ফের গার্ডেরিচকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি শহর কলকাতায়। গতকাল শুক্রবার ফের নির্মীয়মান বহুতলের একাংশ ভেঙে বিপত্তি পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে। অভিযোগের নিশানায় প্রমোটার। ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকাজুড়ে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দুর্ঘটনাস্থল সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন মন্ত্রী শশী পাঁজা।
তিন বছরের মধ্যেই বাড়ি মেরামতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রমোটারবাড়ি সারাইয়ের জন্য অন্য একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বাসিন্দাদের। তারপর অতিক্রান্ত হয়ে যায় ৫ বছর। এখনও পর্যন্ত শুরু হয়নি বাড়ি মেরামতির কাজ। বরং যে ভগ্নপ্রায় বাড়িতে কিছুদিনের জন্য পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল এবার সেই বাড়িটাও ভেঙে পড়ল। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে ফের বিপর্যের সম্মুখীন অসহায় মানুষগুলো। কলকাতা পুলিস আর বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তৎপরতায় আপাতত স্বাভাবিক পরিস্থিতি।
তবে অভিযুক্ত প্রমোটারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দুর্ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী শশী পাঁজা। গোটা ঘটনা বিশেষ করে বিপজ্জনক বাড়িতে প্রাণের ঝুুঁকি নিয়ে দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের বসবাস ও প্রমোটারের গাফিলতি বিশদে মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দিলেন মন্ত্রী।
শহর কলকাতায় যখন তখন ধসে পড়ছে নির্মীয়মান বহুতল। বাড়ি ভেঙে পড়লেই প্রকাশ্যে আসছে প্রমোটারের নামে একাধিক অভিযোগ। বিপর্যয়ের পর ঘটনাস্থলেও পৌঁছে যাচ্ছেন নেতা মন্ত্রী। কিন্তু সুরাহা কোথায়। এই তৎপরতা কেন বিপর্যের আগে চোখে পড়ে না, তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই যায়।
মাত্র ১৫ দিন আগে কলকাতার গার্ডেনরিচে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে ১২ জনের মৃত্যু হয়। অন্য়দিকে বিরাটিতে বাড়ির কার্নিস ভেঙে মারা যান ১ জন। এবার উত্তর কলকাতার বৌবাজারেও ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুচিপাড়া থানা এলাকার রাম কানাই অধিকারী লেনের ৭ নম্বর বাড়ি ভেঙে বিগত প্রায় ৬ মাস ধরে প্রোমোটিং চলছে। পাশের লাগোয়া বাড়ির বাসিন্দারা এদিন সকালে ভারী কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখে ধুলোয় ভরে গিয়েছে গোটা এলাকা। পরে দেখা যায়, ৭ নম্বর এবং পাশের বাড়ির মধ্যেকার পাঁচিল এবং পিলারের একাংশ ভেঙে গিয়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রোমোটার নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা নিয়ম না মেনে কাজ করার ফলে ভেঙে পড়েছে বাড়ি।
যদিও প্রোমোটার নিযুক্ত ঠিকা সংস্থার সাইট ইন চার্জের বক্তব্য, তাঁরা নিয়ম মেনেই সাইটে কাজ করছেন। এর ফলে যদি কোনও আপত্তি ওঠে, তাহলে তাঁরা আলোচনা করতে রাজি আছেন। এদিকে বৌবাজারে বাড়ি ভাঙার খবর পেয়ে ঘটনাস্বলে যান ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে।
গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল বিপর্যয়কাণ্ডে এবার ধৃত বেড়ে তিন। সোমবার গ্রেফতার করা হল রাজমিস্ত্রি কিংবা শ্রমিক ঠিকাদারকে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম শেখ রিপন। মূলত রাজমিস্ত্রি এবং লেবার কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করতেন তিনি। অভিযোগ, গার্ডেনরিচ আবাসন তৈরীর জন্য় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল। আর সেই সমস্ত নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহ করেছিলেন অভিযুক্ত শেখ রিপন।
