ভাঙড়ের ঘটনা (Bhangar incident) নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) কাছে একযোগে নালিশ করতে চলেছে কংগ্রেস (Congress) ও সিপিএম (CPIM)। মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডেকেছে কমিশন। সেই বৈঠকেই নালিশ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিরোধী নেতারা। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মনোনয়নের ঘটনায় যদি এই পরিস্থিতি হয়, তাহলে ভোটের দিনের চেহারা মারাত্মক হতে পারে। ভাঙড়ের ঘটনাকে উদাহরণ টেনে পঞ্চায়েতে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে অনড় কংগ্রেস ও বিজেপি।
এই ঘটনার পর বিরোধীদের প্রশ্ন কোথায় গেল ১৪৪ ধারা? কোথায় গেল পুলিসের রুট মার্চ? গত শুক্রবার থেকে তপ্ত ছিল ভাঙড়ের দু'নম্বর ব্লক। ওই দিন এক সরকারি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ কেন আইএসএফ মনোনয়ন জমা দেবে, তা নিয়ে বচসা শুরু হয়েছিল। সেই জল গড়াল বোমাবাজিতে। সোমবারই ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম দাবি করেছিলেন, নিয়ম মেনেই মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে। কোনও অশান্তি তাঁরা ভাঙড়ে হতে দেবেন না।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙড় সব উল্টো প্রমাণ করল। তৃণমূল-আইএসএফের সংঘর্ষে জখম হলেন কমবেশি সাত থেকে আট জন। হরির লুঠের মতো বোমা পড়ল। প্রায় সাত রাউন্ড গুলি চলেছে বলেও খবর। যেখানে রক্ত ঝড়েছে পুলিসের গা থেকেও।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) জন্য মনোনয়নপত্র (Nomination) জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়াল বাম (Cpim) ও তৃণমূল (TMC) নেতা কর্মীরা। ঘটনার জেরে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয় ডোমকল বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকা। ডোমকল থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাম কর্মী সমর্থকরা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন তাঁদের প্রার্থীরা। অভিযোগ, সেসময় অফিসের গেটের সামনে তাঁদের আটকে দেয় তৃণমূলের কর্মীরা। এবং প্রতিবাদ করলে তৃণমূলের তরফে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।
যদিও সম্পূর্ণ অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল কংগ্রেসের পালটা দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে বাম কর্মীরা। ঘটনার সময় ওই এলাকায় থাকা পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে। কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় পরে ফের ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অতিরিক্ত পুলিস। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এবং মনোনয়ন জমা শুরু করা হয়েছে।
দীর্ঘ ১২ বছর পর শাসনের (Shasan) মাটিতে লাল পতাকা উড়েছিল। পুরনো দলীয় কার্যালয় আবার রং করে পাটিকর্মীরা সমাদরে বসতে শুরু করেছিল। তবে সেই খুশিটা ছিল শুধু ক্ষণিকের। শনিবার রাত ১২ টা নাগাদ শাসনের একমাত্র সিপিআইএম-র (CPIM) দলীয় কার্যালয়ে হামলা করে তৃণমূল (TMC) আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙ্গা হয় দরজা-জানালা, চেয়ার-টেবিল। এমনকি মাটিতে ছুঁড়ে ফলে দেওয়া হয় সিপিআরএম-র দলীয় লাল পতাকাও।
সূত্রের খবর, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার পথ অবরোধ করে বামপন্থীরা। প্রায় ২০ মিনিট ধরে রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন বামপন্থীরা। যার ফলে ওই রাস্তায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিস (Police)। এমনকি দুষ্কৃতীদেরকে গ্রেফতার করার আশ্বাস দেয় পুলিস। আর পুলিসের এই আশ্বাস পাওয়ার পরেই সিপিএম নেতৃত্ব অবরোধ তুলে নেন।
