
সৌমেন সুর: একটা সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত মানুষ, যাকে দেখলে রাজ্যের সমস্ত বিরোধী দল তো বটেই, সাধারণ মানুষেরও মনে শ্রদ্ধার ভাব ফুটে ওঠে। তিনিই বুদ্ধ বাবু। আমাদের রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অপাদমস্তক কমিউনিস্ট শ্রেণীর মানুষ হলেও, তিনি গোটা একজন সংস্কৃত প্রেমী মানুষ। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের মতো একজন সুজ্জল সূর্য সমান মানুষ ছিলেন ওনার আত্মীয়।
আজ তিনি ফুসফুসের সংক্রমণ জাতীয় রোগ নিয়ে, শ্বাসকষ্টের কারণে অসুস্থ হয়ে উডল্যান্ডস নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন। বেসরকারি ওই নার্সিংহোম সূত্রের খবর, তাঁর শরীরে অক্সিজেন কমেছে। শ্বাসকষ্টের জন্য তাঁকে সিপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। গত চারদিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বলেই জানা যায়। ৫ জন চিকিৎসকের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
বুদ্ধবাবু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নানাবিধ গণ-আন্দোলনের একজন মোক্ষ শরীক ছিলেন। যেমন সুন্দর বক্তব্য রাখতেন, তেমনই সুন্দর সাহিত্য প্রেমিক মানুষ তিনি। সাহিত্যের অর্থ হল পারস্পরিক যোগ। একের সঙ্গে বহুর মিলন ঘটিয়ে সাহিত্য আত্মীয়তার সূত্র তৈরি করে। বুদ্ধদেব বাবু আমাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন কিভাবে সাহিত্য মানুষের সঙ্গে সখ্যতা করতে পারে। তাঁর আবৃত্তি নাটক আজও মনের অনুরনণে বাজে। বুদ্ধদেব বাবু মাঠটা ভালো চিনতেন তাই মানুষের শান্তির জন্য অনেক আন্দোলন, অনেক চেষ্টা করেছিলেন। এখনও উনার মত স্বচ্ছ ভাব মূর্তির মানুষ এই সমাজে দ্বিতীয়টি পাওয়া দুষ্কর।
ইতিমধ্যেই তাঁর সুস্থতা কামনা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ফোন করে তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর সুস্থতা কামনা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
যে মানুষটা আজ অক্সিজেনের অভাবে উডল্যান্ডসের ৫০১ নম্বর বেডে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। বলাই বাহুল্য, সেই মানুষটাই একসময় রাজ্যের বিরোধীদল অর্থাৎ তৎকালীন বামফ্রন্ট দলের অক্সিজেন ছিলেন। এখনও তাঁর হাতে লেখা দলের উদ্দেশে বার্তাবহ একটি চিরকুট জমিয়ে দিতে পারে ব্রিগেডের মঞ্চ। কেবল সিপিআইএম বা বামফ্রন্ট নয়, তৃণমূল, বিজেপি সব দল এবং সাধারণ মানুষও নিশ্চয়ই চাইছেন বুদ্ধবাবু এ লড়াই জিতুক। ফের সুস্থ হয়ে চিরকুটে জমিয়ে দিক আরও একটা ব্রিগেড। গোটা রাজ্য, গোটা দেশের তরফে এটা যদি চিরকুট হয়, তবে এই চিরকুটে লেখা থাকবে, বুদ্ধ বাবু জিতবে, জিতবে ৫০১ নম্বর উডল্যান্ডসের বেড।'
বেঙ্গালুরুতে যতই তৈরি হোক ইন্ডিয়া জোট, যতই একছাতার তলায় আসুক তৃণমূল-সিপিএম, রাজ্যস্তরে তৃণমূলই যে তাঁদের শত্রু, তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল আলিমুদ্দিন। সেইসঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে 'সেটিং' তত্ত্বকে আরও একবার উসকে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
বুধবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক শেষ হয়েছে। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন মহম্মদ সেলিম। সেখানেই তিনি বলেন, "বেঙ্গালুরুতে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, তার স্তবক ধরে ধরে দেখিয়ে দেওয়া যাবে, দেশে বিজেপি যা যা করছে, বাংলায় তৃণমূল সেটাই করছে । পঞ্চায়েতে তৃণমূল ভোট লুট করেছে নিজেরা জেতার জন্য এবং বিজেপিকে দ্বিতীয় করার জন্য।"
তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি আরও বলেন, '২১ জুলাই বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এক সপ্তাহও হয়নি। আগে দেখো কী হয়। এর আগে এনআরসি, সিএএ, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ভোটে সরে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল।'
তৃণমূলের একসময় দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলের এলাকায় এবার ২টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করল বাম কংগ্রেস জোট। ওই দুটি পঞ্চায়েত হল বারা ১ এবং বারা ২।
জানা গিয়েছে বারা ১ পঞ্চায়েতের মোট ২২ টি আসন ছিল। তারমধ্যে ১২টি আসনে জয়ী হয়েছেন জোট প্রার্থীরা। অপরদিকে বারা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে ১৪টি আসনই জোট প্রার্থীদের দখলে গেছে।
উল্লেখ্য ১১ অগাস্ট গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। বর্তমানে তিনি তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন। তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনিও রয়েছে তিহার জেলেই। প্রায় এক বছর ধরে জেলার বাইরে থাকায় তৃণমূলের শক্তিক্ষয় হয়েছে বলে মনে করছে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এতদিন রাজ্য জুড়ে ব্যালটে ছাপ্পা, ব্যালট পুড়িয়ে দেওয়া, ব্যালট বাক্স নিয়ে ঝাঁপ মারার অভিযোগ উঠে এসেছে। এবার সেসঙ্গেই ব্যালট খেয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, ব্যালট গোনার কাজ চলছিল তখন, যখন প্রায় শেষ সময়। তখন দেখা যায় সিপিআইএম প্রার্থী ৪ ভোটে এগিয়ে গিয়েছে। সেই মুহূর্তে টেবিলে থাকা কিছু ব্যালট মুখে ঢুকিয়ে গিলে ফেলে তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব মাটি, এমনই অভিযোগ সিপিএইএমের।
সূত্রের খবর, এদিন হাবরার ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট গণনা চলছিল। সেসময় ৪ ভোটে এগিয়ে ছিলেন বাম প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ মজুমদার। সেসময় তৃণমূল প্রার্থী আচমকা ব্যালট গিলে ফেলে বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বাম প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন,'এতদিন ব্যালট লুঠ করত, এবার হেরে গিয়ে ব্যালট খেয়ে নিল তৃণমূল। আমরা সংশ্লিট জায়গায় জানিয়েছি। প্রয়োজনে পুনর্নিবাচন করতে হবে।' এ বিষয়ে পাল্টা তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব মাটি জানিয়েছেন, 'সব মিথ্যে অভিযোগ করছে সিপিআইএম। হেরে গিয়ে তো একটা অজুহাত দরকার। সেটাই করছে বামফ্রন্ট।'
জয়ের পরই দলবদল। সিপিএমের টিকিটে জিতে ফের তৃণমূলে যোগ দিলেন গীতা হাঁসদা। পূর্ব বর্ধমানের কালনা ১ নম্বর ব্লকের কাকুরিয়া পঞ্চায়েতে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায়, তৃণমূলকে হারিয়ে ২৩ ভোটে জিতেছেন তিনি। কিন্তু, জয়ের পরই গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে দলবদল করেন গীতা হাঁসদা। ফের তৃণমূলে যোগ দিয়ে তিনি জানান, রাগের কারণে তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগ দিয়েছিলেন। এখন আবার তৃণমূলে যোগ দিলেন।
সিপিএমের অভিযোগ, গীতা হাঁসদা-র উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই তিনি তৃণমূলের যোগ দিয়েছেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্যের শাসকদল। পূর্ব বর্ধমানের কালনা ১ নম্বর ব্লকের কাকুরিয়া পঞ্চায়েতে ১৮ টি আসন ছিল। তার মধ্যে একটি জেতে সিপিএম। ওই আসনেই দাঁড়িয়েছিলেন গীতা হাঁসদা।
