রুটিন চেকআপ করতে শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এসএসকেএমে তাঁর কাঁধে ছোট অস্ত্রোপচার হতে পারে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রুটিন চেকআপ করাতেই হাসপাতালে এসেছেন তিনি।
স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে শুক্রবার দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ আচমকাই এসএসকেএম হাসপাতালে উপস্থিত হন মমতা। উডবার্নে ওয়ার্ডে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “সময় হয় না, তাই চেকআপ করাতে এসেছি। পা টা একটু দেখাবো। আমি সুস্থ আছি।। একদম ঠিক আছি।। রোজ হাঁটাহাটি করছি। এক্স রে করাবো।” শেষে সকলকে আগাম নববর্ষের শুভেচ্ছাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
রেল লাইনের পাশ থেকে উদ্ধার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তাকর্মীর দেহ। পুলিস সূত্রে খবর, নিহত পুলিস কর্মীর নাম ইসরাফিল সাহাজি (৩০)। কল্যাণী ব্লকের মদনপুর জঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা। কল্যাণী হাউজিং-এর পুলিস কোয়ার্টারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।
পরিবারের দাবি, তিনি বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো বুধবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ হাঁটতে বের হন ইসরাফিল। কিন্তু রাত দশটার বেশি বেজে গেলেও তিনি বাড়ি ফেরেন না। পরিবারের তরফ থেকে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ শুরু করে। বারবার ফোন করতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ফোন বেজে গেলেও কেউ তোলেননি। অবশেষে রাত বারোটা নাগাদ কল্যাণী মেনস্টেশনে কর্মরত রেলের এক আধিকারিক ফোনটি তোলেন। এরপরেই এই দুঃসংবাদ জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। ওই রেল আধিকারিক জানান, কল্যাণী সাহেব বাগান সংলগ্ন রেল লাইনের ধারে পুলিস কর্মীর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা।
কল্যাণী মেন স্টেশনে যাওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেন রেলের আধিকারিকেরা এবং মোবাইলে ছবি দেখানো হয়। জানানো হয় তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে রানাঘাটে।
পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারছেন না, আদৌ কি আত্মঘাতী হয়েছেন ইসরাফিল? নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রানাঘাট থানার পুলিস। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। কাজের ক্ষেত্রে কোথাও কোনও সমস্যা ছিল নাকি ব্যক্তিগত জীবনে কোনও সমস্যা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Poll) আগে রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখার পর্যালোচনা বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) বুধবার নবান্নে বৈঠকে বসছেন। নবান্ন সভাঘরে (Nabanna Meet) রাজ্যস্তরের ওই পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্যের সমস্ত দফতরের শীর্ষ আমলা-পদস্থ কর্তাদের বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এই বৈঠকে জেলা আধিকারিকরাও ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেবেন। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির হিসেব নেওয়ার পাশাপাশি শতাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনও করবেন।
ওই বৈঠক থেকে তিনি ১,১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পূর্ত দফতরের সেতু, রাস্তা-সহ ১০৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই পরিকাঠামোগুলি গড়ে উঠেছে। আবার, পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের অধীনে নির্মিত কিছু গ্রামীণ রাস্তারও উদ্বোধন হতে পারে এদিন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, আগামি কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা। তার আগে গ্রাম বাংলার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে, ঝালিয়ে নিতেই এই পর্যালোচনা বৈঠক বলে সূত্রের খবর।
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায়কে নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুকুল রায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই, এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুকুল তো বিজেপিরই বিধায়ক। এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'ওকে হয়ত থ্রেট করেছে কেউ, তাছাড়া ও তো বিজেপিরই বিধায়ক।' এরপরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি এর বেশি কিছু বলতে চাই না, এটা ওর ব্যক্তিগত ব্যাপার, এ সংক্রান্ত বিষয় ওনার ছেলেকে জিজ্ঞেস করুন।'
পাপাশি সোমবার বিরোধী দলনেতার করা মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দোপাধ্যায়, সেসঙ্গে কড়া ভাষায় আক্রমন করলেন স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপিকে। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সূত্রের খবর, তৃণমূলের সর্বভারতীয় স্বীকৃতি খোয়া যাওয়ার পর নাকি মমতা বন্দোপাধ্যায় অমিত শাহকে ৪ বার ফোন করেছেন। এমন মন্ত্যবের পর নবান্ন থেকে তার জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া এদিন মুকুল রায়ের প্রসঙ্গ এলে তিনি বলেন ও তো বিজেপিরই বিধায়ক।
