তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের (TMC Lawyers) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট ঘিরে সকাল থেকেই উত্তেজনা কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। ১৩ নম্বর এজলাসে বাইরে থেকে হুড়কো টেনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁদের অভিযোগ, 'বিচারপতি (Justice Mantha) একনায়ক।' আগাম কোনও ঘোষণা ছাড়া গেট বন্ধ রেখে কিছু আইনজীবী অন্যদের ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গে বিতণ্ডা বাঁধে বয়কটের বিরোধিতা করে এজলাসে ঢুকতে চাওয়া আইনজীবীদের। সকাল গড়িয়ে বেলা বাড়লেও প্রায় দু'ঘণ্টা চলে এই অচলাবস্থা। এই অবস্থায় ডিভিশন বেঞ্চের শুনানি স্থগিত রেখে বেড়িয়ে যান ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
সোমবার তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, 'বিচারপতি মান্থা বিজেপির হয়ে কাজ করছেন এবং পক্ষপাতদুষ্ট রায় দিচ্ছেন।' যদিও এই বেনজির ঘটনায় রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বা এজির উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, 'আমরা যদি ব্যবস্থা নিই ওরা সামলাতে পারবে তো? আপনি ব্যবস্থা নিন।' জানা গিয়েছে, এই ঘটনার ছবি তুলে পাঠানো হতে পারে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। সুপারিশ যেতে পারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির স্বতঃ প্রণোদিত ভাবে করতে পারেন আদালত অবমাননার মামলা।
এদিকে শুধু জাস্টিস মান্থার এজলাস বয়কট নয়, হাইকোর্ট-সহ বিচারপতির যোধপুর পার্কের বাড়ি এলাকায় পড়েছে পোস্টার। হাইকোর্ট এবং যোধপুরে পড়া মান্থা-বিরোধী 'শেম' লেখা পোস্টারে বিচারপতির সাম্প্রতিক রায়ের প্রসঙ্গ টেনে সমালোচনা করা হয়েছে।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে উত্তাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (Medical College And Hospita।) সকাল থেকেই থমকে চিকিৎসা পরিষেবা। গেটে তালা ঝুলিয়ে মেডিক্যাল স্টুডেন্টদের (Medical Students) ঘেরাও, সুপারের ঘরে আটকে ডেপুটি সুপার-সহ বিভাগীয় প্রধানরা। পাল্টা চিকিৎসার দাবিতে সরব রোগীর পরিজনরা। দীর্ঘক্ষণ পরিষেবা বন্ধ থাকায় ইট দিয়ে গেটের তালা ভাঙার চেষ্টা করেন রোগীর পরিজনরা। তাঁদের দাবি, ঘেরাও তুলে রোগীর পরিজনদের হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেওয়া হোক। অবিলম্বে পুলিসি নিরাপত্তা দেওয়া হোক, আবেদন এক রোগীর আত্মীয়ের। মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। আগামীকাল শুনানির সম্ভাবনা।
জানা গিয়েছে, ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Medical College Kolkata) অধ্যক্ষ, এমএসভিপি-সহ বিভাগীয় প্রধানদের ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার থেকে চলছে বিক্ষোভ আন্দোলন। সেদিনই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষর অফিস ঘেরাও করেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, '২২ ডিসেম্বর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছিল। তার আগে সোমবার নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যক্ষের অফিসে বৈঠকের কথা ছিল। সেই মোতাবেক তাঁরা বৈঠকে যোগ দিতে যান। সেখানে গেলে অধ্যক্ষর অফিস থেকে জানানো হয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে না। একইসঙ্গে বলা হয় মৌখিকভাবে অন্য ডাক্তারি পড়ুয়াদের যেন তা জানিয়ে দেওয়া হয়।' এখানেই আপত্তি তোলেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তারপরই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয় মেডিক্যাল কলেজের করিডরে।
এই ঘেরাওয়ের জেরে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চার জন চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঘেরাওয়ের জেরে আটকে রয়েছেন সার্জারি, মেডিসিন, কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধানরা, প্রিন্সিপাল এবং সুপার। নার্সিং সুপারকে ঘেরাও করে চলছে বিক্ষোভ। এতে বচসায় জড়ান নার্সিং স্টাফ এবং মেডিক্যাল পড়ুয়ারা। হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করাতে আসা এক ব্যক্তির অভিযোগ, 'ভোর থেকে লাইন দিয়ে এখনও ঢুকতে পারলাম না। হয়রানির একশেষ, সকাল থেকে না খেয়ে দাঁড়িয়ে। কারও কিছু হয়ে গেলে কে দায় নেবে।' লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে রাত ৩টে থেকে অপেক্ষায় থাকা এক মহিলার চোখেমুখেও হয়রানির চিত্র স্পষ্ট।
