
অভিষেক (Abhishek Banerjee) ও কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) বিতর্কে এবার ভোল বদল কুন্তলের। কুন্তলের দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত পরিচয়’ নেই তাঁর। সিবিআই (CBI) সূত্রে খবর, জেরায় এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা। গত শনিবার অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তার ৩ দিন পর বুধবার প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে কুন্তলকে জেরা করেছে সিবিআই। সেই জেরাতেই অভিষেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ না থাকার কথা কুন্তল জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
সিবিআইয়ের জেরাতে অভিষেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ না থাকার কথা কুন্তল জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। গত শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিষেকও দাবি করেছিলেন যে, তিনি কুন্তলকে চেনেন না।
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছে কুন্তল। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। জেলবন্দি থাকার সময় অভিষেকের নাম জড়িয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কুন্তল। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরেই কুন্তল দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পরে ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন বহিষ্কৃত ওই তৃণমূল নেতা। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি পাঠান হেস্টিংস থানাতে। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। বিচারপতি অমৃতা সিন্হাও সেই পর্যবেক্ষণে সম্মতি দেন।
মণি ভট্টাচার্য: 'বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিবে পরান।' তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) সিবিআইয়ের (CBI) জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে এমনই দাবি বিরোধীদের। শুক্রবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ফের বড় ধাক্কা খেলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জাস্টিস সিনহার ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের নির্দেশে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ দিয়ে জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় বহাল রাখেন জাস্টিস সিনহা। সঙ্গে জাস্টিস সিনহা ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেয় অভিষেক ও কুন্তল ঘোষকে। ওই মামলার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন জানায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। যদিও ওই আবেদনের শুনানিতে শুক্রবার সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট।
এরপরেই তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছেন বিরোধী দল বিজেপির একাংশ। বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি শুক্রবার সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিবে পরান। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের এখন ওই অবস্থা। উনি সিবিআইকে কেন এত ভয় পাচ্ছেন যে গ্রেফতার হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে স্থগিতাদেশ চাইতে হচ্ছে। পাশাপাশি বিজেপি উচ্চ নেতৃত্বের মত, উনি যে অপরাধী সেটা বুঝতেই পারছে, নাহলে গ্রেফতারির আশঙ্কা প্রকাশ করে সিবিআইয়ের থেকে রেহাই চায়।' যদিও এ প্রসঙ্গে এখনও কোনও মতামত পাওয়া যায়নি তৃণমূলের।