এই ঘটনায় সিপিআইএম-র নেতৃত্বদের দাবি, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সিপিআইএম-র এই কার্যালয়টি বন্ধ হয়েছিল। তবে প্রায় দু আড়াই মাস আগে এই কার্যালয়টি আবার খোলা হয়। সেই নিয়ে বেশ খুশিতেই ছিলেই বামপন্থীর সদস্যরা। তবে এই দু আড়াই মাসে সিপিআইএম-এ তৃণমূল থেকে দলে দলে লোক এসে যোগ দেয় এই কার্যালয়ে। আর তা নিয়েই দু দলের মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি হয়। আর তার জন্যই শনিবার গভীর রাতে সিপিআইএম-র দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা, এমনটাই দাবি সিপিআইএম-র নেতৃত্বদের।
ভারতবর্ষের একমাত্র দলসমূহ কমিউনিস্টরা (Communist), যাদের স্ট্রাটেজি বোঝা দুস্কর বিশেষ করে সিপিএম (CPIM)। বিশ্ব রাজনীতিতে যেখানেই কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় এসেছে, দেখা গিয়েছে তারা তাদের ভাষায় জাতীয় বুর্জুয়াদের হাত ধরেই এসেছে। ব্যতিক্রম নয় এ রাজ্যেও। ১৯৬৭-তে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) ক্ষমতায় এসেছিলো যুক্তফ্রন্ট গড়ে, অজয় মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে। ৩৪ বছরের শাসন চালিয়েছিল কিন্তু ক্ষমতায় এসেছিলো তৎকালীন জনতা পার্টির এবং প্রফুল্ল সেনের হাত ধরে। বাস্তব ঘটনা এই যে তারা প্রাথমিক ভাবে পরজীবীর মতো থাকে এবং ক্ষমতায় এলে প্রথমেই বাতিলের খাতায় পাঠায় যাদের হাত ধরে আসে। এবারের নতুন বন্ধু কংগ্রেস, যাদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে কয়েক বছর ধরে। বেশ কয়েকটি নির্বাচন লড়লোও তারা।
মনে রাখতে হবে আজ থেকে ঠিক দু বছর আগে ,ঠিক আজকের দিনেই তাদের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় আসন সংখ্যা শূন্য হয়ে গিয়েছিলো। অবশ্য পরে বেশ কিছু উপনির্বাচনে সর্বোপরি পৌর নির্বাচনে তারা বিজেপিকে তৃতীয় স্থানে ফেলে দ্বিতীয়তে উঠে এসেছে। একটি পুরসভা দখলও নিয়েছে। এরপর সাগরদিঘি নির্বাচনে কংগ্রেসকে সঙ্গী করে নিজেরা মূল প্রচারে নেমে কংগ্রেসকে প্রথম আসন জিততে সাহায্য করেছে। এবারে লক্ষ পঞ্চায়েত তারপর লোকসভা। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সরে যাওয়াতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিন্তু সিপিএম কারণ বিচারপতি যত আদেশ দিয়েছেন তার ফায়দা নিয়েছিল বামেরা।
পথে নেমে চাকুরী প্রার্থীদের এবং ডিএ দাবিদারদের পাশে নিয়মিত ভাবে সিপিএম দাঁড়িয়েছিল। বিজেপির মতো অত মিডিয়ার সাহায্য না পেলেও সোশ্যাল নেটে তারা বিশাল ভাবে প্রচার করেছিল। আপাতত সিবিআইয়ের দিকে তাকিয়ে সিপিএম। অবশ্যি তারা কিন্তু গ্রামেগঞ্জে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার চালাচ্ছে এবং টার্গেট করেছে মুসলিম ভোট। যদিও এই কঠিন বাস্তব আজকের বিজেপির ভোটের সিংহভাগই বাম ভোট। বামেদের ২০১১-র ভোট ছিল প্রায় ৩৯ শতাংশ। ২০১৯-এ ওই শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ ভোট চলে যায় বিজেপির বাক্সে। কাজেই ওই কমিটেড সিপিএম ভোট যদি ফেরত না আসে তবে দুর্ভোগ আছে তাদের। সুতরাং তারা এক তরফা তৃণমূলের বিরোধিতা করে ভোট ফেরত আনার চেষ্টায় রয়েছে।
জোড়া কর্মসূচির মাধ্যমে, পঞ্চায়েতে (Panchayet) জনতার মত নিয়ে প্রার্থী (Candidate) বাছাইয়ের ঘোষণা তৃণমূলের (TMC)। বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তৃণমূলের এই জোড়া কর্মসূচিকে কটাক্ষ বাম-ডান দুপক্ষেরই। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এই জোড়া দুটি কর্মসূচির কথা জানিয়ে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, 'এই কর্মসূচি দুটির নাম দেওয়া হয়েছে জনজোয়ার ও গ্রাম বাংলার মতামত।' অভিষেক এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, দুমাস ধরে এই কর্মসূচি চলবে, রাজ্যের প্রতিটি জেলায়। তিনি দায়িত্ব নিয়ে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত করবেন। প্রতিটি জেলায় দিনে চারটি-পাঁচটি করে সভা হবে। তারপর রাতে ওই জেলার সমস্ত জেলা পরিষদ সদস্য, সভাপতি, বুথ সভাপতিদের নিয়ে গ্রাম বাংলার মতামত অধিবেশন হবে। সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন ওই এলাকার তিন হাজার মানুষ। ওখানেই গোপন ব্যালট ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করা হবে।'
