ময়দান চত্বরে মেট্রোর কাজের জন্য গাছ কাটার মামলায় মেট্রোর কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা আরভিএনএল, কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এদিন সওয়াল জবাবের সময় আবেদকারী সংস্থার আইনজীবী জানান, মেট্রোর কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা আরভিএনএল-কে ময়দান এলাকায় গাছ কাটার কারণ জানাতে বলেছিল আদালত। কিন্তু গত শুনানিতেও তারা উত্তর দেয়নি। আমাদের দাবি মেট্রো স্টেশন অবশ্যই মানুষের স্বার্থে। কিন্তু তার জন্য গাছ কাটার কী কারণ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ময়দান কি রাজ্যের তত্ত্বাবধানে? উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী মহম্মদ গাল জানান, না, এই ক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও বিশেষ ভূমিকা নেই।
আরভিএনএলএর আইনজীবী সাক্ষ্য সেন জানান, এই মেট্রো পথ আর্মির অনুমোদন নিয়ে তৈরি হচ্ছে।মেট্রো প্রচুর দুর্ভোগ সামলেছে এই প্রোজেক্ট করতে গিয়ে। জমি জট থেকে অন্য সমস্ত সমস্যা। এই প্রোজেক্টের তিনটি স্টেশন হবে এই চত্বরে মেশিন সহ অন্যান্য সামগ্রী রাখা ও ব্যবহারের জন্য কিছু গাছের ডাল ও সামান্য কিছু গাছ কাটা হয়ছে। সেই জায়গায় আমরা অতিরিক্ত গাছ বসিয়ে দেবো।
আরভিএনএলএর আইনজীবী সাক্ষ্য সেনের কথা শুনে প্রধান বিচারপতি জানান, মেট্রো কখনই তাদের দায় এড়াতে পারে না। ময়দান এলাকায় প্রচুর জায়গা ।যেখানে গাছ আছে সেটা অনেক বেশি স্পর্শকাতর। মেট্রোকে ভেবে কাজ করতে হবে।আমরা গর্বিত কলকাতা মেট্রো অতি প্রাচীন। এশিয়ার প্রথম। গাছগুলোর জায়গায় পুনরায় নতুন গাছ বসাতে হবে। ব্যালেন্স বজায় রেখে কাজ করতে হবে মেট্রোকে। প্রযুক্তি এখন অনেক উন্নত, প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। হাইকোর্টের ক্লাবও আছে ময়দান চত্বরে যেখানে বাড়তি নির্মাণ সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, মোমিনপুর থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রোর কাজের জন্য ময়দান চত্বরে প্রায় ৭০০ গাছ কাটার চিন্তাভাবনা চলছিল।তাঁর বিরোধিতা করেই পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালক্যাটা নামক একটি বেসরকারি সংস্থা, দেদার গাছ কাটা হচ্ছে ময়দানে, এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ২৬ অক্টোবর এই মামলার শুনানিতে অন্তর্বর্তী স্থাগিতাদেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি বিভাস রঞ্জন দে’র ডিভিশন বেঞ্চ। তারপরেই ১৭ নভেম্বর শুক্রবার এই মামলার শুনানি ছিল। শুক্রবার হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে বিশ্ব উষ্ণায়ন। তাল মিলিয়ে বাড়ছে পরিবেশ দূষণের মাত্রা। কিন্তু কিছুতেই যেন মানুষ সচেতন নয়। দিনের পর দিন সামনে আসছে নির্বিচারে সবুজ নিধনের মতো ঘটনা। এবার শিরোনামে হুগলি নলডাঙা এলাকা। ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসীর একাংশ।
এলাকার এক বাসিন্দার দাবি, গাছ গুলি বাড়তে বাড়তে ইলেক্ট্রিক তারে গিয়ে ঠেকেছে। যার জেরে ঝড় বৃষ্টির দিনে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশ বেড়ে যায়। এছাড়া বেশ কিছু কীট পতঙ্গের উপদ্রবের কারণেই স্থানীয় পঞ্চায়েতে গাছ কাটার জন্য জানানো হলে স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে এসে গাছ গুলি ছেটে দেওয়া হয়।
গত মাসেই হুগলির নপাড়া প্রাথমিক স্কুলে গাছ কাটার অভিযোগে, কানাইপুর পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর দিকে আঙুল তুলে পোস্টার পড়েছিল। ফের হুগলির বুকে সবুজ নিধন। যার জেরে এবার বিজেপির তরফে নলডাঙ্গায় এলাকায় পড়ল পোস্টার। যদিও পঞ্চায়েত সদস্যার দাবি, এলাকাবাসীর স্বার্থেই সমস্ত কাজ করা হয়েছে। তাই বিজেপির দেওয়া পোস্টারে ডোন্ট কেয়ার মনোভাব তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার।