গার্ডেনরিচকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে তৎপর কলকাতা পুর সংস্থা। সংস্থার সব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ শুরু করতে চলেছে পুর কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণ আটকাতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, আইনি নোটিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পদ্ধতি নিয়ে দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ।
ইতিমধ্যে গার্ডেনরিচে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা নিয়ে শুরু হয়েছে পুরসভা ও আবাসিকদের মধ্যে টানাপোড়েন। ইতিমধ্যে আবাসিকরা দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। আগামী সোমবার রয়েছে এই মামলার শুনানি। কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিসের তরফে তৈরি করা হয়েছে, গার্ডেনরিচে গজিয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণের তালিকা। সেই তালিকা ধরেই কলকাতা পুরসভা আগামীদিনে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করবে। একই সঙ্গে পুনর্বাসন নিয়েও ভাবনা রয়েছে কলকাতা পুরসভার।
অন্য়দিকে গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর বেআইনি নির্মাণ ভাঙার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল প্রশাসন। এবার গার্ডেনরিচের একটি বেআইনি বহুতল ভাঙার কাজে হাত দিল প্রশাসন। যদিও কোনওরকম নোটিশ ছাড়া বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায় গার্ডেনরিচে। যা নিয়ে বেআইনি বহুতলের আবাসিকরা বিক্ষোভও দেখান।
গার্ডেনরিচ বহুতল বিপর্যয়ে আরও একজনের মৃত্যু। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২। শনিবার কলকাতার এসএসকেএমে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধার।
সরকারি নথি অনুযায়ী গার্ডেনরিচের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬ জন জখম বাসিন্দা। তাঁর মধ্যে রয়েছেন, মহম্মদ হায়দার (২৪), রিজওয়ানা খাতুন (৩৫), মহম্মদ জানু (৩৫), সবিয়া পারভিন (১৯), সারিকা বেগম (২৬) এবং নমিতা পাত্র (৪০)।
গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রেড জোনে রয়েছেন যে ৩ জন তাঁর মধ্যে রয়েছেন, মুসরত জাহান (৩৫), মঈনুল হক (২৩) এবং মহম্মদ সহিলউদ্দিন(২১)।
তবে এই এই বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছিল পুরসভার ৩ ইঞ্জিনিয়ারকে। শোকজ জবাবে ইঞ্জিনিয়ারদের যুক্তিতে সন্তুষ্ট নয় পুরসভা। শোকজের এই জবাবে ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হচ্ছে তিন ইঞ্জিনিয়ার, শুভম ভট্টাচার্য, দেবব্রত ঘোষ, এবং দেবাদিত্য পালের বিরুদ্ধে।
এখন দেখার বিষয় যে গার্ডেনরিচের ঘটনায় গঠিত ৭ সদস্যের কমিটির ওই রিপোর্টে কী তথ্য উঠে আসে। শুধুই কি ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতি নাকি নেপথ্যে রয়েছে প্রভাবশালীদের হাত? এই উত্তর তো বলবে সময়। কিন্তু এই মৃত্যু মিছিল পুনরায় ঘটবে না তো? প্রশাসনের হুঁশ আদৌ ফিরবে তো? নাকি ভোট পেরোলেই আবার যেই কী সেই? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
কলকাতার আরও একটি বেআইনি নির্মাণকে জরিমানার অঙ্ক দ্বিগুণ করে দু- লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের। বেআইনি নির্মাণগুলির ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট যে চরম পদক্ষেপের পথে হাঁটছে তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কলকাতার নন্দীবাগান এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক দ্বিগুণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। এর আগে ওই বেআইনি নির্মাণের জন্য প্রোমোটারকে এক লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। বুধবার সেই অঙ্ক বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করেছেন বিচারপতি সিনহা।
কিন্তু কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ঠিক এমন নির্দেশ? কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বোরোর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দীবাগান এলাকায় কোনরকম অনুমতি ছাড়া একটি তিন তলার বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছিল। নজরে আসতেই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু পুরসভায় পাল্টা ওই বেআইনি নির্মাণকে আইনি অনুমোদন দেওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছিলেন প্রোমোটার। তাতে কাজ না হওয়ায় পরে প্রমোটার নিজেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আবেদন ছিল নির্মাণটিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারপতি সিনহা তাতে কোন আমল দেননি। উল্টে প্রোমোটার কে ১৮ মার্চের মধ্যে জরিমানা বাবদ এক লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু সেই নির্দেশ পালন না করে পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রোমোটার। যেহেতু সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি তাই বুধবার বিচারপতি সিনহার কাছে জরিমানার অঙ্ক জমা দেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় চান প্রোমোটারের আইনজীবী। আর এতেই চটে যান বিচারপতি। তিনি বলেন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি এবং ইচ্ছাকৃত জরিমানা এড়ানোর জন্য ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রোমোটার। চূড়ান্ত সাহসিকতার কাজ করছে প্রোমোটার। তাই তাকে এবার দ্বিগুণ জরিমানা দিতে হবে। এরপরই বিচারপতি নির্দেশে জানিয়ে দেন, ২২ মার্চের মধ্যে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে ওই প্রোমোটারকে। ২৭ মার্চ তার রশিদ জমা দিতে হবে আদালতে। সেইদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে আরও বাড়ল মৃতের সংখ্যা। সকালে ২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও অনেকে আটকে রয়েছে বলে খবর। প্রতিবেদবন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ২০ জনকে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল, রাজ্য বিপর্যট মোকাবিলা দল, দমকল, পুলিস এক যোগে উদ্ধারকাজ করছে।
গভীর রাতে গার্ডেনরিচের ১৩৪ নম্বর পুরএলাকায় হঠাৎই একটি নির্মীয়মান বহুতল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে পাশের ঝুপড়ির উপরে। সকলেই প্রায় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন সেসময়। রমজান মাসের কারণে তাড়াতাড়িই এলাকার বাসিন্দারা ঘুমিয়ে পড়েন। কারণ ভোর থেকে আবার শুরু হয়ে যায় রমজানের উপবাস। তার মাঝে হঠাৎ এই ঘটনায় রীতিমতো চমকে গিয়েছিলেন বাসিন্দারা।
ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকাজ শুরু হতে দেরি হয়। রাতের অন্ধকারেই উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপরে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ১৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মাঝে যাঁরা আটকে রয়েছেন তাঁদের অক্সিজেন স্যালাইন পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে খবর পেয়ে সকালেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন মেয়র ফিহাদ হাকিম এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরহাদ হাকিম এবং মুখ্যমন্ত্রী দুজনেই মেনে নিয়েছেন বেআইনি নির্মাণের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। মেয়রের নিজের এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ব্যান্ডেজ মাথায় নিয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছেন এবং দোষীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের এক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমকে গ্রেফতার করা হয়।
মাঝরাতে গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা। সকাল হতেই মাথায় ব্যান্ডেজ বাধা অবস্থায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ৯টার একটু পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে যান গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনের ওই এলাকায়। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই এলাকা পরিদর্শন করেন। দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। মৃতদের পরিবার পিছু ৫লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসায় ১ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে। রাতেই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে মৃতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”রমজান মাসে এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা সকলে অত্যন্ত মর্মাহত। অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা এটা এবং বেআইনি কাজের জন্য এই ঘটনা ঘটল। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া অ্য়াকশন নেওয়া হোক। উদ্ধারকাজ দ্রুত হচ্ছে।”
সাতসকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন বেআইনি ভাবে তৈরি করা হচ্ছিল বহুতল সেকারণেই এই ঘটনা।
মেয়র জানিয়েছেন, কোনও অনুমতি না নিয়েই প্রমোটার বহুতলটি নির্মাণ করছিল। পুরো ঘটনার তদন্ত হবে। তবে আগে ঘটনাস্থল থেকে আটকে থাকাদের উদ্ধার করা জরুরি। কিন্তু কীভাবে পুরসভার নজর এড়িয়ে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে গার্ডেনরিচ মেয়রের নিজের এলাকা। সেখানে এই ধরনের ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
