করোনার নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১-এর দাপট বেড়েছে রাজ্যজুড়ে। তার মাঝেই ফের ডেঙ্গি আতঙ্ক। গত বছরের শেষ দিনে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৩০ ডিসেম্বর ভর্তি হন উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার খোরদার বাসিন্দা ওই মহিলা। মৃতের নাম, ফরিদা বিবি, ৪৩ বছর বয়স। তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৩০ ডিসেম্বর। পরের দিন ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টা ২৫ নাগাদ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এই মুহূর্তে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সর্বনিম্ন।
শীতেও নিস্তার নেই ডেঙ্গি থেকে। শহরে ফের মৃত্যু ডেঙ্গি আক্রান্তের। এবারে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল এক ডাক্তারি পড়ুয়ার। সূত্রের খবর, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া পৃথ্বীরাজ দাসের মৃত্যু হয় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে। গত ১৩ তারিখ, বৃহস্পতিবার বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
বর্ষার পর থেকে ডেঙ্গির দাপট শুরু হলেও নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। কিন্তু চলতি বছরে পুরোপুরি উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে। বাংলায় প্রবেশ করেছে শীত, কিন্তু শীতেও ডেঙ্গির দাপট কমার নাম নেই। চিকিৎসকদের অনেকেই জানিয়েছেন, ঠান্ডায় ডেঙ্গির লার্ভা খুব একটা সক্রিয় থাকে না। কিন্তু ডিসেম্বরের ঠান্ডায় কীভাবে ডেঙ্গি এত সক্রিয় হয়ে উঠল তা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরাও।
শুধু কলকাতা নয়, চলতি বছরে ডেঙ্গিতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল দুই বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলির মতো জেলাগুলি। চিকিৎসকদের মতে গত এক দশকে সর্বোচ্চ ডেঙ্গির প্রকোপ সর্বোচ্চ ছিল। এদিকে ডিসেম্বরেও ডেঙ্গির দাপটে রীতিমতো চিন্তা বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের।
অসুস্থ বলিউড অভিনেত্রী ভূমি পেডনেকর (Bhumi Pednekar)। আচমকা এমন খবর শুনতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অনুরাগীরা। হঠাৎ কী হল তাঁর, এই নিয়ে উৎকণ্ঠায় ভক্তরা। এর পরই বুধবার ভূমির সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট দেখে জানা গেল, বিগত ৮ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি, কারণ তাঁর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। সেই সঙ্গে অভিনেত্রী জানিয়েছেন যে তিনি আগের চেয়ে সুস্থ বোধ করছেন।
বুধবার ইনস্টাগ্রামে হাসপাতালে ভর্তি থাকার দুটো ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রয়েছেন তিনি। হাতে রয়েছে চ্যানেল, কিন্তু তাঁর মুখে তিনি হাসি রেখেছেন। হাসিমুখেই দুটি সেলফি তুলে ক্যাপশনে লিখেছেন, "একটি ডেঙ্গি মশা আমাকে টানা ৮ দিন ধরে অত্যাচার করেছে। কিন্তু আজ ঘুম থেকে উঠে একটু ভালো লাগলো। তাই সেলফি তোলার কথা ভাবলাম।" এর পর তিনি দেন ভক্তদের সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছেন। ভূমির অনুরাগীরাও দ্রুত তাঁর আরোগ্য কামনা করেছেন।
উৎসবের মরশুমেও ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত। ফের রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মাঝবয়স্ক এক ব্যক্তির। জানা গিয়েছে, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রাতেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে খবর। তাঁর মৃত্যুর রিপোর্টে ডেঙ্গির উল্লেখ আছে। সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের বাসিন্দা মৃত ওই ব্যক্তির নাম ভরত দাস(৫৪)। গত কয়েকদিন ধরেই সে জ্বরে ভুগছিলেন, চলতি মাসের ১২ তারিখ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সোমবার হঠাৎ ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর রাত ৯:০৫ নাগাদ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির। বেসরকারি মতে, এই নিয়ে রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৭২ জনের। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট সূত্রে খবর, ৭ ই নভেম্বর পর্যন্ত এই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজারের দোরগোড়ায়। ডেঙ্গি আক্রান্ত ৮৭৫০৫ জন, যা গত বছর ছিল ৬৭ হাজার ২৭৩ জন। বিগত পাঁচ বছরে মধ্যে যা ২০২৩এ রেকর্ড করলো ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। এছাড়া স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, নভেম্বর মাসের প্রথম সাত দিনে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে ৫৫০৩ জন।
দূষণের কবলে খোদ দুর্গাপুরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অফিস। নোংরা আবর্জনা স্তূপে পরিণত হয়েছে সরকারি এই অফিসের দোরগোড়ায়। যেখানে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বারংবার সতর্কবার্তা জানিয়েছে দুর্গাপুর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অফিস। সেখানে খোদ দুর্গাপুরের পরিবেশ ভবনের সামনেই এখন ডেঙ্গি আতঙ্ক।
