১০০ দিনের কাজের বকেয়া না মেটালে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে ফের কেন্দ্রকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৬ নভেম্বর বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরবর্তী পদক্ষেপের।
নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আগামী ১৬ নভেম্বর ফের পঞ্চায়েত, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, ব্লক প্রেসিডেন্ট, সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে মিটিং করবেন তিনি। বেলা ১২টার সময় বৈঠক হবে। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা না দিলে আন্দোলন বৃহত্তম পর্যায়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর।
বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ টাকা আর সরাসরি পাবে না রাজ্য। এবার থেকে সেই টাকা থাকবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে। অর্থাৎ, এতদিন যে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে কিংবা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের অ্যাকাউন্টে টাকা মজুত থাকত, তা আর হবে না।
নতুন নিয়মে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক থেকে প্রকল্পের প্রতিটি পর্বে বরাদ্দ টাকা নেওয়ার সময় হিসাব বুঝিয়ে দিতে হবে। খুব শীঘ্রই এই নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অনেকে মনে করছেন, এই নতুন নিয়ম চালু হলে, কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আর অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে না রাজ্য।
অর্থমন্ত্রক সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গ-সহ প্রতিটি রাজ্যকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একটি করে নোডাল এজেন্সি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা রিজার্ভ ব্যাঙ্কে একটি করে অ্যাকাউন্ট খুলবে। বরাদ্দের পর ‘পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিস’-এর মাধ্যমে টাকা পাঠাবে অর্থ মন্ত্রক। এরপর প্রকল্পের অগ্রগতির উপরে নির্ভর করে টাকা দেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এখন এই নিয়ম আপাতত সীমাবদ্ধ থাকবে পুরোপুরি কেন্দ্রীয় অর্থে পরিচালিত প্রকল্পগুলিতে। পরে কেন্দ্রীয় অনুদান প্রকল্পগুলিতেও একই নিয়ম আনা হবে।
বারবার অভিযোগ উঠেছে, এক খাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করছে রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গেই সরকারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। শুধু তা-ই নয়, অব্যবহৃত টাকা শুধু অ্যাকাউন্টে রেখে দেওয়ায় সুদও ‘অনৈতিক ভাবে’ ব্যবহার করেছে রাজ্য সরকার। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। নতুন নিয়ম চালু হলে এ কাজগুলি করা সব রাজ্যের পক্ষেই কঠিন হবে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
মেয়াদ বৃদ্ধি রাজ্যের মুখ্যসচিব (Chief secretary) হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর (Hari Krishna Dwivedi)। সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব হিসেবে তাঁর মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়িয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার (Central Goverment)। শুক্রবারই তাঁর কর্মজীবনের শেষদিন ছিল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মেয়াদবৃদ্ধি সংক্রান্ত চিঠি না-আসায় প্রশাসনিক মহল খানিকটা উদ্বেগে ছিল। কিন্তু তার সঙ্গেই আশাবাদীও ছিল যে, শুক্রবার দিন শেষের আগেই ওই সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র এসে যাবে। বাস্তবেও তেমনই ঘটেছে। দ্বিবেদীর মেয়াদ বেড়ে যাওয়ার ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য প্রশাসনে কোনও রদবদল প্রয়োজন হচ্ছে না। সেদিক দিয়ে আশ্বস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কারণ, প্রশাসনে দ্বিবেদী তাঁর ‘আস্থাভাজন’ বলেই পরিচিত।
মুখ্যসচিব পদে তাঁর মেয়াদবৃদ্ধি হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচলে ছিলেন দ্বিবেদীও। গত কয়েকদিন তিনি সে ভাবে কারও সঙ্গে কথাও বলেননি। যখন দ্বিবেদীর মেয়াদ না-বাড়লে গোপালিকার নামই পরবর্তী মুখ্যসচিব হিসেবে সবচেয়ে আগে বিবেচিত হচ্ছিল।
প্রসঙ্গত, দ্বিবেদীর মেয়াদ যাতে না-বাড়ে, তার জন্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অনুরোধ করেছিলেন। তিনি যে দ্বিবেদীর ‘পক্ষে’ নন, তা একাধিক বার প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন শুভেন্দু। বিবিধ অধিযোগও তিনি এনেছিলেন দ্বিদেবীর বিরুদ্ধে। এবং তা-ও প্রকাশ্যেই।
৪ শতাংশ মহার্ঘ (Da) ভাতা বাড়ালো কেন্দ্র। মূল্য বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে, সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের ৪ শতাংশ ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা বাড়ালো কেন্দ্র (Central), মোদী সরকার। এর ফলে মহার্ঘ ভাতা ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হলো ৪২ শতাংশ। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে, স্বাভাবিক ভাবেই খুশি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা। কেন্দ্রের এই ঘোষণার ফলে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে কেন্দ্রের মহার্ঘ ভাতার পার্থক্য বেড়ে দাঁড়ালো ৩৬ শতাংশ। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে, আদালতেও চলছে মামলা। আদালতের ঘোষণা সত্ত্বেও ডিএ বাড়াতে নারাজ রাজ্য সরকার।
রাজ্যের কর্মচারী সংগঠন গুলির দাবি , ২০২০ সালে ষষ্ঠ পে কমিশন চালু হবার পর, ২০২১ সালে ৩ শতাংশ ডিএ মিলেছিল। তখন কেন্দ্রের ডিএ ছিল ৩৮ শতাংশ। এর পর কেন্দ্র-রাজ্যের ব্যবধান দাঁড়ায় ৩৫ শতাংশ, এর পর আবার রাজ্য ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ায়, তখন কেন্দ্র-রাজ্যের ব্যবধান ছিল ৩২ শতাংশ। কেন্দ্রের এই ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধিতে কেন্দ্র-রাজ্যের ব্যবধান দাঁড়ালো ৩৬ শতাংশ।