ফিরহাদ হাকিম বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে উদ্ধারকাজ আগে শেষ করতে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। কিন্তু ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় সেখানে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের পৌঁছতে সময় লেগেছে। স্থানীয়রাই উদ্ধারকাজ শুরু করে দিয়েছিল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম আরও জানিয়েছেন, বাম আমল থেকেই বেআইনি ভাবে নির্মাণ শুরু হয়েছিল এলাকায়। এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে পরিস্থিতি। তারপরেও কোন গলিতে কে বেআইনিভাবে নির্মাণ করছে তা বোঝা অত্যন্ত কঠিন। দোতলার অনুমোদন নিয়ে পাঁচ তলা বাড়ি বানানো হচ্ছিল। সেকারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
মধ্যরাতে শহর কলকাতার বুকে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে বিপত্তি। ঝুপড়ির উপরে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান বহুতলটি। কমপক্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে এখনও অবধি জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপ থেকে। তাদের মধ্যে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১১ জন। ২ জন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। অনেকেই বহুতলের ভিতরে আটকে রয়েছে বলে আশঙ্কা। রাত থেকেই চলছে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যে ঘটনায় প্রমোটারদের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
হঠাৎ করে মধ্যরাতে কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটে দুর্ঘটনা। গোটা শহর যখন ঘুমন্ত ঠিক তখনই হুড়মুড়িয়ে একটি নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে পড়ে পাশের ঝুপড়ির উপরে। ঝুপড়িতে সেসময় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন সকলে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন ২ জন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত হয়েছেন বহু।
ইতিমধ্যেই দমকল এবং পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। পুলিসের উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। ২ জনকে উদ্ধার করে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। মৃত ২ জনেই মহিলা বলে জানা গিয়েছে। মৃত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, পুরোটাই বেআইনিভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেকারণে তাঁরা সেটা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। স্থানীয়রা চারতলার পরের কাজ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাসিন্দাদের কথায় কর্ণপাত না করেই নির্মাণ কাজ চালাচ্ছিলেন প্রমোটার এমনই অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
এদিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। এনডিআরএফও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন। বহুতল লাগোয়া কয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয়রা মেয়রকে সামনে পেয়ে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
প্রকৃতির ভয়ঙ্কর রূপ বোধহয় একেই বলে। সিকিমের যেদিকেই চোখ যাচ্ছে, সেদিকেই শুধু ধ্বংসের ছবি। একের পর এক মৃতদেহ ভেসে আসছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে উদ্ধার হচ্ছে চাপা পড়ে যাওয়া গাড়ি, বাড়ি। ফের নতুন করে ধস নামছে। ইতিমধ্যেই সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯। তার মধ্যে ৬ জনই সেনা জওয়ান। নিখোঁজ প্রায় ১০৩ জন। উদ্ধারকাজ জারি রয়েছে। এরই মধ্যে সিকিমের মানগান জেলায় সাঁকো চো হ্রদ ফেটে বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এলাকাবাসীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ৩ হাজারের বেশি পর্যটক সিকিমে আটকে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ২৫০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ৬০০০ জনকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সিকিমের মুখ্য সচিব বিজয়ভূষণ পাঠক জানিয়েছেন, লাচেন ও লাচুং-এ প্রায় ৩,০০০ মানুষ আটকে পড়েছেন। ৭০০ থেকে ৮০০ জন ড্রাইভার সেখানে আটকে পড়েছেন। আমরা সেনা ও এয়ার ফোর্সের হেলিকপ্টার দিয়ে সবাইকে সরিয়ে নেব। যারা লাচেন ও লাচুং-এ আটকে পড়েছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ইন্টারনেটে ভয়েসের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
এদিকে, সাকো চে লেক যে কোনওসময় ফেটে যেতে পারে। প্রায় ১.৩ কিলোমিটার লম্বা এই হ্রদ। আশেপাশে বেশ কয়েকটি এলাকায় বসতি রয়েছে। ফলে লেক ফেটে যাওয়ার আশঙ্কায় সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে সিকিম প্রশাসন।
বাঁকুড়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শান্তনু সেন এবং সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তার পরে, মৃতদের পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের নিয়ে বিমানে করে দিল্লিও যান। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের আন্দোলনে যোগ দিতে পারেন তাঁরা।
