ভূপতিনগর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় ধৃত মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতিকে ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ NIA-র বিশেষ আদালতের। সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য তাজা বোমা তৈরি ও বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ ছিল এই দু'জনের বিরুদ্ধে। এই মামলায় বৃহস্পতিবার ধৃত ২ জনকে পেশ করা হয় আদালতে। এরপরেই আদালতের নির্দেশে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের।
প্রসঙ্গত, ২০২২-র ডিসেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এক তৃণমূল নেতা-সহ মৃত্যু হয় ৩ জনের। মৃত্যু হয়েছিল, তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না-সহ তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েনের। ঘটনার পর পোড়া দেহগুলি রাজকুমার মান্নার বাড়ির অনতিদূরে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। দানা বেঁধেছিল রহস্য। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। এছাড়াও এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন অনিন্দ্যসুন্দর দাস নামে এক আইনজীবী। ঘটনার ৩ মাস পর ভুপতিনগর কাণ্ডে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরবর্তীতে চলতি মাসেই বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে আক্রান্ত হয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। হামলা হয় সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপরেও। যদিও শেষমেশ এতকিছুর পরেও শেষরক্ষা হয়নি। গ্রেফতার হয় বিস্ফোরণ কাণ্ডের ২ মূল অভিযুক্ত মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতি।
রাত পেরোলেই রাজ্যে শুরু প্রথম দফার নির্বাচন। আর এই নির্বাচনী আবহে যেভাবে শাসক ঘনিষ্ট নেতা-কর্মীদের নাম, দুর্নীতি, অপরাধ জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে, তাতে আখেরে মুখ পুড়ছে শাসকদলেরই। মত ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও এর প্রভাব ভোটবাক্সে আদৌ পড়বে কিনা বা পড়লেও তা কতটা এখন সেটাই দেখার।
হোয়াটসঅ্য়াপ কল এবং মেসেজের ভয়েস রেকর্ডের সঙ্গে মিলে গেল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বর। কাকুর সেই ভয়েজ স্য়াম্পল রিপোর্ট এখন ইডির হাতে। সূত্রের খবর, ২২ তারিখ অর্থাৎ সোমবার হাইকোর্টে সেই রিপোর্ট জমা দিতে পারে ইডি। সাড়ে তিন মাস পর কালীঘাটের কাকুর ভয়েজ স্য়াম্পল টেস্টের রিপোর্ট এখন ইডির হাতে। যা নিয়ে ইতিমধ্য়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক সমালোচনা। লোকসভা নির্বাচনের আবহে এই রিপোর্ট খানিকটা অস্বস্তিতে ফেলতে পারে শাসকদলকে, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।
প্রসঙ্গত, রাজ্যবাসীর সকলেরই জানা, কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে কম বেগ পেতে হয়নি তদন্তকারী আধিকারিকদের। নমুনা সংগ্রহ আটকাতে অতীতে একাধিকবার কাকু দেখিয়েছেন তাঁর শারীরিক অসুস্থতার দোহাই। কাঠগড়ায় উঠেছিল এসএসকেএম-এর ভূমিকাও। কখনও আবার সেই দোহাই নিশ্চিত করতে একেবারে শিশুদের জন্য সংরক্ষিত বেড দখল করে ভর্তি হয়ে দিনের পর দিন কাটিয়েছেন তিনি। তারপর অবশেষে গত জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ মধ্যরাতে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে জোকা ইএসই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে করানো হয়েছিল কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা। খানিক আশ্বস্ত হয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
কেন, কারণ, তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, এই কণ্ঠস্বরের নমুনার ওপর নির্ভর করেছে শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতির গোপন রহস্যভেদ। ২ বছর হয়ে গেল এই দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফতারি। একে একে জট খুলতে খুলতে গ্রেফতার হয়েছেন কালীঘাটের কাকুও। যে চ্যাট এবং কলের হদিশ চাইছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা, সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই, এমনটাই সূত্রের খবর। এখন আদালতে রিপোর্ট পেশ করা হলেই বোঝা যাবে, কার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কথোপকথন হয়েছিল কাকুর? তিনি কোন মধ্যস্থতাকারী প্রভাবশালী, যিনি ২ বছরেও তদন্ত ধরা পড়লেন না একবারের জন্যেও? ঠিক কত গুলো বেআইনি নিয়োগ হয়েছিল? গোটা প্রক্রিয়া কার নির্দেশে চলত?
