেয়েছে ৪টি আসন এবং প্রথমবার বিজেপি খাতা খুলেছে ১টি আসন ঝুলিতে পুড়ে। জানা গিয়েছে, মোট ভোটার ছিল ১০৬৭টি, মোটের উপর প্রায় ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। মূলত এলাকার দীর্ঘদিনের কংগ্রেস নেতা সুরজিৎ মাইতির নেতৃত্বে এলাকায় কংগ্রেসের প্রাধান্য দীর্ঘদিনের।তিনি এই ভোট প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। ফল ঘোষণার পর গত নির্বাচনের মতোই ফের জয়লাভ করেছে বাম-কংগ্রেস জোট।
এই প্রসঙ্গে বাম-কংগ্রেস প্রগতিশীল জোটের এক সদস্য বলেন, 'বাম-কংগ্রেস মিলে এই ভোটে জিতেছে। আমাদের প্রার্থী সমবায় সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। ৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৮টি আসন আমাদের পক্ষে গিয়েছে। ৪টি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও আমাদের প্রার্থীরা হেরেছেন। তাঁদের প্রতি আমরা সহমর্মী।'
রক্ষকের উপরই হামলা! মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল এক পুলিস (police) কর্মীর, রক্ষা পাননি তাঁর স্ত্রীও। এলাকার দুষ্কৃতীদের দাবি মত চাঁদা এবং মদ কেনার টাকা (money) না দেওয়ায় পুলিস কর্মীকে বেধড়ক মারধর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের (East Medinipur) খেজুরি বিধানসভার নিজ কসবা গ্রামে।
জানা যায়, কসবা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় পুলিসকর্মী রামকৃষ্ণ মণ্ডল। বর্তমানে তিনি কোলাঘাট থানায় কর্তব্যরত। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েকদিন ধরে তাঁর বাড়িতে এলাকার কিছু দুষ্কৃতী সবসময় টাকা চাওয়া এবং মদ কেনার টাকা, পুজোর চাঁদা চাইতে আসে। তবে এবারের ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। সেদিনও তাঁর কাছে বেশ কিছু টাকা চায় রাজনৈতিক মদতপুষ্ট কিছু দুষ্কৃতী, এমনটাই অভিযোগ। রামকৃষ্ণবাবু তা দিতে অস্বীকার করলে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে তাঁকে। তাদের কাছে এই চাঁদার কারণ জানতে চাইলে দীর্ঘক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রামকৃষ্ণবাবু ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি ফিরে এলেও দুষ্কৃতীরা পেছন পেছন ধাওয়া করে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
এরপর কিছু সময়ের মধ্যেই রামকৃষ্ণবাবুর বাড়ির পাশে পড়ে থাকা বাস ও লাঠি নিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই তিনি জ্ঞান হারান। অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীর চিৎকারেও প্রতিবেশীরা কেউ আসেনি সহযোগিতা করতে।
জ্ঞান ফিরতেই বাড়ির সদস্যরা তাঁকে নিয়ে যায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আহত পুলিসকর্মীর দাবি, এলাকার কিছু দুষ্কৃতীরা তাঁকে যখন তখন বিভিন্নভাবে টাকা পয়সা চেয়ে হুমকি দিত। তিনি দিতেন না বলেই এই ধরনের আক্রোশের শিকার হয়েছেন। তাঁর দাবি, "আমরা পুলিস কর্মী হয়ে যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি এবং যদি কোনওপ্রকার সহযোগিতা না পাই, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় রয়েছে, তাঁদের নিরাপত্তার কথা কে ভাববে?"
তবে পুলিস সূত্রে খবর, তাঁদের পারিবারিক বিবাদের জেড়েই এই ধরনের ঘটনা। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক বা দুষ্কৃতীদের সম্পর্ক নেই।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় মিড ডে মিল (Mid day meal) নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে অভিভাবকদের। তবে এবারের ঘটনা একেবারেই ভিন্ন। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ। তবে অভিভাবকদের অভিযোগের আঙুল ওই স্কুলেরই এক ক্লার্কের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার (Nandakumar) থানার কড়ক শচীন্দ্র স্মৃতি হাইস্কুল (school)। এদিন সকাল থেকেই বিক্ষোভে সরব হন অভিভাবকরা। অভিযুক্ত ক্লার্কের দুটি বাইক পুড়িয়ে দিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ (protest) করেন তাঁরা। সেই সঙ্গেই ক্লার্ককে আটক করতে হবে এই দাবি জানান অভিভাবকরা।
জানা যায়, মিড ডে মিলের দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শো-কজ নোটিস পাঠান নন্দকুমার ব্লকের বিডিও শানু বক্সি। তিনি জানান, "স্কুলের মিড ডে মিলের খাওয়ার পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, ৫০-৬০ জন পড়ুয়া মিড ডে মিল খেয়েছে। সেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা অনেক বেশি দেখানো হয়েছে। খতিয়ে দেখে জানতে পারলাম, গত কয়েক মাস ধরে এভাবে বেশি পড়ুয়ার সংখ্যা দেখানো হয়েছে। তাই শো-কজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছে বিষয়টি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করা হল।"
এরপরই আজ সকাল থেকেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক-অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। স্কুলের ক্লার্ক মূল অভিযুক্ত, এমনটাই দাবি করেন তাঁরা। ওই ক্লার্কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আর্জি জানান বিক্ষুব্ধ পড়ুয়া এবং অভিভাবকরা।
বামেদের সারা ভারত কৃষকসভা ও খেতমজুর সংগঠনের ডাকে মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসকের দফতরে অভিযান ও আইন অমান্য কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে নিমতৌড়িতে (Nimtauri) পথসভা করা হয় সেই পথসভাতে নেতৃত্ব দেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। পাশাপাশি ছিলেন জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি-সহ অন্যান্য বাম নেতৃত্বরা। তবে এই কর্মসূচি ঘিরে চলে তুমুল বিক্ষোভ। বেলা বাড়তেই বামকর্মী সমর্থকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ৩০ মিনিট ধরে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
জানা যায়, এই পথসভা শেষে নিমতৌড়ি চৌরাস্তার মোড় থেকে বামকর্মী সমর্থকরা মিছিল আকারে জেলাশাসক দফতরের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে যেতে না যেতেই পুলিসি বাধা পায়। তবে পুলিসি বাধা পেলে বাম নেতৃত্ব-সহ কর্মী সমর্থকরা পুলিসি ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করে। তবে পুলিস এই বিক্ষোভের মুখে পড়ে বিক্ষোভ না সামাল দিতে পেরে জল কামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। এর ফলে সেই বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে বিক্ষোভ চলে দীর্ঘক্ষণ।
অন্যদিকে শহর কলকাতাতেও (Kolkata) বিক্ষোভে সরব এআইডিএসও। এআইডিএসও-এর (AIDSO) তরফ থেকে মঙ্গলবার একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা যায়, হলদিবাড়ি কলেজের ফ্রি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করে কোচবিহারে (Cooch Behar) আন্দোলন করা হয়েছিল এআইডিএসও-এর পক্ষ থেকে। কিন্তু সেই সময় তাঁদের অভিযোগ, পুলিসি (Police) বাধার সম্মুখীন হয় এইআইডিএসও সমর্থকরা। তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। দেওয়া হয় জামিনঅযোগ্য ধারা। এবার তাদের নিঃশর্ত ছাড়তে হবে এই দাবিতে তাঁদের এই বিক্ষোভ মিছিল বলে জানা যায়।