
সোমবারের গুজরাত (GT) ও হায়দরাবাদের (SRH) ম্যাচের পরে প্লে অফার দৌড়ে রয়েছে ৭ দল। ২০২৩ মরশুমের আইপিএলে (IPL) যা হচ্ছে তা নজিরবিহীন মানছেন সকলে। মঙ্গলবার আইপিএলের ৬৩ তম ম্যাচ। এখনও অবধি এই ম্যাচের আগে ৭ টি দল রয়েছে প্লে অফার দৌড়েই। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত, এমনটা এর আগে কোনও আইপিএলে হয় নি।
রবিবার প্লেঅফে উঠে গেছে হার্দিক পাণ্ড্যর গুজরাত। গুজরাত ১৩ টি ম্যাচ খেলে ১৮ পয়েন্টে রয়েছে। ওদিকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ধোনির চেন্নাই, চেন্নাই ১৩ টি ম্যাচ খেলে ১৫ পয়েন্টে রয়েছে। এখনও প্লে অফ নিশ্চিত নয় চেন্নাইয়ের। শেষ ম্যাচ দিল্লির সাথে, দিল্লির সঙ্গে হারলে বিদায় নিতে পারে ধোনিরা। জিতলে প্লেঅফে চেন্নাই। ৩ নম্বরে রয়েছে মুম্বই। ১২ ম্যাচ খেলে ১৪ পয়েন্টে রয়েছে রোহিতদের দল। বাকি রয়েছে দুটি খেলা। একটিতে হারলেও চান্স আছে কিন্তু দুটোই হারলে সম্ভাবনা ক্ষীণ। পরেই রয়েছে লখনউ, রাহুলের অস্ত্রপ্রচার হওয়ায় দায়িত্বে রয়েছে পুরান। পুরানরাও ১২ ম্যাচ খেলে ১৩ পয়েন্টে রয়েছে। দুটো ম্যাচের দুটিতেই জিতলে তবেই প্লেঅফ। একটায় হারলে অন্যের উপর নির্ভর করতে হবে।
পঞ্চম স্থানে রয়েছে বিরাটের ব্যাঙ্গালোর। বিরাটরা ১২ ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্টে রয়েছে। জিতলে রানরেটের দরুন প্লে অফে যেতে পারেন কিন্তু একটায় হারলে সমস্যায় পড়বেন। ১৩ ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে শামসনের রাজস্থান। শেষ ম্যাচ জিতলেই হবে না শুধু। সাঞ্জুদের নির্ভর করে থাকতে হবে অন্যদের খেলার উপরে। সাত নম্বরে রয়েছে নাইট রাইডার্স। ১৩ ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্টে রয়েছেন তাঁরা। প্লে অফ যাওয়া কঠিন কিন্তু অপেক্ষা করতে হবে অন্যদের ফলের উপরে। ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে পঞ্জাব কিংস। এখনও দুটির দুটি জিতলে সম্ভাবনা রয়েছে প্লেঅফে যাওয়ার।
ওদিকে আইপিএল ভালো যায়নি হায়দরাবাদের ও দিল্লির। দুজনেই ১২ টি ম্যাচ খেলে মাত্র ৮ পয়েন্টে রয়েছে। যদিও চেন্নাইয়ের শেষ ম্যাচ দিল্লির সঙ্গে সেক্ষেত্রে দিল্লি চেন্নাইয়ে হারিয়ে দিলে পার্থক্য গড়ে তুলতে পারে। মঙ্গলের সন্ধ্যায় খেলতে নামবে মুম্বই ও লখনউ।
১১ বছরের অপেক্ষা শেষ। সিংহগুহায় জিতে কলকাতা ফিরছেন নাইটরা। শেষবার ২০১২ সালে চেন্নাই গিয়ে চিপকে মহেন্দ্র সিং ধোনিদের হারিয়েছিলেন নাইটরা। সেই দলের নেতা ছিলেন গৌতম গম্ভীর। রবিবার সেই রেকর্ড স্পর্শ করলেন দিল্লির আর এক ক্রিকেটার নীতীশ রানা। তবে, জিতলেও এখনই প্লে-অফে ওঠার ছাড় পাচ্ছেন না নাইটরা। তাঁদের এখন দীর্ঘ অপেক্ষা। উল্টোদিকে, প্লে-অফে ওঠার রাস্তায় এখন ২০ তারিখ শেষ ম্যাচ খেলবে চেন্নাই। প্রতিপক্ষ দিল্লি।
পরিসংখ্যানে কলকাতার থেকে অনেক এগিয়ে চেন্নাই। বিশেষ করে চেন্নাইয়ের মাটি ধোনিদের প্রতিপক্ষের কাছে সবসময় দুর্ভেদ্য। সেই মাঠে এই নিয়ে তৃতীয় ম্যাচ জিতল কেকেআর। কলকাতার অধিনায়ক নীতীশ রানা জানিয়েছেন, চিপকে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয় সবসময় স্পেশাল। কারণ, এই মাঠের গ্যালারি ম্যাচের রং বদলে দেয়।
গ্রুপ পর্যায়ে রবিবার এই মাঠে শেষ ম্যাচ খেলেছে সুপার কিংস। ম্যাচ শেষে সিএসকে সমর্থকদের বিশেষ উপহার দিয়েছেন ধোনি, জাডেজা, রাহানেরা। একইসঙ্গে দেখা গিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির থেকে অটোগ্রাফ নিচ্ছেন সুনীল গাভাসকর। এদিন সানির জামায় নিজের সই রাখলেন মাহি। নিজের জার্সিতেও নিলেন কিংবদন্তি গাভাসকরের সই।
