রুটিন চেকআপ করতে শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এসএসকেএমে তাঁর কাঁধে ছোট অস্ত্রোপচার হতে পারে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রুটিন চেকআপ করাতেই হাসপাতালে এসেছেন তিনি।
স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে শুক্রবার দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ আচমকাই এসএসকেএম হাসপাতালে উপস্থিত হন মমতা। উডবার্নে ওয়ার্ডে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “সময় হয় না, তাই চেকআপ করাতে এসেছি। পা টা একটু দেখাবো। আমি সুস্থ আছি।। একদম ঠিক আছি।। রোজ হাঁটাহাটি করছি। এক্স রে করাবো।” শেষে সকলকে আগাম নববর্ষের শুভেচ্ছাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
রেল লাইনের পাশ থেকে উদ্ধার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তাকর্মীর দেহ। পুলিস সূত্রে খবর, নিহত পুলিস কর্মীর নাম ইসরাফিল সাহাজি (৩০)। কল্যাণী ব্লকের মদনপুর জঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা। কল্যাণী হাউজিং-এর পুলিস কোয়ার্টারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।
পরিবারের দাবি, তিনি বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো বুধবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ হাঁটতে বের হন ইসরাফিল। কিন্তু রাত দশটার বেশি বেজে গেলেও তিনি বাড়ি ফেরেন না। পরিবারের তরফ থেকে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ শুরু করে। বারবার ফোন করতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ফোন বেজে গেলেও কেউ তোলেননি। অবশেষে রাত বারোটা নাগাদ কল্যাণী মেনস্টেশনে কর্মরত রেলের এক আধিকারিক ফোনটি তোলেন। এরপরেই এই দুঃসংবাদ জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। ওই রেল আধিকারিক জানান, কল্যাণী সাহেব বাগান সংলগ্ন রেল লাইনের ধারে পুলিস কর্মীর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা।
কল্যাণী মেন স্টেশনে যাওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেন রেলের আধিকারিকেরা এবং মোবাইলে ছবি দেখানো হয়। জানানো হয় তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে রানাঘাটে।
পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারছেন না, আদৌ কি আত্মঘাতী হয়েছেন ইসরাফিল? নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রানাঘাট থানার পুলিস। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। কাজের ক্ষেত্রে কোথাও কোনও সমস্যা ছিল নাকি ব্যক্তিগত জীবনে কোনও সমস্যা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
টাকি সফরের (Taki Tour) দ্বিতীয় দিনে অভিনব জনসংযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee)। প্রথমে ইছামতীর (Ichamati River) বুকে লঞ্চে সফর। তারপর হাসনাবাদ ব্লকের খাঁ পুকুর এলাকার একটা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে খোশ গল্প এবং প্রগতি সংঘের মাঠে গিয়ে স্থানীয়দের শীত পোশাক বিতরণ। খেজুর পাতা দিয়ে চাটাই তৈরি শেখা এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসেই ট্যাংরা মাছের ঝোল, আলু আর কচুর তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়া (Lunch at Hasnabad)। এভাবেই পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) মাস কয়েক আগে জনসংযোগে জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর 'দিদি'কে হাতের কাছে পেয়ে নিজেদের অভাব-অভিযোগও জানালেন গ্রামবাসীরা।
এদিন খাঁ পুকুরের যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন, সেখানকার এক কর্মী এলাকার রাস্তার উন্নয়ন এবং জলের জোগান প্রতুল রাখার আবেদন জানান। উনি এসেছেন ভালো লেগেছে, স্কুল পরিদর্শন করে গিয়েছেন ভালোই লাগছে। ক্লাসরুমে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রী বাচ্চাদের হাতে জামাকাপড় তুলে দিয়েছেন এবং কিছু প্রশ্ন করেন। এদিন জানান প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক। বুধবার যে বাড়ির উঠোনে বসে মুখ্যমন্ত্রী ভাত খেয়েছেন, সেই বাড়ির গৃহকর্ত্রী নমিতা মণ্ডল জানান, মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন খুব খুশি হলাম। উনি বলেছেন তরকারি রান্না খুব ভালো হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই এলাকা বন্যায় প্রতি বছর বাঁধ ভাঙে, সেই সমস্যা সমাধানে সুন্দরবনের জন্য মাস্টার প্ল্যান জমা দিচ্ছি। প্রকৃতি আমাদের হাতে নেই, তাই বাঁধ ভাঙার সমস্যা নিজে ঘুরে দেখতে এসেছি। কীভাবে আপনাদের ভালো হয়, মঙ্গল হয় দেখতে এসেছি। রাজ্য সরকার ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়েছে ভাঙন রোধে।
এদিকে, হাসনাবাদের খাঁ পুকুর গ্রামে নমিতা মণ্ডলের বাড়িতে মধ্যহ্ন ভোজ সারেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত বিষয় তিনি জানান, এত রান্না কীভাবে করলাম, জানতে চাইলেন। পাশাপাশি পানীয় জলের সমস্যা, বাঁধ ভাঙার সমস্যা, ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর ভেঙে যাচ্ছে, এসব বললাম। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন দুয়ারে সরকারে আবেদন করুন, ধীরে ধীরে সব হবে। গ্রামেরই এক প্রবীণ সদস্য জানান, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীকে ঘরের কথা বলেছি, পানীয় জল, চালের কথা বলেছি। সময়ে বিধবা ভাতা পাই, সেটাও জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ঠিক আছে ঘর হবে।'