বুধবার সংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমার নামে ভুল বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, বিজেপি আমাকে বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে।' পাশাপাশি মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'ফোনের কথা প্রমাণ করতে পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেব এবং প্রমান করতে না পারলে নাকখত দিতে হবে।' বুধবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি আক্রমন করতে ছাড়েননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও, মমতা বন্দোপাধ্যায় ওই সাংবদিক বৈঠকেই বলেন, ' অমিত শাহের আচরণ ঠিক নয়, গায়ের জোরে সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।'
এছাড়া বুধবার মুখ্যমন্ত্রী তার দলের সর্বভারতীয় পদ নষ্ট হওয়া নিয়েও মন্তব্য করেন, এবং বলেন, 'নির্বাচন কমিশনকেও ওরা কন্ট্রোল করছে, আমার দলের নাম সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস, আমি এই নাম বদলাব না।'
সোমবার বলতে সিবিআইয়ের হাতে তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA Arrest) জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব। রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় করে তৃণমূলের এই জোড়া ধাক্কার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Home Minister Amit Shah) পদত্যাগ দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বঙ্গ সফরকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। তিনি জানান, '১৪ এপ্রিল দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় বিজেপির বৈঠক করতে এসেছিলেন। বৈঠক তিনি করতেই পারেন, কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সংবিধানের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বলতে পারেন না, চব্বিশের ভোটে বাংলায় ৩৫টি আসন পাবে বিজেপি আর অপেক্ষা করতে হবে না বাংলার এই সরকার চলে যাবে। একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চক্রান্ত করছেন। কোন আইনে তিনি গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেবেন? এই কথা বলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি আমরা।' যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে পাল্টা খোঁচা দেন বিজেপি সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
তাঁর ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য, '৩৫টি আসন পাবে লোকসভায়। আগে ৫টি সাংসদ পেয়ে দেখাক বিজেপি।' দুর্নীতি দমন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'আমরা অনেক সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করেছি। দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করেছি। বাংলায় যার ইশারায় অমিত শাহ চলছেন তিনি বড় ডাকাত। কিছু একটা ঘটলেই কেন্দ্রীয় দল, কমিশন দিল্লি থেকে চলে আসছে। আমাদের উন্নয়নমূলক কাজও ওরা বন্ধ করে রেখেছে।'
এদিকে, সুকান্ত মজুমদার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি জানান, 'বিজেপি যদি ৫-এর বেশি সাংসদ পায় মুখ্যমন্ত্রী কি পদত্যাগ করবেন? এটুকু চ্যালেঞ্জ নিক, এত বড় উনি দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেত্রী।' পাশাপাশি দুর্নীতি দমন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সংস্থার তৎপরতা প্রশ্নে সুকান্ত মজুমদার জানান, 'এত চোর আগে কোথাও ধরা পড়েনি। জীবনকৃষ্ণ সাহা আজ ভিতরে গিয়েছেন, পিছনে আরও আসছেন। এত চোরকে ধরতে গেলে তো সিবিআই অফিসারদের রাজ্যে আসতেই হবে। তিন জন বিধায়ক, একজন জেলা সভাপতি গারদের ভিতরে ঢুকেছেন।'
গচ্ছিত সম্পদের (Asset) নিরিখে দেশের সবচেয়ে বিত্তশালী মুখ্যমন্ত্রী অন্ধপ্রদেশের জগনমোহন রেড্ডি (Andhra Pradesh CM)। সবচেয়ে গরিব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। জাতীয় নির্বাচন কমিশনে দাখিল হলফনামা উল্লেখ করে এই দাবি করেছে সাম্প্রতিক অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস। এই সংস্থা জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এডিআর (ADR) নামে পরিচিত। এই সংস্থার দাবি, ভোটের হলফনামা অনুসারে দেশের ৩০ মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ২৯ জন কোটিপতি। যে মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীও রয়েছে। জানা গিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের জগনমোহন রেড্ডির মোট ৫১০ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে৷