এখনও প্লে-অফে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR)। তবে, সেটা নির্ভর করছে না কলকাতার উপর। বরং কলকাতার প্লে-অফে যাওয়ার জন্য এবার নির্ভর করতে হবে অন্য দলের উপর।
চলতি মরশুমের আইপিএলে (IPL) কেকেআর মোট ১২টি ম্যাচ খেলেছে। যার মধ্যে জিতেছে ৫টি ম্যাচ। ফলে তাদের প্রাপ্ত পয়েন্ট ১০। এখনও চেন্নাই সুপার কিংস ও লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ খেলবে নাইটরা। দু'টি ম্যাচই জিততে হবে তাদের। সেক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্ত পয়েন্ট হবে ১৪। কিন্তু তার পরেও প্লে-অফে পৌঁছতে ভরসা করতে হবে অন্য দলের উপর।
ওদিকে আজ অর্থাৎ রবিবারের সন্ধ্যায় কেকেআরের মুখোমুখি হবে চেন্নাই। চেন্নাইয়ের ঘরের মাঠে ধোনিবাহিনীকে হারাতেই হবে তাঁদের। গত ম্যাচে রাজস্থানের কাছে হেরে বিপাক বেড়েছে। থমকে আছে প্লে-অফে ওঠার রাস্তা। এই ম্যাচ জিততে খানিকটা জট ছাড়তে পারে। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে মোটামুটি যা আভাস, তাতে দলে খুব একটা পরিবর্তন নাও হতে পারে।
কলকাতা এসে ধোনিরা ইডেনে ২৩৬ রান করেছিলেন। চিপক তাঁদের নিজেদের মাঠ। যেখানে ব্যাটিং এবং বোলিং, দুই বিভাগেই এগিয়ে হলুদ সেনা। হাঁটুর চোট নিয়ে খেলে যাচ্ছেন চেন্নাই অধিনায়ক। তাঁর থামার কোনও লক্ষণ নেই। উইকেটে সামনে এবং পিছনে সমান সাবলীল মহেন্দ্র সিং ধোনি। এমনিতেই ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আইপিএলের সেকেন্ড বয় চেন্নাই। এই ম্যাচ জিতলেই কেল্লাফতে।
অতীত ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে শেষবার ২০১২ সালে চিপকে জয় পেয়েছিল কলকাতা। তারপর ১১ বছর কেটে গিয়েছে। ২০২১ সালে দুবাইয়ের মাঠে ফাইনালে উঠেও সুপার কিংসদের আটকাতে পারেননি নাইটরা। তবে এই ম্যাচ কিন্তু কেকেআরের কাছে মরণ-বাঁচন। প্লে-অফে উঠতে হলে এই ম্যাচ থেকে দু-পয়েন্ট খুবই জরুরি। সেইসঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হবে বাকিদের দিকেও। তাই কেকেআর যে এই ম্যাচে পরিবর্তনের পথে হাঁটবে, এমনটা বলা যাচ্ছে না।
দিল্লির (DC) বিপক্ষে দাপট চেন্নাইয়ের (CSK)। ব্যাটে কিছুটা রান কম হলেও, চেন্নাইয়ের বল ও ফিল্ডিংয়ের দাপটে কার্যত দিশেহারা দিল্লি। নিজেদের দাপটে ২৭ রানে হারালো দিল্লিকে।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাই মোটামুটি ভালো শুরু করলেও, ঋতুরাজ ও কনওয়ে আউট হবার পর ম্যাচের রাশ ধরতে পারেননি তেমন কেউই এর পর রাহানে ও মঈন সাজ ঘরে ফিরে গেলে, ডুবে ও রাইডুর ব্যাটের গতিতে কিছুটা বেগ পায় চেন্নাই যদিও বেশিক্ষন টিকতে পারে নি দুজনের কেউই। শেষে ধোনি ও জাদেজার ঝড়ে চেন্নাই ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান তোলে।
১৬৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ডেভিড ওয়ার্নারের উইকেট তুলে নেয় দীপক চাহার। দীপক চাহারের স্লো বলে ডিপ মিডে ক্যাচ দিয়ে ঘরে ফিরে আসেন সল্ট। এর পরেই মনীশ পান্ডের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন মার্শ। মোটের উপর পাওয়ার প্লেতেই ৩ উইকেট হারায় চেন্নাই। এরপর রুশো ও মনীশ পান্ডে ম্যাচের হাল ধরেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। মনীশ পান্ডেকে এলবিডব্লিউ করে ঘরে ফেরান পাথিরানা। শেষে অক্ষর প্যাটেল চেষ্টা করলেও দিল্লির ইনিংস শেষ হলো ১৪০ রানে।
দিল্লির পক্ষে রুশো ৩৫ রান করেন, অক্ষর করেন ২১ রান, মনীশ পান্ডে উল্লেখযোগ্য ২৭ রান করেন। পাশাপাশি চেন্নাইয়ের পক্ষে, ৩ উইকেট নেয় পাথিরানা, ২ উইকেট নেয় দীপক চাহার। ১ টি উইকেট নেয় জাদেজা। চেন্নাইয়ের কাছে হেরে কার্যত এ মরশুমে প্লে অফের দৌড়ে বিদায় দিল্লির।
মরণ বাচন ম্যাচে ভালো বোলিং ও ফিল্ডিং দিয়ে আপেক্ষিক ভাবে চেন্নাইকে (CSK) বেঁধে রাখল দিল্লী ডেয়ারডেভিলস (DC)। টসে জিতে প্রথম ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই। প্রথমদিকে ব্যাটিং ধস নামলেও পরের শিবম ডুবে ও রাইডুর ব্যাটে কিছুটা রান আসে। শেষ দুই ওভারে ধোনি ও জাদেজার ঝড়ে লড়াই জনক স্কোরে পৌঁছায় চেন্নাই। মোট কুড়ি ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ ১৬৭ রান।
টসে জিতে প্রথম ব্যাট করতে নেমে অক্ষরের বলে এল বি ডব্লিউ হন কনওয়ে। এরপর অক্ষরের বলেই আউট হন ঋতুরাজ। এরপরই ব্যাট করতে আসে মঈন আলি। মঈন অলিও সাত রান করে ঘরে ফেরেন। পাশাপাশি ললিত একটি দারুণ ক্যাচ ধরেন। দারুণ কাজ ধরে রাহানেকে সাজ করে ফেরান। এরপরে ব্যাটিংয়ের হাল খারাপ হলে রাইডু ও শিবম ডুবে একটু হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুরোপুরি পারলেন না। ১২ বলে ২৫ রান করে ওয়ার্নারের কাছে ক্যাচ দিয়ে বসেন ডুবে। ধোনি ৯ বলে করেন ২০ রান, যে ইনিংসে ২টি ছক্কা ও ১ টি চার আছে।
ওদিকে দিল্লির হয়ে বল করে উইকেট পাননি ঈশান্ত শর্মা। একটি করে উইকেট পায় খলিল আহমেদ, ললিত যাদব, কুলদীপ যাদব ও মিচেল মার্শ ৩ উইকেট পায়।
দেশের একাধিক জায়গায় একাধিকবার সম্মানিত হওয়ার পর এবারে মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh dhoni) সংবর্ধনা জানালেন দ্য এলিফেন্ট হুইসপারার্স-এর (The Elephant Whisperers) বোমান (Bomman) ও বেলিকে (Belli)। 'দ্য এলিফেন্ট হুইসপারার্স' সেরার তকমা ছিনিয়ে নিয়েছে অস্কারের মঞ্চে। স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রে বিভাগে অস্কার জিতেছে এই ডকুমেন্টরি। ভারতীয় সিনেমায় এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে এই ছবি। এই প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রে বিভাগে কোনও ভারতীয় সিনেমা অস্কার জিতেছে। ফলে এটি অস্কার জেতার পর সারা বিশ্বজুড়ে শুভেচ্ছা বার্তা এসেছে। এর এবারে দ্য এলিফেন্ট হুইসপারার্স-এর মাহুত দম্পতিকে সংবর্ধিত করলেন ভারতীয় ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনি। সিএসকে অর্থাৎ চেন্নাই সুপার কিং-এর টিম তাঁদের সম্মানিত করেছেন।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ৯ মে চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই পুরো সিএসকে টিম বাস্তব জীবনের হিরো বোমান ও বেলিকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। এর পাশাপাশি মহেন্দ্র সিং ধোনি নাম লেখা সিএসকে-এর জার্সি বোমান ও বেলিকে উপহার দিয়েছেন। বোমান ও বেলির পাশাপাশি ডকুমেন্টরির পরিচালক কার্তিকি গনসালভেসকেও সম্মানিত করেছেন তাঁরা। আরও জানা গিয়েছে, চেন্নাই সুপার কিং টিম বোমান ও বেলিকে বিশেষভাবে সংবর্ধনা জানাতে আজও এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
উইনিং শট ধোনির (Dhoni) নামে, বলে দারুন দাপট দেখিয়ে মুম্বইকে (MI) অনায়াসে হারিয়ে দিলো চেন্নাই (CSK)। ফলে পয়েন্ট টেবিলে ২ নম্বরে জায়গাও করে নিলো চেন্নাই। টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই। আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৩৯-৮ স্কোরে থেমে যায় মুম্বই। চেন্নাই সেই রান তুলে নিল ১৪ বল বাকি থাকতেই। সেই জয় এল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ব্যাটে।
