প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি (Primary TET) মামলায় ফরেন্সিক রিপোর্ট আদালতে জমা করল সিবিআই (CBI)। CFSL মুখবন্ধ খামে এই রিপোর্ট সিবিআইকে দিয়েছে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে আদালতের (Calcutta High Court) নির্দেশ, ১৭ অক্টোবর প্রাথমিক বোর্ড আর মামলাকারীরা বসবেন। ৩১ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। পাশাপাশি তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত মৌখিক রিপোর্ট ৪ নভেম্বর সিবিআইকে (CBI) দিতে হবে। এদিকে, ২০১৪-র টেটের মাধ্যমে প্রাথমিকে ২০১৬ এবং ২০২০ সালে দু'দফায় নিয়োগ হয়েছিল। তাঁদের নম্বর বিভাজন প্রকাশ করতে দিন দুয়েক সময় চাইল বোর্ডের আইনজীবী। ২৩ সেপ্টেম্বর সেই কারণে ফের মামলাটি রাখা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বোর্ড মিটিংয়ের সমস্ত কাগজপত্র সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠিয়ে ওই কাগজের বয়স পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখবন্ধ খামে সেই রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। CFSL-র মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়া রিপোর্ট ছাড়াও আরও একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেই রিপোর্টে এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এমনটাই আদালতকে। তারা জানায়, তদন্তে সদর্থক অগ্রগতি হচ্ছে। তবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, দুর্নীতি হয়েছে। অনেকে পরীক্ষা না দিয়েও চাকরি পেয়েছে। তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে। শীঘ্রই সমাধান সূত্র মিলবে।
মামলকরীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামীমের দাবি, 'বোর্ডের বিশেষজ্ঞ কমিটির যে বৈঠক হয়েছিল, সেই বৈঠকে উপস্থিত দু'জন সদস্যদের হলফনামা দু'রকম। একজন বলেছেন সেদিন সব প্রার্থী যারা ওই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের সকলকে এক নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবার দেবজ্যোতি ঘোষ হলফনামায় বলেছেন, যারা আবেদন করবেন শুধুমাত্র তাদেরই ওই এক নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ফলে ওই বৈঠক হয়েছিল কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।'
বৃহস্পতিবার গোরু পাচার-কাণ্ডে (Cow Smuggling Case) আসানসোল জেলে (Asnsol Jail) গিয়ে অনুব্রতকে ঘণ্টাখানেক জেরা করে সিবিআই। পাশাপাশি ওই জেলেই বন্দি ইসিএল কর্তাদের এদিন জেরা করে সিবিআই (CBI)। এই নিয়ে মোট তিনবার জেলে গিয়ে তৃণমূল নেতাকে জেরা করল সিবিআই। এদিন ফের খারিজ হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের জামিন। তাঁকে আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। একইসঙ্গে গ্রেফতারির সময় সিবিআইয়ের বাজেয়াপ্ত করা অনুব্রতর দুটি মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠিয়েছে আদালত। সিএফএসএল এই ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষা করবে। এমনটাই সূত্রের খবর।
যদিও অনুব্রতর আইনজীবী এদিন এজলাসে ফোন বিকৃত করার আশঙ্কা করেছেন। তিনি সওয়াল করেন, 'প্রায় একমাস ধরে সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকা অনুব্রত মণ্ডলের দুটি ফোন বিকৃত হতে পারে। তাই আদালতের লকারে রাখা হোক ফোন দুটি। ফরেন্সিক দল আদালতে এসে ফোন বাজেয়াপ্ত করে পরীক্ষা করুক। পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হোক আদৌ এই সময়ের মধ্যে ফোন ট্যাম্পার করা হয়েছে কিনা। অর্থাৎ নতুন কিছু জোড়া হয়েছে কিনা কিংবা মুছে দেওয়া হয়েছে কিনা।'
এমনকি, সিআইডির ল্যাবে এই মোবাইল পরীক্ষার জন্য যাক। এমন আবেদন এদিন আদালতে করেছেন অনুব্রতর আইনজীবী। যদিও আবেদন খারিজ করে সিএফএসএল-কে পরীক্ষার দায়িত্বে হয়েছে আদালত। পাশাপাশি গত একমাসে সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন ফোন ট্যাম্পারিং হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখে কোর্টকে পৃথক রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
মাদ্রাসার সার্ভিস কমিশনে (Madrasa Service Commission) শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ। উত্তরপত্র (OMR Sheet) কেলেঙ্কারির অভিযোগে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের চাকরিপ্রার্থীর। তাঁর জমা দেওয়া ওএমআর শিটে তৃতীয় ব্যক্তি কলম চালিয়েছে। ফলে বদলে গিয়েছে উত্তর। এই অভিযোগ তুলে সেই ওএমআর শিট বাতিলের দাবিতে আদালতে দরবার সেই চাকরিপ্রার্থীর। আবেদনের গুরুত্ব বিচার করে সেই ওএমআর শিটকে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবে পাঠালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি CFSL-কে এই মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
অভিযোগ, মাদ্রাসা নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নের ভিত্তিতে যে উত্তরপত্র দেওয়া হয়, তাতে অপশন থাকে। এক পরীক্ষার্থী কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন উত্তরপত্রের "A", "B", "C" বিকল্পগুলোর মধ্যে A এবং B সঠিক উত্তর এর জন্য। কিন্তু তাঁর উত্তরপত্রে C বিকল্প মার্কিং করা। আদৌ তিনি সেই উত্তর দেননি। পরে মেধাতালিকায় তাঁর নাম না থাকায় সন্দেহ হওয়ায় তিনি তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেন। সেই চাকরিপ্রার্থী জানতে পারেন তিনি নাকি C বিকল্প বেছেছিলেন। তিনি উত্তীর্ণ হলেও আদতে তাঁকে চাকরি না দেওয়ার জন্য এই বেনিয়ম করেছে পর্ষদ।
এরপরেই আদালতের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওই উত্তরপত্র চেয়ে পাঠান। শুক্রবার মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ সেই উত্তরপত্র জমা করলে, হায়দরাবাদে সিএফএসএল-এ যায় সেই খাতা। পাশাপাশি এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ, CFSL ওএমআর সিট খতিয়ে দেখবে। পরীক্ষার্থীর কলমের কালির সঙ্গে অন্য কলমের কালি বিবেচনা করা হবে। এছাড়া দেখতে হবে, উত্তরপত্র একই চাপ প্রয়োগ করে লেখা হয়েছে কিনা। আদালতের নির্দেশ মতো আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থী যে কালিতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কলম-সহ সেই কালিও জমা দেন আদালতে। জানা গিয়েছে, ৩১ অগস্টের মধ্যে CFSL-কে পাঠাতে হবে। সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধিকর্তাকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করতে হবে।
এদিনে শুনানিতে বিচারপতির মন্তব্য, রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবারই পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের সচিবকে ওএমআর সিট এবং কলম (বল পেন) হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে। জানা গিয়েছে, ১৭ জানুয়ারি ২০২১ পরীক্ষা হয়। ওই বছর ১১ অগস্ট ফল প্রকাশ হয়।