নিবেদিতা মাইতি: কলকাতা লাগোয়া নিউটাউন রাজারহাটেও নির্বাচনী হিংসার রেশ বহাল। ব্যালট বক্স ভাঙচুড়, ছাপ্পা ভোট সহ ব্যাপক মারধর, বোমাবাজিরও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি রাজারহাটের ২৬৯, ২৭০ নম্বর বুথের গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএম প্রার্থী (CPIM Candidates) সুতপা মিস্ত্রি সহ তাঁর বাবার উপর প্রাণঘাতী হামলারও (Attack) অভিযোগ উঠে আসছে। অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল (TMC) আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় ওই সিপিআইএম প্রার্থী সুতপা মিস্ত্রি সিএন ডিজিটালকে জানিয়েছেন, 'শনিবার সকালে আমি ও বাবা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছই। আমার বাবাই আমার পোলিং এজেন্ট। আমারা বুথে ঢোকার পরই বুথ দখল করতে আসে তৃণমূলের প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন দুষ্কৃতী। তারপরেই দুষ্কৃতীরা বুথের বাইরে আমাকে আর বাবাকে ঘেরাও করে মারধরের চেষ্টা করে। এমনকি আমাকে খুনের হুমকিও দেয়। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই দুষ্কৃতীরা লোকচক্ষুর আড়াল থেকে বাবাকে তুলে নিয়ে চলে যায়। বেশ কিছুক্ষণ তাঁরা বাবাকে আটকে রাখে। বাবার ফোন কেড়ে নেয়, মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে খুন করার হুমকি দেয়।' তিনি আরও বলেন, 'দুষ্কৃতীরা বাবাকে মারধর করে, হুমকি দিয়ে, শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দেয়। তবে এখনও পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া ফোনটি ফেরত দেয়নি। এমনকি শনিবার রাতেও আমাদের বাড়ির বাইরে তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা।'
সিপিআইএম প্রার্থী সুতপা মিস্ত্রি দাবি করেন, 'বাবকে মারধর কারার কথা লিখিতভাবে জনানো হয়েছে নিউটাউন থানার পুলিসকে। তবে পুলিসের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কোনও রকমের সহযোগিতা করেননি পুলিস,' এমনটাই দাবি করছেন তিনি।
শনিবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বুথ দখলকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই দিক থেকে হিংসার আঁচে বাদ পড়েনি নিউটাউনের পঞ্চায়েত এলাকাগুলিও। তবে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে সামাল দিতে বুথের বাইরে দেখা মেলেনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর। রাজ্যের প্রায় সব পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিসের নিষ্ক্রিয়তার ছবি পাওয়া গিয়েছে। তবে রবিবার নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানিয়েছেন, এই নির্বাচনে মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও অলিখিত ভাবে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৪ এবং আহতর সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে।
তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে সিপিআইএম (CPIM) ও আইএসএফের (ISF) সংঘর্ষ, বোমাবাজি। এই বোমাবাজির ফলে ৫ জন তৃণমূল কর্মী আহত (Injured) হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা (Deganga) থানার অন্তর্গত আমুলিয়া পঞ্চায়েতের বোড়ামাড়ি এলাকায়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দেগঙ্গা থানার পুলিস (Police)। পুলিস আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু তাজা বোমাও উদ্ধার করে পুলিস।
তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ, শুক্রবার সকালে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের উপর হামলা চালায় সিপিআইএম ও আইএসএফ কর্মীরা। তারপরেই শুরু হয় বেধড়ক মারধর এবং বোমাবাজি। এই ঘটনায় আহতও হয়েছেন ৫ জন তৃণমূল কর্মী, এমনটাই অভিযোগ করছে শাসক দলের কর্মীরা।