রমেশ নন্দী বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি মামলায়, কুন্তল ঘোষের চিঠিতে অভিষেকের নাম থাকায় তাঁকে ডেকে প্রায় সাড়ে ৯ ঘটনা জিজ্ঞাসাবাদ চালায় সিবিআই। পাশাপাশি ওই ঘটনায় কুন্তলকেও হেফাজতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। যদিও জেরা সেরে বেরিয়ে এসে অভিষেকের নিশানা ছিল বিজেপিরই দিকে। তিনি আঙ্গুল তোলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দিকেও। যদিও এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ই জুলাই। আপাতত ১০ই জুলাই অবধি সিবিআই অভিষেককে জেরা করতে পারবে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তলকে জেরা করেছে সিবিআই। তারপরেই অভিষেক এবং কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ইঙ্গিত মিলেছে। সিবিআই সূত্রে খবর, অভিষেককে জড়িয়ে কুন্তলের চিঠি এবং কুন্তলকে চেনেন না বলে অভিষেকের দাবির ব্যাপারে সত্য জানতেই দু'জনকে মুখোমুখি বসানো হতে পারে।
কুন্তলের বুধবারের বয়ান খতিয়ে দেখে তাঁকে আবার হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কুন্তলকে হেফাজতে পেলে ফের ডাকা হতে পারে অভিষেককে। অভিষেককে জেরা করার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি।
শনিবার অভিষেককে প্রায় সাড়ে ন'ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। এর আগে গত ৩১ মার্চ আলিপুরের বিশেষ আদালতের বিচারক এবং কলকাতা পুলিসের হেস্টিংস থানায় চিঠি দিয়ে কুন্তল দাবি করেছিলেন, সিবিআই এবং ইডি তাঁকে চাপ দিয়ে অভিষেকের নাম বলিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিষককে। কুন্তল ছাড়াও তৃণমূলের যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে।
জেল থেকেই আদালতে চিঠি দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। তা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছিল। একটা চিঠির জেরেই মামলা হয়েছে হাইকোর্টে (High Court), মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। সিবিআই-এর (CBI) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। সেই চিঠি নিয়ে প্রশ্ন করতেই এবার জেলে পৌঁছে গেল সিবিআই। বুধবার বিকেলে সিবিআই-এর দুই অফিসার পৌঁছেছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। জেলের অন্দরে একটি ঘরেই কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সিবিআই-এর ডিএসপি ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার দুই অফিসার গিয়েছেন কুন্তলকে প্রশ্ন করতে। ওই চিঠিতে কুন্তল ঘোষ অভিযোগ করেছিলেন, জেলে তাঁকে অভিষেকের নাম বলতে চাপ দিচ্ছেন তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, শহিদ মিনারে সভা করতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষদের নাকি তাঁর নাম বলতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনার পরই কুন্তল ঘোষও সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন, তাঁকে অভিষেকের নাম বলতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। একজন রাজ্যের শাসক দলের সাংসদ, অন্যজন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত। তাঁদের বয়ান মিলল কীভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই হাইকোর্ট অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলেছিল।
বেঞ্চ বদল হলেও একই নির্দেশ বহাল থাকে। গত শনিবারই ওই মামলায় অভিষেককে সাড়ে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। এবার সেই একই ইস্যুতে প্রশ্নের মুখোমুখি কুন্তল। কেন চিঠিতে অভিষেকের নাম নিলেন? অভিষেকের সঙ্গে বয়ানে মিল কীভাবে? এই সব প্রশ্ন নিয়েই কুন্তল ঘোষের কাছে গিয়েছে সিবিআই।
অভিষেক ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না ওয়াকিবহাল মহল। দুজনের বয়ানে যদি কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়, তাহলে মুখোমুখি বসাতে পারেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। অভিষেক অবশ্য ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি কুন্তল ঘোষকে চেনেন না, কোনওদিন দেখেননি।
'পরের বার আমাকে গ্রেফতার করা হবে।' ঠিক এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন অভিষেকের। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের। এদিন তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।
তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, 'আমাকে বারবার তলব করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরার নামে হেনস্থা করা হচ্ছে। প্রতিবার নয় ঘণ্টা করে জেরা করা হচ্ছে।' এমনকী, অভিষেক জানাচ্ছেন, 'পরের বার আমাকে গ্রেফতার করা হবে। আমি প্রচার করছিলাম, সেই অবস্থায় সমন জারি করে। পরের দিন সকালে জেরায় তলব করা হয়েছে। আমি জেরায় যোগ দিয়েছি। তারপরও হেনস্থা করা হচ্ছে।' এই মামলা বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চে দ্রুত শুনানির আর্জি জানালেন অভিষেকের আইনজীবী।
পাশাপাশি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত কোনও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করারও আর্জি জানান আইনজীবী সিংভি। কিন্তু, এদিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের বেঞ্চ অভিষেকের সুরক্ষাকবচের কোনও উল্লেখ করেনি। এজলাসে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে উপস্থিত এস ভি রাজু পরবর্তী শুনানির দিন জিজ্ঞাসা করেন। জানা যায়, আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায় ছিল, অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই বা ইডি। পাশাপাশি, তাঁকে ২৫ লক্ষ জরিমানা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন বলে সিবিআইকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন অভিষেক। যদিও অভিষেক সিবিআইয়ের দেওয়া সময়ে হাজির হয়েছিলেন। এবং তদন্তে পূর্ণ সহায়তা করেছেন বলে সাংবাদিক দের জানিয়েছেন।
পুর-নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ফের ধাক্কা রাজ্যের। এবার জাস্টিস অমৃতা সিনহার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গ্রীষ্মের অবকাশকালীন বেঞ্চের দারস্থ হয়েছিল রাজ্য। এই মামলার শুনানিতে কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ মিললো না রাজ্যের, বরং অবকাশকালীন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিল, পরবর্তীতে এই মামলার শুনানি হবে ৫ই জুন। ফলে ততদিনে গ্রীষ্মকালীন ছুটিও শেষ হয়ে যাবে, এরপর যে বেঞ্চে অর্থাৎ যে ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাটি চলছিল তারাই এই মামলা শুনবেন।
সূত্রের খবর, পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়। জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য প্রথমে অমৃতা সিনহার বেঞ্চে জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন করে। যদিও ওই আবেদনে তেমন কোনও সাড়া দেয় নি জাস্টিস সিনহা। জাস্টিস সিনহা, জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় বহাল রেখে জানিয়ে দেয়, এই মামলায় সিবিআই তদন্তের রায় বহাল থাকবে। এরপরই রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চ এর কাছে আবেদন জানালে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল গ্রীষ্ম অবকাশকালীন বেঞ্চে এই মামলার আবেদন করুন। আজ অবকাশকালীন বেঞ্চে রাজ্য ফের আবেদন জানালে সেই আবেদনে কাজ হল না। ফলে ৫ই জুন অবধি খানিকটা অস্বস্তিতে থাকবে তৃণমূল।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতারির পর অয়ন শীলের নথি ও উদ্ধার করা বেশ কিছু হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভ ঘেঁটে পুর-নিয়োগ দুর্নীতির হদিশ পায় ইডি। সেকথা জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায় কে শুনানির সময় জানালে জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায় পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।
সাড়ে ৯ ঘণ্টার সিবিআই (CBI) জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য। শনিবার রাতে নিজ়াম প্যালেস থেকে বেরিয়ে এ কথাই বলতে শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। একহাত নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। তবে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনই ক্ষান্ত হতে চাইছে না সিবিআই। সূত্রের খবর, শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন করা হলেও এসএসসি দুর্নীতিতে উঠে আসা আরও বেশ কয়েকজনের নাম সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয় অভিষেকের কাছে। অভিষেকের পুরো বয়ানই রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। আগামীতে তাঁর সমস্ত কথাই পুনরায় খতিয়ে দেখা হবে।