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গচ্ছিত সম্পদ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। এমনটাই বলছে এডিআর রিপোর্ট। এডিআর রিপোর্ট অনুযায়ী ২৮ রাজ্যের এবং ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী তালিকায় আছেন। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী নেই। এই রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, ৩০ জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ২৯ জন কোটিপতি এবং প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীর গড় সম্পদ ৩৩.৯৬ কোটি টাকা।
রিপোর্ট বলছে, ৩০ জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ১৩ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধমূলক মামলা রুজু রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম খুন, খুনের চেষ্টা, অপহরণ এবং অপরাধমূলক ভয় দেখানোর মতো অপরাধ। গুরুতর ফৌজদারি মামলাগুলির মধ্যে কয়েকটি আবার জামিন অযোগ্য অপরাধ, যাতে দোষী প্রমাণিত হলে পাঁচ বছরের বেশি কারাদণ্ড। এমনটাই রিপোর্টে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, রিপোর্টে উল্লেখ সম্পদের দিক থেকে শীর্ষ তিন মুখ্যমন্ত্রী অন্ধ্রপ্রদেশের জগন মোহন রেড্ডি, অরুণাচল প্রদেশের পেমা খান্ডু (যার সম্পদের পরিমাণ ১৬৩ কোটি টাকার বেশি) এবং ওড়িশার নবীন পট্টনায়েক (৬০ কোটি টাকার বেশি)।
এদিকে সবচেয়ে কম ঘোষিত সম্পদের তিনজন মুখ্যমন্ত্রী হলেন পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জি (১৫ লাখের বেশি), কেরালার পিনারাই বিজয়ন (এক কোটি টাকার বেশি) এবং হরিয়ানার মনোহর লাল খট্টর (এক কোটি টাকার বেশি)।
প্রতিবেদনে উল্লেখ, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল উভয়েরই তিন কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক।
সাম্প্রতিক হিংসার কারণ অনুসন্ধানে তিন দিনের রাজ্য সফরে এসেছিল কেন্দ্রীয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি (Fact Finding Committee)। তারা শিবপুর এবং রিষড়া যাওয়ার চেষ্টা করলেও ১৪৪ ধারার দোহাই দিয়ে এই দলকে আটকায় পুলিস। গোটা ঘটনার জন্য রাজ্য প্রশাসন তথা পুলিসকে কাঠগড়ায় তোলে এই অনুসন্ধান দল। এবার ফ্যাক্ট কমিটির এই বঙ্গ সফরকে কটাক্ষের সুরে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এদিন তিনি প্রশ্ন করেন, 'এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি কে গড়েছে? সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, কোনও সরকার, না কোনও দল? যদি কোনও দল এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গড়ে, তবে তার কোনও মূল্য নেই। ফেসলেস, ভ্যালুলেস কমিটি।'
তিনি জানান, 'একটা নন-ইস্যুকে ধর্মীয় ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছে। এটা ধর্মীয় বিষয় নয়, দুষ্কৃতীমূলক কর্মকাণ্ড। কেউ মারা যায়নি, কেউ আহত হয়নি। পুলিস মিছিলের অনুমতি দেয়নি। নমাজের সময়ে মিছিল বের করে ইন্ধন জুগিয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র, বুলডোজার, ট্রাক্টর নিয়ে কেন ধর্মীয় মিছিল করবে? উন্মত্তের মতো নৃত্য করেছে। মুঙ্গের থেকে লোক এনেছে, বাইরের লোক এনে এসব করেছে। আমাদের এখানকার লোকেরা সবাই একসঙ্গে থাকে।'
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে বিজেপি। দলের সাংসদ দিলীপ ঘোষ জানান, 'সারা রাজ্যজুড়ে উৎপাত চলছে। আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা, মহিলা-শিশুদের উপর অত্যাচার চলছে। দেশে বাংলার বদনাম হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব আছে খোঁজ-খবর নেওয়ার এবং জানার কেন এরকম হচ্ছে।'
রবিবার এবং সোমবারের পর মঙ্গলবারেও রিষড়া-কাণ্ডে (Rishra Violence) তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। এদিন বেলার দিকে রিষড়ার উপদ্রুত স্থান ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Governor Bose)। পাশাপাশি ডানকুনিতে আটকানো হয় বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) কনভয়। এই প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পুলিস প্রশাসনকে তির্যক ভাষায় সমালোচনা করেন। যদিও রাম নবমীর মিছিল ঘিরে হওয়া অশান্তি প্রসঙ্গে মঙ্গলবার দিঘায় মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। এই উত্তেজনা তৈরির পিছনে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তোলেন মমতা।
মঙ্গলবার ডানকুনিতে তাঁর কনভয় আটকানো প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'পুলিস তৃণমূলের উপরতলার নির্দেশে কাজ করছে। যেখানে রাজ্যপাল ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যমকে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে না। পুলিস কী লুকনোর চেষ্টা করছে। কী এমন ঘটেছে? পুলিস তৃণমূলের পার্টি ক্যাডার হিসেবে কাজ করছে।' পুলিস প্রশাসনের ভূমিকাকে তোপ দেগে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি ডানকুনিতে জানান, 'রেলগেটে বোমাবাজি হয়েছে, আগুন জ্বালানো হয়েছে ১৪৪ ধারা থাকা স্বত্বেও। পুলিস কী করছিল, এখানেই বোঝা গিয়েছে। আমাদের আটকাতে পুলিস এখানে চলে এসেছে। ওদের কাজ রিষড়ায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। আমাদের ইচ্ছা করে আটকে একটা অচলাবস্থা তৈরির চেষ্টা চলছে।'
