অবশেষে বঙ্গ বিধানসভায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে হাত শিবিরের বিধায়ক শূন্য ছিল বিধানসভা। সেখানে দু'বছর পর সাগরদিঘিতে (Sagardighi By Poll) লাল আর সবুজ আবীরের 'অকাল হোলি'। বিধানসভা উপনির্বাচনে জয় কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের। ২২ হাজার ৯৮০ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের দেবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী। এই ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী ছিলেন বাইরন। জানা গিয়েছে, কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৮৫ হাজার ৪৩৭, পাশাপাশি শাসক দলের প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৬৩, ০০৩ এবং বিজেপির দিলীপ সাহা পেয়েছেন ২৫,৫০৬টি ভোট। পদ্ম শিবিরের ঝুলিতে ১৪.১১% ভোট। এই উপনির্বাচনে তিন নম্বরে বিজেপি।
কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৭%-এর বেশি। তৃণমূল পেয়েছে প্রায় ৩৮% ভোট। ঘটনাচক্রে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর এই আসন ফাঁকা হলে উপনির্বাচন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশের দুই রাজ্যের বিধানসভার সঙ্গে এই আসনে উপনির্বাচন আয়োজিত হয়। ভোট পড়ে প্রায় ৭৪%। প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে সম্পন্ন হয় ভোট।
এদিন ইভিএম খুলতেই ক্রমেই এগোতে শুরু করেন কংগ্রেস প্রার্থী। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই লিড ধরে রাখেন জোট প্রার্থী। কংগ্রেসের এই জয় পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে অনেকটা অক্সিজেন যোগাবে বাম-কংগ্রেসের জোট রাজনীতিকে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তথ্যসূত্র: নির্বাচন কমিশন
প্রসূন গুপ্ত: পশ্চিমবঙ্গের মানুষের নজরে ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি উপনির্বাচনের দিকে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা এই আসনের বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুতে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচন কমিশনা। লড়াই তিন প্রধান দলের মধ্যেই। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যদিকে বিজেপির দিলীপ সাহা এবং সিপিএম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ বায়রন বিশ্বাস।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর পর্যবেক্ষণে ভোট হচ্ছে সঙ্গে বুথের বাইরে থেকেছে রাজ্য পুলিস। সাধারণত উপনির্বাচনে ভোট কম হয়ে থাকে। কিন্তু বেলা ১১-টার মধ্যেই ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর। বেসরকারিভাবে জানা গিয়েছে, বেলা ১-টার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে গিয়েছে। সাগরদিঘির প্রায় ২৫ হাজার ভোটার কর্মসূত্রে রাজ্যর বাইরে, তাঁদের মধ্যে জানা গেল মাত্র ৫ হাজার ফিরেছে ভোট দিতে। এরা সবাই সংখ্যালঘু ভোটার।
এই কেন্দ্রে আড়াই লক্ষের মতো ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ শতাংশ সংখ্যালঘু অর্থাৎ এরাই এই কেন্দ্রের সংখ্যাগুরু। বাকি ৩২ শতাংশ হিন্দু ভোটার। শোনা যাচ্ছিল, হাড্ডাহাড্ডি ভোট হবে মূলত তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে। একটা সময়ে এই মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস ও বামেদের চারণভূমি ছিল। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা থেকে ভোটাররা তাদের মত-মন পাল্টিয়ে তৃণমূলকেই ভোট দিচ্ছে, ব্যতিক্রম অধীর চৌধুরী।
অধীর মুর্শিদাবাদের অবিসংবাদিত নেতা। কিন্তু সেই তিনি কিন্তু ২০২১-এ দলকে এই জেলা থেকে একটিও আসন দিতে পারেননি। আসন পায়নি বামেরাও। বিধানসভায় স্বাধীনতা উত্তরযুগে কংগ্রেস-বাম ব্যতিত কর্মসূচি শুরু হয়। এবার কিন্তু মরিয়া লড়াই দেওয়ার জন্য এই জোট এলাকার পর এলাকায় প্রচার করছে। এবার ভোট প্রসঙ্গে জানা যাচ্ছে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোটই হচ্ছে।
একটু হৈ-চৈ ছাড়া এমন ভোট কোনদিকে হেলবে এখনও বোঝা মুশকিল। তবে বেলা দুটোতে কংগ্রেস প্রার্থী জানালেন তাঁকে নাকি কোনও বুথে গেলেই ঘেরাও করা হচ্ছে। অল্প অভিযোগ বিজেপিরও, তবে অনেকটাই রিলাক্স দেবাশিস। এবার অপেক্ষা ফলের।
প্রসূন গুপ্ত: বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার আকস্মিক মৃত্যুতে সাগরদিঘির আসনটি শূন্য হয়েছে। কাজেই অন্য রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে ২৭ ফেব্রুয়ারি। ২০২১-এর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর এযাবৎকাল যতগুলি নির্বাচন হয়েছে, প্রায় সর্বত্রই বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। ফলে ধরে নেওয়াই যায় যে এই নির্বাচনেও অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল।
মুর্শিদাবাদের এই আসনে উপনির্বাচন আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি নাকি মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয় বটে। অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী প্রাক্তন তৃণমূলী এবং শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বলে রাজ্য রাজনীতিতে পরিচিত দিলীপ সাহা। ফের কংগ্রেস-বামেদের জোট হয়েছে উপনির্বাচনে। এই জোট প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস।
