আজই দেশজুড়ে কার্যকর হল সিএএ-র বিজ্ঞপ্তি। লোকসভা ভোটের আগেই এই ঐতিহাসিক ঘোষণা করা হল কেন্দ্রের তরফ থেকে। একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিএএ চালু হওয়ার কথা জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। ১২ ডিসেম্বর ২০১৯-এ রাষ্ট্রপতির সম্মতির পরই আইনে পরিণত হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। বিল পাশ হওয়ার পর চার বছর কেটে যায়। অবশেষে চালু হল সিএএ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মুখে একাধিকবারই শোনা গিয়েছে যে দ্রুত সিএএ কার্যকর করা হবে। সিএএ নিয়ে বরাবরই কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, এই আইনের উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত।
আজই দেশজুড়ে চালু হতে পারে সিএএ-র বিজ্ঞপ্তি। আর কিছুক্ষণ পরই ঐতিহাসিক ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভা নির্বাচনের আগেই বাংলায় লাগু হতে চলেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মুখে একাধিকবারই শোনা গিয়েছে যে দ্রুত সিএএ কার্যকর করা হবে। লোকসভা নির্বাচনের আগেই সিএএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে। সিএএ নিয়ে বরাবরই কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খুব শীঘ্রই দেশে কার্যকর হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। বর্তমানে দেশজুড়ে এই জল্পনাই তুঙ্গে। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের আগেই সিএএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে সরকার এই আইনের উপর কাজ করছে। এই আইনের সমস্ত নিয়মাবলী তৈরি হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার অনেক আগেই এই আইন লাগু হয়ে যাবে দেশজুড়ে।
২০১৫-র আগে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু সহ ৬টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতেই আনা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। এই আইনে অ-মুসলিম শরনার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই তালিকায় রয়েছে হিন্দু, শিখ, জৈন, বুদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টানরা। ২০১৯ সালে এই আইনটি সংসদের অনুমোদন পেয়ে তৈরি হয়েছিল। তবে এই আইনের ৪ বছর হয়ে গেলেও নিয়ম তৈরি হয়নি এতদিনে। তবে এবার রিপোর্টে দাবি করা হল, সিএএ সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই আবহে লোকসভা ভোটের আগেই তা কার্যকর করা হবে। লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগেই দেশে জারি হবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন।
হাতে আর এক মাস। এই বছর পেরোতেই লোকসভা নির্বাচন (Loksabha Election 2024)। আর তার আগেই আজ অর্থাৎ বুধবার কলকাতায় হাজির হলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপির ধর্মতলার সভাতে যোগ দিয়ে সেখান থেকেই ফের সিএএ ইস্যু উসকে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিএএ-এর বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে। ফলে তাঁকে উদ্দেশ্য করে চ্যালেঞ্জ, 'সিএএ আইন হয়ে গেছে, প্রণয়নও হয়ে যাবে।'
বুধবার অমিত শাহের উপস্থিতিতে লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে ধর্মতলায় হল বিজেপির সমাবেশ। একের পর এক ইস্যুতে তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুর্নীতির প্রসঙ্গ এনে এদিন তৃণমূলকে চাঁচাছোলা আক্রমণ করলেন তিনি। আবার ২৪-এ মোদীকে ফিরিয়ে আনার ডাকও দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর এর পরই তিনি সাফ জানিয়েছে দিয়েছেন, দেশে সিএএ লাগু হবেই। বাংলার সরকার এই আইন রুখতে পারবে না। তিনি বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের জন্য সিএএ-র বিরোধিতা করছেন। আমি বলছি, সিএএ আইন হয়ে গেছে, প্রণয়নও হয়ে যাবে।'
সরকারি পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে ফের সিএএ এবং এনআরসি (CAA NRC) বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় বলেন, 'কখনও কখনও ভাঁওতা দেওয়া হয় তুমি নাগরিক নয়। নাগরিক না হলে সে ভোট দিল কী করে? আমার ভোটে তুমি প্রধানমন্ত্রী, আর আজকে বলছো তোমাকে নাগরিক অধিকার দেব। তুমি এটা অসম্মান করছো না? ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়ে, কলেজে পড়ে, কেউ রিক্সা চালায়, কেউ দোকানে কাজ করে, কেউ দোকান চালায়, কেউ চাষের কাজ করে। তাঁরা এই অধিকার কোথা থেকে পাচ্ছে? তাঁদের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, ভোটাধিকার আছে। তাঁরা ভোটও দেয়।'
এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়েও এদিন সুর চড়া ছিল তাঁর। ভোটার লিস্টে নাম তোলার সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে মমতা বলেন, 'মনে রাখেবন এখন ভোটার লিস্টে নাম তোলার কাজ চলছে, ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এনআরসির নামে আপনাদের নাম যেন কেউ কেটে না দিতে পারে। এখন থেকে আপনাদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের নাম তুলে আসবেন। দেখে আসবেন আপনার নাম রয়েছে কিনা। অনেক সময় আপনার নাম ঠিক থাকবে, স্বামীর নাম ভুল, তাহলে সেই নাম কেটে দাও। অসমে দেখেছিলেন কত লক্ষ মানুষকে নাম কেটে বাদ দিয়েছিল, আমরা কত বড় আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। এনআরসি লজ্জা, আবার একটা পরিকল্পনা শুরু করেছে।'
তাঁর আবেদন, 'বাংলার সব মানুষ নিজেদের নাম ভোটার লিস্টে তুলুন। নয়তো বলবে আপনি এনআরসি ডিটেনশন ক্যাম্পে চলে যাবেন। তাই ভোটার লিস্টে তড়িঘড়ি নাম তুলে নেবেন, যারা নতুন ভোটার হবে তাঁরাও নাম তুলুন।' পাশাপাশি এদিন তিনি রাজ্যের বকেয়া টাকা এবং সার নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'সার নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। চাষীরা সার পাচ্ছেন না, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার। সার আমরা তৈরি করি না, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে নিই। চাহিদা মতো কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের সার দিচ্ছে না। চলতি বছর তিন বার চিঠি লেখা হয়েছে কেন্দ্রকে। কেন্দ্রের সার উৎপাদনের জায়গা আছে, আগামি দিনে সার উৎপাদনের কথা রাজ্যকে ভাবতে হবে, এভাবে অসহযোগিতা চললে। রাজনৈতিকভাবে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু একশো দিনের কাজের টাকা দেব না, সার দেব না এসব কী!'
দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীর মুখে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA)। মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) বলেন, 'দেশভাগের সময় পঞ্জাবের লোক এবং দেশের লোক যে বলিদান দিয়েছে। সেই বলিদানের স্মৃতিতে দেশে বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস চালু করেছে। দেশভাগের শিকার হিন্দু-শিখ (Hindu-Sikh) পরিবারের জন্য আমরা সিএ আইন এনেছি। ওদের নাগরিকত্ব দিয়ে একটা দিশা দেখানোর চেষ্টা করেছি। আপনারা দেখেছেন গুজরাত বিদেশে পীড়িত শিখদের নাগরিকত্ব দিয়ে বলতে চায়, শিখরা যেখানেই থাকুক, ভারত তাঁদের ঘরবাড়ি।'
এভাবেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ঘুরিয়ে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব সিপিএম। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী বলবেন এক, করবেন এক এই মানসিকতা ভালো না। বলছেন যে দেশভাগের শিকার হয়েছেন হিন্দু এবং শিখ সুতারাং এই আইন তাঁদের জন্য। কিন্তু আইনে বলা রয়েছে হিন্দু, শিখ, ক্রিশ্চান ইত্যাদির প্রসঙ্গ।'
এদিকে, গুজরাতে সংখ্যালঘু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, 'নাগরিকত্ব আইন বাংলায় করতে দেব না। এখানে সবাই নাগরিক।'
গুজরাতে (Gujarat) সংখ্যালঘু শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব (Indian citizenship)। বিধানসভা ভোটের আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (Ministry of Home Affairs) বড় চমক। ১৯৫৫-র নাগরিকত্ব আইনে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। গুজরাতের জেলা আধিকারিকদের নাগরিকত্বের শংসাপত্র দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ (CAA) লাগু না করে, ১৯৫৫-র নাগরিকত্ব আইনে নাগরিকত্ব প্রদান বিশেষ তাৎপর্য বহন করবে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ (CAA) আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে।
কিন্তু যেহেতু এই আইনের অধীনে বিধিগুলি এখনও সরকার প্রণয়ন করেনি, তাই এখনও পর্যন্ত কাউকে এর অধীনে নাগরিকত্ব দেওয়া যায়নি। এমনকি ২০১৬, ২০১৮ এবং ২০২১ সালেও, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক (MHA) গুজরাত, ছত্তীসগড়, রাজস্থান, হরিয়ানা এবং পঞ্জাবের বেশ কয়েকটি জেলার কালেক্টরদের বৈধ নথিতে ভারতে প্রবেশকারী ছয়টি সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের নাগরিকত্ব শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষমতা দেয়।
সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য সামনে এসেছে। এই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, গুজরাতের আনন্দ ও মেহসানা জেলায় বসবাসকারী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ সালের ধারা ৫, ধারা ৬-এর অধীনে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। নাগরিকত্ব বিধি, ২০০- এর বিধান অনুসারে তাঁদের ভারতের নাগরিক হিসাবে নিবন্ধন করার অনুমতি দেওয়া হবে বা তাঁদের দেশের নাগরিকের শংসাপত্র দেওয়া হবে।