মরশুমের প্রথম থেকেই ব্যর্থ মুম্বইয়ের ওপেনিং জুটি, শনিবার প্রথমে রোহিত এলেন না ব্যাট করতে, দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান গ্রিন। বাধ্য হয়ে নামতে হয় রোহিতকে। কিন্তু জুটি গড়তে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারে দীপক চাহার তুলে নেন ঈশান কিশনকে। অনায়াসে ধরে খেলতে পারতেন ঈশান। অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট খোয়ালেন তিনি।
রোহিতদের একমাত্র নেহাল ওয়াধেরা রান পেলেন, তরুণ ব্যাটার এ বারই প্রথম মুম্বইয়ের হয়ে খেলছেন। প্রতিটি ম্যাচেই নিজের মতো করে অবদান রাখছেন। এ দিনও চাপের মুখে চেন্নাই বোলারদের সামলে অর্ধশতরান করে গেলেন তিনি। ছন্দে থাকা সূর্যকুমার যাদবের কাছে সুযোগ ছিল টানা তৃতীয় অর্ধশতরানের। শুরুটাও ভালই করেছিলেন। কিন্তু ধরে রাখতে পারলেন না। জাডেজার বিরুদ্ধে উইকেট ছেড়ে চালাতে গিয়েছিলেন। বলের লাইন মিস্ করে বোল্ড। নেহাল আউট হওয়ার পরে আর কোনও আশা ছিল না। শেষের দিকে একের পর এক উইকেট পড়ল। তুষার এ দিনও দুর্দান্ত বল করলেন। বেগনি টুপিও উঠল তাঁর মাথায়। তিনটি উইকেট নিলেন মাথিশা পাথিরানাও।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মুম্বইয়ের উপর দাপট শুরু করে চেন্নাই। আর্শাদ খানের ওভার থেকে ওঠে ২০। চার ওভারে ৪৬ রান তুলে ফেলে তারা। রোহিত বাধ্য হন স্পিনারদের আনতে। প্রথম ওভারেই সাফল্য। পীযূষ চাওলার প্রথম বলে ফিরে যান রুতুরাজ গায়কোয়াড়। তাতেও চেন্নাইয়ের রান তোলার গতি কমেনি। সদ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সুযোগ পাওয়া অজিঙ্ক রাহানে নেমেই আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলতে শুরু করেন। তাঁকেও তুলে নেন চাওলা। রাহানেকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি। অম্বাতি রায়ডুও আহামরি খেলতে পারেননি।
শনিবার দুপুরে চেন্নাইয়ের (CSK) মুখোমুখি হতে চলেছে মুম্বই (MI)। এই ম্যাচে (IPL) পেতে মরিয়া থাকবে চেন্নাই সুপার কিংস, সেসঙ্গে এই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ মুম্বইয়ের কাছেও। দুদলই চেষ্টা করবে এই ম্যাচ জিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। যদিও ধোনিবাহিনী (Dhoni), রোহিতদের থেকে এগিয়ে থাকলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ রয়েছে চেন্নাইয়েরও।
মুম্বইয়ের সাম্প্রতিক ফর্ম বেশ ভালো। শেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জিতেছে। জয়ের পিছনে মিডল অর্ডারের ভূমিকা অনবদ্য। সূর্যকুমার যাদব, টিম ডেভিড এবং তিলক ভার্মারা নিয়মতি অবদান রাখছেন। প্রথম আইপিএল দল হিসেবে পরপর ম্যাচে ২০০-র বেশি রান তুলছে। মুম্বইয়ের স্পিন বিভাগের কথাও বলতে হয়। চিপকের উইকেটে যাঁদের জন্য আদর্শ হয়ে উঠবে। পরপর ম্যাচ জিতলেও পয়েন্ট টেবলের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন রোহিত শর্মারা। আজকের ম্যাচে জয় এই জায়গায় রোহিতদের উন্নতির প্রবল সম্ভাবনা।
এদিকে সিএসকের হয়ে মরসুমের প্রথমার্ধে ভালো পারফম্যান্সের পর রবীন্দ্র জাডেজা, অম্বাতি রায়াডু এবং মইন আলিরা ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তুষার দেশপান্ডে ডেথ ওভারে রান দিচ্ছেন। যদিও তুষার নিয়মিত উইকেট নিচ্ছেন। ওয়াংখেড়েতে সিএসকে বনাম মুম্বই শেষ সাক্ষাতে আহত হন দীপক চাহার। তিনি আবার ফিট হয়ে উঠেছেন। শনিবার সিএসকে জিতলে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে ওঠার প্রবল সম্ভাবনা। মুম্বই জিতলে শীর্ষ চারের মধ্যে প্রবেশের সম্ভাবনা।