মণি ভট্টাচার্য: ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election) অন্যান্য বারের তুলনায় যে আলাদা হতে চলেছে তা টের পাওয়া গিয়েছিল মনোনয়ন পর্বেই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নতুন নিয়োগ পেয়েই রাজীব সিনহা ৮ ই জুন সর্বদলীয় বৈঠক ছাড়াই ১ মাসের ব্যবধানে ভোট ঘোষণা করে। অর্থাৎ ৮ ই জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোট ঘোষণার পরের দিনই কোচবিহারে খুন দিয়ে নির্বাচনী হিংসা শুরু হয়। এরপর প্রায় এক মাস কেটে গেল। মনোনয়ন পর্বে হিংসা দেখেছে গোটা বাংলা। এখনও অবধি মোট ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে নির্বাচনী হিংসায়। ২০১৮-র একদফার পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুধু ভোটের দিনই কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৩ সালের পাঁচ দফার ভোটে মৃত্যু হয়েছিল ১৪ জনের। ২০১৩ সালে রাজ্য নির্বাচনের কমিশনার মীরা পাণ্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এনেছিলেন, সেবার ৩৯ জন মারা গিয়েছিল। এবার ভোটের দিন কী হবে? এই এখন মোক্ষম প্রশ্ন।
উত্তর থেকে দক্ষিণে হিংসার আঁচে রাজ্যপাল স্বয়ং নেমেছে রাজ্যের শান্তি রক্ষার্থে। পৌছে গেছেন প্রায় প্রতিটি হিংসার গ্রাউন্ড জিরোতে। তাতে অবশ্য শাসক দল বেজায় অসন্তুষ্ট। বারবার রাজ্যপাল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ও রাজ্যপালকে। ভোটে বাংলার শান্তি রক্ষায় রাজভবনে খুলেছেন 'পিস রুম'। যদিও তাঁতে হিংসার সমাধান মেলেনি।
এদিকে অবশ্য বিরোধী দলগুলি সুষ্ঠু ভোট, মনোনয়ন বাতিল, হিংসা বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নালিশ করেছেন হাইকোর্টে। তাতে লাভও হয়েছে। বেশকিছু ক্ষেত্রে আদালতের হস্তক্ষেপেই জট কেটেছে। যেমন ধরুন বাহিনী জট, মনোনয়ন জট, ইত্যাদি। ভোটের তারিখের ২ দিন আগে অবধি, ভোট শান্তিপূর্ন করতে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষন প্রতি বুথে ১ জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী, ১ জন করে রাজ্য পুলিসকে থাকতে হবে।
পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার প্রথমার্ধ কেটেছে প্রতিবাদ, হিংসা এবং মামলা-মোকদ্দমায়। এর পরে অবশ্য আস্তে আস্তে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়ে সব দলই। বিরোধী দল গুলোর নির্বাচনী ইস্তাহার একপ্রকার একই। সিপিএইএমের প্রতিশ্রুতি দুর্নীতি রোধের। বিজেপির প্রতিশ্রুতি লক্ষীর ভান্ডার ২০০০ টাকা হবে। এছাড়া কংগ্রেসের ইস্তাহার লক্ষীর ভান্ডার ২৫ হাজার টাকা পাবে। পাশাপাশি শাসকের বিরোধিতা, রাজ্যে শিক্ষা দুর্নীতি, গরু পাচার, কয়লা পাচার, সহ সরকারি প্রকল্পের টাকা নয়-ছয়। তেমনই হিংসা এগুলো দোসর। পাশাপাশি শাসক দল তার তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহার কিছুটা শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী ও লক্ষীর ভান্ডারে ঘেরা। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটের পর থেকে নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছে। সে সঙ্গেই শেষ হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রা।
২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের ৬৩ হাজার ২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৯ হাজার ৭৩০টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদ আসনে ভোট হবে। মোট ৬১ হাজার ৩৪০টি বুথে হবে ভোটগ্রহণ পর্ব। কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এবারে ২২টি জেলার মোটি ৬৩২২৯টি আসনের মধ্যে ৬২৩৮টি, ৯৭৩০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭৫৯টি এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদের মধ্যে ৮টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে শাসক দল। এমতবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের সমন্বয়ে কী ভাবে নিরাপত্তা পরিকল্পনা করে কমিশন তার উপরই নির্ভর করছে শান্তিপূর্ণ ভোট। যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজ্য পুলিসের ডিজির দাবি, 'রাজ্যের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। এবং কোথাও আইন শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটে নি।'