প্রবল বৃষ্টিতে বাঁকুড়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় তিনজন শিশুর। সেই ঘটনার পর রবিবার সকালেই মৃত শিশুদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান শান্তনু ও সায়ন্তিকা। সেখানে পুরো ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ি করেন তাঁরা। তারপরেই ওই পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে দিল্লি চলে যান।
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার বোড়ামারা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তিন শিশু পাঁচ বছর বয়সি রোহন সর্দার, চার বছরের নিশা সর্দার এবং তিন বছরের অঙ্কুশ সর্দার।
শুক্রবার বিকেল থেকেই খারাপ আবহাওয়া রাজ্য জুড়ে। বাঁকুড়াতেও বৃষ্টি হচ্ছিল দফায় দফায়। শনিবার সকালে বৃষ্টি কিছুটা কমতে গ্রামের এক কাঁচা বাড়ির পাশে খেলতে যায় ওই তিন শিশু। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ভয়াবহ দুর্ঘটনা। মিজোরামের (Mizoram) নির্মীয়মান (under-construction) রেলসেতু ভেঙে (Railway bridge) বিপত্তি। এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর (Death) খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। সেই ব্রিজে কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ মালদহের বহু শ্রমিক। অন্তত মালদহের (Malda) পুখুরিয়া থানার চোদুয়ার গ্রামের ২৫ জন শ্রমিকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী জ়োরামথাঙ্গা ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জোরকদমে উদ্ধারকাজ চলছে।
মিজোরাম রেলওয়ে ওভার ব্রিজ ধসের এই ঘটনায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব টুইট করেছেন। তিনি বলেন, "মিজোরামের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় শোকাহত। এনডিআরএফ, রাজ্য প্রশাসন এবং রেলের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চলছে।" আর ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা আর্থিক ও আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের তরফে।
জানা গিয়েছে, সকাল ১০ টা নাগাদ শুরু হয় সেতু তৈরির কাজ। সেখানে ৩৫ থেকে ৪০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। আচমকা ভেঙে পড়ে সেতু। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ফের স্কুলের (school) ছাদ ভেঙে বিপত্তি। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় কখনও ভেঙে পড়েছে ছাদ, তো কখনও আবার ভেঙেছে দেওয়াল। এবার স্কুলের নাচের অনুশীলনের সময়ই চাঙর ধসে (collapsed) পড়ায় ঘটল বিপত্তি। ঘটনাস্থল আসানসোলের (Asansol) রানীগঞ্জের আই হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় অবস্থিত এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। জানা যায়, বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের (Annual cultural events) অনুশীলন পর্ব চলার সময় হঠাৎই স্কুলের ছাদের সিলিং-এর চাঙর ধসে পড়ে। ঘটনায় আহত হয় ৩জন পড়ুয়া। তারা সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া বলে স্কুল সূত্রে খবর। ঘটনার খবর বাইরে চাউর হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এলাকায়। ওই স্কুলের অভিভাবক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ এই বিষয় নিয়ে ব্যাপক আতঙ্কিত।
এদিকে, সমস্ত বিষয়ে খতিয়ে দেখে পড়ুয়াদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে জানতে পারা যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, সিলিং-এর প্লাস্টার ছেড়ে যাওয়ার কারণেই ও সেখানে কম্পনের ফলে ঘটে এই বিপত্তি। ঘটনায় তিন আহত ছাত্রীকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘড়ির কাটায় তখন ঠিক ১০ টা। এমন সময় এক বিকট আওয়াজে আচমকাই কেঁপে ওঠে বরানগর (Baranagar)। প্রথমে বোমা বিস্ফোরণ (bomb explosion) ভেবেছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু ছুটে বেড়িয়ে আসতেই বোঝা যায় আসলে এই আওয়াজ বোমা বিস্ফোরণের নয়। বরং ভেঙে পড়েছে একতলা একটি বাড়ির একাংশ। বুধবার মাঝরাতেই এই খবর পেয়েই সেখানে পৌঁছয় পুলিস আধিকারিকরা। বাড়ির অংশ চাপা পড়ে এক মহিলার মৃত্যু (death) হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিস। তবে মাঝরাতে এমন ঘটনায় আতঙ্কিত (panic) বরানগরের টিএন চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাসিন্দারা।