রিষড়ার উপদ্রুত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি প্রসঙ্গে এদিন বিজেপি সভাপতি বলেন, '১৪৪ ধারার নিয়ম ৫ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। আমরা এখানে দু'জন সাংসদ যেতে চাইছি। ওদের যদি মনে হয় আমরা কিছু নিয়ে ঢুকছি আমাদের তল্লাশি করুক। পুলিস আইন ভেঙে নিজেই আইন তৈরি করছে। আইন তৈরি করার কাজ সাংসদ-বিধায়কের, সেই কাজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুলিস করছে।'
এদিকে মঙ্গলবার বেলার দিকে সুকান্ত যখন ডানকুনিতে দাঁড়িয়ে পুলিস প্রশাসনকে তোপ দাগছেন, তখন দিঘায় অন্য মুডে মুখ্যমন্ত্রী। এদিন হাত জোর করে মমতা আবেদন করেন, 'গোষ্ঠী সংঘর্ষে পা দেবেন না, উসকানি দেবেন না। শান্তি বজায় রাখুন। বাংলা এগিয়ে যাচ্ছে, তাই হিংসায় এঁরা জ্বলে যাচ্ছে। জ্বলবি আর ফুলবি কিন্তু বাংলায় কিছু করতে পারবি না।' সুর চড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, 'কখন বিজেপি গিয়ে কোথায় দাঙ্গা করবে, দেখতে আমাকে পড়ে থাকতে হয়। এঁরা বোঝে না বাংলার মানুষ দাঙ্গা পছন্দ করে না। বিজেপির লোকেরা পারে না, তাই বাইরের গুণ্ডা এনে দাঙ্গা করায়। এটা দুষ্কৃতী তাণ্ডব।' তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, 'বাংলায় যারা দাঙ্গায় প্ররোচনা দিচ্ছে, দাঙ্গার মাথাদের আমি রেয়াত করবো না। আমাকে সিবিআই-ইডি দেখাবেন না, আমাদের পুলিস তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। যারা দাঙ্গাবাজ, গাড়ি, সরকারি সম্পত্তি পোড়াবে, তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সরকার নিলামে তুলে সেই ক্ষতি পূরণ করবে। আমি নজর রাখছি, কারা বাইরে থেকে আসছেন, দাঙ্গায় ইন্ধন যোগাচ্ছে, এসব আমরা মেনে নেবো না।'
রাম নবমীর মিছিল (Ram Navami Rally) ঘিরে উত্তপ্ত হাওড়ার শিবপুর এবং হুগলির রিষড়া। ক্রমেই ছন্দে ফিরছে শিবপুর (Shibpur-Rishra), কিন্তু ১৪৪ ধারা রিষড়ায়। এই আবহে রাম নবমীর মিছিল ঘিরে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। সোমবার তাঁর প্রশ্ন, 'রাম নবমীর মিছিল ৫ দিন ধরে হবে কেন? রাম নবমী যেদিন হয়, সেদিন তোমরা মিছিল করো আমাদের আপত্তি নেই।' হুঙ্কারের সুরে তাঁর মন্তব্য, 'কিন্তু বন্দুক-বোমা নিয়ে মিছিল করবেন না। অনুমতি না পেয়েও মিছিল করছে। এত রাস্তা থাকতেও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ঢুকে পড়ছে। ফলের গাড়িতে তাণ্ডব চালাচ্ছে। বন্দুক নিয়ে ডান্স করছে।'
তিনি পুলিস প্রশাসনকে সতর্ক করে বলেন, '৬ তারিখ দাঙ্গার নামে কোনও পরিকল্পনা করতে না পারে সতর্ক থাকবেন। আমরা বজরঙবলিকে সবাই সম্মান করি। বুলডোজার নিয়ে কে মিছিল করতে যায়? বুলডোজার তো রাস্তা তৈরির কাজে লাগে। বাড়ি ভাঙার কাজে লাগে। মিছিলে বুলডোজার নিয়ে যাচ্ছে আর বন্দুক নিয়ে নাচ করছে।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, 'মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী চালাকি করছেন। ৬ তারিখ বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস, আমরা ওদিন রাস্তায় থাকবো। তাই উনি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষদের এবং দলীয় কর্মীদের উস্কাচ্ছেন বিজেপির উপর হামলা করতে। আপনারা নির্ভয়ে পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করবেন। এতদিন আমরা আইন মেনে চলেছি। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে না দিলে আমরা আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবো। ওরা লাঠি নিয়ে আসলে লাঠির উত্তর কীভাবে দিতে হয় আমরা জানি।'
মনি ভট্টাচার্য: বুধবার দুপুর ১টা থেকে রেড রোডে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে বিকেলে ওই ধর্না মঞ্চে যোগ দেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়, তারপর তিনি বক্তব্যও রাখেন। অভিষেকের বক্তব্যের পর কেন্দ্র সরকারকে তির বিঁধতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্যর মধ্যেই ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে করে তির্যক ভাষায় কটাক্ষ করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ধর্না মঞ্চ থেকে প্রায় ১ কিমি দূরে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলন মঞ্চ। বুধবার ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'ডিএ আন্দোলনের মঞ্চে চোর ডাকাত বসে আছে, চিরকুটে যারা চাকরি পেয়েছিল ওরাই ওখানে বসে আছে।'
বুধবার সিএন ডিজিটালের পক্ষ থেকে, আইনজীবী তথা রাজ্যসভার বাম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'উনি একটা পাগল, ওনার কথার উত্তর দেওয়া আমার সাজে না।' সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর করা এমন বক্তব্যে বিকাশবাবু মমতাকে শয়তান বলে কটাক্ষ করেন। তিনি সিএন-ডিজিটালকে জানান, 'এই কথাগুলো যখন বলেন একজন, তখন বুঝতে হবে হয় তাঁর মানসিক ভারসাম্য নেই, অথবা তিনি অত্যন্ত শয়তান এবং শয়তানিসুলভ বক্তৃতা দিচ্ছেন, কর্মচারীদের কলুষিত করার জন্য।' তিনি বুধবার আরও বলেন যে, 'যারা তাঁর ন্যায্য ডিএ-র জন্য আন্দোলন করছে দিনের পর দিন, ধর্মঘটের দিন ৭০ শতাংশ কর্মচারী ধর্মঘট করেছেন, তাদের তিনি চোর-ডাকাত বলছেন! উনি যদি নিজের কর্মচারীদের পাগল বলে সম্বোধন করেন, তবে ওনার তো ক্ষমতায় থাকায় অধিকার নেই।'