সন্দেশখালির একদা ত্রাস শেখ শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবিকে ফের জেরা ইডির। প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার কেন্দ্রীয় জেরার মুখে পড়েছিলেন শাহজাহানের স্ত্রী। এবার বুধবারের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে উঠে এসেছে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য।
শাহজাহান ও তাঁর স্ত্রী তসলিমা বিবির রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত নথির সূত্র ধরেই, তসলিমার নামে একাধিক জমি, হোটেল এবং গেস্ট হাউসের সন্ধান পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে খবর, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিনিয়োগ করা হয়েছিল এই সমস্ত ক্ষেত্রে। কেন্দ্রীয় তদন্তে উঠে এসেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ কোটি টাকা। এখানেই শেষ নয়, শেখ শাহজাহানের অনুগামীদের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী তসলিমা বিবির যৌথ অংশীদারী রয়েছে। যদিও তসলিমা বিবিকে এই বিপুল সম্পত্তি কেনার জন্য, টাকার উৎসের কথা জানতে চাইলে জানান, কিছুই জানেন না তিনি। শেখ শাহজাহান তাঁকে বিভিন্ন নথিতে সই করতে বলতেন। সেই মতো তিনিও সই করতেন। এমনকি তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপুল অর্থ কোথা থেকে এলো সে বিষয়েও কিছুই জানেন না শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি। এই সমস্ত বিষয়ে একমাত্র জানেন শেখ শাহজাহান, ইডির জেরার মুখে এমনটাই জানালেন তসলিমা বিবি।
ঘুরপথে কালো টাকা সাদা করতেই, শেখ শাহজাহানের দুর্নীতির জাল বিছানো তাঁর পরিবারের মধ্যেও। নিজের দুর্নীতির স্বার্থে শাহজাহান ব্যবহার করেছেন নিজের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। এমনিতেই সন্দেশখালির একদা ত্রাসের নামে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। সে অভিযোগ এতটাই গুরুতর যে বারংবার শাহজাহানের ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছে সন্দেশখালি। তার ফাঁসির দাবিতে গর্জে উঠেছেন রাজ্যের আইনজীবীদের একাংশও। বিপদে পড়েছেন বুঝে একাধিকবার ইডির কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন শাহজাহান। কিন্তু তার দুর্নীতির শেষ কোথায়? দুর্নীতির তল খুঁজে পেতেই আপাতত মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এখন দেখার যে শাহজাহানের এই দুর্নীতির জাল আর কতদূর বিস্তৃত। শুধুই কি শাহজাহান, নাকি নেপথ্যে রয়েছেন কোনও প্রভাবশালী? সেই সব উত্তরের খোঁজেই চর্চা তুঙ্গে।
সন্দেশখালিকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শাহজাহানের ভাই আলমগীর শেখকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। এরপর আলমগীর শেখ এবং শেখ শাহজাহানের অন্যতম সহযোগী শিবপ্রসাদ হাজরা ও দিদার বাক্স মোল্লাকে সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দফতরে নিয়ে আসা হল।
সূত্রের খবর, শেখ আলমগীর বন্দুক, পিস্তল নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। সাধারণ মানুষদের হুমকি দিয়ে বেড়াতেন। এমনকি শেখ আলমগীর শিবু হাজরার সঙ্গে যোগসাজশ করে সাধারণ মানুষের অর্থের অপব্যবহার করেছেন। শুধু তাই নয়, শিবু হাজরা কন্ট্রাক্টরদের হুমকি দিতেন। কন্ট্রাক্টরদের একপ্রকার বাধ্য করতেন এসকে এসটি ব্রিক ফিল্ড থেকে ইট কিনবার জন্য।
অভিযোগ, শেখ শাহজাহানের নাম করে তার সহযোগী শিবু হাজরা জমি দখল, অগ্নিসংযোগ, খুন, চাঁদাবাজি, হুমকি দিতেন সাধারণ মানুষদের। এই শিবু হাজরা বেনামি সম্পত্তিতে জড়িত ছিলেন। শিবপ্রসাদ হাজরা শিব এন্টারপ্রাইজের মালিক। এই শিব এন্টারপ্রাইজ এর ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট থেকে দেখা গিয়েছে সেখানে প্রচুর পরিমাণের অর্থ লেনদেন হয়েছে। এই অর্থ জমি দখলের বলে ধারণা তদন্তকারী সংস্থার। সেই কারণেই শেখ আলমগীর, শিবু হাজরা ও দিদার বাক্স মোল্লাকে জমি সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় ইডি দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
