মঙ্গলবার থেকে আগরতলায় (Agartala) শুরু হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির পুলিস প্রধানদের ২৭ তম কনফারেন্স। ত্রিপুরা (Tripura) রাজ্যের রাজধানী আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে (Conference) প্রথম দিনের সূচনা পর্বে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডঃ মানিক সাহা (Manik Saha), ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্য সচিব জে কে সিনহা। বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত পুলিসের উচ্চ আধিকারিকরা মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্য সচিবকে স্বাগত জানান।
পরে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'প্রতিবেশী রাষ্ট্র মায়ানমার থেকে বিভিন্ন সময় নেশা সামগ্রী উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রবেশ করছে। এরপর এগুলো বাংলাদেশের যাচ্ছে বেআইনিভাবে। আবার ত্রিপুরাতে অবৈধভাবে উৎপাদিত গাঁজা দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার হচ্ছে। কী করে নেশা সামগ্রী পাচার বন্ধ করা যায়, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। তিন বছর পর এ ধরনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং ত্রিপুরা রাজ্যে ৩০ বছর পর এই কনফারেন্স হচ্ছে।'
কোভিড-সহ নানা কারণে মাঝে কিছু বছর এই বৈঠক হয়নি। বিভিন্ন রাজ্যের পুলিস প্রধানের পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা এজেন্সির আধিকারিকরাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এর ফলে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া আরও গতিশীল হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা আরও বলেন, 'আগে উত্তর-পূর্ব ভারতের উগ্রবাদীদের বাড়বাড়ন্ত থাকলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চেষ্টায় এখন দেশের এই অঞ্চলের শান্তি বিরাজ করছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া এক্ট-ইস্ট পলিসির কারণে উত্তর-পূর্বের প্রতিটি রাজ্য একই মালায় আবদ্ধ হয়ে গিয়েছে। আগে রাজ্যগুলির নিজেদের মধ্যে সমস্যা হত, এখন এগুলি নেই বললেই চলে। উগ্রবাদও নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের কিছু কিছু এলাকায় এখন উগ্রবাদী রয়েছে। এই দিকেও রাজ্যগুলির পাশাপাশি কেন্দ্রের নজরদারি চলছে। নিজেদের মধ্যে ফিলগুড এবং অষ্টলক্ষ্মীর কথা বলা হয়েছিল তা বাস্তবায়িত হয়েছে।'
উত্তরপূর্বের বিভিন্ন রাজ্য দিয়ে অনুপ্রবেশ এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেন তিনি। জানান রোহিঙ্গা মাঝে মাঝে রাজ্য অনুপ্রবেশ করে এবং পুলিস বিভিন্ন সময়ে তাঁদের আটক করছে। পাশাপাশি অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তিনি বলেন, রাজ্যের বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া হয়ে গিয়েছে। ছোট ছোট কিছু জায়গা বাকি রয়েছে নানা সমস্যার কারণে। এগুলোতেও যাতে দ্রুত বেড়া নির্মাণ করা যায় তার জন্য আলোচনা চলছে।
মহাঅষ্টমীর দিন বড়সড় নাশকতা জম্মুতে? সোমবার বন্ধুর বাড়ি থেকে উদ্ধার কারা বিভাগের ডিজি (DG Prison) হেমন্ত লোহিয়ার নলিকাটা দেহ। পলাতক সন্দেহভাজন পরিচারক। তিন দিনের জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir সফরে মঙ্গলবার বৈষ্ণোদেবী যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর এই সফরের এই ধরনের হাই প্রোফাইল খুনের ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তইবার শাখা সংগঠন 'পিপলস অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট ফোর্স'(পিএএফএফ)।
জানা গিয়েছে, সোমবার বন্ধুর বাড়ি থেকে ডিজিপির দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর গলার নলি কাটা ছাড়াও শরীরে পোড়ার দাগ মিলেছে। পুলিস সূত্রে খবর, পুলিসকর্তার সরকারি বাসভবনে সংস্কারের কাজ চলছিল, তাই এক বন্ধুর বাড়িতে সপরিবারে থাকছিলেন লোহিয়া।
কিন্তু কারা বিভাগের ডিজিপি খুনের ঘটনায় শোরগোল জম্মু-কাশ্মীরে। খুনের অভিযোগে সন্দেহের তালিকায় পরিবারের পরিচারক। ইয়াসির নামে সেই পরিচারক পলাতক থাকলেও দিনভর তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী কারণে খুন জানার চেষ্টা করছে পুলিস। এদিকে, লস্কর-ই-তইবার শাখা সংগঠনের তরফে ডিজিপি হত্যার দায় স্বীকার করে এক প্রেস বিবৃতিতে বলা, ‘আমাদের বিশেষ বাহিনী উদাইওয়ালা, জম্মুতে অভিযান চালিয়ে পুলিসের ডিজি লোহিয়াকে খতম করেছে। আগামীদিনে এরকম আরও হামলা চালানো হবে। এত নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে এটা একটা ছোট উপহার।'