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) শেষ মুহূর্তের প্রচার। তৃণমূল-সিপিআইএমের (TMC-CPIM) সংঘর্ষ (conflict) থামাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিস। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার তেহট্টে। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আক্রান্ত তেহট্ট থানার আইসি-সহ বেশ কয়েকজন পুলিসকর্মী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসি তাপস পালকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় নদিয়ার তেহট্টের শ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের আশরফপুরে টোটোয় চড়ে প্রচার চালান তৃণমূল ও সিপিআইএমের কর্মীরা। অভিযোগ, স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা সংঘর্ষের চেহারা নেয়। খবর পেয়ে আইসি তাপস পালের নেতৃত্বে আসে বিরাট পুলিসবাহিনী। এরপরই পুলিসের উপর হামলা শুরু করে। হাঁসুয়া, ইঁট, বাঁশ দিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
অল্প চোট পান পুলিসের গাড়িচালক, সিভিক ভলান্টিয়াররাও। পুলিসের গাড়িতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। আহতদের উদ্ধার করে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তদন্ত চালাচ্ছে পুলিস।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) একই পরিবার থেকে তিন প্রার্থী (Candidate)। বামেদের পক্ষ থেকে প্রার্থী হয়েছেন বাবা, ছেলে ও মেয়ে। স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের (TMC) সন্ত্রাস মুক্ত করতে এই সিদ্ধান্ত। যদিও পরিবারতন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি আবার বাম পরিবারের প্রার্থীদেরই সমর্থন করেছে। ঘটনাটি আসানসোলের বাহাদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার।
পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বাম সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী চন্দ্রহাঁস বাউরি। তাঁর মেয়ে অমৃতা বাউরি ও একমাত্র ছেলে তন্ময় বাউরিও বামফ্রন্ট থেকে দাঁড়িয়েছেন। চন্দ্রহাঁস বাউরি জানিয়েছেন, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে লাগামহীন সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলেন বামকর্মী ও সমর্থকরা। তাঁদের মারধর, বাড়ি লুট, সামাজিক বয়কট-সহ একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই তাঁর ছেলে-মেয়েকে প্রার্থী করার জন্য দলকে অনুরোধ করেন তিনি।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব যদিও দাবি করেছে, সন্ত্রাসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সিপিআইএম দল পরিবারতন্ত্রের বিরোধী বলে প্রচার করে। এই ঘটনায় পরিবারতন্ত্রের ইঙ্গিত দেখছে শাসক দল।
প্রসূন গুপ্ত: আর কয়েক দিন নাকি কয়েক ঘন্টা, তারপরেই রাজ্যজুড়ে গ্রামীন ভোট বা পঞ্চায়েত নির্বাচন। যে পরিমান প্রচারের দরকার ছিল প্রবল ক্ষমতা সম্পন্ন তৃণমূলের বিরুদ্ধে তা কোথায় বিরোধীদের? এরা কোর্টে মোকদ্দমা করতেই ব্যস্ত। বিশেষ করে বিজেপি ও কংগ্রেস। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছিল যে বাম তথা সিপিএম নাকি ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার করছে। পথে নামিয়েছে তরুন প্রজন্মকে। কিন্তু সাংবাদিকরা খবর করতে গিয়ে তাদের খবর পাচ্ছে না।
২০১১ থেকে ক্ষমতার বাইরে সিপিএম। রেজিমেন্টেড দল, সংগঠন করার বিষয়ে তাদের রেকর্ড রয়েছে। ২০১১ তে প্রধান বিরোধী দল হলো তারা ৭০-এর কাছাকাছি আসন নিয়ে কিন্তু ২০১৩-র পঞ্চায়েতে পর্যুদস্তু হলো। এরপর ২০১৪-র লোকসভায় মাত্র দুটি আসন পেলো তারা। এরপর ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আসন কমে ২২/২৩ টির বেশি আসন পেলো না তারা।