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের এক আন্দোলনকারী কিঙ্কর অধিকারী বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন সেটা তিনি করতে পারেন! তবে আমাদের রুচিতে বাঁধছে।' তিনি বুধবার আরও বলেন, 'আমরা যদি চোর-ডাকাত হই, উনি তো প্রশাসনের শীর্ষ জায়গায় আছেন, ওনার অনেক ক্ষমতা, ওনার হাতে পুলিস-প্রশাসন আছে, তবে এই চোর ডাকাতকে তিনি ধরছেন না কেন?' বুধবার কিঙ্করবাবু বলেন, 'চিরকুটে চাকরি পেয়ে থাকলে তদন্ত করুন, তদন্ত করে সবটা বার করুন, সবটাই তো ওনার হাতে।' এছাড়া তিনি মমতাকে পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, 'তার সরকারের দোষ ঢাকতে, একথা বলছেন তিনি, সরকার যে কত হাজার হাজার ভুয়ো নিয়োগ করেছে, কত টাকার দুর্নীতি করেছে, সেটা তো কোর্টে প্রায় প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, সব বাংলার মানুষ দেখছে, কে চোর! কে ডাকাত! সেটা বাংলার মানুষ বিচার করবে।'
প্রসূন গুপ্ত: শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু নতুন রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর প্রথম কলকাতায় এলেন সোমবার। তাঁকে সংবর্ধনা জানানোর বিপুল আয়োজন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর তিন কর্তা। পুলিসের বড় কর্তাদের উপস্থিতি নজর টেনেছে। এরপর হেলিকপ্টারে রাষ্ট্রপতি চলে আসেন কলকাতার রেসকোর্সে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল আনন্দ বোস। রাষ্ট্রপতিকে বাংলার বিশেষ শাল পরিয়ে অভ্যর্থনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। পরে ফুল তুলে দেন তাঁর হাতে রাজ্যপাল। এরপর রাষ্ট্রপতি চলে যান নেতাজি ভবনে। সেখানেও তাঁর সঙ্গী ছিলেন রাজ্যপাল।
এবার আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা। গত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে যেভাবে নেতাজি ইনডোরে সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সেভাবেই দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতিকে সংবর্ধিত করা হয়। প্রথমেই জঙ্গল মহলের বিশেষ নৃত্য পরিবেশিত হয় এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ওই নাচে অংশ নেন। প্রারম্ভিক ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতিকে। তিনি বলেন, 'এক জন মহিলা হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবে রাষ্ট্রপতিজিকে অভ্যর্থনা জানাই।' ভাষণ শেষে তিনি জয় হিন্দের সঙ্গে জয় রাষ্ট্রপতি, জয় উড়িষ্যা জানান। এরপর সাহিত্যচর্চা করা রাজ্যপাল নানা উদাহরণ দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে শুভেছা জানান।
এখানেও মঞ্চে দেখা যায় কলকাতার মেয়রকে। সবশেষে বক্তব্য রাখতে আসেন দ্রৌপদী মুর্মু। রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে কৃতজ্ঞাতা জানান পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। তিনি বলেন, 'রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নৃত্য দেখে আপ্লুত। মনে হচ্ছে তাঁর উড়িষ্যার গ্রামে রয়েছেন।' তিনি যে খুশি মুখ্যমন্ত্রীর উপর তা জানাতে বিলম্ব করেননি রাষ্ট্রপতি। তবে এই খুশির দিনে বিরোধী দল বিজেপির কাউকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। তারা নাকি এই অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন। বাংলার প্রধান উৎসবের দুর্গা প্রতিমা উপহার পান রাষ্ট্রপতি।
সম্ভাবনা সত্যি করেই লোকসভায় খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ। মানহানির মামলায় সুরাতের এক আদালতের রায় সামনে আসতেই জল্পনা শুরু হয়। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের কোপে পড়বেন কি কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন সভাপতি। সেই জল্পনাকে সত্যি করেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে লোকসভার সচিবালয়। আর এই খবর চাউর হতেই কেন্দ্র তথা বিজেপির সমালোচনায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। ট্যুইটে তাঁর খোঁচা, 'প্রধানমন্ত্রী মোদীর নতুন ভারতে বিরোধী দলের নেতারা বিজেপির মুখ্য টার্গেট! ফৌজদারি অপরাধের ইতিহাস নিয়েও বিজেপি নেতারা মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। আর শুধুমাত্রে বক্তব্যের কারণে বিরোধী নেতার পদ খারিজ হয়। সাংবিধানিক গণতন্ত্রের আরও একটা নিকৃষ্টতম ঘটনার সাক্ষী হলাম আজ।'
In PM Modi’s New India, Opposition leaders have become the prime target of BJP!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 24, 2023
While BJP leaders with criminal antecedents are inducted into the cabinet, Opposition leaders are disqualified for their speeches.