প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, এখানে ৬৮% সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট অতএব তৃণমূলের চিন্তা থাকার কথা নয়। কিন্তু জোট ও বিজেপি দুই দলই দাবি করছে যে এবার তৃণমূল হারবে। এদিকে, রবিবার এখানে ভোট প্রচারে আসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ভাষণে ভোটারদের সতর্ক করেন যে সাগরদিঘিতে নাকি বাম, কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে একটা গড়াপেটা খেলা হয়েছে। তিনি বলেন, 'সম্প্রতি জোটের সংখ্যালঘু প্রার্থী বায়রনের সঙ্গে শুভেন্দুর একটা বৈঠক হয়েছে।' সেই ছবিও অভিষেক জনতাকে দেখান এবং বলেন কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে আনলেই তিনি রাতারাতি বিজেপিতে যোগ দেবেন। এমনকি তিনি বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর সমালোচনা করেন।
অন্যদিকে অধীরবাবু ও শুভেন্দুবাবু দুজনই অভিষেকের এই দাবি অস্বীকার করেছেন। সে যাই হোক না কেন সাগরদিঘির ভোট কিন্তু রহস্যে ভরে রয়েছে। স্থানীয় সংখ্যালঘুদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বড় সংখ্যা বিশেষ করে মহিলা ভোটারদের অনেকেই কিন্তু আজকেও তৃণমূলের প্রতি অনুরক্ত। কিন্তু আরেকটি সংখ্যার মানুষ বলছে, এখানে বিজেপি কোনও ভাবেই জিতে পারবে না। মুর্শিদাবাদ যেহেতু অধীরের গড় সুতরাং কংগ্রেসের জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কোথাও বিজেপি মহল থেকে উঠেছে যে, এরকম একটা সাদামাঠা নির্বাচনে প্রচার করতে অভিষেক আসছেন কেন? তবে কি জেতার বিষয়ে তারা সন্দিহান? বোঝা যাবে ২ মার্চে ব্যালট বাক্স খুললে।
মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুতে ফাঁকা হয়েছে আসন। সেই আসনে উপনির্বাচন (By Poll) ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ECI)। আগামি ২৭ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের এই আসনে হবে বিধানসভার উপনির্বাচন। এবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর পর থেকে ফাঁকা থাকা মানিকতলা বিধানসভায় উপনির্বাচন চেয়ে নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। প্রায় এক বছর হতে চললো মৃত্যু হয়েছে সাধন পাণ্ডের। কিন্তু এখনও সেই ফাঁকা আসনে উপনির্বাচন ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। চিঠিতে এভাবেই সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
কিন্তু ২৭ ডিসেম্বর মাননীয় সুব্রত সাহার মৃত্যুতে ইতিমধ্যে উপনির্বাচন ঘোষণা করেছে কমিশন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লেখেন, 'মাননীয় নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমার আবেদন সাগরদিঘির সঙ্গে একইভাবে মানিকতলায় উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুক কমিশন।'
এদিকে, সাগরদিঘি বিধানশোভা উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল। এই আসনে ঘাস-ফুল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যে বিধানসভা (Assembly Vote) ভোট ছাড়াও দেশের একাধিক রাজ্যে লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচন (Assembly ByPoll)। সেই নির্ঘণ্ট বুধবার ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ECI)। জানা গিয়েছে, লাক্ষাদ্বীপের একটি লোকসভা আসনে উপনির্বাচন হবে। একইভাবে অরুণাচল প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গের একটি করে এবং মহারাষ্ট্রের দুটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অতএব একটি লোকসভা আসন এবং ৬টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি সব আসনে ভোট হবে। যদিও ভোট গণনা ২ মার্চ।
এই আসনগুলির মধ্যে রয়েছে লাক্ষাদ্বীপ (এসটি) লোকসভা আসন। বিধানসভা আসনগুলির মধ্যে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের লুমলা, ঝাড়খণ্ডের রামগড়, তামিলনাড়ুর ইরোড (পূর্ব), পশ্চিমবঙ্গের সাগরদিঘি, মহারাষ্ট্রের কসবা পেঠ এবং চিঞ্চওয়াড়।
সাগরদিঘি আসনের বিধায়ক সুব্রত সাহারত প্রয়াণে এই শূন্য বিধানসভায় উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের। তবে জাতীয় রাজনীতির চোখ অবশ্যই থাকবে উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যের দিকে।
শিবসেনা (Shiv Sena) ভেঙেছে। শাসক শিবির ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) সরকার গড়েছে একনাথ শিন্ডে (Eknath Shinde) শিবির। তারপর থেকে শিবসেনার দখল কার হাতে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আদালত পর্যন্ত ছুটেছে উদ্ধব (Uddhav Thackrey) গোষ্ঠী এবং শিন্ডে গোষ্ঠী। সেই এক্তিয়ার ঠিক করার ভার নির্বাচন কমিশনের হাতে ছেড়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। সেই মোতাবেক একনাথ শিন্ডে শিবির এবং উদ্ধব ঠাকরে শিবির, শিবসেনার দুই বিবাদমান গোষ্ঠীকেই নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ৩ নভেম্বর আন্ধেরি পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। সেই ভোটে একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠী ঢাল-তরোয়াল প্রতীকে লড়বে। এমনটাই জানিয়েছে কমিশন।
পাশাপাশি ওই ভোটে উদ্ধব শিবির মশাল প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে। সোমবার ঘোষণা করেছিল কমিশন। সেই সঙ্গে দুই শিবিরের দলের নামও চূড়ান্ত করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। উপনির্বাচনে উদ্ধব গোষ্ঠীর দলের নাম শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে)। শিন্ডে শিবিরের নাম হবে বালাসাহেবঞ্চি শিবসেনা।