নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অ্যাকশন মোডে সিবিআই (CBI)। সোমবার ফের ২ তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। আর এবারে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার করা হল নিয়োগ সংক্রান্ত আরও নথি ও অ্যাডমিট কার্ড। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কাউন্সিলরের বাড়িতে এই নথিগুলো কোথা থেকে এল? আর এরই তদন্ত করছে সিবিআই।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিধাননগরের কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। উদ্ধার করা হয় ১৪ থেকে ১৫ টি চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড এবং ৫ থেকে ৬ টি বদলি সংক্রান্ত নথি। সমস্ত নথি, সিবিআইয়ের কাছে প্রাপ্ত নথির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও অ্যাডমিট কার্ডের প্রার্থীদের এবং যাঁদের বদলি সংক্রান্ত নথি পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে সিবিআইয়ের তরফে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, তাঁদের খুব শীঘ্রই তলব করার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। উদ্ধার হয় প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত এবং এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি। প্রায় ১০০ পাতার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। কলকাতা পুরসভার একজন কাউন্সিলরের বাড়িতে এত নিয়োগ সংক্রান্ত নথি কেন ছিল এ নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই। প্রয়োজনে তাঁকেও তলবের সম্ভাবনা রয়েছে সিবিআইয়ের তরফে বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, পার্থ ঘনিষ্ঠ বলেও রাজনৈতিক মহলে পরিচিত এই কাউন্সিলর।
এবারে কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হল নিয়োগ সংক্রান্ত নথি। তাঁর বাড়িতে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি কোথা থেকে এল, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। শাহী সভার পর থেকেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে আরও তৎপর সিবিআই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শাসক দলের একাধিক নেতা-বিধায়ক-কাউন্সিলরের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। প্রায় তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ি, বেসরকারি কলেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য। নেতা ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সুজল আনসারির কলেজ থেকে উদ্ধার হয়েছে ভুয়ো ওএমআর শিট। আর শুক্রবার দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হল নিয়োগ সংক্রান্ত নথি।
বৃহস্পতিবারই মুর্শিদাবাদের ডোমকলের বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৮ লক্ষ টাকা। একই সঙ্গে সিবিআই সূত্রে খবর, বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণে সোনাও। এর পরই আজ জানা গিয়েছে, বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রাথমিক নিয়োগের নথি থেকে শুরু করে বদলি সংক্রান্ত একাধিক নথি। কিন্তু অন্যদিকে দেবরাজের দাবি, বাড়ি থেকে নথি পাওয়া গেলেই তাতে প্রমাণিত হয় না যে, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। কোনও চাকরিপ্রার্থী তাঁকে কোনও নথি দিতেই পারেন। তবে তাতে চাকরি হল কিনা, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কিনা, তা দাবি করা যায় না।
আবার কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের বাড়ি থেকেও বাজেয়াপ্ত করা হয় তাঁর দুটি মোবাইল ফোন এবং ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট। আবার বড়ঞার সুজল আনসারির বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন, ডায়েরি, কিছু ওএমআর শিট সহ ব্যাঙ্ক পাসবইয়ের জেরক্স নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা।