জমি দখল, ভেড়ি দখল, মাছের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত মামলা। সন্দেশখালির বাদশাহ শেখ শাহজাহানের ভাই আলমগীর এবং তাঁর দুই শাগরেদ দিদার বাক্স মোল্লা ও শিবপ্রসাদ হাজরাকে এই মামলায় অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে পেশ করল ইডি। সূত্রের খবর, ধৃতদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছেন ইডি আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, বুধবার জমি দখল, ভেড়ি দখল এবং মাছের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত মামলায় তিন অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট-এর আবেদন করেছিল ইডি। প্রসঙ্গত, সন্দেশখালি এবং ন্যাজাট থানায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মহিলা নির্যাতন, জমি দখল এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর জুলুমবাজির যে সমস্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তার মধ্যে শেখ শাহজাহান ছাড়া নাম ছিল শিবু হাজরা এবং বেশ কয়েকজনের। ইডি শাহজাহানের বেআইনি কাজকর্মের তদন্তে নেমে এবার সেই দিকেই নজর দিয়েছে। যে ব্যাপারে এ বার তাঁর সহযোগীদেরও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে ইডি। সেই চেষ্টারই প্রাথমিক পর্বে এই তিন জনকে আদালতে হাজির করালেন ইডির গোয়েন্দারা।
উল্লেখ্য, ইডির উপর হামলার ঘটনায় ইডি আধিকারিকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী শেখ শাহজাহান। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বলেছেন, হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও কিছুই জানতেন না। শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যেদিনকে ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি করতে গিয়েছিলেন সেদিন কোনওভাবেই মারধর করার নিদান তিনি দেননি।
ইডি সূত্রে আরও খবর, শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ট বেশ কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী এলেন ইডি দফতরে। তাঁদেরকে তলব করা হয়েছিল। বেশ কিছু নথি নিয়ে তাঁরা ইডি দফতরে আসেন। মাছ ব্যবসার লেনদেন সংক্রান্ত নথি নিয়ে আসতে বলা হয় এবং সেই সব বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে ইডি সূত্রে খবর।
সিবিআই তদন্ত হলে ভালই হবে। ইডি দফতর থেকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথাই বললেন সন্দেশখালির বাঘ শেখ শাহজাহান। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছে। হঠাৎ করে শেখ শাহজাহানের এই সুর বদলে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছে।
যদিও শাহজাহান এই মুহূর্তে ইডি হেফাজতে রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে মেডিকেল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে। ইডি দফতর থেকে বেরোনোর সময় শেখ শাহজাহানকে প্রশ্ন করা হয় যে এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়, উত্তরে শাহজাহান বলে সিবিআই তদন্ত হলে খুব ভালো হবে। প্রশ্ন করা হয় ইডি ও তদন্ত করছে উত্তরে বলেন সবটাই ভালো হবে।
হঠাৎ করে শেখ শাহজাহানের এই সুর বদলে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি কটাক্ষ করে বলেছে, শেখ শাহজাহান বুঝে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। সেকারণেই এখন সিবিআইয়ের হয়ে কথা বলছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গতকালই সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছে। এবং সন্দেশখালির বাসিন্দারা সরাসরি সিবিআইকে অভিযোগ জানাতে পারবেন। সেই সঙ্গে সন্দেশখালিকতে স্পর্শ কাতর এলাকায় সিসিটিভি এবং বড় আলো বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভোটের আগে ফের অশান্তি বাংলায়। এবার বিজেপির উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষের আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। হামলার আগে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে হামলার আগে এক ব্যক্তি মুখে গামছা বেঁধে সাইকেলে করে এসে বাঁশ দিয়ে সিসিটিভি ভাঙে।
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রতিবাদে বুধবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার সামনে তমোঘ্ন ঘোষের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। পালটা তৃণমূল সমর্থকরা হাজির হন সেখানে। চলে স্লোগান পালটা স্লোগান। সব মিলিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। বিক্ষোভ চলাকালীন থানায় এসে হাজির হন কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে। ঘটনার জেরে রাস্তায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়।
লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। সাত দফায় চলবে ভোটগ্রহণ পর্ব। ১৯শে এপ্রিল প্রথম দফার ভোট। সব রাজনৈতিক দলই প্রচারে ব্যস্ত। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে একাধিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। পুলিস প্রশাসনকে সজাগ থাকতে বলছে নির্বাচন কমিশন। এমতাবস্থায় এয়ারপোর্ট সংলগ্ন এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল বিমানবন্দর থানার পুলিস। বুধবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয় অভিযুক্ত দুষ্কৃতীকে।