২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে এই বাম দল থেকে প্রায় ২৯% ভোট চলে গেল বিজেপিতে। এটা কেন হলো তা আজও রহস্যে ভরা। ফলাফল বিজেপি ১৮ এবং সিপিএম শূণ্য। ২০২১ ফের তারা কংগ্রেসের হাত ধরলো কিন্তু ওই ২৯% "কমিটেড" ভোট ফিরে এলো না। অবশ্য একটি কাজ তারা করেছিল সংখ্যালঘু ভোট ধরতে। প্রথমত মহম্মদ সেলিমকে দলের সম্পাদক করা এবং দ্বিতীয়ত সেলিম, নওশাদ সিদ্দিকি তথা তাঁর দল আইএসএফ-এর সাথে হাত মেলালেন। কিন্তু সংখ্যালঘু ভোট এবারেও আসলো না। মধ্যে থেকে নওশাদ জিতলেন কিন্তু সিপিএম ফের শূন্য।
এবারে দেখা গিয়েছিল বৃদ্ধ নেতাদের স্থানে এসেছে তরুন প্রজন্ম। তারাই প্রচার করছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সমবায় ভোটে সিপিএম ভালই ফল করেছিল কিন্তু পঞ্চায়েতে কী হবে প্রশ্ন ছিলই।
সাংবাদিক মহলের এবং বেশ কিছু সার্ভে রিপোর্টে দেখা যাচ্ছ যে বিজেপি দ্বিতীয় শক্তিশালী দল আজও। যে বাম ভোট বিজেপিতে চলে গিয়েছিল তা আর ফেরত পাওয়ার নয়। কাজেই এমনিতেই বিশ্বজুড়ে কমিউনিষ্টদের আকাল তার প্রতিচ্ছবি ভারতেও। জীবনানন্দ লিখেছিলেন "মৃতেরা ফেরে না"। বামেদের প্রমান করতে হবে কমিউনিজম মৃত নয়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের জেলায় জেলায় বারবার শাসক (TMC) দলের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনা উঠে আসছে। জয়নগরের পর এবার কুলতলিতেও বামেদের (CPIM) উপর হামলার (Attack) অভিযোগ উঠছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন সিপিআইএম-এর সমর্থক জাকির সর্দার। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুলতলি (Kultali) থানার পুলিস। পুলিস (Police) আহত ওই সিপিআইএম সমর্থককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় কুলতলি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জাকির সর্দার। অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
সূত্রের খবর, কুলতলির মেরিগঞ্জ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ নম্বর বুথের সিপিআইএম পার্থী মর্জিনা সর্দার। রবিবার সকালে ওই প্রার্থীকে নিয়েই গ্রামে প্রচার করতে যায় সিপিআইএম-এর সমর্থক জাকির সর্দার। তখনই এমন ঘটনা ঘটায় শাসক দল, এমনটাই দাবি। আহত ওই বাম সমর্থক জাকির সর্দারের অভিযোগ, গ্রামে প্রচার করার সময়ই তৃণমূল আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী তাঁদের পথ আটকে ধরে। তারপরেই জাকির সর্দারকে অপহরণ করে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে। এমনকি লোহার রড দিয়ে তাঁর মাথায় জোরে আঘাতও করে। ঠিক তারপরেই জাকির সর্দারের শরীরে যাতে কোনও রক্তের দাগ না থাকে তার জন্য গায়ের জামাও খুলে নেয় অভিযুক্তরা, এমনটাই অভিযোগ করেছেন আহত ওই সমর্থক।
যদিও অপহরণ করে মারধর করার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন কুলতলির ব্লক সভাপতি পিন্টু প্রধান। তিনি জানান, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সংযোগ নেই। নির্বাচনের আগে শাসক দলকে কালিমালিপ্ত করতেই এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে বিরোধী দল।
রাজ্যপাল (Governor) গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে তাঁর গাড়ির সামনে গিয়ে অভিযোগ করা যাবে। অর্থাৎ তার রাস্তা আটকে অভিযোগ করা যাবে। জানানো যাবে অশান্তি বা নিপীড়িত হওয়ার ঘটনা। কিন্তু কথামতো রাজ্যপালকে নালিশ জানাতে গিয়ে ঘাড় ধাক্কা খেলো বাম (CPIM) ও কংগ্রেস (Congress) সমর্থকরা। কোচবিহারে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সফরের মধ্যেই রাজ্যপালের দেহরক্ষীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সিপিএম-কংগ্রেসের। দিনহাটায় রাজ্যপালের কনভয় যাওয়ার সময় তাঁর কাছে অভিযোগ জানাতে যান দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। অভিযোগ, ওই সময় পুলিস তাঁদের কার্যত সেখান থেকে দূরে সরিয়ে দেন। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে তাঁদের দাবি, রাজ্যপাল তাঁদের কথা শুনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিস ও তাঁর দেহরক্ষীরা তাঁদের কথা বলতে দেয়নি।