অনেক রোগীর পরিবারের কাতর আবেদন, 'সংবাদ মাধ্যম একটু সাহায্য করুক। আমাদের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই। কাজ থেকে ছুটি নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসে এই হেনস্থা।'
এদিকে, অচলাবস্থা কাটাতে হাসপাতালে মধ্যস্থতার জন্য আসেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের কয়েকজন সদস্য তাঁদের বক্তব্য, 'মেডিক্যাল পড়ুয়াদের দাবি অযৌক্তিক নয়। কিন্তু আমরা চাই চিকিৎসা পরিষেবা সচল থাকুক, সঙ্গে আন্দোলন চলুক।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ৩১% মহার্ঘ ভাতার দাবিতে ৩০ অগাস্ট কর্মবিরতি পালন করবে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত পালিত হবে কর্মবিরতি। রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের এই সংগঠন।
সংগঠনের তরফে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা চাইতে গেলে সরকারি কর্মীদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা প্রত্যক্ষ সংগ্রামে নামবো। ৩০ তারিখের কর্মসূচির পর বৃহৎ আন্দোলনের পথে হাঁটবো।
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, 'কেন্দ্রের ডিএ এবং বাজার দরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব রাজ্যেই তাদের বকেয়া ডিএ দিচ্ছে। কিছু রাজ্য এখনও কিস্তিতে পিছিয়ে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩১% ডিএ বকেয়া। তারপরেও সরকারের ভূমিকা এবং বঞ্চনার প্রতিবাদে আমাদের কর্মসূচি। মূলত তিন দফা দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি পালন হবে।'
এদিকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে বকেয়া ডিএ চেয়ে এদিন নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। এই সংগঠনের দুটি দাবি, 'আদালতের নির্দেশে অবিলম্বে বকেয়া ডিএ মেটানো। আর সরকারি সব দফতরের শূন্যপদ পূরণ করা।'
পালন করা যায়নি রাখি উৎসব। পালন করা যাবে না হর ঘর তিরঙা। পালন করা যাবে না স্বাধীনতা দিবস। কারণ ওদের কাছে নেই পর্যাপ্ত অর্থ। নেই সংসার চালানোর খরচটুকুও। দেওয়া যাচ্ছে না স্কুল ফি। ভাতের হাঁড়ি চড়ছে না বাড়িতে। কোথায় পাবে টাকা। অর্থের অভাবে বোনকে পড়ানো যায়নি রাখিও। বাড়ির বাচ্চাদের কিনে দেওয়া যাবে না একটা পতাকাও। তবে ওরা কাজ করে। আর কাজ করেও দিনের পর দিন টাকা না পেয়ে আন্দোলনে ১০৬ জন শ্রমিক। আর মেন্টেনেন্সকারি এই শ্রমিকদের কাজ বন্ধের কারণে বিপদে আবাসিকরা। বন্ধ আসানসোলের (Asansol) বিত্তশালী আবাসন সুগম পার্কের জল (water), বিদ্যুৎ (electricity), সাফাই, বাস পরিষেবা ও নিরাপত্তা।
প্রসঙ্গত, উত্তর আসানসোলের দুর্গাপুর ডেভেলপনেন্ট অথরিটির (Durgapur Developer Authority) ও সুগম পার্কের যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই আবাসনে থাকেন উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা। আছেন ইসিএল-এর প্রাক্তন জিএম, আছেন জেলাশাসক অফিসের কর্মী, আছেন তৃণমূল বা বিজেপি নেতারা, থাকেন বড় বড় ব্যবসায়ীরা। আর তাঁদের জল, সাফাই, নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ বা বাস পরিষেবার ব্যবস্থা যারা করেন তারাই বেতনহীন ২ মাস ধরে। তাঁদেরই বাড়িতে হাঁড়ি চড়ে না।
শনিবার সকাল থেকে বিক্ষোভরত কর্মীরা তাঁদের বেদনার কথা জানালেন। বললেন, অনেক হয়েছে। আর নয়। টাকা হাতে না পেলে আর কাজ নয়। শ্রমিকদের কাজ বন্ধে বিপদে আবাসিকরা। তাঁরা আবার জানান, মেন্টেনেন্সের টাকা তাঁরা দেন। এই মুহূর্তে জল, বিদ্যুৎ, সাফাই, বন্ধ হবার কারণে যথেষ্ট অসুবিধায় তাঁরা।
সূত্রের খবর, উক্ত আবাসনে কোটিপতিরা থাকলেও মেন্টেনেন্স দেন না অনেকেই। কোনও কোনও ব্লকে ৪৭ লক্ষ টাকা বাকি, আবার কোনও কোনও প্লটে ১০ লক্ষ টাকা মেন্টেনস বাকি। আবাসন কর্তৃপক্ষের কথায়, মেন্টেনেন্স না পেলে কোনও মতেই বেতন দেওয়া সম্ভব নয়।
রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সোসাইটি শুধু আশ্বাস দিচ্ছে বলে অভিযোগ। আসল কাজ কিছুতেই হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নেমেছেন বিক্ষোভকারিকা। যতক্ষন পর্যন্ত বেতন না পাবেন ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান শ্রমিকরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সমস্যার মধ্যে আবাসিকরা। এলাকায় রয়েছে উত্তেজনা।