তিনি আরও জানিয়েছেন, যদি কোনও এলাকার স্থানীয়রা বলেন, ওই অঞ্চলে সিপিএমের প্রার্থী কাজ করেছে এবং তাঁরা সিপিএমের প্রার্থীকেই চায়। তবে সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির সঙ্গে অবশ্যই কথা বলবেন তিনি। তৃণমূলের এই জোড়া কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন বাম-বিজেপি দু'পক্ষই।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের জোড়া কর্মসূচি বিষয়ে সিপিএম-র রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সিএন ডিজিটালকে বলেন, 'সিপিএম অভিষেকের কথার গুরুত্ব দিতে নারাজ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি দুর্নীতিগ্রস্ত লোক। তৃণমূল একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে দুর্নীতিগ্রস্ত সেটা তিনি আদালতে গিয়ে প্রমাণ করেছেন। কেন্দ্রীয় সংস্থার জেরার মুখে যাতে পড়তে না হয়, সেজন্য আদালতে গিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন দুর্নীতিগ্রস্ত। এসব কর্মসূচি ভাওতা। গ্রাম বাংলার মানুষ এসব ভাওতাবাজিতে পা দেবেন না বলে আশা করি।'
পাশাপাশি তৃণমূলের এই জোড়া কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপিও। বৃহস্পতিবার সিএন ডিজিটালকে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'প্রকাশ্যে এসব কিছু করার আগে চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট সামনে আনতে বলুন। আগে সরকারি চাকরিপ্রার্থীরা যারা প্রকাশ্যে আন্দোলন করছে তাঁদের চাকরি দিতে বলুন। এত বছর ধরে যারা বঞ্চিত তাঁদের চাকরি দিতে বলুন। এক কথায় তৃণমূল একটি লুটেরাদের দল। ওদের মোক্ষম টার্গেট লুট করা।'
একদিকে যখন গোষ্ঠীদ্বন্ধ, অন্যদিকে তখন দলে ভাঙ্গন। যখন অনুব্রতহীন (Anubrata Mondal) বীরভূম সামলাতে হিমশিম তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো, ঠিক তখনিই অনুব্রতহীন জেলায় আবার শাসক শিবিরে ভাঙন। বুধবার সকালে বীরভূমের লাভপুরে তৃণমূল এবং বিজেপি ছেড়ে সিপিএমে (CPIM) যোগ দিল ১০০-র বেশি পরিবার। হাতিয়া অঞ্চলের পাঁচটি গ্রাম থেকে এসে লাভপুরের তরুলিয়া হাটে আয়োজিত এক যোগদান কর্মসূচিতে এই পরিবারগুলি সিপিএমে যোগ দেয়।
বর্তমানে জেলবন্দি রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর অনুপস্থিতিতে দলকে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে শাসক শিবির। অনুব্রতের গরহাজিরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিরোধী গেরুয়া শিবিরও বীরভূমকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমেছে। কিন্তু তার মধ্যেই তৃণমূল এবং বিজেপি ছেড়ে বহু পরিবারের সিপিএমে যোগদান দুই দলেরই জেলা নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছে বলে সূত্রের খবর।
তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগদান করা আব্দুল আলিম বলেন, ‘তৃণমূলের দুর্নীতির কারণে আমরা তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগদান করলাম। আমরা তৃণমূলের কর্মী ছিলাম। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কিছু বলতে গেলেই জেলে ভরে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। তার জন্য আমরা প্রায় একশোর বেশি পরিবার সিপিএমে যোগদান করলাম।’
এই প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলের দুর্নীতিতে মানুষ ক্ষিপ্ত। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই মানুষের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই লোকে আমাদের দলে যোগদান করছে। শুধু লাভপুরে নয়, পুরো বীরভূমেই আমাদের দলে বহু মানুষ অন্য দল ছেড়ে যোগদান করবে।’