দুর্গাপুরের পরিবেশ ভবন বার্তা দেয় জনসমাজের পরিবেশ রক্ষার জন্য। কিন্তু আজ সেই ভবনের দুয়ারেই ময়লা আবর্জনার স্তুপ। যার ফলে পথ চলতি মানুষের দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক বর্জনের জায়গায়, খোদ পরিবেশ ভবনের বাইরে প্লাস্টিকের ছড়াছড়ি।
দুর্গাপুরের পরিবেশ ভবনের সামনেই রয়েছে প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিস, জিএসটি অফিস, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গার মাঝেও সহবস্থান আবর্জনার স্তুপ। স্থানীয়েদের দাবি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অফিসের সামনে ময়লা আবর্জনায় স্তূপ তৈরী হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাটাই এখন ভীষণ সমস্য়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ চারিদিকে যে নোংরা আবর্জনার স্তূপ, সেখানেই মাছি ঘুরছে এবং দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যার কারণে স্বাস্থ্যের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ডেঙ্গি আতঙ্কও বেড়ে চলেছে।
সমস্ত অভিযোগ মেনে নিলেন দুর্গাপুর নগর নিগমের দু'নম্বর বোরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার। তিনি বিরোধীদের ষড়যন্ত্র বলে পুরো দায়ভার এড়িয়ে যান।
কলকাতায় লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন কবি তথা পরিচালক শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন কবি, ডাক্তার পরীক্ষা করতে বলেছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরেই প্রবল জ্বর তাঁর, কিছুতেই আয়ত্তে আসছিল না। রিপোর্ট পজেটিভ আসতেই আর ফেলে রাখা হয়নি তাঁকে,তড়িঘড়ি ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। আপাতত চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষনে থাকবেন শ্রীজাত। এর আগে রুবেল, সায়ন্তনী গুহঠাকুরতার ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনা যায়।
ফের শহরে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল একজনের। এবার কলকাতার পুরসংস্থার ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল। জানা গিয়েছে মৃত ওই মহিলার নাম মামনী নস্কর (৪৫)। সন্তোষপুরের ৪৭, জনতা রোডের বাসিন্দা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে তাঁকে ১৮ অক্টোবর বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন অর্থাৎ ১৯ তারিখ বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়।
মৃতার ছেলে জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের কোনও রোগ ছিল না। তবে কিছুটা সুগার ছিল। মোটামুটি সুস্থই ছিলেন তাঁর মা মামনী নস্কর। তবে পঞ্চমীর দিন তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে আর তারপরেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানায় তাঁর ছেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী ১০৪ নম্বর ওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত এই রোডে ঘরে ঘরে বেড়েছে ডেঙ্গি বাড়বাড়ন্ত। আসের পাশের বাড়িতে অনেক লোক ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আবার অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুরো এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রয়েছে। নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌর কর্মীরা স্প্রে করছেন। সব কিছু ব্যাবস্থা গ্রহণ করছে কলকাতা পৌর সংস্থা। কিন্তু তারপরেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কেন বাড়ছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে যখন মানুষ পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে ব্যস্ত ছিলেন। তখন শহরে ডেঙ্গি বাড়বাড়ন্ত এবং ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে দাবি সাধারণ মানুষের।
পুজোর মরশুমে ডেঙ্গির পাশাপাশি থাবা বসিয়েছে ম্যালেরিয়া। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে। ডেঙ্গির চোখ রাঙানি এখনও কমেনি, তার মধ্যেই ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে ম্যালেরিয়ার আতঙ্ক। একাদশীর সকাল থেকেই ভিড় বাড়তে শুরু করে ফিভার ক্লিনিক গুলিতে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাগুলোর ফিভার ক্লিনিকেও সেই একই ছবি ধরা পড়ল। আতঙ্কিত রোগীর পরিবার পরিজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ডেঙ্গির পাশাপাশি রীতিমত আতঙ্ক ধরাচ্ছে ম্যালেরিয়া। গত ১৯ অক্টোবর ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা, ৬২ বছরের বাপী পাইনের। গত ১৫ অক্টোবর তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৯ অক্টোবর গভীর রাত ১.৩০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।