এর আগে গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে বিপর্যয়ের ঘটনায় ওই বহুতলের প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিস। এরপর যে জমির উপর ওই বহুতলটি তৈরি হচ্ছিল, সেটির মালিক মহম্মজ সরফরাজ ওরফে পাপ্পুকেও গ্রেফতার করা হয়।
সপ্তাহখানেক আগেই কলকাতার গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়ে বহুতল। আর তাতে প্রাণ হারায় ১২ জন। ঘর-বাড়ি হারিয়ে সর্বহারা হয়েছেন অনেকে। আর তারপর থেকেই উঠে আসছে শহরে একাধিক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। এরপর বেআইনি নির্মাণ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুরসভা।
গার্ডেনরিচ, বিরাটির বিল্ডিং বিপর্যয়ের আতঙ্কের মধ্যেই খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ডেই ভেঙে পড়ল পুরোনো বাড়ি। রবিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে চেতলার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের পরমহংসদেব রোডে। সেই সময় বাড়িটির নিচে রাখা ছিল একটি গাড়ি। তিনতলা বাড়ির চাঙরের এক অংশ সেই গাড়ির উপর ভেঙে পড়ে। যদিও হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ছুটির দিন। তাই এদিন সকালের দিকে রাস্তায় লোক সংখ্য়া তেমন ছিল না। তখন আচমকায় তিন তলার একাংশ ভেঙে পড়ে রাস্তার ওপর। তবে অন্য় কোনও সময়ে এই ঘটনাটি ঘটত তাহলে প্রাণের সংশয়ও হতে পারত বলে অনুমান স্থানীদের। স্থানীয় সূত্রে আরও খবর, গত বছর ভেঙে পড়া বাড়িটির ওপরের অংশটি মেরামত করা হয়েছিল। তারপরেও কীভাবে ভেঙে পড়ল তা কেউ জানেন না।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে উত্তর দমদম পুরসভার বিরাটিতে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি নির্মীয়মান বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ে মৃত্য়ু হয় এক মহিলার। আজ অর্থাৎ রবিবার সেই ঘটনায় তিন প্রোমোটার সহ কন্টাক্টার ও দুজন লেবার ইনচার্জকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর ফের শহর কলকাতায় ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। শনিবার বিরাটির শরৎ কলোনীতে নির্মীয়মান আবাসন ভেঙে মৃত্য়ু হল এক মহিলার। ঘটনায় আজ, রবিবার তিন প্রোমোটার সহ কন্টাক্টার ও দুজন লেবার ইনচার্জকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নাম কেয়া শর্মা চৌধুরী। ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থল ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ উত্তর দমদম পুরসভার বিরাটিতে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি নির্মীয়মান বাড়ির ছাদ আচমকা ভেঙে পড়ে। আর সেই সময় বাড়ির থেকে বেরিয়ে ছিলেন কেয়া শর্মা চৌধুরী। তখনই সেই ভেঙে যাওয়া ছাদের ইট মাথায় পড়ে মৃত্য়ু হয় ওই মহিলার।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ খানেক আগেই গার্ডেনরিচে বহুতল নির্মীয়মান আবাসন ভেঙে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। সর্বহারা হয়েছেন আরও অনেকে। সেই ঘটনার পরই আবারও কলকাতার বুকে ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা।
গার্ডেনরিচকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে তৎপর কলকাতা পুর সংস্থা। সংস্থার সব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ শুরু করতে চলেছে পুর কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণ আটকাতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, আইনি নোটিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পদ্ধতি নিয়ে দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ।
ইতিমধ্যে গার্ডেনরিচে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা নিয়ে শুরু হয়েছে পুরসভা ও আবাসিকদের মধ্যে টানাপোড়েন। ইতিমধ্যে আবাসিকরা দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। আগামী সোমবার রয়েছে এই মামলার শুনানি। কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিসের তরফে তৈরি করা হয়েছে, গার্ডেনরিচে গজিয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণের তালিকা। সেই তালিকা ধরেই কলকাতা পুরসভা আগামীদিনে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করবে। একই সঙ্গে পুনর্বাসন নিয়েও ভাবনা রয়েছে কলকাতা পুরসভার।