যদিও এই পরিবারগুলির তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দেওয়াকে বিশেষ আমল দিতে রাজি নয় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যাঁরা তৃণমূল করে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে দল করে। তাই দল ছেড়ে তাঁরা যাবেন না। যাঁরা দল ছাড়ছেন তাঁরা হলেন সেই সুবিধাবাদীরা যাঁরা বিধানসভা নিবার্চনের আগে আগে বিজেপিতে গিয়েছিলেন আর এখন আবার সিপিএমে যাচ্ছেন। এতে আমাদের দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার উত্তরকন্যা (Siliguri) অভিযানের ডাক দিয়েছিল, সিপিএমের (CPIM) যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই (Dyfi)। আর ওই মিছিলেই ধুন্ধুমার। দু'পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি, পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট-বৃষ্টি। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামাতে হয় বিশাল পুলিস বাহিনীকে। চলে লাঠি চার্জ, কাঁদানে গ্যাস। ডিওয়াইএফআইর অভিযোগ, পুলিস তাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলেও সিপিএমের যুব সংগঠনের দাবি। মিছিল পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকজন পুলিস কর্মী তাতে আহত হয়েছেন বলে খবর।
শূন্যপদে স্থায়ী নিয়োগ, স্থায়ী নতুন পদ তৈরির দাবিতে এবং আর্থিক দুর্নীতি ও বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছিল সিপিএমের ওই যুব সংগঠনটি। কর্মসূচির শুরুতে শিলিগুড়ির মহানন্দা সেতুতে জমায়েত শুরু করেন ডিওয়াইএফআইয়ের সদস্যরা। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি-সহ বিভিন্ন জেলার কর্মীরা জমায়েত করেন মহানন্দা সেতু সংলগ্ন মোহনবাগান অ্যাভিনিউয়ে। সেখান থেকে মিছিল করে তিনবাত্তি এলাকায় এলে ব্যারিকেড করে পুলিস বাং সংগঠনের মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে সেখানেই শুরু হয় ধস্তাধস্তি। সূত্রের খবর, গ্রেফতার করা হয়েছে মিনাক্ষী-সহ কয়েক জন ডিওয়াইএফআই কর্মীকে। ইটের আঘাতে জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী।
সাত দফার দাবিতে বামেদের (CPIM) জেলা পরিষদ (Zila Parishad) অভিযানে ধুন্ধুমার বারাসতে (Barasat)। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে গুরুত্বপূর্ণ ৭টি দাবি নিয়ে বারাসত হেলাবটতলা মোড় থেকে মিছিল করে জেলা পরিষদ অবধি যাওয়ার কথা ছিল তাদের। বাম ছাত্র-যুবদের এই মিছিল আটকানোর অভিযোগ ওঠে পুলিসের বিরুদ্ধে, তখনই পরিস্থিতি চরমে উঠে যায়। এসএফআই-র তরফে ভাঙচুর চালানো হয় জেলা পরিষদ গেটে। পরিস্থিতি এতটা চরমে উঠে যায় যে, লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয় পুলিসকে। পুলিস জানিয়েছে, বাম ছাত্র-যুবর তাণ্ডবে ভেঙেছে ওই গেট। এ ঘটনায় বামেদের ১০ জন সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিস।
বাম ছাত্র-যুব নেতৃত্ব সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ৭ দফার দাবিতে জেলা পরিষদ অভিযান ছিল। তাঁদের অভিযোগ অকারণে ওই মিছিলের পথ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিস। বাম সূত্রের খবর, দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ, একশো দিনের কাজের বকেয়া মেটানো, লুটেরা মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ে তোলা, আবাস যোজনায় গৃহহীনদের ঘর দেওয়া, ছাড়াও একাধিক দাবি নিয়ে মঙ্গলবারের এই জেলা পরিষদ অভিযান চালিয়েছিল তাঁরা। এ ঘটনায় স্থানীয় বাম নেতৃত্ব সুদীপ্ত দাশ বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৭ দফার দাবিতে এই মিছিলকে অযথা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিস।'