চেন্নাইয়ের (CSK) স্পিনের (Spin) দাপট দেখল গম্ভীরের লখনউ (LSG)। জাদেজার বলে চমকে গিয়েছিল মার্কাস স্টোইনিস। হিসেবে করলে ওইটি আইপিএলের সেরা বল। লেগ স্টাম্পের বাইরে পড়ে স্টোইনিসের ব্যাটের পাশ দিয়ে অফ স্টাম্পে গিয়ে বল লাগল। সঙ্গে সঙ্গে চমকে যায় মার্কাস স্টোইনিস। উইকেটে ঘূর্ণি রয়েছে বুঝতে পেরে পাওয়ার প্লে-তেই স্পিনারদের বলে আনেন ধোনি। চেন্নাইয়ের তিন স্পিনার মইন আলি, মাহেশ থিকশানা ও রবীন্দ্র জাডেজা নিজেদের কাজটা করলেন। কাইল মেয়ার্সকে ফেরালেন মইন। এক ওভারে মনন ভোরা ও অধিনায়ক ক্রুণাল পাণ্ড্যকে আউট করলেন থিকশানা। যদিও সমস্ত দাপট হজলে গেল চেন্নাইয়ের। বরুণদেবের হাতে পয়েন্ট খোয়াতে হল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসকে।
সুযোগ ছিল লখনউ সুপার জায়ান্টসকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে ২ পয়েন্ট পেয়ে পয়েন্ট তালিকায় সবার উপরে যাওয়ার। বৃষ্টির কারণে একটি ইনিংসই পুরো হল না। তার ফলে ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল ধোনিদের। ১ পয়েন্ট পেল লখনউ সুপার জায়ান্টসও। অ্যাওয়ে ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তাঁর সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণিত করেন দলের বোলাররা। প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং চেন্নাইয়ের পেসারদের। ফলে হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না লখনউয়ের ব্যাটাররা।
৫ উইকেট পড়ার পরে নিকোলাস পুরান ও আয়ুষ বাদোনি কিছুটা জুটি বাঁধেন। এই দুই ব্যাটার না থাকলে আরও সমস্যায় পড়ত লখনউ। শেষ দিকে কয়েকটি বড় শট খেললেন তাঁরা। দলের রান ১০০ পার হওয়ার পরে আউট হন পুরান। বাদোনি তখনও উইকেটে ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেললেন তিনি। মাত্র ৩০ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। লখনউয়ের যখন ১৯.২ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৫ রান তখনই বৃষ্টি নামে। তার পরে অনেক চেষ্টা করেও আর খেলা শুরু করা যায়নি। অনেক ক্ষণ অপেক্ষার পরে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করে দেন আম্পায়াররা।
শুক্রবারের ম্যাচে রাজস্থানের (RR) কাছে হার চেন্নাইয়ের (CSK)। অবশেষে বিজয়রথ থামলো ধোনিবাহিনীর (Dhoni)। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। দলের শুরুটাও তেমনই হয়েছিল। চেন্নাইয়ের পেসারদের দাঁড়াতে দেননি রাজস্থানের দুই ব্যাটার। যশস্বী এত মারছিলেন যে অপর প্রান্তে থাকা জস বাটলারকে শান্ত দেখাচ্ছিল। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে একের পর এক বড় শট খেলেন তিনি। মাত্র ২৬ বলে অর্ধশতরান করেন যশস্বী।
পেসাররা রান দিচ্ছেন দেখে স্পিনারদের হাতে বল তুলে দেন সিএসকে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। চেন্নাইকে প্রথম উইকেট এনে দেন রবীন্দ্র জাডেজা। ২৭ রানের মাথায় বাটলারকে আউট করেন তিনি। কিন্তু যশস্বী তখনও ক্রিজে ছিলেন। ১০ ওভারে ১০০ রান হয়ে গিয়েছিল রাজস্থানের। দেখে মনে হচ্ছিল, ২০০ রান সহজেই পেরিয়ে যাবে। তবে মাঝের ওভারে রানের গতি কমে। জোড়া উইকেট নিয়ে রাজস্থানকে বড় ধাক্কা দেন তুষার দেশপাণ্ডে। প্রথমে রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জুকে মাত্র ১৭ রানের মাথায় আউট করেন তিনি। ৪৩ বলে ৭৭ রান করে আউট হন যশস্বী।