এদিন কোচবিহারে গিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে একপ্রস্ত অভিযোগ জানায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল। তাঁদের কথা শুনেই দিনহাটার দিকে রওনা দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এরমধ্যে রাস্তায় তাঁকে ফের অভিযোগ জানাবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা। দিনহাটা যাওয়ার পথে রাজ্যপালের কনভয়ের দিকে এগোতে গেলে পুলিস তাঁদের বাধা দেয়।
অভিযোগ এই সময় তাঁদের কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়েই ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দেয় পুলিস। বাম-কংগ্রেস সমর্থকদের অভিযোগ, দিনহাটার প্রতিটি ব্লকে যা চলছে, তা তাঁরা রাজ্যপালকে জানানোর চেষ্টা করেছিল। আসল সত্য যাতে না বেরিয়ে আসে, তার জন্যই পুলিসের এমন আচরণ বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে জেলা পুলিশের বক্তব্য, রাজ্যপালের নিরাপত্তার কারণেই রাজনৈতিক কর্মীদের কনভয়ের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসূন গুপ্তঃ সদ্য পাটনায় হয়ে গেলো বিজেপি বিরোধী ১৫টি দলের বৈঠক। যেটা ভাবনায় ছিল যে, হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বনিবনা হবে না রাহুল গান্ধী বা কংগ্রেসের। কিন্তু হলো উল্টো, দুই নেতাই একে অপরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। সমস্যা হলো কংগ্রেসের সঙ্গে আপ পার্টি এবং সিপিএমের। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এই যে, পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের যে বৈরিতা চলেছে তা নিয়ে একটিও শব্দ উচ্চারিত হয় নি। অন্যদিকে, ইদানিং রাহুল গান্ধী বিস্তর ক্ষেপে গিয়েছেন সিপিএম দলের বিরুদ্ধে। এই সভায় সিপিএম, কংগ্রেস দুই দল উপস্থিত থাকলেও কেরলে কংগ্রেস সভাপতিকে গ্রেফতারের জন্য কেরল কংগ্রেস আপত্তি তুলেছিল জোটে সিপিএমের উপস্থিতি নিয়ে। ত্রিপুরাতেও জোট করে কংগ্রেস-বামেরা লড়েছিল, কিন্তু ফল অশ্বডিম্ব। ওই রাজ্যের কংগ্রেস মনে করে এটি অসম জোট ছিল।
পক্ষান্তরে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে বামেদের সঙ্গে। হলে কি হবে, বামেরা বহু জায়গায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু জায়গায় দেখা গিয়েছে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধেছে কংগ্রেস এবং বামেরা এবং সঙ্গে আইএসএফ তো আছেই। এই সমস্ত ক্ষেত্রে প্রশ্ন করা হলে প্রার্থীরা উত্তর দিচ্ছে যে, বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে ক্ষেত্র বিশেষে জোট বাঁধতেই হবে।
এমন দেখা গিয়েছে, জেলা পরিষদে বিজেপি, পঞ্চায়েত সমিতিতে সিপিএম এবং গ্রামীণ ভোট কংগ্রেস। এই বিষয়টি নাকি অলিখিত ভাবে বহু জায়গায় হয়েছে, আবার বেশ কিছু জায়গায় পোস্টের ফেস্টুন দেওয়া হয়েছে মহাজোট প্রায় প্রকাশ্যে। এই বিষয়ে সিপিএমের বক্তব্য যে তারা সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে নেই অথচ সরকারি ভাবে বিজেপি যেমন সাম্প্রদায়িক নয় তেমন আইএসএফ নিজেদের অসাম্প্রদায়িক বলে দাবি করলেও মূলত এটি কিন্তু সংখ্যালঘুদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এরই মধ্যে আইএসএফ প্রধান নওশাদ সিদ্দিকীকে কেন্দ্রীয় সরকার নিরাপত্তা বাহিনী দিয়েছে। অতএব কে যে কখন কার সঙ্গে কোথায় হাত মিলিয়েছে ভোটার ফলেই বোঝা যাবে।