পুলিস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানার পুলিস এয়ারপোর্ট সংলগ্ন কৈখালী থেকে এনামুল শেখ নামে এক কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। ওই দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কৈখালী অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করছিল, এমনটাই খবর পান পুলিস আধিকারিকরা। কোনও অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে নিয়েই ধৃত দুষ্কৃতী ওই অঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সেই খবরই গোপন সূত্র মারফত এসে পৌঁছয় বিমানবন্দর থানার পুলিসের কাছে। এরপরেই অভিযান চালিয়ে এনামুল শেখকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার করে বিমানবন্দর থানার পুলিস।
বিমানবন্দর থানা পুলিস সূত্রে আরও খবর, ধৃতের কাছ থেকে একটি ওয়ান শাটার পাইপ গান ও এক রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। ধৃত দুষ্কৃতী নিউটাউন এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকত। ধৃতের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ রয়েছে। ধৃতকে আদালতে তুলে ১৪ দিনের পুলিস হেফাজত চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। তাকে হেফাজতে পেলে তার থেকে জানার চেষ্টা করা হবে সে কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছিল এবং কী ধরনের অপরাধের উদ্দেশ্যে তিনি এয়ারপোর্ট সংলগ্ন কৈখালী অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করছিল।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির পরতে পরতে রহস্য। এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। জমি দখল, রেশন দুর্নীতি সহ একাধিক মামলায় ইতিমধ্যে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছে শেখ শাহজাহান। একাধিক তথ্য প্রমাণ সামনে রেখে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকেরা। শুধুমাত্র শেখ শাহাজাহান নয় সন্দেশখালি জুড়ে বাহুবলে জমি দখলে যুক্ত ছিলেন শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগীর সহ শিবু হাজরা ও দিদার বক্স। তদন্তের আরও গভীরে পৌঁছতে তাই আগামী দিনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে তাঁদের বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। তাই এই তিন অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাতে চাইছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
গত সোমবার শাহজাহানের স্ত্রীকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। আর এবার মাছ সংক্রান্ত মামলায় শেখ শাহজাহানের স্ত্রীকে তলব ইডির। চলতি সপ্তাহেই তাকে ইডির দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে খবর।
কথায় আছে কান টানলে মাথা আসে। ইডির ওপর হামলা। শাহজাহানের বেপাত্তা। সঙ্গ দিয়েছিল পরিবার। শাসক দলের আশীর্বাদের হাত তাঁর মাথার উপর থাকায় তখনও অবধি বেঁচে যাওয়ার আশা ছিল শাহজাহানের মনে, ওয়াকিবহাল মহল বলতে শুরু করেছিল এমনটাই। তবে, দ্বিতীয়বার তাঁর আকুঞ্জিপাড়ার বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার প্রয়োজনীয় একাধিক নথি-পত্র উদ্ধার করে শাহজাহানের প্রাসাদ প্রমাণ বাড়ি সিল করে দিয়ে আসেন ইডির আধিকারিকরা, এবার সেই বাড়ি ফিরে পেতে মরিয়া শাহজাহান।
আইনজীবী মারফত শাহজাহান এবং তাঁর পরিবার দ্বারস্থ আদালতের। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে আকুঞ্জিপাড়ার বাড়ি সিল করা হয়েছে মাত্র, বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। তাই আদালতের কাছে তাঁদের আবেদন বাড়িটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
যদিও আদালত এবিষয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাড়ি ফিরে পেতে গেলে ইডির অনুমতি নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি ইডি আধিকারিকদের দেখাতে হবে। যদি ইডি সম্মতি দেয়, তবেই বাড়ি ফিরে পাবে শাহজাহানের পরিবার।
