ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালের (Bhatar Hospital) ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই সক্রিয় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (Health Official)। কেন এভাবে রেফার, প্রশ্ন তুলে দেন খোদ জেলা স্বাস্থ্যকর্তা। এই ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, 'যে চিকিৎসক রেফার (Refer) করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গোটা ঘটনায় আমরা বিএমওএইচ-র (BMOH) রিপোর্ট তলব করেছি। এই ঘটনা কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।'
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, 'রোগীর পরিবার রোগীকে যদি না নিয়ে যেতে পারে, যতটুকু চিকিৎসা ওখানে পাওয়া দরকার ছিল ততটুকু তো অন্ততপক্ষে রোগী পেতেন। কোথায় ভুল ছিল আমরা,খতিয়ে দেখব।' এদিকে ঘটনার পরেই ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুবর্ণ গোস্বামী। এদিকে, ওই হাসপাতালে দুটি অ্যাম্বুলেন্সের একটি নাকি বিকল। অন্যটিতে শুধুমাত্র ওষুধ বহনের কাজ হয়। তাছাড়া হাসপাতালের কর্মীরা চাপেন। এমন একটা খবর সূত্র মারফৎ উঠে আসছে।
এই দাবি প্রসঙ্গে স্থানীয়দের অভিযোগ, 'এই হাসপাতালে পরিচালনার অভাব রয়েছে। বিএমওএইচ নিজেদের লোক দিয়ে হাসপাতাল চালান। অ্যাম্বুলেন্স আছে, যদি না থাকে প্রসাশন, স্থানীয় বিধায়ক, পঞ্চায়েতকে জানাক। একটি অ্যাম্বুলেন্সে চেপে ঘুরে বেড়ান বিএমওএইচ। কোনও অ্যাম্বুলেন্স রোগী বহনের পরিষেবা দেয় না।'
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সেই হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, 'বিভাগীয় ব্যাপার যা বলার সিএমএইচও বলবেন। আমার এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার কোনও অধিকার নেই। আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ সিএমওএইচ স্যারকে জানাবো। উনি জানতে চাইলে স্যারকে বলবো। যা জানার স্যারের থেকেই জানবেন। প্রতিটা মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। এই সংক্রান্ত যা যা বলার স্যার বলবেন।'
হাসপাতালের এক অ্যাম্বুলেন্স চালক জানান, 'আমি হাসপাতালে ছিলাম। আমাকে যদি বলা হতো নিশ্চয় সেই রোগীকে নিয়ে যেতাম। এই পরিষেবা গরিবদের জন্য ফ্রি যদি বিএমওএইচ বলে দেন। তবে অন্যদের ডিজেল ভরে দিতে হয়। এটাই সরকারি নিয়ম।'
চিকিৎসার গাফিলতির (Medical Negligence) অভিযোগে ধুন্ধুমার-কাণ্ড বহরমপুর (Behrampur) সিএমওএইচ(CMOH) অফিসের সামনে। সিএমওএইচ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রোগীর পরিজনরা। বিধায়ক ও সভাধিপতির সামনে সিএমওএইচ সন্দীপ সান্যালকে মারধর (Beaten) করে বলেও অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ ও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস (রাজু) বহরমপুর সিএমওএইচ অফিসে আসেন চিকিৎসার অভিযোগ নিয়ে। তাঁদের সঙ্গে আসেন এলাকায় কয়েকশো মানুষ।
অভিযোগ, বহরমপুর থানার বুটারডাঙা এলাকার বাসিন্দা গোলবাহার শেখ পেটে ব্যাথা নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁর অ্যাপেন্ডিক্সের অপারেশন করা হয়। কিছুদিন পরে তাঁর পেটে ইনফেকশন ছড়ালে সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে ফের তাঁর অপারেশন হয়।
পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রায় ৩ লক্ষ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। যা তাঁদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। এসব অভিযোগ পেয়ে রোগীকে সঙ্গে করে কয়েকশো লোক নিয়ে বহরমপুর সিএমওএইচ অফিসে আসেন হরিহরপাড়া বিধায়ক নিয়ামত শেখ, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস। তাঁরা এসে সিএমওএইচ সন্দীপ সান্যালের সঙ্গে কথা বলেন।
সন্দীপ সান্যাল রোগীকে দেখতে নিচে নামলে বিধায়ক এবং সভাধিপতির সামনেই সিএমওইচকে মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিস বাহিনী। বেশ কয়েকজনকে আটক করে বহরমপুর থানার পুলিস।