পুলিস (police) সূত্রে খবর, বাড়ির ছাদের নিচে চাপা পড়ে যান ওই মহিলা। ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। সেই সময় ছাদ ভেঙে পড়ে তাঁর ওপর। তাতেই পিষ্ট হয়ে যান তিনি। মৃতা বছর ৫৫ এর সুমিত্রা মাইতি। এদিকে ঘটনা খবর পেয়েই রাতেই হাজির হন বরানগর পুরসভার উপপুরপ্রধান দিলীপ নারায়ণ বসু। তিনি প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের তথ্য উড়িয়ে দিলেও গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বরানগর থানার পুলিস বলে জানিয়েছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা দল, পুলিস এবং দমকল ধ্বংসস্তূপ থেকে বাড়ির মালিক ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করে। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর ডিসি জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ ওই এলাকায় একটি বাড়ির একাংশ বিস্ফোরণে ভেঙে যায়। সেই বাড়ির একটা তীব্র আওয়াজ হয়, পুলিস গিয়ে দেখে ভিতরে এক মহিলা মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তদন্তকারী অফিসাররা গ্যাসের তীব্র গন্ধ পেয়েছেন। তবে কোনও আগুনের চিহ্ন ছিল না। তবে ঠিক কী কারণে এই ঘটনা ঘটল তার তদন্তে পুলিস।
তবে ঘটনার পরই মৃতার মেয়ে অভিযোগ তুলছেন, তাঁর মা যে বাড়িতে থাকতেন তার পাশেই থাকেন কাকা। প্রোমোটার লাগিয়ে তাঁদের বাড়ি ফ্ল্যাট করার চেষ্টা করছিলেন তাঁর ওই কাকা। কিন্তু তাঁর মা রাজি ছিলেন না। সেই কারণেই তাঁর মাকে মেরে ফেলা হয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, তাঁর মেয়ের এই অভিযোগ লিখিতভাবে থানায় জানাতে বলা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সমস্ত বিষয়। তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে, গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এমনকী এই ঘটনায় ভেঙেছে আশপাশের কাঁচের জানলাও। আতঙ্কে স্থানীয়রা।
ফের শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) চান্দৌলিতে একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির ভিত নির্মাণে গিয়ে ওই দুই শ্রমিকের মৃত্যু (Death) হয়। একটি পাশের দেওয়ালের পুরো কাঠামো ধসে (side wall collapsed) পড়ে এবং চারজন শ্রমিক ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যাওয়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনা। ধ্বংসস্তূপের নিচে একজন শ্রমিক আটকে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বালুয়া থানার আওতাধীন প্রভুপুর গ্রামের সঙ্গে সম্পর্কিত এই ঘটনা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিস আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন চান্দৌলির এসপি অঙ্কুর আগরওয়ালও। স্থানীয় গ্রামবাসীরাও উদ্ধারকার্যে সহায়তা করেন।
পাশের বাড়ির পাকা দেওয়াল ধসে ইট দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজে নিয়োজিত চার শ্রমিক ধ্বংসস্তূপে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং বাকি দু'জনকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেদন লেখা অবধি উদ্ধারকাজ অব্যাহত ছিল।
যাতায়াতের সুবিধার জন্য পুকুর পাড় দিয়ে রাস্তা (Road) তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিল। সেই মোতাবেক কাজও শুরু হয়ে যায়। বিপুল টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল বিশালাকার গার্ডওয়াল প্রাচীর (Guardwall)। কিন্তু নির্মাণের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় ভেঙে পড়ল সেই মজবুত প্রাচীর। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ধুলিয়ান পুরসভার উদ্যোগে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে নির্মিত সেই প্রাচীর মাত্র ১৩ দিনের মাথায় ভেঙে পড়ার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কাজের গুনগত মান নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিবমন্দির বাজার এলাকা থেকে নতুন বসতি জগন্নাথ লজ পর্যন্ত আসার জন্য তৈরি হচ্ছিল এই রাস্তা। প্রয়াত প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবল সাহার আমলেই সেই রাস্তার টেন্ডার হয়। আনুমানিক ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয় বলে দাবি।
সম্প্রতি পুকুর পাড়ে নির্মাণ করা হয়েছিল বিশালাকারের সেই টেন্ডারের গার্ডওয়াল প্রাচীর। মাস খানেক আগেই সম্পন্ন হয়েছিল সেই প্রাচীর নির্মাণ। কিন্তু অভিযোগ, মাত্র ১৩ দিনের মাথায় সেই গার্ডওয়াল ভেঙে পড়ে। আর তা নিয়েই কার্যত প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিষয়টি নিয়ে ধূলিয়ান পুরসভার চেয়ারম্যান ইনজামামূল ইসলাম জানান, কাজটা এখনও চলছে। গার্ডওয়ালের নীচের মাটি সরে যাওয়ার কারণেই সেটি ভেঙে গেছে। কনট্যাক্টরকে দিয়ে পুনরায় কাজ করানো হবে। এটা পুরাতন ওয়ার্ক অর্ডার বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে গার্ডওয়াল বেঁকিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চেয়ারম্যান সাফাই দিলেও পুরো কাজের তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন ধুলিয়ান পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা আট নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পারভেজ আলম পুতুল থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।