একদিকে হেফাজতে নিয়ে একাধিক তদন্তের প্রশ্নজাল, অপরদিকে বাড়ি ফিরে পেতেও আদালতের নির্দেশে মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে এই ইডির, যাকে হালকা ছলে নিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন শাহজাহান। কর্মের ফল এভাবেই ভোগ করতে হবে শাহজাহানকে- হেনস্থা দোসর হয়ে জুড়ে থাকবেই তাঁর ক্ষোভ উগড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অবশেষে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার মোবাইল আনলক করতে সক্ষম হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আশা এই মোবাইলে থেকে মিলতে পারে জরুরি তথ্যপ্রমাণ। এবার তাই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার চ্যাট হিস্ট্রিতে নজর তদন্তকারীদের।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। প্রায় ১৪ ঘণ্টার তল্লাশিতে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৪১ লক্ষ টাকা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল মন্ত্রীর ফোন। পরবর্তীতে, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে ইডির সদর দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফে। যদিও মন্ত্রীর পরিবার সূত্রে দাবি ছিল, তাঁকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র উদ্ধার হওয়া টাকা, মোবাইল ফোনের সমস্ত রকম ডিটেলস এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ইডির তরফে।
এছাড়াও ইডির নির্দেশ ছিল মন্ত্রীর বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোন আনলক করার। এরপরেই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার একজন প্রতিনিধিকে সমস্ত নথি-সহ পাঠানো হয় সিজিও-তে। তিনিই তদন্তকারী আধিকারিকদের সামনে আনলক করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথের মোবাইল। ইডির দাবি, মন্ত্রীর মোবাইল থেকে খুলতে পারে, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের রহস্যের জট। আর তাই এবার ইডির আতস কাঁচের নিচে মন্ত্রীর বাজেয়াপ্ত মোবাইল।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে বলাগড়ের বহিঃস্কৃত এক যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের বাড়িতে তল্লাশির সূত্র ধরেই মন্ত্রী চন্দ্রনাথের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। এখন মন্ত্রীর মোবাইল থেকে, নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কে আর কী তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে, সেটাই দেখার। তবে যেভাবে রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতি কাণ্ডে, শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়াচ্ছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে বারংবার দুর্নীতিতে তৃণমূলই কেন? এই দুর্নীতির জাল শাসকদলের মধ্যে কতদূর অবধি বিস্তৃত? শাসকদলের দুর্নীতির কারণে কেন বারবার বঞ্চিত হতে হবে রাজ্যবাসীকে? জবাব চাইছে বাংলার ওয়াকিবহাল মহল।
'রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র' করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, কয়েকদিন আগে এমনই দাবি করেছিলেন শেখ শাহজাহান। এবার বিজেপি মিথ্যে কথা বলছে সরব হন তিনি। আজ, শুক্রবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল সন্দেশখালির বাঘকে। সেখান থেকে বেরোনোর সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।
শেখ শাহজাহান এদিন দাবি করেছেন, বিজেপির দালালরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে কথা বলছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক পাচারকের অভিযোগ ছিল। যেটা একেবারেই মিথ্যে বলে দাবি করেছেন তিনি। কোনও রকম মাদক কারবারের সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শেখ শাহজাহান।
এদিকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে শেখ শাহজাহানকে দেখে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে দেখে 'চোর চোর' স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন শেখ শাহজাহানকে নিরাপত্তা না দিয়ে বুথে নিরাপত্তা দেওয়া। একজন চোরকে নিরাপত্তা দিয়ে কি হবে। তার চেয়ে বুথে বুথে নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সন্দেশখালিতে অপরাধীরা জেল থেকে ছাড়া পাবে না। সন্দেশখালির অপরাধীদের সারাজীবন জেলেই থাকতে হবে। গতকাল কলকাতা হাইকোর্টও সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে। কলকাতা হাইকোর্ট বলেছে যদি সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের একটি ঘটনাও ঘটে থাকে তাহলে শাসক দল সেটার দায় এড়াতে পারেন না।
ইডির উপরে হামলার পর ৫৫ দিন পলাতক ছিলেন তিনি। ৫৬ দিনের দিন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তারপরে সিআইডি হেফাজতে ছিলেন শাহজাহান শেখ। সেখান থেকে সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নেয়। কিন্তু একটা কথাও তাঁরা বলাতে পারেনি। তারপরে ইডি হেফাজতে মুখ খুলেছিলেন শাহজাহান শেখ। সেখানেই তিনি দাবি করেছেন, সন্দেশখালিতে মানুষের উপকারেই কাজ করেছেন তিনি। কারোর এক টুকরো জমি তিনি দখল করেননি।