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি সিপিআইএম (CPIM) নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। তাঁকে বাইপাসের ধরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সুজন চক্রবর্তীর পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আচমকাই শ্বাসকষ্ট ও পেটে ব্যথা ওঠে সুজন বাবুর। তারপরে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালকে ভর্তি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওখানে উপস্থিত হয়েছেন বামফ্রন্টের কিছু যুব নেতৃত্বরা।
মনি ভট্টাচার্য: 'আমার বাবা কার নামে গাড়ি কিনবেন সেটা কুণালের বাবা ঠিক করে দিতে পারেনা', গাড়ি কেনা নিয়ে তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষের জবাব দিলেন সিপিআইএম নেতা শতরূপ ঘোষ। সূত্রের খবর, শতরূপ সম্প্রতি একটি গাড়ি কিনেছেন, যার মূল্য ২২ লক্ষ টাকা। তারপরেই মঙ্গলবার কুণাল ঘোষ ওই টাকার উৎস সমন্ধে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া, শতরূপের সম্পত্তির নথি নিয়েও প্রশ্ন তুলে টুইটারে ও ফেসবুকে পোস্ট করেন কুণাল। এবার কুণালের করা প্রশ্ন নিয়ে, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বামেদের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন শতরূপ।
কুণালের প্রশ্নের জবাবে শতরূপ জানান, গাড়ি কেনা হয়েছে নিজের নামেই। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে শতরূপ বলেন, 'ওই গাড়ির দাম দিয়েছেন বাবা শিবনাথ ঘোষ। সিংহভাগ খরচই করা হয়েছে চেকের মাধ্যমে। কিছু টাকা নগদেও দেওয়া হয়েছে।' তিনি মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক পাসবুকের নথি, রসিদ দেখিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব প্রকাশ করেছেন। এছাড়া শতরূপ ওই টাকা কবে, কোন ব্যাঙ্ক থেকে এবং কত টাকা খরচ করা হয়েছে, সেটাও প্রকাশ করেছেন। তিনি হিসাব দিয়েছেন বাবা শিবনাথ ঘোষের ফিক্সড ডিপোজ়িটে সঞ্চিত অর্থেরও। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে শতরূপ পরিষ্কার জানিয়ে দেন, 'এরপরেও গাড়ির খরচের বিষয়ে কোনও অনিয়ম চোখে পড়লে, তৃণমূল অর্থাৎ শাসক প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করতেই পারে।'
মঙ্গলবার কুণাল ঘোষ ফেসবুক পোস্টে বলেন, 'একজন সিপিআইএম-র হোলটাইমার এত টাকা কোথা থেকে পেলো? যে ২ লাখের সম্পত্তির হিসেব দিয়ে ২২ লাখি গাড়ি কিনেছে। ' মঙ্গলবারই সাংবাদিক সম্মেলন করে, ব্যাঙ্ক ও চেকের সমস্ত নথি প্রকাশ করে কুণালের এই কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিয়েছে বাম নেতা শতরূপ ঘোষ। যদিও শতরূপের দেওয়া জবাব সমন্ধে, সিএন-ডিজিটালকে তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, 'আমরা সবাই জানি, বৃদ্ধদের নামে গাড়ি কিনলে বা কিছু কিনলে ছাড় পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে কেন বাবার নামে না কিনে, নিজের নামে গাড়ি কিনল শতরূপ সেটাই প্রশ্ন।'
২ লাখের সম্পত্তির (Asset) হিসেব দিয়ে ২২ লাখি গাড়ি! ঠিক এমন ভাবেই সিপিআইএমের (Cpim) হোলটাইমার শতরূপ ঘোষকে কটাক্ষ করলেন রাজ্য তৃণমূল (Tmc) সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে তিনি, ফেসবুক পোস্ট সহ তাঁর ব্যক্তিগত টুইটে শতরূপ ঘোষের আয় ও সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ওই পোস্টে কুণালের দাবি, সম্প্রতি সিপিআইএমের হোলটাইমার শতরূপ ঘোষ একটি গাড়ি কিনেছেন ২২ লক্ষ টাকা দিয়ে। সেই গাড়িটির নম্বর অনুযায়ী, গাড়িটি শতরূপের নামেই আছে বলে দাবি করেন কুণাল। এরপর ওই পোস্টেই কুণাল ঘোষ প্রশ্ন করেন, একজন সিপিআইএমের হোলটাইমার এত টাকা কোথা থেকে পেলো?
Satarup Ghosh of CPM.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) March 28, 2023
Rs 2 lacs assests in 2021 election affidavit.
Now he bought the new car paying onetime almost 22 lacs.
How can a wholetimer of CPM afford this kind of expenses?