অন্য়দিকে গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর বেআইনি নির্মাণ ভাঙার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল প্রশাসন। এবার গার্ডেনরিচের একটি বেআইনি বহুতল ভাঙার কাজে হাত দিল প্রশাসন। যদিও কোনওরকম নোটিশ ছাড়া বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায় গার্ডেনরিচে। যা নিয়ে বেআইনি বহুতলের আবাসিকরা বিক্ষোভও দেখান।
গার্ডেনরিচকাণ্ডের এক সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরও এখনও শেষ হয়নি বার্তা। গার্ডেনরিচে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা নিয়ে শুরু হয়েছে পুরসভা ও আবাসিকদের মধ্যে টানাপোড়েন। ইতিমধ্যে আবাসিকরা দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। আগামী সোমবার রয়েছে এই মামলার শুনানি।
জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিসের তরফে তৈরি করা হয়েছে, গার্ডেনরিচে গজিয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণের তালিকা। সেই তালিকা ধরেই কলকাতা পুরসভা আগামীদিনে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করবে। একই সঙ্গে পুনর্বাসন নিয়েও ভাবনা রয়েছে কলকাতা পুরসভার।
অন্য়দিকে গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর বেআইনি নির্মাণ ভাঙার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল প্রশাসন। এবার গার্ডেনরিচের একটি বেআইনি বহুতল ভাঙার কাজে হাত দিল প্রশাসন। যদিও কোনওরকম নোটিশ ছাড়া বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায় গার্ডেনরিচে। যা নিয়ে বেআইনি বহুতলের আবাসিকরা বিক্ষোভও দেখান।
গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। শুধু কী তাই? সহায়-সম্বল এমনকি মাথার ছাদ হারিয়েছেন অনেকে। আর তারপর থেকেই উঠে আসছে শহরে একাধিক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। আইন-শৃঙ্খলাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে একের পর এক বেআইনি নির্মাণ হয়েছে কলকাতার বুকে। বৃহস্পতিবার ফের একবারে গার্ডেনরিচ এলাকাতেই খোঁজ পাওয়া গেল একটি বেআইনি বহুতলের। এলাকার জে ৪৭৪/সি/১ নির্মীয়মান একটি বহুতল বিল্ডিং হেলে রয়েছে পাশের বহুতলের গায়ে। ওই বেআইনি বহুতল পরিদর্শনে যায় কলকাতা পুরসভার বিশেষ তদন্ত কমিটি। সঙ্গে ছিলেন পুরসভার বেশ কয়েকজন কর্মীও। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিল্ডিংয়ের মালিক জনৈক রাজকুমার সিং। প্রাথমিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নির্মাণ বেআইনি। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বেআইনি ওই বহুতল ভাঙার কাজ। আর এই ঘটনাতেই ক্ষোভ শুরু বহুতলের বাসিন্দাদের। অভিযোগের তিরে রাজকুমার সিং।
যদিও গার্ডেনরিচের বিপর্যয়ের আগে অবধি এবিষয়ে দেখা যায়নি প্রশাসনিক তৎপরতা। প্ৰশাসনিক ঔদাসীন্যের কারণেই শহরের দিকে দিকে গজিয়েছে বেআইনি বহুতল। বারংবার সাধারণ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে টনক নড়ছে রাজ্য প্রশাসনের। আর সেকারণেই প্রশ্ন উঠছে রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা নিয়েও।
গার্ডেনরিচ বহুতল বিপর্যয়ে আরও একজনের মৃত্যু। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২। শনিবার কলকাতার এসএসকেএমে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধার।
সরকারি নথি অনুযায়ী গার্ডেনরিচের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬ জন জখম বাসিন্দা। তাঁর মধ্যে রয়েছেন, মহম্মদ হায়দার (২৪), রিজওয়ানা খাতুন (৩৫), মহম্মদ জানু (৩৫), সবিয়া পারভিন (১৯), সারিকা বেগম (২৬) এবং নমিতা পাত্র (৪০)।
গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রেড জোনে রয়েছেন যে ৩ জন তাঁর মধ্যে রয়েছেন, মুসরত জাহান (৩৫), মঈনুল হক (২৩) এবং মহম্মদ সহিলউদ্দিন(২১)।
তবে এই এই বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছিল পুরসভার ৩ ইঞ্জিনিয়ারকে। শোকজ জবাবে ইঞ্জিনিয়ারদের যুক্তিতে সন্তুষ্ট নয় পুরসভা। শোকজের এই জবাবে ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হচ্ছে তিন ইঞ্জিনিয়ার, শুভম ভট্টাচার্য, দেবব্রত ঘোষ, এবং দেবাদিত্য পালের বিরুদ্ধে।
এখন দেখার বিষয় যে গার্ডেনরিচের ঘটনায় গঠিত ৭ সদস্যের কমিটির ওই রিপোর্টে কী তথ্য উঠে আসে। শুধুই কি ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতি নাকি নেপথ্যে রয়েছে প্রভাবশালীদের হাত? এই উত্তর তো বলবে সময়। কিন্তু এই মৃত্যু মিছিল পুনরায় ঘটবে না তো? প্রশাসনের হুঁশ আদৌ ফিরবে তো? নাকি ভোট পেরোলেই আবার যেই কী সেই? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ের পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এলাকার অন্যান্য অবৈধ নির্মাণ নিয়ে অতি সক্রিয় কলকাতা পুরসভা। ভেঙে পড়া বাড়ির আশেপাশের অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পুরসভার তৎপরতা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। আগামী ২৮ তারিখেই ধ্বংসস্তূপের ২০০ মিটারের মধ্যে একটি পাঁচতলা বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলার নোটিশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি গার্ডেনরিচকাণ্ডের পরেই সিএন-এর ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল কীভাবে একটি বাড়ি আরেকটি বাড়ির উপর বিপজন্নকভাবে হেলে পড়েছিল। খবর সম্প্রচার হতেই তড়িঘড়ি সেই হেলে পড়া বাড়ির জন্য বিপর্যস্ত বহুতলটির একাংশ ভাঙার নির্দেশ পুরসভার। কিন্তু এই বহুতলের মালিকের দাবি, তার বাড়ি সম্পূর্ণ বৈধ। আইন-নিময়কানুন মেনে পুরসভার অনুমতি নিয়েই তৈরি বহুতলটি। বরং যে বাড়িটি হেলে পড়েছে, সেই বাড়িটিই অবৈধ নির্মাণ। এখন তাঁর বাড়ি ভাঙলে বিপজন্নক অবস্থায় থাকা বাড়িটি আরও হেলে পড়বে, আশঙ্কা বহুতলের মালিকের।
সূত্র্রের খবর, ২০২৩ সালের ৭ জুলাই দুটি বাড়ির মালিককেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল কলকাতা পুরসভায়। উভয়ের পক্ষকেই বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেয় পুরসভা। কিন্তু অবৈধ বহুতলের মালিক কোনও সহযোগিতা করেনি। পুরসভাকে বিষয়টি জানানোর পরও অবৈধ বহুতলের মালিকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি পুরসভার তরফে। বরং খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে কোনও হিয়ারিং-এর ডেট না দিয়ে, সরাসরি আইন অনুযায়ী তৈরি হওয়া বাড়িটির একাংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় পুরসভা। দাবি নোটিশ পাওয়া বাড়ির মালিকের।
কিন্তু গার্ডেনরিচ বিপর্যয়ের পরেই কেন প্রশাসনের এই অতি সক্রিয়তা? কেন বিপর্যয়ের আগেই হুঁশ ফেরে না সরকারের? এই প্রশ্নের নেই কোনও উত্তর। বরং এখনও সেই অসাধুভাবে নির্মাণের ঘটনাই আড়ালের চেষ্টা চলছে গার্ডেনরিচে। আর কোপ পড়ছে বৈধ নির্মাণের উপর। প্রশ্নের সম্মুখীন পুরসভার কর্ম দক্ষতা তা বলাই বাহুল্য।
কলকাতার আরও একটি বেআইনি নির্মাণকে জরিমানার অঙ্ক দ্বিগুণ করে দু- লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের। বেআইনি নির্মাণগুলির ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট যে চরম পদক্ষেপের পথে হাঁটছে তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কলকাতার নন্দীবাগান এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক দ্বিগুণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। এর আগে ওই বেআইনি নির্মাণের জন্য প্রোমোটারকে এক লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। বুধবার সেই অঙ্ক বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করেছেন বিচারপতি সিনহা।