রাজস্থানের হয়ে মিডল অর্ডারে দলের হাল ধরছিলেন শিমরন হেটমায়ার। কিন্তু চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে রান পেলেন না তিনি। পরপর উইকেট পড়তে থাকায় রানের গতি অনেকটাই কমে যায়। গতির হেরফের করে রাজস্থানের ব্যাটারদের আটকে রাখেন চেন্নাইয়ের পেসাররা। কিন্তু শেষদিকে আবার খেলায় ফিরল রাজস্থান। দেবদত্ত পড়িক্কল ও ধ্রুব জুরেল বেশ কিছু বড় শট খেলেন। দুই ভারতীয় ব্যাটারের ব্যাটে ২০০ রানের গণ্ডি পার করে রাজস্থান। ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান করেন সঞ্জুরা। ধ্রুব ৩৪ রান করে রানআউট হন। পড়িক্কল অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি চেন্নাইয়ের। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ডেভন কনওয়ে। তাও রুতুরাজ চেষ্টা করলেও কনওয়ের ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। ১৬ বলে ৮ রান করে আউট হন তিনি। রান পাননি অজিঙ্ক রাহানে ও অম্বাতি রায়ড়ু। রুতুরাজ ভাল খেলছিলেন। কিন্তু তিনি ৪৭ রান করে আউট হয়ে গেলে চাপে পড়ে যায় চেন্নাই।
শেষ ২৪ বলে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ৭৪ রান। একদিকে টিকেছিলেন শিবম। তাঁর কাঁধেই চেন্নাইয়ের জয় নির্ভর করছিল। বড় শট মারছিলেনও তিনি। ১৮ বলে দরকার ছিল ৫৮ রান। ভাল বল করেন সন্দীপ শর্মা। ১২ বলে দরকার ছিল ৪৬ রান। কিন্তু রাজস্থানের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেই রান তুলতে পারেনি চেন্নাই। অর্ধশতরান করেও দলকে জেতাতে পারেননি শিবম। চেন্নাইয়ের ইনিংস শেষ হয় ১৭০ রানে। ধোনিরা হারেন ৩২ রানে। ব্যাট করার সুযোগই পেলেন না চেন্নাইয়ের অধিনায়ক।
বৃহস্পতিবার রাজস্থান রয়্যালসের (RR) মুখোমুখি হবে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)। রাজস্থানের বিরুদ্ধে ম্যাচে ডেথ ওভারে পাথিরানা চেন্নাইয়ের জন্য বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন, এমনই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার মুরলি কার্তিক এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'পাথিরানা একজন দক্ষ সিম বোলার। ডেথ ওভারে অসাধারণ বল করছে। সবচেয়ে বড় কথা পাথিরানা হল ধোনির রিমোট কন্ট্রোল। ধোনি ঠিক যেমনটা চান, ম্যাচে বল হাতে পাথিরানা ঠিক তেমনটি করছে।’
শুধু পাথিরানা নন, চেন্নাই পেসারদের মধ্যে আকাশ সিং ভাল বল করছেন বলে মনে করছেন কার্তিক। তবে প্রাক্তন এই ভারতীয় ক্রিকেটার চাইছেন চেন্নাইয়ের প্রথম একাদশে থাকুক নিউজিল্যান্ড তারকা মিচেল সান্টনার। কার্তিক বলেন, 'যেকোনও পরিস্থিতিতে, যেকোনও ব্যাটারের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন সান্টনার। তাঁর স্পিনের ভেলকি বুঝতে সমস্যায় পড়তে হয় ব্যাটারদের। শুধু তাই নয়, তাঁর হাত ঘোরানো, ভাল ফিল্ডিং করার ক্ষমতা চেন্নাইকে বাড়তি সুবিধা দেবে বলে মনে করছেন কার্তিক।'
পরপর ম্যাচ জিতে চেন্নাই এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে। তিন নম্বরে রাজস্থান। চলতি আইপিএলে বেশ ভাল ছন্দেই আছে সঞ্জু স্যামসনের দল। রাজস্থানের ঘরের মাঠ জয়পুরে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা যে খুব একটা সহজ হবে না সেটা জানেন ধোনি। তাই উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে প্রথম একাদশে কোনও পরিবর্তন আনেন কিনা সেটাই দেখার।
রবিবার, ২৩ এপ্রিল আইপিএল-এর (IPL) সিএসকে বনাম কেকেআর-এর (KKR-CSK) ম্যাচ ছিল জমজমাট। তবে সেদিনের ম্যাচ ছাড়াও মাঠে দর্শকদের জন্য আরও এক বিশেষ চমক ছিল। কারণ সেদিন ইডেনে দেখা গিয়েছে বাঙালি অভিনেত্রী তথা বং ক্রাশ ঋতাভরী চক্রবর্তীকে (Ritabhari Chakraborty)। ম্যাচ দেখতে যাওয়ার একগুচ্ছ ছবি-ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। তা দেখেই ধেয়ে আসতে থাকে নেটিজেনদের প্রশ্ন। 'কোন দলের পক্ষে ঋতাভরী?' তবে তার উত্তর পাওয় গিয়েছে তাঁর ছবির ক্যাপশনেই।