বুধবারই আহমেদাবাদে পৌঁছে গিয়েছিলেন। খেলবেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। এবার অনুশীলন শুরু করলেন শুভমান গিল। প্রথম দুই ম্যাচে ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ায় নামতে পারেননি। পাকিস্তানের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রোহিতের সঙ্গে থাকার সম্ভাবনা বাড়ছে শুভমান গিলের।
এদিন স্পেশাল নেট সেশন আয়োজন করেছিল বিসিসিআই। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ছিলেন শুভমান গিল। টিমের চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে অনুশীলনও করেন তিনি। শুক্রবার অনুশীলনে নামবে টিম ইন্ডিয়া। হাই ভোল্টেজ ম্যাচের আগে একদিনই অনুশীলনের সুযোগ থাকবে বিরাট-রোহিতদের।
এদিকে বৃহস্পতিবারই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলেও। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে তিনিও থাকতে পারবেন না।
পুজোর মুখে ঝোড়ো ব্যাটিং করছে ডেঙ্গি। সময়ের সঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। বাড়তে মৃত্যুও। এই পরিস্থিতির মধ্যে ফের শহরে দুই ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রথম জন, সিদ্ধার্থ বালা। বছর ২৫-এর ওই যুবক দমদম এলাকার উত্তর বাদরা দিল্লি রোড ইটালগাছার বাসিন্দা। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, গত ৯ অক্টোবর তাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৬ টা ১৫ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। অন্যজন, অপর্ণা দাস। মৃতা বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, এদিন ভোরে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে কেপিসি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। বিগত ২৪ ঘন্টায় দুজনের ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল, সব মিলিয়ে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬১।
ডেঙ্গি সংক্রমণে এক নম্বরে উত্তর ২৪ পরগনা। জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। গত এক সপ্তাহে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন। পুর-এলাকার থেকে গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণ বেশি। শহরাঞ্চলে আক্রান্ত ৭ হাজার ৭৩৭ এবং গ্রামাঞ্চলে ৩ হাজার ৯৬৮ জন। বিধাননগর পুর এলাকায় সবথেকে বেশি ২ হাজার ৬৭৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। আক্রান্ত ১ হাজার ২৩৬। সব মিলিয়ে পুজোর মুখে আশঙ্কার মেঘ জমাচ্ছে ডেঙ্গি তা বলাই বাহুল্য।
রাজ্যে ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল এক কিশোরের। ৫ অক্টোবর তার মৃত্যু হলেও রবিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। বেসরকারি সূত্রে এনিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ৫৮ জন।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই কিশোরের নাম রনি দেবনাথ। তার বাড়ি নদিয়ার গাংনাপুর থানার অন্তর্গত পশ্চিম গোপীনগরে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরে জ্বর ছিল রনির। তারপর ৩ অক্টোবর ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হয়। সেখানে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তারপর রনিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর রনিকে প্রথমে চাকদহ ও পরে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে কিডনির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। সেখান থেকে ৪ অক্টোবর ভর্তি করা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। সেখানে সিসিইউ-তে রাখা হয়েছিল তাকে। ৫ অক্টোবর সকালে মৃত্যু হয় তার।
কাটছেই না ডেঙ্গির ভয়াবহতা। বেলেঘাটা আইডি হাপসপাতালে একই দিনে ৩ জন চিকিৎসাধীন ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে ফের তোলপাড় কলকাতা। সম্প্রতি ডেঙ্গি নিয়ে কড়া হয়েছে নবান্ন। আরও কড়া হয়েছে কলকাতা পুর-সংস্থা। সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ শুক্রবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, মৃতের মধ্যে ২ জন বনগাঁ এবং ১ জন ভাঙড়ের বাসিন্দা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বনগাঁর বাসিন্দা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত ওই ব্যক্তিদের নাম সঞ্জয় রায়(৩৪), সুস্মিতা বিশ্বাস(৩৭) এবং ভাঙড়ের বাসিন্দা ফতেমা বিবি(৫৬)র মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গি সংক্রমণ সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। সে সময় পাল্লা দিয়ে রাজ্যে বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুও। পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুক্রবার অবধি রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ৫০ হাজার টপকে গিয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যুও ৫০ পার। এ অবস্থায় ফের রাজ্যে একই দিনে ৩ জনের মৃত্যুতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য ভবনের।