ফের তুঙ্গে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে রাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। এই সুপারিশকে এক্স হ্যান্ডেলে ‘হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করেন ব্রাত্য।
উল্লেখ্য, ৩০ শে মার্চ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন সরাসরি রাজ্যপাল। রাজ্যপালের অভিযোগ তিনি নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করেছেন এবং সেই অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর সুপারিশ রাজ্যপালের।
এই ঘটনার পর টুইটে পাল্টা খোঁচা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। টুইট করে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রপতির কাছে যদি রাজ্যপালকে সরানোর সুপারিশ করতাম, তা হলে সেটা যেমন হাস্যকর হত, এটাও ঠিক তেমনই। আমি কোনও নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে থাকলে তা কমিশনের নজরে আনার অধিকার রয়েছে রাজনৈতিক দলের। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাজ্যের মন্ত্রীর অপসারণ বা নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেন একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্যপাল এমন অভিযোগ তুলে নিজের সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করছেন। নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ও প্রকাশ্যে এনেছেন। নিজের সাংবিধানিক সীমাও লঙ্ঘন করেছেন।’’
— Bratya Basu (@basu_bratya) April 4, 2024
দিন যতই এগোচ্ছে, ততই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কড়া তদন্তে শাহজাহানের সম্পত্তির বহর একটু একটু করে ধসে পড়ছে। বৃহস্পতিবার জানা যায়, ইডির নজর এবার শেখ শাহজাহানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ওপর। কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে শেখ সাবিনার ফিশারির নাম উঠে এসেছে, যার মালিকও শাহজাহানই। শেখ সাবিনা নামাঙ্কিত শাহজাহানের সেই ফিশারির অ্যাকাউন্ট এবং শাহজাহানের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবার ফ্রিজ করল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, ওই দুই অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে প্রায় ১০ বছরে ১৩৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
শুধু তাই না, জানা যাচ্ছে, ইডির নজরে এখনও ১৬-১৭ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। কারণ, বেতাজ বাদশা এতদিন শুধু নিজের বা নিজের কোম্পানির অ্যাকাউন্ট নয়, নিয়ন্ত্রণ করতেন তাঁর অনুগামীদের অ্যাকাউন্টও। সেখান থেকেও শেখ শাহজাহানের কোম্পানিতে টাকা লেনদেন হত বলে জানতে পেরেছে ইডি। সেই ক্ষেত্রে, সেসব অ্যাকাউন্ট-র লেনদেন সম্পর্কিত তথ্য খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে চিঠিও পৌঁছেছে ইডির তরফে। বেআইনিভাবে সাধারণের জমি কেড়ে, মুখের অন্ন কেড়ে যেভাবে তিলে তিলে কালো টাকায় শাহজাহান রাজত্ব তৈরি করেছিলেন, এভাবে তার অবসান হওয়ারই ছিল, মত ওয়াকিবহাল মহলের।
ইডি হেফাজতে পাওয়ার পরে, একদিকে ইডির ওপর হামলার মামলায় সিবিআই, অপরদিকে জমি দখল মামলায় ইডির সাঁড়াশি চাপ পড়েছে শাহজাহানের ওপর। ইতিমধ্যেই ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন ৫০০ কোটি টাকার দুর্নীতি ছাপিয়ে গিয়েছে শাহজাহানের। বুধবার সকালবেলা স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য শাহজাহানকে আনা হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি জানান, সবটাই নাকি রাজনৈতিক চক্রান্ত।
আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত শাহজাহানের ঠিকানা সিজিও কমপ্লেক্স। সেখানেই জমি দখল মামলার তদন্তে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ইডির আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এই মামলায় প্রায় ৩১ কোটি ২০ লক্ষ দুর্নীতির টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুধু জমি দখল মামলাতেই এখনও অবধি প্রায় ১৩৭ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে ইডির কাছে। ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন, কম করে ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি করেছে শেখ শাহজাহান।
ইডির কাছে শাহজাহানকে নিয়ে, শাহজাহানের জমি দখল মামলা নিয়ে যখন এমন তথ্য প্রমাণ আসছে, তখন সবটাকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাগিয়ে দেওয়ার চাল যে নিজেকে বাঁচানোর জন্যই, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কিন্তু তা বললে আর শুনছেই বা কে!