Today, we have witnessed a new low for our constitutional democracy
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই খোঁচার মধ্যেই শুক্রবার ট্যুইটে সরব হয়েছিলেন রাহুল গান্ধীও। তিনি লেখেন, 'আমি দেশের আওয়াজের জন্য লড়াই করছি। প্রতিটি মূল্য চোকাতে প্রস্তুত।' ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সরব সিপিএম, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলোও।
मैं भारत की आवाज़ के लिए लड़ रहा हूं।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) March 24, 2023
मैं हर कीमत चुकाने को तैयार हूं।
মোহনবাগান আইএসএল জয়ের (ISL Champion) পর শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ক্লাব ডেভেলপ ফান্ডে এবং সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন তিনি। তিনি বলেন, 'আমি দেখলাম বাংলারাও অনেক ছেলে এগিয়ে এসেছে। ভারতের হয়েও খেলেছেন এখানেও খেলছেন এবং তাঁদের জীবনে একরাশ স্বপ্ন। বুকভরা স্বপ্ন। আমরা সবাই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, মোহনবাগান (Mohan Bagan Club) একটা করে জিতছে। ইস্টবেঙ্গল বেচারা এবছর দল তৈরি করতে পারেনি ঠিক করে। আমি ওদের দোষ দিচ্ছি না।'
তিনি জানান, 'কারণ হচ্ছে ওরা টিমটা ভালো করে তৈরি করতে পারেনি। কারণ ওদের আর্থিক অসুবিধা ছিল। কিন্তু মোহনবাগান যে খেলাটা আগেই খেলে দিয়েছে, সেটা হচ্ছে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার তো টাকার অভাব নেই। আর ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনের কর্ণধার, বাড়তি সাহায্য করে ক্লাবটাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। মোহনবাগান সুপার চ্যাম্পিয়ন, সুপার জায়ান্ট।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি অরূপকে বলেছিলাম সঞ্জীবের সঙ্গে কথা বলো। এই ATK শুনতে ভালো লাগে না। মোহনবাগান মোহনবাগান। তার ইতিহাস গোর্খাদের বিরুদ্ধে খালি পায়ে লড়াই করে এই মোহনবাগানকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর নাম গোষ্ঠ পাল, আমরা যেন ভুলে না যাই। আমার মনে আছে আমি তখন বেশ ছোট, আর আমার মা খুব খেলা দেখতেন। আমি কার সাপোর্টার বলবো না। আমি সবার সাপোর্টার।'
মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'কিন্তু আমার মা মোহনবাগানের খেলা হলেই কালীবাড়িতে পুজো দিতে যেতেন। আর আমার দাদা মোহনবাগানের সাপোর্টার তবে এখন নিজেই ইস্টবেঙ্গলে আছে। ওর বাড়ি প্রায় ভেঙেই যাচ্ছিল, সারাক্ষণ শুধু ফুটবল ফুটবল ফুটবল। এই করে ওর বৌ একদিন আমায় বলল, ওকে আমি ডিভোর্সই দিয়ে দিব। আমি বললাম কেন? বললো বাড়িতে সময় দেয় না সারাক্ষণ ফুটবল করে বেড়াই। এই করে জীবনটাও কাটিয়ে দিয়েছে। আমাদের পাড়ায় ছোট্টো একটা ক্লাব আছে মিলন সংঘ ক্লাব। সুপার লিগে খেলে। আমি একদিন ইতিহাস বাছতে গিয়ে খবর পেলাম আমার বাবা নাকি স্বাধীনতার আগে ওই ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আজও বাবার নামেই রেকর্ড আছে। এই জন্য আমাদের পরিবার এমনিতেই ফুটবলের সঙ্গে আন্তরিকভাবে যুক্ত।'
তাই তিনি আরও বলেন, 'আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, স্বপ্ন আমিও দেখি। যেদিন ফাইনাল খেলা সেদিন ভোরবেলা আমি দেখছি মোহনবাগান জিতে গিয়েছে। আমি বাড়িতে বললাম তখনও খেলাই শুরু হয়নি। তার মানে মাথায় একটা ক্লিক করছে, বাংলা এত দূর এসেও পিছিয়ে যাবে। এটা কখনও হয় না। এবং এটা আমি অরূপকে ম্যাসেজ করে জানিয়েও দিয়েছিলাম। যাতে চিন্তা করিস না বাংলা আজ ভারত সেরা, আমরা গর্বিত। আমরা কথায় কথায় বলি, what bengal thinks today, India thinks tomorrow- মোহনবাগানই এই পথটা আমাদের দেখিয়েছে। সব খেলার সেরা বাঙালির ফুটবল প্রমাণ করে দিয়েছে মোহনবাগান ক্লাব।'