বিশ্বকাপের আগে বড় ধাক্কা টিম ইন্ডিয়ার। সূত্রের খবর, বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের ওপেনার ব্যাটার শুভমনের ডেঙ্গি হয়েছে। বর্তমানে সে কড়া নিরাপত্তা ও চিকিৎসায় আওতায় রয়েছে বলে খবর।
২২ গজের মহাযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচ রবিবার। তার আগেই টিম ইন্ডিয়ায় বিরাট ধাক্কা। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামতে চলেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে শুভমন গিলের খেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
প্রথম ম্যাচে শুভমন না খেললে দলের কম্বিনেশনও বদলে যেতে বাধ্য। এই আবহে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে হবে মেন ইন ব্লুদের।বিশ্বকাপ শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলা তিনটি একদিনের ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন শুভমন গিল। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তিনি জ্বরে কাবু। ফলে নতুন করে চিন্তা বাড়ল রোহিত শর্মাদের।
ডেঙ্গি নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন প্রশাসন। এরই মধ্যে ফের ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৩ জনের। সূত্রের খবর, দক্ষিণ দমদম, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতার ঠাকুরপুকুরে, পৃথক জায়গা গুলিতে ১ জন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
সূত্রের খবর, কলকাতার ঠাকুরপুকুরে ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বাঁচারপাড়া এলাকার বাসিন্দা পরেশ সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে। ওদিকে দক্ষিণ দমদমে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায় নামের মাঝ বয়স্কা মহিলা। উল্টোডাঙ্গার একরি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন, গতকাল সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ বড়ঞা থানার নিমা গ্রামের বাসিন্দা সিধাম ঘোষ, কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকতেন তিনি। জ্বর নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করালে কান্দি হাসপাতালে তার ডেঙ্গু পজিটিভ রিপোর্ট আসে। গতকাল বিকেলে মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে মৃত্যু হয় তাঁর।
ডেঙ্গি মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে নবান্নের। সোমবারই নবান্নে একটি বিশেষ বৈঠক হয়েছে। ডেঙ্গি রোধে ৯ পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে। মৃত্যু ঠেকাতে এমআর বাঙুরে চিকিৎসায় বিশেষ নজর দিয়েছে নবান্ন। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ভেক্টর কন্ট্রোল থেকে সরানোর নির্দেশ পুরসভাগুলিকে। ১২৭ পুরসভার মধ্যে ৫৫ পুরসভায় ডেঙ্গির বিপদসঙ্কেত। প্রয়োজনে এজেন্সি দিয়ে জঞ্জাল সাফাইয়ের সিদ্ধান্ত। পঞ্চায়েত, ব্লক স্তরে জঞ্জাল সাফাইয়ের পরিকাঠামো নির্মাণ। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গি সচেতনতা প্রচারে জোর।
সতর্কতা, পরিচ্ছন্নতা, প্রশাসনিক নজরদারি সত্ত্বেও রোখা যাচ্ছে না ডেঙ্গি সংক্রমণ। একের পর এক মৃত্যু, আর সংক্রমণ যা নিয়ে রীতিমত শঙ্কায় প্রশাসন। একদিকে যখন শনিবার রাতে রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যদিকে তখন রবিবার কাকভোরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক তরুণীর। সূত্রের খবর, মৃত ওই তরুণীর নাম সমাপ্তি মল্লিক(২০)। দক্ষিণ দমদমের বাসিন্দা সমাপ্তি বেশ কয়েকদিন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নাগেরবাজার এর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। পরবর্তীতে ওই যুবতীর ডেঙ্গু পজিটিভ রিপোর্ট আসে, এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল রাতে আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে।
ওদিকে শনিবারই ভার্চুয়াল প্রশাসনিক বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সারা সপ্তাহ ২৪ ঘণ্টা কাজের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ডেঙ্গি নিয়ে নবান্নে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, জেলা পুলিশের আধিকারিকরাও। কালীঘাটের বাড়ি থেকে বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রীও। ডেঙ্গি মোকাবিলায় একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আগামী ২ সপ্তাহ পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লকগুলিতে নজরদারি চালানোরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ২-৩দিন বৃষ্টি হতে পারে। তাই জল দ্রুত সরানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে ডিঙি সংক্রমণ প্রায় ৪২ হাজার ছুঁয়েছে। এবং ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ জন। এ অবস্থায় রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রশাসনিক কর্তাদের আরও কড়া হতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে এই মৃত্যু নিয়ে দক্ষিণ দমদমে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল ৭। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।