** for detail, contact: Mrityunjoy Pal.@AITCofficial spokesman and state youth wing GS. pic.twitter.com/Rd2HiQ2Wpt
মঙ্গলবার কুণাল, ওই গাড়ির নম্বর, ২০২১ সালে শতরূপের মোট সম্পত্তির নথি, ও গাড়ির সরকারি নথির ছবি পোস্ট করে আরও প্রশ্ন তোলেন, তিনি জিজ্ঞেস করেন, '২০২১ সালে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শতরূপের মোট সম্পত্তির পরিমাণ, ২ লক্ষ টাকা। সেক্ষেত্রে হঠাৎ করে, কিভাবে এতো টাকা এলো! যে একটা বিলাসবহুল গাড়ি কিনে নিলো শতরূপ। যার মোট মূল্য ২২ লক্ষ টাকা তিনি আরও প্রশ্ন করেন যে, 'কোনো হোলটাইমার এত টাকা ব্যাঙ্ক লোন পেতে পারে কি?' যদিও এ ঘটনায় শতরূপকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, 'এ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য, দুপুর দেড়টা নাগাদ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানাবো।'
সক্রিয় ভাবে যুক্ত নেই তিনি। দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকার আক্ষেপ যেমন আছে, তেমন ভোলেন নি তাঁর পুরোনো দলকেও। সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন একদা বাম নেতা, পরবর্তীকালে ভাঙড়ের তৃণমূলের বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা। সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর পর, তাঁর আক্ষেপ তাঁর দল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কেউই যোগাযোগ রাখেন না। এমনকি মমতা বন্দোপাধ্যায় অবধি উদ্যোগ নিয়ে যোগাযোগ করে না বলে জানান তিনি।
ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা শনিবার সিএন-কে জানান, ' ৮০ বছর বয়স হয়েছে, আগেকার মত দৌড় ঝাঁপ করতে পারি না। সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসেছি আক্ষেপ হয়। ভাঙ্গর নিয়ে তিনি শনিবার জানান, ' পঞ্চায়েতের আগে ভাঙ্গর কিছুটা রিকভার হবে, সবটা হবে বলে মনে হয় না, শওকতকে দায়িত্ব দিয়েছে, ও দক্ষ সংগঠক। যদিও ওখানে প্রার্থী ঘোষণার পর, নিজেদের মধ্যে একটা মতবিরোধ হয়। তবে সবাই চেষ্টা করছে। '
ভাঙড়ের প্রার্থীর জন্যই কি এই দুরাবস্থা ভাঙড়ের, এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন , ' আমি নিজেই চাই নি প্রার্থী হতে, আমি চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম, শারীরিক অসুস্থতার কারণে, আমি প্রার্থী হতে চাই না, তাই মমতা আমাকে প্রার্থী করেন নি। তিনি আরও বলেন, ' মমতা বলেছিল, আপনার যদি কোনো অসুবিধা হয় বলবেন, যদিও আমার কোনো প্রয়োজন পড়েনি, তাই জানাই নি, আমাদের যোগাযোগ সেরকম নেই। '
শনিবার তিনি আরও বলেন, ' বার্ধক্য কালে বাম জামানার লোকদের পাশে পাই, এই জন্য আক্ষেপ হয়, ওরা আন্তরিক ভাবে আমার খেয়াল নেয়। দলের শীর্ষস্তরের নেতৃত্ব আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। ' শনিবার তিনি জ্যোতি বাবু, বুদ্ধ বাবু ও মমতা বন্দোপাধ্যায়, তিন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে জ্যোতি বাবুকে এগিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, ' জ্যোতি বাবুর সঙ্গে কারোর তুলনা হয়না, উনি একটা কথা বললে সেটাই ফাইনাল, বুদ্ধ বাবু আবেগ প্রবন, আবেগের বসে মন্ত্রিসভা ছেড়ে দিয়েছিলেন। পাশাপাশি মমতা চালাক, পিপলস পালসটা বোঝেন। ' তিনি মমতা সম্পর্কে আরও বলেন, ' মমতা প্রান্তিক মানুষের জন্য যা করেছেন গ্রাম বাংলায় মমতাকে সরাতে পারবেন ন। ' শনিবার দুর্নীতি নিয়ে তিনি বলেন, ' আরও কড়া হওয়া উচিত ছিল, শীঘ্রই ব্যবস্থা নিতে হবে। ' যদিও মমতার পর, অভিষেক কি যোগ্য নেতা! সে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ' মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পরে বড় জিজ্ঞাসা চিহ্ন, একজন তৈরী নেতা, ও একজন তৈরী করা নেতা, দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে। '