কিন্তু কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ঠিক এমন নির্দেশ? কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বোরোর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দীবাগান এলাকায় কোনরকম অনুমতি ছাড়া একটি তিন তলার বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছিল। নজরে আসতেই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু পুরসভায় পাল্টা ওই বেআইনি নির্মাণকে আইনি অনুমোদন দেওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছিলেন প্রোমোটার। তাতে কাজ না হওয়ায় পরে প্রমোটার নিজেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আবেদন ছিল নির্মাণটিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারপতি সিনহা তাতে কোন আমল দেননি। উল্টে প্রোমোটার কে ১৮ মার্চের মধ্যে জরিমানা বাবদ এক লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু সেই নির্দেশ পালন না করে পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রোমোটার। যেহেতু সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি তাই বুধবার বিচারপতি সিনহার কাছে জরিমানার অঙ্ক জমা দেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় চান প্রোমোটারের আইনজীবী। আর এতেই চটে যান বিচারপতি। তিনি বলেন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি এবং ইচ্ছাকৃত জরিমানা এড়ানোর জন্য ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রোমোটার। চূড়ান্ত সাহসিকতার কাজ করছে প্রোমোটার। তাই তাকে এবার দ্বিগুণ জরিমানা দিতে হবে। এরপরই বিচারপতি নির্দেশে জানিয়ে দেন, ২২ মার্চের মধ্যে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে ওই প্রোমোটারকে। ২৭ মার্চ তার রশিদ জমা দিতে হবে আদালতে। সেইদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গার্ডেনরিচে বিপর্যয়ের ঘটনায় মৃতের সংখ্য়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃত অবস্থায় এক ব্য়ক্তিকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার রাতের পর থেকে বন্ধ রয়েছে উদ্ধারকাজ। আজ, বুধবার ভোররাত থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ব্যাহত ছিল উদ্ধারকাজ। বৃষ্টির পরিমাণ একটু কমতেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন এনডিআরএফের কর্মীরা।
এদিন সকালে গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়া বহুতল ও তার পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলির খতিয়ে দেখতে যান কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক অধিকর্তা। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের চার অধিকর্তা এসে গোটা এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। জানা গিয়েছে, নির্মীয়মাণে গাফিলতির কারণে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে কলকাতা পুরসংস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই জায়গায় জলাশয় ছিল। এলাকার সবাই সমস্ত কিছু জানে। কিন্তু কোন অভিযোগ করার সাহস নেই। গার্ডেনরিচের বাড়িগুলি একে অন্যের গায়ে হেলে রয়েছে। যা দেখার পরেও মানুষের কোনও হেলদোল নেই। এভাবেই আতঙ্কের মধ্য়েই বসবাস করছেন মানুষজন। দুর্ঘটনার তিন দিন কেটে গেলেও ভয়াবহ সোমবারের সেই রাতের স্মৃতি ভুলতে পারছেন না স্থানীয়রা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এসএসকেএম হাসপাতালে যে তিনজন ভর্তি রয়েছেন তাঁদের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। আগের থেকে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে তাঁদের স্বাস্থ্যের।