সূত্রের খবর, চিঠি প্রসঙ্গে জেলে গিয়ে কুন্তলকে জেরা করবেন তদন্তকারীরা। মিলিয়ে দেখা হবে দু'জনের বয়ান। কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত কোথায়? এর জন্য ফিরে যেতে হবে মার্চ মাসে। গত ২৯ মার্চ কলকাতার শহিদ মিনারে তৃণমূলের যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখতে উঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'যবে থেকে সারদা হয়েছিল আক্রমণ ছিল আমার দিকে। মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন কাস্টডিতে ছিলেন। কী বলেছে জানেন এদের? অভিষেকের নাম নাও ছেড়ে দেব। সারদা থেকে শুরু করে নারদা। তারপর হল গরু, কয়লা, এসএসসি। আমার যদি কোথাও যোগসাজশ থাকে, প্রমাণ করতে পারেন আমি যুক্ত, আমার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগাতে হবে না। সারদা, নারদা, টেট, এসএসসি, কয়লা, গরু হোক এই শহিদ মিনারের মঞ্চে আমি মৃত্যুবরণ করব। কথা দিয়ে গেলাম।
ঠিক এর পরপরই আদালতে তোলার সময় তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত কুন্তল ঘোষ বলেছিলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চেষ্টা করছে। কে চেষ্টা করছে বলব না। চিঠি আকারে মহামান্য আদালতকে সবটা জানিয়েছি।' সেই চিঠি নিয়েই এত জলঘোলা। এই চিঠি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি-সিবিআই। নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরবর্তীতে সেই মামলা সরে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। তিনিও অভিষেকের আইনজীবীকে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলেছিলেন বিচারপতি সিনহা।
মনি ভট্টাচার্য: দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ, পাল্টা অভিষেকের (Abhishek Banerjee) হুঙ্কার, পাশাপাশি আইনি সাহায্য নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের (Central Agency) মোকাবিলার চেষ্টা। কুন্তলের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায়, সিবিআই বনাম অভিষেকের সিনেমায় অভিষেক কি নায়ক হয়ে গেল! যদিও দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টা পর নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে মমতার পথে হেঁটে বিজেপিকেই টার্গেট করেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
কিন্তু অভিষেক নায়ক কিভাবে! গত তিনবছর আগে ইডির জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বেরিয়ে অভিষেক একই রকম ভাবে বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন। শনিবারও ঠিক তেমনই লাগল অভিষেককে। অভিষেক নিজেই স্পষ্ট করলেন তাঁকে কেন ডাকা হয়েছিল। কুন্তল ঘোষের চিঠিতে তাঁর নাম থাকায় তাঁকে ডাকা হয়। তিনি বেরিয়েই বললেন,'যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁদেরও সময় নষ্ট, আর আমারও সময় নষ্ট।' কিন্তু কেবল কোনও অভিযুক্তের চিঠিতে তাঁর নাম পেলেই তাঁকে ডাকা হবে কেন! অভিষেক কিন্তু এখানেই বিঁধলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।
অভিষেককে মূলত রমেশ নন্দী বনাম পশ্চিমবঙ্গের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তলব করেছিল সিবিআই। যে মামলাটি গত বছর মে মাসে ৯ তারিখে দায়ের করা হয়। ওই মামলাটিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারা সহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৭,৭এ ও ৮ নম্বর ধারা রয়েছে। আইনজীবীদের মতে চাকরির প্রতারণা, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত দুর্নীতি হলেই এই ধারা গুলি প্রযোজ্য। এই মামলায় ১৬০ সিআরপিসি অনুযায়ী অভিষেককে সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডাকা হয়েছে। সিবিআইয়ের তলবে এক রাতেই হাজিরা দিয়েছেন অভিষেক। যদিও এই মামলায় অভিষেককে তলব করার মধ্যে তেমন কিছুই কিন্তু দেখছে না আইনজীবী মহল। বরং আইনজীবী মহল মনে করছেন এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতেই পারে, সেটা অতি ক্ষুদ্র বিষয়।