মনি ভট্টাচার্য: 'বাম আমলে চাকরি ভাগ হত, অনেককে চাকরি (Job) দিয়েছেন আমার বাবা, আমিও অনেকের জন্য সুপারিশ করেছি,' এই মন্তব্য খোদ রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী (Minister) উদয়ন গুহের। তাঁর অভিযোগের তীর বাম আমলের নিয়োগের দিকে, উদয়ন গুহ (Udayan guha) সিএন-ডিজিটালকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বলেন, 'নিজের দলের ছেলেদের চাকরি দেওয়া দুর্নীতি হলে, আমিও সেই দুর্নীতিতে যুক্ত, বাম আমলে আমিও অনেককে চাকরি দিয়েছি।' যদিও এর পাল্টা উত্তরে সিপিআইএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, 'বাম আমলে যদি ওর বাবা আর উনি চাকরির সুপারিশ করে থাকেন, ভালো তো, তাঁর বাবাকে তো আর পাওয়া যাবে না, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে বলুক, জেলে ঢুকিয়ে বাটাম দিলেই, বলে দেবে কাকে চাকরি দিয়েছে, কে অযোগ্য ছিল।'
উদয়ন গুহ বামেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নিজের বাবাকেও দোষী বলতে ছাড়েননি। শনিবার উদয়নবাবু বলেন, 'বাম আমলে চাকরির জন্য আমিও সুপারিশ করেছি, আমি যখন সুযোগ পেয়েছি, আমিও চাকরি দিয়েছি, এবং সেক্ষেত্রে আমি যাকে চাকরি দিয়েছি, তার থেকে কী যোগ্য প্রার্থী ছিল না!' শনিবার তিনি আরও বলেন, 'যে আমার দল করত, তাকে চাকরি দিয়েছি।' এখন মন্ত্রী হিসেবে আপনি কাউকে সরকারি চাকরি দিয়েছেন? বা সুপারিশ করেছেন? এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমি তো মন্ত্রী হিসেবে তিনজনকে অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে নিয়েছি, আমি কি অন্য দলের কাউকে অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে নেব? আমার অধিকার আছে ৩ জনকে নেওয়ার তাই নিয়েছি।'
শনিবার, মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, 'বাম আমলে দুজন করে অ্যাটেনডেন্ট নিয়েছে প্রতিটা মন্ত্রী। প্রতি বছর নিয়োগ করেছে, প্রতি বছর ওই দুজন করে পার্মানেন্ট হয়ে গিয়েছে। আবার দুজনকে নিয়েছে, জ্যোতি বাবু করেননি? বুদ্ধবাবু করেন নি? হয়ত বুদ্ধবাবু নাম সাজেস্ট করেননি। কিন্তু বামদের কেউ নাম সাজেস্ট করেছে আর প্রতি বছর অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগ করেছে, আর পুরোনো দুজনকে পার্মানেন্ট করেছে।' এবিষয়ে শনিবার সিএন ডিজিটালকে সিপিআইএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, 'অ্যাটেনডেন্ট কোনও সরকারি পদ নয়, বুদ্ধবাবুর অ্যাটেনডেন্ট বামেদের দলের, কেউ হবে না তো কি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাইপো হবে? উনি ফালতু বকছেন, বুদ্ধবাবুর অ্যাটেনডেন্ট ছিলেন জয়দীপ মুখার্জী, সে এখন গণশক্তির হোলটাইমার।'
শনিবার উদয়ন গুহ আরও বলেন, 'কেউ সাধু নয়, আবারও আমি বলছি, দুর্নীতি মানে ৫ টাকা নিলেও দুর্নীতি, ৫০০০ টাকা নিলেও দুর্নীতি, ৫ লক্ষ টাকা নিলেও দুর্নীতি। আমার হোলটাইমারকে আমি টাকা দিতে পারছি না, দল টাকা দিতে পারছে না, তার বদলে তাঁর বৌকে একটা সরকারি চাকরি পাইয়ে দিলাম সেটাও দুর্নীতি। এসব কংগ্রেস আমলে হয়েছে, বাম আমলে হয়েছে, এখনও হচ্ছে, যদি এটাকে দুর্নীতি বলেন, আপনারা সবাই ভাবের ঘরে চুরি করছেন।' তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তৃণমূল দীর্ঘদিন ঘরে ক্ষমতায় আসার পরেও বাম আমলে নিয়োগ নিয়ে কেন আদালতে যাচ্ছেন না, কেন তদন্ত করছেন না? এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রীমশাই বলেন, 'এটা তো নিয়ম আছে, প্রত্যেক মন্ত্রী, বছরে দুজন-তিনজন করে অ্যাটেনডেন্ট নিয়ে তাদের চাকরি পাকা করে দিয়েছে। তাহলে সেটা যদি অন্যায় না হয় এখন কেন অন্যায় বলা হচ্ছে?'