ভুয়ো আয়কর দফতরের আধিকারিক (Fake IT Officer) সেজে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় ডাকাতি (Debra Dacoity)। ডেবরা ব্লকের বালিচক এলাকার কার্তিক পাত্র নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকা ও সোনার গহনা নিয়ে চম্পট দিয়েছিল অভিযুক্তরা। গত বছর মার্চের এই ঘটনা। অবশেষে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে চলতি বছর এই ডাকাতির ঘটনার প্রধান পাণ্ডাকে ভিন রাজ্য থেকে গ্রেফতার করেছে ডেবরা থানার পুলিস।
জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম শরৎ পাণ্ডে। মধ্যপ্রদেশের রিওয়া জেলার গুড় থানার বাগমোড়ার ওই যুবককে গ্রেফতার করে ডেবরায় আনা হয়েছে। ডেবরা থানার পিএসআইয়ের নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশের গিয়ে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়েছে। তাঁর টি-আই প্যারেড করা হবে।
যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে দাঁড়িয়ে নারীরা যে স্বনির্ভর এবং সংসার চালানোর জন্য প্রস্তুত তা প্রমাণ করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার (Debra) রেখা দাস। স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর পরিবার সামলাতে ভরসা এখন কুলফির (Kulfi) দোকান।
এক অন্য দুর্গা (durga)! দশ বছর আগেই স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। নিজের হাতেই সংসারের ভার পড়েছে কুলপি বিক্রেতা রেখা দাসের। একা দুর্গা, পরিশ্রম ও জেদের বশে টেনে যাচ্ছেন সংসারের হাল। দলবতিপুরের বাসিন্দা রেখা দাস, নিজেই টলি ভ্যান চালিয়ে পাড়ায় পাড়ায় কুলফি বিক্রি করেন। আর তাঁর পয়সাতেই চলে সংসার। বাবা মায়ের দেখভালও করেন রেখা নিজেই। প্রতিদিন সকাল হলেই শাড়ি পরেই টলি ভ্যান নিয়ে রাস্তায়, পাড়ায়, ওলিতে-গলিতে ঘণ্টা বাজিয়ে কুলপি বিক্রি করে কাটছেন জীবন।
পরিবার সূত্রে খবর, স্বামী দশ বছর আগেই ছেড়েছেন। পরিবারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব এখন রেখার কাঁধেই৷ কিন্তু এতে রেখার কোনও আপসোস নেই। বেজায় খুশিতে রয়েছেন তিনি। তাঁর মা তো বলেই দিয়েছেন, "আমার মেয়ে আমার কাছে দুর্গা।" এখন ডেবরায় মুখে মুখে এই দুর্গার নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে।
হাওড়া (Howrah) থেকে খড়গপুর (Kharagpur) ব্যস্ততম রেললাইন, সেখানেই রক্তাক্ত অবস্থায় বসে একজন। বাবাকে বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে চিৎকার করছে মেয়ে। স্থানীয়রা ছুটি যেতেই অন্ধকার রেললাইন (railway line) বরাবর কিছুটা যেতেই উদ্ধার হল বাবার দলা পাকানো দেহ। শুক্রবার রাতে ডেবরা (Debra) বালিচকের স্টেশনে অদূরে রঘুনাথপুরে (Raghunathpur) এই মর্মান্তিক ঘটনার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় বছর ৫৫ এর কমল সেন নামে এক বালিচক বাসিন্দার মৃতদেহ। তাঁর মৃতদেহের অদুরেই রক্তাক্ত অবস্থায় বাবাকে বাঁচানোর আর্তি জানাচ্ছিলেন মেয়ে দেবলীনা সেন। কলেজ ছাত্রী বছর কুড়ি ওই তরুণীর শরীরে একাধিক ক্ষত রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। পুলিসের ধারণা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে ওই তরুণীকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন দেবলীনার চিৎকার শুনতে পেয়ে ছুটে যান স্থানীয়রা। তারপর তরুণীর কথামতোই কিছুদূর গিয়ে খুঁজে পায় ওই ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ। খবর পেয়ে পৌঁছয় ডেবরা থানার পুলিস। যদিও রেল লাইনের ঘটনাটি ঘটায় রেল পুলিসের অধীনে এই তদন্ত বলে জানায় পুলিস।
এরপর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় জখম ওই তরুণীকে উদ্ধার করে প্রথমে ডেবরা হাসপাতাল এবং পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে সমস্ত ঘটনার খোঁজ শুরু করেছে রেল পুলিস ও ডেবরা থানার পুলিস। কে বা কারা আক্রমণ চালাল? নাকি স্বাভাবিক দুর্ঘটনাই এটি সেই ধন্দেই এখন রয়েছেন সকলে।