রবিবার কলকাতার মাঠে খেলা হলেও এদিন যেন পুরো গ্যালারি হলুদেই ভরে গিয়েছিল। কলকাতার ফ্যান যেন ছিল হাতেগোনা। তবে ঋতাভরীর হাতে দেখা গিয়েছে, কেকেআর-এর পতাকা। যা দেখে বোঝা গেল, তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষেই রয়েছেন। ফলে এই দেখে কিছুটা হলেও অন্যান্য কেকেআর ফ্যানরা খুশিই হয়েছেন। তাঁকে গলা ফাটিয়ে কেকেআর-এর জন্য চিয়ার করতে দেখা গিয়েছে। যদিও কেকেআর-এর পরাজয়ে মন ভেঙেছে কেকেআর ফ্যানদের। তবে ঋতাভরীর ক্যাপশন দেখে মনে বল পেয়েছেন কেকেআর ফ্যানরা।
ম্যাচের দিন ঋতাভরী আবার অভিনেত্রী জুহি চাওয়ালার সঙ্গেও ছবি তুলেছেন। সেই ছবিও নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন। সেই ছবিতেই ক্যাপশনে লেখা, 'ম্যাচ ডে! যে যা কিছুই বলুক। কেকেআর আমার মনে বিরাজ করে। আমরা জয়ী হই বা হেরে যাই, কলকাতাই রাজত্ব করবে।'
চিত্রনাট্যে বদল হল না এবারও। ইডেন গার্ডেন্সে ‘হোম’ ম্যাচ খেলতে এসে আরও এক বার জিতল চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির (MSD) দল চলে গেল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) কি এ বার নিজেরা ট্রফি জেতার জন্যে নেমেছে? নাকি বিপক্ষ দল এবং তাদের ক্রিকেটারদের ছন্দে ফেরানোর জন্যে নেমেছে? রবিবারের ম্যাচের পর এই প্রশ্নটা উঠতেই পারে।
প্রথম থেকেই চেন্নাই যে ভাবে শুরু করেছিল, তাতে বোঝা গিয়েছিল এই ম্যাচ তাদের নিয়ন্ত্রণে। রুতুরাজ গায়কোয়াড় এবং ডেভন কনওয়ে চলতি মরসুমে ভাল ছন্দে রয়েছেন। ইডেনে এসেও তাঁদের ছন্দে কোনও বদল নেই। হবেই বা কী করে? চাপ দিতে পারেন সে রকম বোলারই তো নেই কলকাতার। প্রথম ওভারে উমেশ যাদব সে রকম রান দিলেন না। কিন্তু ডেভিড উইজ়া আসতেই চেন্নাই ‘ছন্দ’ খুঁজে পেল।
বেধড়ক মার খেলেন উইজ়া এবং কুলবন্ত খেজরোলিয়া। রাজস্থানের বোলার খেজরোলিয়ার প্রথম ওভারে ১৪ রান এল। সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তীরাও ছাড় পেলেন না। কলকাতার হয়ে প্রথম সাফল্য পেলেন রহস্য স্পিনার সুযশ শর্মাই। রুতুরাজ তাঁর বল বুঝতেই পারেননি।
কলকাতা অবশ্য বুঝতে পারেনি রুতুরাজ ফেরার পর এত বড় আতঙ্ক তাদের সামনে অপেক্ষা করছে। অজিঙ্ক রাহানে গত মরসুমেও কলকাতায় ছিলেন। বিরাট ভাল খেলেছেন এমনটা কেউ দাবি করবেন না। কিন্তু চেন্নাইয়ের রাহানে অন্য ব্যাটার। খোলা মনে তাঁকে খেলার স্বাধীনতা দিয়েছেন ধোনি। তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছেন রাহানে।
তবে কনওয়ে ক্রিজে থাকা পর্যন্ত তাঁকে খুব বেশি কিছু করতে হয়নি। কেকেআরের বোলারদের উপর তাণ্ডব দেখানোর কাজটা করছিলেন কিউয়ি ব্যাটারই। অনায়াস বিক্রমে অর্ধশতরান করে ফেললেন। চলতি আইপিএলে টানা চারটি। কেন তাঁর উপর এতটা ভরসা করে চেন্নাই, সেটা বোঝা গেল। শুরুটা ভাল হলে বাকি সব কিছুই সহজ হয়ে…
মুম্বইয়ের সূর্যকুমার যাদব এই কেকেআর ম্যাচেই ছন্দ ফেরত পেয়েছিলেন। আগের ম্যাচে দিল্লিকে প্রথম জয় ‘উপহার’ দিয়েছিলেন কেকেআরের ক্রিকেটাররা। আর এ দিন অজিঙ্ক রাহানে, শিবম দুবের মতো ক্রিকেটারকে ছন্দ ফিরিয়ে দিলেন। উপরি পাওয়া মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে দেখার স্বাদ। প্রথমে ব্যাট করে চেন্নাইয়ের তোলা ২৩৫-৪ স্কোরের জবাবে ১৮৫-৮ স্কোরে থেমে গেল কলকাতা।
আইপিএলে কেকেআরের অবস্থা যত দিন যাচ্ছে, তত খারাপ হচ্ছে। প্রতিটি দল এসে খোলনলচে বের করে দিয়ে যাচ্ছে শাহরুখ খানের দলের। পরিকল্পনাহীন, বুদ্ধিবিবেচনাহীন এবং কিছু অযোগ্য ক্রিকেটারকে নিয়ে দল গড়লে যা হয়, তাই হচ্ছে। দু’টি ম্যাচে ব্যক্তিগত নৈপুণ্য কলকাতাকে জিতিয়েছে বটে। কিন্তু প্রতি ম্যাচে তা হয় না। হওয়ার সুযোগও পাওয়া যাচ্ছে না।