এটা শুধু মোহনবাগানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা ভারত সেরা। আগামী দিনে চাই আপনারা বিশ্বসেরা হোন। একদিন মোহনবাগান কেন ব্রাজিলের সঙ্গে খেলবে না, একদিন মোহনবাগান কেন পোল্যান্ডের সঙ্গে খেলবে না, একদিন মোহনবাগান কেন ইতালির সঙ্গে খেলবে না, খেলতে হবে এবং বিশ্বজয় করতে হবে। বাংলাকে নেগলেক্ট করলে হবে না। বাংলা করে দেখাতে পারে। বাংলা জয় করতে পারে। একদিন আপনারা বিশ্বজয় করবেন। সেইদিন মনে রাখবেন এই ছোট্টো কথাটা আমি বলে গিয়েছিলাম কারণ আমি মনে করি সারা পৃথিবী একদিন আপনাদের দরজায় আসবে। এভাবেই মোহনবাগান সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আমি সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য এবং মোহনবাগান ক্লাবকে ডেভলপ করতে রাজ্য সরকারের তরফে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে যাচ্ছি। আপনারা আরও ভালো খেলুন, আমাদের গর্ব আপনারা। এই মন্তব্য এদিন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, 'খেলা হয়েছে, খেলা হবে, আবার খেলা হবে। আবার জিততে হবে। বিশ্বজয় করতে হবে, আমি বিশ্বকাপ নিয়ে আসতে চাই।'
আমি যদি কোনও অন্যায় করি, আপনারা গালে যদি চড় মারেন কিছু মনে করবো না। যদি দেখি ইয়েস আমি গিল্টি। আমি জীবনে জেনেশুনে কোনও অন্যায় করিনি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর একটা সিপিএম (CPM) ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তাহলে তোমরা কেন খাচ্ছো? মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এই প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। সম্প্রতি নিয়োগ-কাণ্ডে কোর্ট (High Court) নির্দেশে বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া একাধিক 'অযোগ্য'রা চাকরি খুইয়েছেন। এদিন সেই প্রসঙ্গ উসকে দিয়ে পরোক্ষে বিরোধী শিবিরকে খোঁচা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মঙ্গলবার জেলা আদালতের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঋষি অরবিন্দের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচনের এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'দেওয়ার ক্ষমতা নেই কাড়ার ক্ষমতা আছে। সিপিএম আমলে চাকরি সংক্রান্ত একটা কেসে বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় রায়ে বলেছিলেন, সংশোধন করে নাও যদি ভুল থাকে। চাকরি খাওয়ার কথা বলেনি।'
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, 'এখন রোজ কথায় কথায় তিন হাজার চাকরি বাদ, চার হাজার চাকরি বাদ। কেউ যদি নিচুতলায় অন্যায় করে থাকে আমাদের এখানে গণতান্ত্রিক দল। সবাই তো আমার তৃণমূলের ক্যাডার নয়, সবাই গভর্নমেন্টের ক্যাডার নয়। গভর্নমেন্টের ক্যাডার হলেও কোনও কোনও পার্টির সমর্থক। তাঁরা নিচে বসে যদি অন্যায় করে, আমার লোকও যদি অন্যায় করে, আমি ন্যায়ের পথে থাকবো। আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো, এটা আমার চিরকালের স্বভাব।'
মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, 'কিন্তু আমি একটু ভেবে দেখতে বলবো। কাল দুজন আত্মহত্যা করেছেন। যদি কেউ ভুল করে থাকে তাঁর দায়িত্ব তাঁরা নেবে কেন? আজকে একটা ছেলেমেয়ে বিয়ে করে সংসার করছে। আজকে একটা ছেলেমেয়ে কাজ করে বলে বাবা-মাকে দেখতা পারে। হঠাৎ করে চাকরিটা চলে গেলে সে খাবে কী? আমি তো বলছি যারা অন্যায় করেছে অ্যাকশন নিন, টেক স্ট্রং অ্যাকশন। আমার কোনও দয়া নেই তাঁদের জন্য। কিন্তু ছেলেমেয়েগুলো যাতে ভিক্টিমাইজড না হয়, তাঁদের চাকরিটা আইন অনুযায়ী ফিরিয়ে দিন। আইন অনুযায়ী কোনও ভুল করে থাকে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হোক। দরকার হলে আবার পরীক্ষা দিক, আলাদা বন্দোবস্ত করে কোর্ট যেটা বলবে আমরা সেটাই করে দেবো।'