তিনি আরও বলেন, 'প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ হত কোচবিহার জেলা-সহ গোটা রাজ্যে, সিপিআইএম পেত ৬০ শতাংশ, ফরওয়ার্ড ব্লকের ভাগে যেত ৫ শতাংশ , আর আরএসপি-সিপিআই পেত ৫ শতাংশ, সেখানে মাধ্যমিক পাশ হলেই চাকরি হয়ে যেত। সেখানে কোনও কোয়ালিফিকেশনের ব্যাপার ছিল না!' পরবর্তীকালে পরীক্ষা চালু করল, ৯০ দশকে বামেরা যত পারলো লোক ঢুকিয়ে নিলো, শেষবেলায় এসে সতীত্ব দেখানোর জন্য তারা পরীক্ষা চালু করলো। এভাবেই পূর্বতন বাম জমনাকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে পোস্টার বেহালায়, নেপথ্যে সিপিএম কলকাতা জেলা কমিটি। বেহালার স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বেহালাজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার। এই পোস্টারিংকে কেন্দ্র করে উঠেছে হৈ-হৈ রব। এই পোস্টারে সিপিএম-র তরফে দাবি করা হয়েছে, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধায়কপদ থেকে অবিলম্বে অপসারণ চাই। মানুষ কোনও জরুরি পরিষেবা পেতে প্রেসিডেন্সি জেলে মাথা ঠুকতে পারবে না। পরিষেবা ও উন্নয়নের স্বার্থে পদত্যাগ চাই তৃণমূল বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।'
এছাড়া ওই পোস্টারে তুলে ধরা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ৫০ লক্ষ টাকা ও তাঁর সমস্ত বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির হদিশ। পোস্টার থেকে বাদ যায়নি গ্রেফতার হওয়া উপাচার্য-সহ প্রায় গোটা শিক্ষা দফতর যারা আজও নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে জেলে, সেই বিষয়। এঁরা প্রত্যকের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর দোসর বলে দাবি তোলা হয়েছে পোস্টারে। স্থানীয় বাম সূত্রে আরও খবর, রবিবার সিপিএম-র পক্ষ থেকে বেহালা সরশুনা বাসস্ট্যান্ডে সকাল দশটার সময় এই লিফলেট বিলির কর্মসূচি।
বজবজ ট্রাঙ্ক রোড (Budge Budge Trunk Road) দ্রুত সংস্কারের দাবিতে রবিবার মহেশতলার (Maheshtala) বাটা মোড়ে সিপিআইএমের (CPIM) একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সিপিআইএম কর্মীরা বাটা মোড়ে জমায়েত হতে শুরু করে। কিন্তু এরপরই ডায়মন্ড হারবার থানার অতিরিক্ত পুলিস সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ ডিএসপি ইন্ডাস্ট্রিয়াল নিরূপম ঘোষ নেতৃত্বে বিশাল পুলিসবাহিনী (police) ও র্যাফ নামানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকজন সিপিআইএম কর্মীদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় মহেশতলা থানায়।
তবে এখানেই শেষ নয়, ঘটনার প্রতিবাদে মহেশতলা থানার সামনে থেকে বেশ কয়েকজন সিপিআইএম কর্মীরা জমায়েত হতে থাকলে তাঁদেরকেও আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ১০০ জন সিপিআইএম কর্মীদের এদিন আটক করা হয়। এরপরই সিপিআইএমের জেলা কমিটির সম্পাদক শমিক লাহিড়ীর নেতৃত্বে মহেশতলা থানার সামনে বজবজ ট্রাঙ্ক রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কর্মীরা। ঘটনায় প্রায় আধ ঘণ্টা বজবজ ট্রাঙ্ক রোড অবরোধ থাকে।
এরপরই বেলা গড়াতেই সিপিআইএমের যে সমস্ত কর্মীদের আটক করা হয়েছিল, তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সিপিআইএমের জেলা কমিটির সম্পাদক শমিক লাহিড়ী জানান, ৪ দিনের মধ্যে রাস্তা সারাই করে দেওয়া হবে, এমনই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে পুলিসের পক্ষ থেকে। যদি তা না হয় তাহলে আবার চারদিন পরে তাঁরা বিক্ষোভ কর্মসূচি করবেন।