এ দিন ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে সত্যিই বোঝা যাচ্ছিল না কোন মাঠে খেলা হচ্ছে? মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে দেখতে রবিবাসরীয় ইডেন গার্ডেন্সে যে হলুদ ঝড় উঠবে সেটা জানা ছিল। কিন্তু শহর কলকাতার গর্বের মাঠ যে এভাবে সর্ষের খেত হয়ে উঠবে সেটা হয়তো কল্পনাও করা যায়নি। বিকেল থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল। কলকাতার সমর্থক খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। যে দিকেই তাকানো যায় শুধু হলুদ জার্সি এবং পিঠে লেখা ধোনির নাম। সম্ভবত ধোনির শেষ ম্যাচে এ ভাবেই কলকাতা আপন করে নিল ক্যাপ্টেন কুলকে।
একেই লিগ টেবিলের শেষে থাকা দলের কাছে হার, হেরে হ্যাট্রিক। পাশাপাশি ঘরের মাঠে চেন্নাই (CSK) ও ধোনির (MSD) জন্য বিপরীত চিৎকার কেকেআরকে (KKR) নিশ্চয়ই চাপে রাখবে। পাশাপাশি ব্যাটিং ও বোলিং নিয়ে বিপর্যয় তো রয়েছেই। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে দলে চার বদল এনেও লাভ হয়নি। উল্টে লিগের লাস্ট বয়ের কাছে হারতে হয়েছে খারাপ ভাবে। রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে খেলতে হবে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে। ধারে-ভারে চেন্নাই অনেকটাই এগিয়ে। এই ম্যাচেও কি চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দলে কোনও বদল দেখা যাবে?
আগের ম্যাচের একাধিক ক্রিকেটারকে নিয়ে ভুগেছে কলকাতা। তারা সবচেয়ে হতাশ লিটন দাসকে নিয়ে। কেন তিনি কলকাতায় এলেও নামানো হচ্ছে না তা নিয়ে অনেক জল্পনা হচ্ছিল। লিটন দলে সুযোগ পেয়েও কিছুই করতে পারেননি। ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলে চার মারেন। কিন্তু তৃতীয় বলেই আড়াআড়ি কোনও মতে শট খেলতে গিয়ে লোপ্পা ক্যাচ দিয়ে বসেন।
উইকেট কিপিংয়ের সময়ে তো আরও খারাপ হয়েছে তাঁর পারফরম্যান্স। একটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন। দু’টি স্টাম্পিং মিস করেন। তার মধ্যে অক্ষর পটেলকে অনেকটা সময় পেয়েও যে ভাবে স্টাম্প করতে ব্যর্থ হন, তা দেখে অনেকেই বিস্মিত। তাঁর মতো অভিজ্ঞ উইকেটকিপারের থেকে এটা কেউই আশা করেননি। লিটনকে বসানো হলে দলে আনা হতে পারে সেই রহমানুল্লা গুরবাজকে। সে ক্ষেত্রে কলকাতাকে হয়তো আবার ওপেনিং জুটি বদলাতে হবে।
দলে মনদীপ সিংহকে নেওয়ার যৌক্তিকতাও অনেকে খুঁজে পাননি। তিনি ব্যাট তো ভাল করতেই পারেন না। বলও করেন না। ফলে শুধু ব্যাটিংয়ের জন্য তাঁকে নেওয়া অনর্থক। চেন্নাই ম্যাচে কলকাতা মনদীপকে বসানোর কথা ভাবতেই পারে। বরং তাঁর জায়গায় শার্দূল ঠাকুরকে ফেরানো হলে তিনি বল করার পাশাপাশি ব্যাট হাতে চালিয়ে খেলে দিতে পারবেন।
বেঙ্কটেশ আয়ার বল করতে পারেন। কিন্তু তাঁকে আগের ম্যাচে তুলে অনুকূল রায়কে নামানো হয়, যিনি বল হাতে খুব খারাপ করেননি। তবে ইডেন গার্ডেন্সের কথা মাথায় রেখে অনুকূল নয়, ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে কলকাতার খেলানো উচিত সুযশ শর্মাকেই। কুলবন্ত খেজরোলিয়াকে আর হয়তো খেলানোর ভুল করবে না কেকেআর।
বাকি দলে আপাতত পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে হয় না। প্রথম ম্যাচে ভাল খেলেছেন জেসন রয়। তিনি থাকছেনই। সুনীল নারাইনের বদলে ডেভিড ওয়াইজ়াকে একটি ম্যাচে নামানো যেতেই পারে। কিন্তু ইডেনের স্পিনিং উইকেটের কথা ভেবে সেই বদল হয়তো করা হবে না।