তবে প্রশ্ন উঠছে অভিষেক কেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ভিত্তিতে বারবার আদালতে ছুটছেন। সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। তাতে বারবার আদালতের দ্বারস্থ হবার কি দরকার ছিল? যদিও বিজেপি এটাকে ভয় হিসেবেই দাবি করেছেন। কিন্তু একজন সাধারন মানুষ হিসেবে অভিষেক কিন্তু বারবার বলেছে,'আমি এই মামলায় কোনও ভাবেই নেই, এই মামলার ত্রিসীমানায় নেই। তবে আমাকে কেন ডাকা হবে।' যদিও সিবিআইয়ের জেরা থেকে বেরিয়ে অভিষেক বিজেপিকে দুষে বলেন,'সারদায় সুদীপ্ত সেন তো অধীর, শুভেন্দু, সুজন বাবুদের নাম লিখেছিল চিঠিতে, তাঁদের ডাকা হয়েছে? আমাকে ডাকা হলো কারণ আমি বিজেপির কাছে বশ্যতা স্বীকার করি নি।' একদিকে অভিষেক সিবিআইকে তদন্তে সাহায্য করলেন, অন্যদিকে আইনি পথে জাস্টিস গাঙ্গুলি সহ সিবিআইকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করলেন। মোটের উপর সিবিআইয়ের জেরা সেরে বেরিয়ে এসে অভিষেক যে আপাতত নায়ক সেটা কিন্তু রাজনৈতিক মহলের দাবি।
প্রথমত, অভিষেক জেরা শেষে বেরিয়ে এসেই বলেছে, 'পারলে সিবিআই আমাকে অ্যারেস্ট করুক।' যেমন টা তিন বছর আগে বলেছিলেন। এই বক্তব্যটুকু বর্তমানে চলা সমস্ত বিতর্কে জল ঢালার জন্য যথেষ্ট। ঠিক তেমনই এই মন্তব্য অভিষেক অনুগামীদের বাড়তি অনেকটা অক্সিজেন দেবে সেটা সবারই জানা।
দ্বিতীয়ত, 'নবজোয়ার'। নবজোয়ার নিয়ে একটু হলেও অস্বস্তিতে ছিল তৃণমূল। কারণ সিংহভাগ জায়গাতেই অভিষেক বেরিয়ে যাওয়ার পর ব্যালট নিয়ে মারপিট, ও বিশৃঙ্খলা হয়েছে, যা অভিষেকের অপছন্দ ছিল। সেকারণে অভিষেক মেজাজও হারিয়েছেন বেশ কিছু বার। কিন্তু ঘটনাচক্রে অভিষেকের এই সিবিআই হাজিরা বাড়তি প্রাণ দেবে নবজোয়ারে। সেজন্যই বোধহয় বিজেপিকে দুষলেন এবং বললেন, 'নবজোয়ারের উন্মাদনা দেখেই, চক্রান্ত করে এই যাত্রা বন্ধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি।' ফলে এখানেই নবজোয়ারের বাড়তি অক্সিজেন জোগানের কাজ সেরে রাখলেন অভিষেক।
গোটা ঘটনার ফলশ্রুতি হিসেবে শনিবার রাতে অভিষেকের হুঙ্কার যে গরুপাচার, কয়লাপাচার, শিক্ষা দুর্নীতিতে অস্বস্তিতে থাকা তৃণমূলকে অনেকটা পুনর্জীবিত করবে সেটা যেমন ঠিক। তেমনই সিবিআই, জাস্টিস গাঙ্গুলি, জাস্টিস সিনহা ও বিরোধীদের প্লটে আপাতত অভিষেক যে নায়ক সেটা কিন্তু স্পষ্ট।
সকাল থেকেই কিন্তু অভিষেককে (Abhishek Banerjee) চাঙ্গাই লেগেছে। যদিও বেশি চাঙ্গা লাগলো সিবিআই (CBI) জেরা সেরে বেরিয়ে যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টার সিবিআই জেরা সেরে বেরিয়ে তুলোধনা করলেন বিজেপিকে (BJP)। নিশানায় থাকলেন বাম-কংগ্রেস ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। শুক্রবার কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার বেলা ১১ টায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমি দিল্লির কাছে হার মানিনি তাই আমার বিরুদ্ধে এজেন্সি লাগানো হয়েছে। দিল্লির পোষা কুকুর হবো না, বাংলার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হয়ে থাকব।'
নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে এসে অভিষেক বিজেপিকে তীরে বিঁধলেন ও হাঁটলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়য়ের পথে, বললেন, 'বিজেপি নবজোয়ার যাত্রায় লোকের উন্মাদনা সহ্য করতে পারছে না, তাই এই নবজোয়ার যাত্রা বানচাল করার জন্য এত কিছু।' যেমনটা শুক্রবার মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেরার শেষে বেরিয়ে এসে প্রথমেই বললেন, 'যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাদের সময় নষ্ট। আর আমারও সময় নষ্ট।' একার্থে তিনি বুঝিয়ে দিলেন এই জিজ্ঞসাবাদের ফলাফল শূন্য। এমনকি মুখেও তিনি বললেন এই ফলাফলের কথা। বললেন, 'এই জেরার নির্যাস শুন্য। একটি অস্টডিম্ব বেরিয়েছে।'
