দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো শহরে সিএনজি-পিএনজির (CNG-PNG) দাম কমানো হয়েছিল আগেই। এবার দেশের আরও ৩৪টি জেলায় দাম কমানো হয়েছে। মহানগর গ্যাস, আদানি গ্যাস ও ইন্দ্রপ্রস্থ গ্যাস সিএনজি-পিএনজির দাম কমানোর পর এবার টরেন্ট গ্যাসও কমিয়েছে। বলা বাহুল্য, যাঁরা ঘরে পিএনজি থেকে খাবার রান্না করেন এবং যাঁরা সিএনজি থেকে গাড়ি চালান, তাঁদের জন্য এপ্রিল মাস স্বস্তির খবর নিয়ে এসেছে। এই সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে একটি নতুন ফর্মুলা নির্ধারণ করেছে। এর ফলে গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থাগুলি একে একে দাম কমিয়ে চলেছে। দিল্লি (Delhi), মুম্বই (Mumbai) এবং আহমেদাবাদের মতো শহরের পর এখন আরও ৩৪টি জেলায় সিএনজি-পিএনজির দাম কমেছে।
গত শুক্রবার প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে কিরীট পারিখ কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এখন ভারতীয় অপরিশোধিত তেলের ভিত্তিতে দেশীয় প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হবে। একটি পিএনজির দাম ১০ শতাংশ এবং সিএনজির দাম ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর প্রভাব ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান। কারণ, এখন দেশীয় গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক হাব গ্যাসের পরিবর্তে আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
কিরীট পারিখ কী সুপারিশ করেন?
সরকার ২০২২ সালের অক্টোবরে কিরীট পারিখের সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল নতুন ফর্মুলা নির্ধারণের জন্য। এই কমিটির উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বব্যাপী গ্যাসের দাম বাড়লেও গ্রাহকদের নায্যমূল্যে গ্যাস সরবরাহ করা। কমিটি পুরনো গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত গ্যাসের দাম নির্ধারণের জন্য একটি নির্দিষ্ট ব্যান্ড সুপারিশ করেছে। আগামী ৩ বছরের জন্য গ্যাসের দামের একটি স্কেলে সীমাবদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে। এখন মন্ত্রিসভা এপিএম গ্যাসের ভিত্তিমূল্য প্রতি এমএমবিটিইউ ডলার ৪ ডলার এবং সিলিংমূল্য প্রতি এমএমবিটিইউ ৬.৫ ডলারে রাখার অনুমোদন দিয়েছে।
কামারহাটিতে গ্য়াসের সিলিন্ডার (Kamarhati Blast) ফেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। ঘটনায় এক শিশু ও মহিলা সহ ৬ জন গুরুতর আহত (Blast Injury) হয়। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাগর দত্ত হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি করা হয়েছে। কামারহাটির মসজিদ মোড়ে একটি অটোরিক্সা গ্যাস রিফিলিংয়ের দোকানে বিস্ফোরণটি ঘটে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ঘটনাস্থলে বেলঘরিয়া ও খড়দহ থানার বিশাল পুলিস বাহিনী।
জানা গিয়েছে, কামারহাটির মসজিদ মোড়ে একটি অটোরিক্সা গ্যাস রিফিলিংয়ের দোকানে বিস্ফোরণটি হয়। ডোমেস্টিকাল গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস কাটাই করে অবৈধভাবে অটোতে ভরার সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে দোকানে। ঘটনায় এক শিশু ও মহিলা-সহ ৬ জন গুরুতর জখম। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদেরকে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ এই ঘটনার পরেই এলাকায় উত্তেজনা ছাড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বেলঘড়িয়া ও খড়দহ থানার বিশাল পুলিসবাহিনী। ইতিমধ্য়েই ঘটনাস্থলটিকে ব্য়ারিকেড করে দেয় পুলিস।
ঘটনাস্থলে ব্যারাকপুরের ডিসি সাউথ অজয় প্রসাদ-সহ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ ও এসিপি বেলঘড়িয়া প্রিয়ব্রত বক্সী। ঘটনাস্থল ঘুরে ব্যারাকপুর কমিশনারের ডিসি সাউথ অজয় প্রসাদ জানান, বিস্ফোরণের একটা ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন জখম, কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এখনও চিকিৎসাধীন। পরে ওই ব্য়ক্তির সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কামারহাটি এনআরএ রোডে বেলা ১২টা নাগাদ আচমকাই বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। গোটা এলাকায় ধোঁয়া ছেয়ে গিয়েছিল। বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে বলেই গুজব ছড়ায়। পরে স্থানীয়রা ওই অবৈধ গ্য়াসের দোকানের সামনে চার পাঁচ জনকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে, সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে কামারহাটি সাগর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এলাকাবাসীরা আরও জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কামারহাটির বেশ কিছু অঞ্চলের রাস্তায় যে সিএনজি অটো চলে তার বেশিরভাগ অটোচালক অর্থ সাশ্রয়ের জন্য এই অবৈধ কাটা গ্যাস সেন্টারে অটোর জ্বালানি ভরেন। গ্যাস রিফিলিং পাম্পিং সেন্টারে বাড়তি খরচ থেকে রেহাই পেতেই অটোচালকরা কাটাই গ্যাসের পথে পা বাড়ায়। ডোমেস্টিকাল সিলিন্ডার থেকে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গ্যাস ভরা হয় অটোতে। মঙ্গলবারও ঠিক সেই রকমই কাজ চলছিল কামারহাটির মসজিদ পাড়ায়। তখনই আচমকাই সেই গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ ঘটে।