১৯৯২ ব্যাচের আইপিএস অফিসার লোহিয়া গত অগস্টে কারা বিভাগের ডিজি হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। জম্মুর এডিজিপি মুকেশ সিং জানান, লোহিয়াকে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান।
বুধবার নবান্নে (Nabanna) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। এদিনের বৈঠকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দফতরের সচিব-সহ সিনিয়র আধিকারিকরা। এছাড়াও বিএলআরও-রাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি পুজোর পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতে পারে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
এদিন নবান্নের পর্যালোচনামূলক বৈঠক থেকে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "কোনও অভিযোগই যেন ফাইল চাপা হয়ে পড়ে না থাকে। সচিবালয়ে কোনও অভিযোগ এলে ৭ দিনের মধ্যে করতে হবে নিষ্পত্তি। সচিবালয়ের পাশাপাশি পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদ স্তরেও কোনও অভিযোগ এলে তা সমাধান করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই।" এদিন রিভিউ বৈঠকের শুরুতেই আইন শৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে বাগুইহাটির ঘটনা নিয়ে ডিজিকে ডেকে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন ১৩ দিন দেহ পড়ে থাকল? সমন্বয়ের অভাব হল কেন? কমিশনারকে জিজ্ঞাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিজির ওপরেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি ডিজি-র উদ্দেশ্যে বলেন, "বেআইনি কিছু সহ্য করব না। ৭ দিন সময় দিলাম সমন্বয় ফিরিয়ে আনার জন্য যা করার করুন।" অন্যদিকে নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রীদের সতর্ক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "স্থায়ী হোক বা অস্থায়ী, সরকারি নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়েই নিয়োগ করতে হবে। অনুমতি ছাড়া কোনও নিয়োগ নয়।" নিয়োগের আগে প্রতিটি দফতরের নির্দিষ্ট কমিটির থেকে অনুমতি নিতে হবে বলেও কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেই বিশেষ করে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে রাজ্য পুলিসের কাছে সপরিবারে আত্মসমর্পণ (Surrender) করলেন কেএলও নেতা (KLO Leader) কৈলাস কোচ। বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিসের ডিজি (DGP, bengal Police) মনোজ মালব্য, কৈলাস এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্নাকে পাশে বসিয়ে এই ঘোষণা করেন। ডিজি জানান, 'কামতাপুরী লিবারেশন অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক কৈলাস। তিনি নিজেই আমাদের কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব রাখেন। গণতন্ত্রে হিংসা বা সন্ত্রাসবাদের জায়গা নেই, এটা অনুধাবন করেই কৈলাস এবং তাঁর পরিবারের এই সিদ্ধান্ত।' এদিন ভবানী ভবনে হওয়া সাংবাদিক বৈঠকে ডিজির কাছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র সমর্পণ করেন কেএলও-র একদা এই কমান্ডার।
এদিন সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে কৈলাস কোচ জানান, 'হিংসার মাধ্যমে কামতাপুরের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা আমি ১৬ বছর সশস্ত্র আন্দোলন করে বুঝেছি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কামতাপুরে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে মুলস্রোতে ফিরলাম। আমি চাই আমার যারা ভাইবোন এবং বন্ধুবান্ধব এখনও অস্ত্র ধরে আছেন, তারাও মূলস্রোতে ফিরুক।'
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কৈলাস কোচ কেএলও বিচ্ছিনতাবাদী সংগঠনের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন। অসম এবং কোচবিহারের একটি অংশকে পৃথক করে গ্রেটার কোচবিহার বা কামতাপুর রাজ্যের দাবি বহুদিনের। সেই দাবিকে বাস্তব রূপ দিতে তৈরি হয়েছিল বিচ্ছিনতাবাদী জঙ্গি সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা কেএলও। এই সংগঠনের নেতা জীবন সিং বর্তমানে মায়ানমারে আত্মগোপন করে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে বার্তা পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই কাজে মধ্যস্থতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে।
ইতিমধ্যে একদা সক্রিয় থাকা জীবন সিং এবং কেএলও ক্রমশ নিষ্ক্রিয় হয়েছে। কিন্তু নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে মাঝে মধ্যেই ভিডিওবার্তা পাঠান তিনি। সেখানেও পৃথক রাজ্যের দাবি জানান তিনি। যদিও সম্প্রতি আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্য চেয়ে ভিডিওবার্তা পাঠাতে দেখা গিয়েছে জীবন সিংকে।