মোটের উপর সিবিআইয়ের এই হাজিরার পর যে অভিষেকের নবজোয়ারে নতুন পাল এলো সেটা কিন্তু তিনি বুঝিয়েই দিলেন। শনিবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও তুলোধনা করতে ছাড়েন নি অভিষেক। অভিষেক সিবিআইকে টার্গেট করে বলেন, '৩ বছর আগে আমাকে ডেকেছিল, আমি আগে যা বলেছি তিন চার বছর পরে তাই-ই বলব। সিবিআই তো গরু পাচার, কয়লা পাচার, শিক্ষায় দুর্নীতির তদন্ত করছে ফলাফল কি?' তিনি আরও বলেন, 'সিবিআই তো জ্ঞানেশ্বরীর তদন্ত করছে, ১৫ বছর ধরে নোবেল চুরির তদন্ত করছে ফলাফল কি?' সব শেষে হুঙ্কারের সুরেই বললেন, 'ইডি-সিবিআই লাগবে না, অভিযোগ থাকলে তথ্য প্রমান আনুন অন্যদিকে ফাঁসির মঞ্চ তৈরী করুন।'
শনিবার অভিষেক মোদী ও অমিত শাহকেও ছাড়েন নি। নিজের দলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'তৃণমূল একমাত্র দল যে দলের মন্ত্রী থাকা কালীন গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বহিস্কার করেছে,আর চোর ও দুষ্কৃতীরা বিজেপির সম্পদ।' মোটের উপর গোটা ঘটনায় বাড়তি অক্সিজেন পাচ্ছে তৃণমূল সেটা কিছুটা স্পষ্ট শনির সন্ধ্যার পর। '
নিজাম প্যালেস (Nizam Place) থেকে বেরিয়ে হুঙ্কার অভিষেকের (Abhishek Banerjee)। প্রায় সাড়ে নয় ঘন্টা জিজ্ঞাসা বাদের পর নিজাম প্যালেস থেকে বার হলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই (CBI) সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রায় তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে তার থেকে বয়ান এবং পুরো জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও রেকর্ডিং হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রায় সাড়ে ৯ ঘন্টা পর নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে অভিষেক হুঙ্কার দেন। এবং গোটা প্রক্রিয়ায় বিজেপিকে টার্গেট করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথেই হেটে তিনি বলেন, 'নবজোয়ার' যাত্রা সফল, এটা বিজেপির সহ্য হচ্ছে না। এটার জন্যই বিজেপির চক্রান্ত এটা। পাশাপাশি শনিবার রাতে তিনি সিবিআইকে টার্গেট করে আরও বলেন, 'পারলে সিবিআই আমাকে অ্যারেস্ট করুক।'
শনিতে গ্রহ দোষ কাটছে না অভিষেকের (Abhishek Banerjee)। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল সিবিআই (CBI) হাজিরা দিয়ে হয়ত কিছুটা স্বস্তিতে থাকবেন তৃণমূলের (TMC) সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু সেটা যে কোনোমতেই হচ্ছে না সেটা স্পষ্ট হলো বেলা গড়াতেই। একদিকে যখন সিবিআই হাজিরা দিতে যাচ্ছেন অভিষেক তখন অন্যদিকে তখন অভিষেকের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
অভিষেক নিজেই সেকথা চিঠি দিয়ে জানালেন সিবিআইকে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে লাভ হল না। অভিষেকের পক্ষের আবেদন গ্রহণ করল না সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে এক ধাক্কা। অভিষেকের পক্ষের আইনজীবীকে জানিয়ে দেওয়া হল, অবকাশকালীন বেঞ্চে যাওয়ার কথা। অন্যদিকে অভিষেকের কোম্পানির ডিরেক্টরের বাড়িতে ইডির হানা। অর্থাৎ অভিষেকের কোম্পানির ডিরেক্টর অর্থাৎ সুজয় ভদ্রের বাড়িতে ইডির হানা।
সূত্রের খবর, পূর্বে কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় ভদ্রের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানেই তাঁর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই আধিকারিকরা। এবার শনিবার সকালে তাঁর বাড়িতে ফের হাজির হয় ইডি। সূত্রের খবর, তাপস মন্ডল বলেছিলেন কুন্তল ঘোষ কালিঘাটের কাকুকে টাকা দিতেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে দুজনই আপাতত গ্রেফতার। যদিও রাজ্য জুড়ে ১০ জায়গায় সিবিআই হানা দিয়েছে। সেখানে রয়েছে পার্থ ঘনিষ্ঠ সন্তুর বাড়িতে। সুজয় ভদ্রের ঘনিষ্ঠ একজনের বাড়িতেও চলছে হানা।
সুপ্রিম কোর্টে গেলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। রমেশ নন্দী বনাম পশ্চিমবঙ্গের মামলায় একদিকে যখন সিবিআইয়ের হাজিরার নির্দেশ রয়েছে অন্যদিকে তখন সুপ্রিম করতে দ্বারস্থ অভিষেকের আইনজীবীরা। সে কথা ঠিঠি দিয়ে জানালেন সিবিআইকেও।
কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, আজ অর্থাৎ শনিবার সিবিআই কলকতার দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, বেলা ১১ টার কিছুক্ষনেই মধ্যেই নিজাম প্যালেসে হাজির হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই হাজিরার জন্য তিনি শুক্রবার রাতেই কলকাতা এসেছিলেন বলে খবর। সূত্রের খবর এখন গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে কলকাতা নিজাম প্যালেস চত্বর।
সিবিআই সূত্রে খবর, তাঁদের একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। ওই টিমে একজন এসপি, ডিএসপি, ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসাররা থাকেবন। গতকালই সিবিআই তলবের পর বিজেপিকে টার্গেট করেছেন মমতা ও অভিষেক দুজনেই। শুক্রবার সোনামুখীর সভা থেকে অভিষেক টার্গেট করেন বিজেপিকে। এর আগে অবশ্য কয়লা পাচার কাণ্ডে অভিষেককে ৯ ঘন্টা জেরা করেছিল ইডি।
মনি ভট্টাচার্য: সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায়, বারবার আদালতের চক্কর কেটেও সিবিআই-ইডির থেকে রেহাই পেলেন না অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। আজ অর্থাৎ শুক্রবার সিবিআই তৃণমূল সাংসদকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে শনিবার অর্থাৎ ২০ তারিখ বেলা ১১ টার সময় নিজাম প্যালেসে হাজিরার নোটিশ পাঠায়। যদিও এই নির্দেশিকা নিজের টুইটারে পোস্ট করে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সাংসদ নিজেই। এর পরে অবশ্য এই আসরে অংশগ্রহণ করে মমতা বন্দোপাধ্যায়। শুক্রবার মমতা বন্দোপাধ্যায় অভিষেকের এই জেরা প্রসঙ্গে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি ছুড়ে দেন এবং বলেন, 'অভিষেককে বিজেপি ভয় পায়। তাই অভিষেকের এই 'নবজোয়ার'কে বানচাল করার চেষ্টা করছে। যদিও এর পাল্টা বিজেপি কটাক্ষ, 'যে কোনও বড় চোরকে পাড়া প্রতিবেশী সবাই ভয় পায়।'
শুক্রবার অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের তলবের পর মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'অভিষেককে বিজেপি ভয় পায়, এবং তৃণমূলকেও ভয় পায় ইডি-সিবিআই। ' মমতার এই মন্তব্যের পাল্টা কটাক্ষ করেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। শুক্রবার সিএন ডিজিটালকে তিনি বলেন, 'যে কোনও বড় চোরকে পাড়া প্রতিবেশী সবাই ভয় পায়। এটা তো স্বাভাবিক যে সাধারণ মানুষরা ভয়েই থাকবে যে কখন আরও বড় কিছু চুরি করে বসে। উনি যেটা বলেছেন সেটা ঠিকই বলেছেন। এরকম চোরকে বিজেপি কেন সাধারণ মানুষ সবাই ভয় পায়।'
শুক্রবার মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপিকে কটাক্ষ ও হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, 'অভিষেকের নবজোয়ার বন্ধ করার জন্য এই চক্রান্ত বিজেপি করছে। বিজেপিকে দেশ ছাড়া না করা পর্যন্ত থামব না।' এ প্রসঙ্গে অবশ্য হেসে মমতার মন্তব্য উড়িয়ে দেন বিজেপি নেতা অনুপম। তিনি বলেন, 'নবজোয়ারের তো করুন অবস্থা যেখানে তৃণমূলের কর্মীকে আরএসএস সাজিয়ে ভাইপোর কাছে পাঠানো হচ্ছিল যাতে নতুন চমক দেওয়া যায়। এই প্রোগাম একটা ফ্লপ প্রোগাম।' এছাড়া তিনি আরও বলেন যে, 'মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তিতে আমাদের হাসি পাচ্ছে। এমন একটা প্রোগ্রাম যে ভাইপো বেরিয়ে যেতেই অধিকাংশ জায়গায় ব্যালট লুট হয়েছে। অভিষেককে বিজেপি তেমন বড় নেতা মনে করে না যে তার প্রোগ্রামের বিরোধিতা করার জন্য কিছু করবে। মমতার যুক্তি হাস্যকর।'
বারবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারের এড়াতে আদালতের চক্কর, ও অবশেষে অভিষেককে বিজেপির তলব। এ নিয়ে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা অভিষেককে তুলোধনা করেন। শুক্রবার সিএন ডিজিটালকে অনুপম বলেন, 'উনি মাঝে মাঝে শহীদ সাঝবার চেষ্টা করেন, বলেন অভিযোগ প্রমান হলে ফাঁসি নিয়ে নেবেন। তাহলে জনসাধারণের করের টাকায় একবার হাইকোর্টে, ওখান থেকে থাপ্পড় খেয়ে সুপ্রিম কোর্টে, ওখান থেকে থাপ্পড় খেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে করছেন কেন? সৎ সাহস থাকলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মুখোমুখি হচ্ছেন না কেন?' যদিও এখনও অবধি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ মহল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার বেলা ১১ টায় সিবিআইয়ের তলবে হাজিরা দিতেই কলকাতা ফিরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেককে (Abhishek Banerjee) নোটিশ সিবিআই-এর (CBI)। সূত্রের খবর, আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার বেলা ১১ টার মধ্যে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে সিবিআই অফিসে হাজিরার নির্দেশ। সূত্রের খবর, আজ রাতেই নবজোয়ার সভা শেষ করে কলকাতায় ফিরছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হাজিরা সেরে তিনি ফের ২২শে মে সোনামুখী নবজোয়ার যাত্রায় যুক্ত হবেন।
কুন্তল ঘোষের চিন্তি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ইডি-সিবিআইকে কুন্তল ও অভিষেককে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় অভিষেক। তখন অবশ্য এই রায়ের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ঘটনাক্রমে অভিষেকের অভিযোগে উপরোক্ত এই মামলারই বিচারপতি বদল হয়। বিচারপতি বদল হলেও নির্দেশ বদল হয় নি। অমৃতা সিনহা অবশ্য এই মামলায় জাস্টিস গাঙ্গুলির রায় বহাল রাখেন। অভিষেক ও কুন্তল দুজনেই এই মামলায় অমৃতা সিনহার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চে গেলেও। ডিভিশন বেঞ্চ ওই মামলা শুনতে চায় নি।
যদিও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায় শুনে বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানান, সন্মান জানান, এবং বলেন, 'কেন্দ্রীয় সংস্থা দরকার নেই। এক হাতে প্রমান আনুন, অন্য হাতে ফাঁসির মঞ্চ।' যদিও তিনি বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডাকলে যাবো, কিন্তু আমাকে এই মামলায় জোর করে ঢোকানো হয়েছে, এই মামলার ত্রিসামানায় আমি নেই। কেন আমাকে এই মামলায় ঢোকানো হলো এর জন্য আদালতে গিয়েছিলাম। এখনও সুপ্রিম কোর্টের দরজা খোলা আছে।
কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায় আরও অস্বস্তিতে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সংশ্লিষ্ট ওই মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের (ED-CBI) জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতে মরিয়া হয়ে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু আপাতত বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায়ে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই। এছাড়া বিচারপতির রায়ে বড় অঙ্কের টাকা জরিমানা দিতে হবে অভিষেক ও কুন্তলকে।
আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টে। হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা অভিষেক ও কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ করেছেন। অমৃতা সিনহা আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, এই টাকা কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে। যদিও তৃণমূল সূত্রে খবর, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জেরা করতে পারবে। অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এ ঘটনার পরেই তড়িঘড়ি সুপ্রিম কোর্টে যান। এরপর এই মামলায় বদল হয় বিচারপতির। নতুন বিচারপতি হিসেবে মামলার বিচারের দায়িত্ব পান অমৃতা সিনহা। যদিও বিচারপতি বদল হবার পর হুকুম বদলায়নি। সেইমত অভিষেক আলাদাভাবে কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলাটি থেকে রেহাই চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয় নি। ওই মামলার শুনানিতে অভিষেক ও কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ঘোষণা করে বিচারপতি অমৃতা সিনহা।