রাজ্যজুড়ে যেন অবৈধ কারবারির পাহাড়। ভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রমাণ তো বহুদিন ধরেই সামনে আসছে, এবার বিপজ্জনক ভাবে কোনও নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করেই নির্মিত বহু অবৈধ নির্মাণ চোখে পড়ল সিএন-এর। গার্ডেনরিচ এলাকাজুড়ে গজিয়ে উঠেছে এমন বহু অবৈধ বহুতল। কোনওটির ক্ষেত্রে দেখা গেল এক বিল্ডিংয়ের সঙ্গে পাশের বিল্ডিং লেগে, সেই বিল্ডিং-র অবস্থা ভগ্নপ্রায়। তাতেই প্রাণভয়ে বাস করছেন আবাসিকরা।
এমন অবৈধ নির্মাণ চোখে পড়ে লোকচক্ষুর আড়ালে নয়, বড় রাস্তার ওপরে গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর এলাকাতেও। সেখানে এক আবাসন নির্মিত হয় ২০১৯ সালে। দিন যতই এগোয়, ততই একটির পাশে আরেকটি বহুতল জুড়ে যেতে থাকে। প্রাণভয়ে বাস করছেন আবাসিকরা। এগুলোর কোনওটির ক্ষেত্রে নেই কোনও বৈধ কাগজ, কোনওটির আবার নেই অনুমতিপত্র, ছাড়পত্র কিছুই। ২০২৩ সালে পাহাড়পুরের এই বহুতলে 'বিপজ্জনক বাড়ি'র পোস্টার বসিয়ে দিয়ে যায় কলকাতা পুরসভা। তবে তারপরেও আবাসিকদের জীবন সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কই? এই অবৈধ নির্মাণের ব্যাপারে সব জানে কাউন্সিলর, সব জানে সেখানকার বিধায়ক তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সব জানে রাজ্য প্রশাসন। অবৈধ নির্মাণে প্রোমোটারের ওপর আশীর্বাদের হাত রয়েছে সকলেরই। মঙ্গলবার স্থানীয়দের এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ শুনল সিএন।
এদিকে আবার এলাকার কাউন্সিলর শামস ইকবালের সঙ্গে ভেঙে পড়া বহুতলের প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমের এক ফ্রেমে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। প্রোমোটার-কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠতার গন্ধও পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। এদিকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলছেন, কাউন্সিলরের কিছু করার নেই। দলের কাউন্সিলরকে যেন বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টাও দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। নানা মহলে শুধুই নিন্দার ঝড় উঠছে, এককালীন গর্বের কলকাতা পুরসভা নিয়ে। হেলে পড়া একের পর এক বহুতল দেখে আতঙ্ক বাড়ছে আবাসিকদের।
সপ্তাহের শুরুতেই নির্মীয়মান বহুতল ধসে বিপত্তি গার্ডেনরিচে। বহুতল ভেঙে বিপর্যয়ের ২৪ ঘন্টা অতিক্রান্তের পর এখনও অব্যাহত উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের জোরকদমে কাজ শুরু করেছে NDRF কর্মী বা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এখনও ২ জন আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে NDRF এর তরফে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে দুটি স্নিফার্স ডগ আনা হয়েছে ধ্বংসস্তুপে মৃতদেহের খোঁজ পেতে। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৯ জন। যার মধ্যে ৭ জনের পোস্টমর্টেম করা হয়ে গেছে। আর ৫ জনের মৃতদেহ তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বিপর্যয়ের ঘটনায় অবৈধ নির্মাণের তত্ত্ব প্রকাশ্যে আসতেই এবার অতি সক্রিয় প্রশাসন। শহরে কোথায় কত বেআইনি নির্মাণ রয়েছে, তা আগামী সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট তলব লালবাজারের। প্রতিটি বেআইনি নির্মাণের ছবি সহ রিপোর্ট আকারে জমা দিতে হবে লালবাজারে। ওই বেআইনি নির্মাণের নেপথ্যে কোন কোন প্রোমোটার বা গোষ্ঠী কাজ করেছে তার সমস্ত তথ্য়।
গার্ডেনরিচ কাণ্ডের তৎপর কলকাতা পৌরসংস্থা। ভেঙে যাওয়া বাড়ির আশেপাশে ৬ টি বাড়িকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল অর্থাৎ সোমবার সেই নোটিশ দেন কলকাতা পৌরসংস্থার বিল্ডিং বিভাগ। তারপর সেই নোটিশ দেওয়া ৬ টি বাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দেবেন পুর আধিকারিকরা।