তাঁর মন্তব্য, 'সিদ্ধান্ত আপনারা দিন, আমি প্রধান বিচারপতিকে সামনে পেলাম না। সুব্রত দা-কে পেলাম, আমি শুধু বললাম এটা আমার মনের ভাবনা। আত্মহত্যার খবর শুনে আমার মন কাঁদছে। কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না। এটা রাজনীতি নয়। দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কিল মারার গোঁসাই হয়েছে কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। কত কেস পড়ে আছে, তাকাবে না। কথায় কথায় পিআইএল, মানে পলিটিকাল ইন্টারেস্ট লিটিগেশন। আমরা আগে জানতাম পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন। কেউ কেউ এই জিনিস করছে, সবাই নয়।'
তিনি জানান, 'আমাকে আপনাদের পছন্দ না হতে পারে। আমার পার্টিকে আপনাদের পছন্দ না হতে পারে। আমার সরকার এত মানবিক কাজ করলেও পছন্দ না হতে পারে। যা ইচ্ছা আমাকে দু'বেলা গালাগালি দিন। দরকার হলে মারুন আমায় কিছু মাইন্ড করব না। কিন্তু রাজ্যকে বদনাম করে ছাত্র-যুবদের খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেবেন না।'
প্রসূন গুপ্ত: সাগরদিঘির ভোটের (Sagardighi Bye Poll) ফল দেখে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের ফলের পর মেজাজও ঠিক ছিল না তাঁর। মহাজোট নিয়ে ব্যক্ত করেন তাঁর বক্তব্য এবং অধীর চৌধুরীকে (Adhir Chowdhury) আক্রমণ করেন তিনি। এরপর থেকেই শুরু নানা বিতর্ক। প্রথমত কংগ্রেসের নেতা এবং মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচী মমতার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আক্রমণ করে গ্রেফতার হয়েছিলেন। গ্রেফতারির দিনেই ছাড়া পেয়ে তিনি মাথা মুড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করেন মমতা সরকারকে (Mamata Government) উৎখাত না করা পর্যন্ত তিনি মাথায় চুল গজাতে দেবেন না।
অর্থাৎ রাজ্য রাজনীতিতে নাটক তুঙ্গে। এরপরই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরাসরি সহকর্মীদের প্রশ্ন করেন যে, সাগরদিঘিতে সংখ্যালঘু ভোট কমল কেন? তাতে অনেকেই অনেক উত্তর দেন। কেউ বলেন, প্রার্থী পছন্দ হয়নি এলাকার মানুষের। এই উত্তরে মোটেই খুশি হননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দলের সংখ্যালঘু মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন, যে সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে গিয়ে সঠিক তথ্য নিয়ে আসতে।
মমতা কেন বাংলার সব রাজনৈতিক দলই জানে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোট প্রায় ৩২% কাজেই এই ভোটকে অগ্রাহ্য করা যায় না। একসময়ে বামেরা এই ভোটের সিংহভাগ পেত। এরপর নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের পর এই ভোট ক্রমশই তৃণমূলে চলে যায়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বহু আসন বিজেপির কাছে হারায়। কিন্তু দেখা গিয়েছে, যেখানে মুসলিম ভোট সেখানেই তৃণমূল জিতেছে।
মোদী ঝড়ে এই নির্বাচনে দক্ষিণ ভারত ছাড়া এক বাংলার বিজেপির থেকে তৃণমূল ৪টি আসন বেশি পেয়েছিলো। ২১-এর নির্বাচনে একবগ্গা মুসলিম ভোট পেয়েছিলো মমতা। কাজেই তিনি সাগরদিঘির ফলাফলে ক্ষুব্ধ হবেন তাতে আর আশ্চর্যের কী আছে। তিনি জানেন ফের নন্দীগ্রাম ফর্মুলা যদি ফের পশ্চিমবঙ্গে সাগরদিঘির রূপ নিয়ে আসে তবে সর্বনাশ অনিবার্য। কাজেই তৃণমূল সুপ্রিমো যেভাবেই হোক সংখ্যালঘু ভোট ফিরে পেতে মরিয়া।
আগামী পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামিয়েছেন নেতাদের এবং পাক্কা খবরের অপেক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।