একই সঙ্গে সোমবার গার্ডেনরিচ থানায় পুলিসের পক্ষ থেকে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে। এই ঘটনায় একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, একটি বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে যে যে ছাড়পত্র প্রয়োজন বা যে যে দফতরের থেকে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন তার কোনোটাই ছিল না ওই বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে।
পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ। অভিযোগ বেআইনি নির্মাণের। যার ফলে চলে গেল কিছু অসহায় মানুষের প্রাণ। নির্মীয়মাণ ইমারত ভেঙে পড়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বাড়ছে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ, জমছে অভিযোগের পাহাড়। বেআইনি নির্মাণের কথা মেনে নিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং। স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিয়েছেন আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু ততক্ষণে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে কীভাবে মিললো বেআইনি নির্মাণের ছাড়পত্র? ইতিমধ্যে ঘটনায় কলকাতা পুরসভা শোকজ করেছে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার- কে।
রবিবার রাতে পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বহুতলের একাংশ ভেঙে পড়ে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে থাকাদের উদ্ধার এখনও জারি। ২০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে খবর। ওই এলাকাটি ১৫ নম্বর বোরো এলাকার অন্তর্গত। গার্ডেনরিচের ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক জন প্রোমোটারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রে খবর, এই ঘটনায় প্রোমোটার-সহ অন্যান্য জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর সোমবার সকালে এক্স হ্যান্ডেল দীর্ঘ পোস্ট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, এটা তৃণমূলের তৈরি বিপর্যয়। তিনি পোস্টে স্পষ্টভাবে লিখেছেন গার্ডেনরিচ এলাকায় ২০১০ সাল থেকে ৫ হাজারে বেশি এরকম বেআইনিভাবে জলাজমি ভরাট করে অন্তত ৮০০টি বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। যার নেপথ্যে সরাসরি তিনি কলকাতা পুরসভা ও মেয়রকেই দায়ী করেছেন। তৃণমূল ও পুলিসের যোগসাজশেই ভরাটের অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা। ফিরহাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুভেন্দু প্রশ্ন ছুঁড়ে দিযেছেন। গোটা এলাকায় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের হোম টার্ফ। ফিরহাদ হাকিম কি এর দায় এড়াতে পারেন? মেয়রের নাকের নিচে অবৈধ নির্মাণের ধারণা ছিল না? এদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে। এখানেই থামেননি শুভেন্দু। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
মৃতদের ৫ লক্ষ, আহতদের ১ লক্ষ ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত নয়। কারণ এটি একটি TMC-র তৈরী বিপর্যয়। মৃতদের ৫০লক্ষ, আহতদের ১০ লক্ষ ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ও মেয়রের বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনবিধি ভঙ্গের অভিযোগও আনেন শুভেন্দু। তিনি প্রশ্ন তোলেন ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়ে গিয়েছে আদর্শ নির্বাচন বিধি। মুখ্যমন্ত্রী বা মেয়র প্রত্যেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়েও কীভাবে প্রকাশ্যে তাঁরা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন? তাই এ ব্যাপারে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিরোধী দলনেতা।
গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনের দুর্ঘটনাকে ‘তৃণমূলের তৈরি বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করে এভাবেই মেয়র, মুখ্যমন্ত্রী, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিরোধী দলনেতা সরব হন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে।