
১৯৯৩ সালে 'দামিনী', ১৯৯৭ সালে 'বর্ডার', ২০০১ সালে 'গদর; এক প্রেম কথা'। সানি দেওলের (Sunny Deol) ছবি বলতে এত বছরে এই তিনটি ছবির কথা মনে পরে দর্শকের। এর মাঝে মাঝে আরও বেশ কিছু ছবিতে অবশ্য সানি অভিনয় করেছিলেন, কিন্তু সেসব ছবি দর্শকদের মনে তেমন দাগ কাটতে পারেনি। অনেকগুলো বছর পরে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা 'গদর-২'। মাত্র ২৮ দিনেই ধামাকা করল সিনেমাটি। এমনকি হিন্দি সিনেমার জগতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করল সিনেমাটি।
এর আগে বক্স অফিসে ৫০০ কোটি এবং তার বেশি আয় করে রেকর্ড করেছিল 'বাহুবলী ২'। পরবর্তীতে সেই তালিকায় যুক্ত হয় শাহরুখের সিনেমা 'পাঠান'। এবার সেই তালিকার তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিল গদর ২। যদিও সানি দেওলের সিনেমা এই দুই তালিকার প্রথম দুটি সিনেমাকে টেক্কা দিয়েছে আরও একটি কারণে। হিন্দি সিনেমা জগতে গদর ২ এমন একটি সিনেমা যা মাত্র ২৮ দিনে ৫০০ কোটি আয়ের ঘরে ছুঁয়েছে।
অনিল শর্মা পরিচালিত, সানি দেওল এবং আমিশা প্যাটেল অভিনীত সিনেমা গদর-২ একেবারে হইচই ফেলে দিয়েছে চারিদিকে। এই দুই অভিনেতাকেই বলিউড যেন ব্যর্থ বলেই ধরে নিয়েছিল। তবে সিনেমাটি হলে আসতেই যে তুফান তুলবে তা আশাও করেননি কেউ। সম্প্রতি সিনেমার সাফল্যের পার্টি হয়েছে। সেই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন শাহরুখ থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য তারকারা।
বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেই রয়েছে 'দ্য কেরালা স্টোরি' (The Kerala Story)। সুদীপ্ত সেন (Sudipto Sen) পরিচালিত এই ছবির ট্রেলার প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে। বিতর্ক। তবে এই বিতর্ককে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রমরমিয়ে ব্যবসা (Box Office Collection) করে চলেছে 'দ্য কেরালা স্টোরি'। সোমবারই ২০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করতে চলেছে এই ছবি। রবিবার পর্যন্ত এই ছবির মোট ব্যবসা করেছে ১৯৮ কোটি। ছাপিয়ে গেল ভাইজানের ছবি 'কিসি কা ভাই কিসি কি জান' ছবিকেও। এবছর 'পাঠান' ছবির পর এটিই একমাত্র ছবি যেটি ২০০ কোটির উপরে ব্যবসা করতে চলেছে।
'দ্য কেরালা স্টোরি' ছবি পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ ও তামিলনাড়ুতে প্রেক্ষাগৃহ থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরও বাকি রাজ্যগুলোতে চুটিয়ে ব্যবসা করে চলেছে। সিনেমা বিশেষজ্ঞ তরণ আদর্শ সোমবার একটি টুইট করে জানিয়েছেন, ডবল সেঞ্চুরি করেছে এই ছবি। মুক্তির ১৮ দিনেই ২০০ কোটি ব্যবসা করতে চলেছে এই ছবি। চলতি বছরে 'পাঠান'-এর পর 'দ্য কেরালা স্টোরি'-ই বেশি আয় করা ছবি। শুক্রবার ৬.৬০ কোটি, শনিবার ৯.১৫ কোটি ও রবিবার ১১.৫০ কোটি আয় করেছে এই ছবি।
DOUBLE CENTURY… #TheKeralaStory will hit ₹ 200 cr TODAY [Mon; Day 18]… The second #Hindi film to cross the coveted number in 2023, after #Pathaan [Jan 2023]… [Week 3] Fri 6.60 cr, Sat 9.15 cr, Sun 11.50 cr. Total: ₹ 198.97 cr. #India biz. Nett BOC. #Boxoffice pic.twitter.com/PIdIwl4c8J
— taran adarsh (@taran_adarsh) May 22, 2023
তবে এই ছবি নিয়ে একাধিক বিতর্ক হলেও অবশেষে ছাপিয়ে গেল সলমন খানের কিসি কা ভাই কিসি কি জান ছবিকেও। তবে এখন এটাই প্রশ্ন যে, 'পাঠান' ছবির আয়কেও কি ছাপিয়ে যেতে চলেছে এই ছবি?
'দ্য কেরালা স্টোরি' (The Kerala Story) মুক্তি পাওয়ার আগে থেকেই বিতর্ক জড়িয়েছে সিনেমার সঙ্গে।পশ্চিমবঙ্গ সহ বেশ কিছু জায়গায় সিনেমার প্রদর্শন নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পরিচালক সুদীপ্ত সেন (Sudipto Sen) সেই সিনেমা মুক্তি নিয়ে আইনি লড়াই লড়ছেন। কিন্তু যতগুলি রাজ্যে দর্শকেরা এই সিনেমা দেখতে পারছেন, সেখানের আয় রেকর্ডের দিকে এগোচ্ছে। ১৭ মে পর্যন্ত কেরালা স্টোরির বক্স অফিসে আয় (Collection) হয়েছে ১৬৫ কোটি। সিনেমা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায়, দর্শক যেভাবে হলমুখী হচ্ছেন, তাতে সিনেমার যায় আরও বাড়বে বলেই আশাবাদী পরিচালক এবং প্রযোজক সংস্থা।
সিনেমার ট্রেলার দেখেই দর্শকেরা উপচে পড়েছিলেন থিয়েটারে। সিনেমার কালেকশন যেভাবে লাফিয়ে বাড়ছে তাতে চলতি বছরে মুক্তি পাওয়া সিনেমার আয়ের নিরিখে 'দ্য কেরালা স্টোরি উপরের দিকেই থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সিনেমাটির প্রযোজনা করেছেন বিপুল অমৃত শাহ এবং পরিচালনা করেছেন বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেন।
সিনেমার মূল অভিনেত্রী আদাহ শর্মা বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তাঁর অভিনীত ১৯২০ সিনেমাটির পর এই প্রথম 'দ্য কেরালা স্টোরি'তে অভিনয়ে নজর কেড়েছেন আদাহ। সিনেমাটি মুক্তির পরেই আদাহর অধ্যাত্মিকতা আরও বেশি করে প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। অভিনেত্রী মাঝেমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে নানা ভিডিও পোস্ট করছেন। এবার নতুন চরিত্রের জন্য কোমর বাঁধছেন আদাহ।
'দ্য কেরালা স্টোরি' (The Kerala Story) নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এই সিনেমা নিয়ে সারা দেশজুড়ে এক ঝড় বয়ে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) এই ছবি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন (Sudipto Sen)। কিন্তু এত বিতর্ক-সমালোচনা-ব্যান কোনও কিছুই কাজে লাগল না। বিতর্ককে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করে চলেছে 'দ্য কেরালা স্টোরি'। জানা গিয়েছে, মুক্তির ৯ দিনের মাথায় ১০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করেছে এই ছবি।
একাধিক বিতর্কের মাঝে সুদীপ্ত সেন পরিচালিত ও আদাহ শর্মা অভিনীত ছবি 'দ্য কেরালা স্টোরি' মুক্তি পায় চলতি মাসের ৫ তারিখ। প্রথমে দেখা গিয়েছিল, এই ছবি তেমন দেখছেন না দর্শকরা। তবে ব্যাপারটা এখন পুরোটাই উল্টো। খুব তাড়াতাড়ি ১০০ কোটির ক্লাবে জায়গা করে নিয়েছে এই ছবি। ৯ দিনে মোট ১১২.৮৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে এই ছবি। শনিবারই কেরালাতেই ১৯.৫০ কোটির ব্যবসা করেছে সিনেমাটি। ফলে এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, অবশেষে দাগ কাটতে পেরেছে এই ছবি। বাংলায় ছবি নিষিদ্ধ হলেও বাকি রাজ্যে হাউজফুল এই ছবি। তবে পরিচালক আশাবাদী যে, খুব শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গেও দেখা যাবে তাঁর সিনেমা। তবে শেষ পর্যন্ত মোট কত কোটি টাকার ব্যবসা করতে চলেছে এই ছবি, সেটাই এখন দেখার।
২০০৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল আদাহ শর্মা (Adah Sharma) অভিনীত প্রথম সিনেমা 'নাইন্টিন টুয়েন্টি' (1920)। প্রথম সিনেমাতেই নজর কেড়েছিলেন অভিনেত্রী। বলিউডে হরর সিনেমায় এখনও শীর্ষস্থানে ছবিটি। এরপর 'হাসি তো ফাসি', 'কমান্ডো'র মতো সিনেমা করলেও তাঁর চরিত্র তেমন মনে রাখেননি দর্শক। সদ্য মুক্তি পাওয়া 'দা কেরালা স্টোরি' (The Kerala Story) দিয়ে আবারও যেন অভিনয় জগতে কামব্যাক করলেন অভিনেত্ৰী আদাহ শর্মা। মুক্তি পাওয়ার আগেই যে সিনেমা জর্জরিত হয়েছিল বিতর্কে। সেই সিনেমা কত টাকার ব্যবসা করতে পারল এখনও পর্যন্ত।
এক সপ্তাহ হল মুক্তি পেয়েছে 'দা কেরালা স্টোরি'। এর মধ্যে ৮০ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে সিনেমাটি। যদিও সারা ভারতে মুক্তি পেতে পারেনি সিনেমাটি। 'দা কেরালা স্টোরি হিংসাকে প্রশ্রয় দিতে পারে', এমন কারণ দেখিয়ে একাধিক রাজ্যে ব্যান করে হয়েছে ছবিটি। পরিচালক সুদীপ্ত সেন সব রাজ্যে নিজের সিনেমা মুক্তি নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন, কিন্তু যে কয়েকটি রাজ্যে কোনওরকম জটিলতা ছাড়া সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল, সেখানে ভালোই ব্যবসা করেছে সিনেমাটি। প্রধান চরিত্রে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন আদাহ।
এই ছবিটি মুক্তি পেতেই পরের সিনেমার জন্য কোমর বাঁধছেন আদাহ। তাঁর নতুন সিনেমার ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। শ্রেয়াস তালপাড়ে অভিনীত সিনেমায় দেখা যাবে আদাহকে। ছবির নাম 'দা গেম অফ গিরগিট'। আদাহকে এবার পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় দেখা যাবে। ছবিটি পরিচালনা করবেন বিশাল পান্ডিয়া। আগামী ছবিতেও আদাহ শর্মা প্রশংসা কুড়োতে পারেন কি না এখন সেইটাই দেখার।
৪ বছর পর রাজার মতো কামব্যাক! শাহরুখ খানের সাম্প্রতিক ছবি পাঠান দেখে এই মন্তব্য করছেন সিনে সমালোচকরা। ইতিমধ্যে ৫০০ কোটির গণ্ডি পেরিয়েছে সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত এই ছবির বক্স অফিস। আর জিরোর ব্যর্থতার পর তাঁকে আবার রাজার আসনে বসানোর জন্য দর্শক তথা অনুরাগীদের প্রতি কৃতজ্ঞ শাহরুখ খান। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন বলিউডের কিং খান।
এই সাক্ষাৎকারে সম্পূর্ণ অকপট ছিলেন শাহরুখ খান। তিনি জানান, 'মান্নতে একটি বাথরুম আছে, যেটায় তিনি ঢুকেছেন মানেই সকলে জানেন, তিনি কাঁদছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটেছে সেখানেই। বাড়ির বড়রা বলেন, যখন তুমি ব্যর্থ হবে, সবসময় তাঁদের কাছে যাবে যাঁরা তোমাকে নিঃশর্তে ভালবাসে। আমি বড়দের সে কথাই মেনে চলি, আমি বারবার আমার দর্শকের কাছে ফিরে আসি।'
So much love between THIS duo!🫠#Pathaan @iamsrk @TheJohnAbraham pic.twitter.com/2sT0Uqnmdm
— Yash Raj Films (@yrf) January 30, 2023
তাঁর দাবি, 'আমিও ভেঙে পড়ি, আমারও মন খারাপ হয়। কিন্তু ভগবান আমাকে একটা বারান্দা দিয়েছেন, আমি আমার দুঃখের সময়েও সেখানে আসি, আনন্দের সময়েও। এই ৪ দিন গত ৪ বছরকে ভুলিয়েছে।'
তিনি নাকি পেশা বদল করতে চেয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে শাহরুখ খান বলেন, 'আমি তো পেশা বদল করব বলে রান্নাবান্নাও শিখে নিয়েছিলাম! অতিমারি ও লকডাউনের ছুটিতে চুটিয়ে সময় কাটিয়েছেন ছেলেমেয়েদের সঙ্গে। রান্না করেছেন। এমনকি, পাঠান ছবির সেটেও কলাকুশলীদের খাইয়েছেন নিজের হাতের রান্না।'
সমস্ত বিতর্ককে পিছনে ফেলে বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে 'পাঠান'(Pathan Movie)। চার দিনে ৪০০ কোটির গন্ডি পেরিয়েছে সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত এই ছবি। মন্নতের(Mannat) বাইরে শাহরুখ অনুরাগীদের উৎসবের মেজাজ। অপেক্ষা ছিল একজনেরই, তিনি বলিউড বাদশা শাহরুখ খান(Shahrukh Khan)। রবিবার একে ছুটির দিন, তার উপর ছবি মাত্র চার দিনেই ৪০০ কোটি ছুঁইছুঁই। ছুটির দিন সন্ধ্যা থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে মন্নাতের সামনে। শুধু তার অনুগামীরাই নন,'পাঠান'এর এই সাফল্য়ে খুশি গোটা বলিউডও। যত সময় গড়িয়েছে বাদশাকে একঝলক দেখার উচ্ছ্বাস যেন বেড়েছে। অবশেষে 'দেবদর্শন'। মন্নতের ব্য়লকনিতে এলেন শাহরুখ খান। করজোড়ে ধন্য়বাদ জানালেন তার অনুগামীদের, আবার দু হাত ছড়িয়ে সেই বিখ্য়াত ভঙ্গিতেও দেখা গেল তাঁকে। পিছিয়ে নেই এই ছবির নায়িকা দীপিকা পাড়ুকোনও। মুম্বাইয়ের এক প্রেক্ষাগৃহে দেখা গেল তাঁকে। তবে দেখে চেনার উপায় ছিল না। আপাদমস্তক কালো পোশাকে ঢেকে এসেছিলেন তিনি।
একই দিনই অনুরাগীদের মাঝে 'পাঠান' ছবির দুই তারকা। ‘শাহরুখ শাহরুখ’ ধ্বনিতে গমগম করছে গোটা মন্নত চত্বর। শহরুখের পরনে ছিল কালো শার্ট, কালো ডেনিম, মাথায় ফেট্টি।‘ঝুমে জো পাঠান’-এর হুক স্টেপে পা মেলাতেও দেখা গেল তাঁকে। অন্য দিকে, মুম্বইয়ের বান্দ্রা অঞ্চলের বিখ্যাত প্রেক্ষাগৃহ গ্যালাক্সিতে দীপিকা পাড়ুকোন। নিজের পরিচয় গোপন রেখেই প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের প্রতিক্রিয়া চাক্ষুষ করলেন দীপিকা। ‘পাঠান’ ছবির জন্য প্রথম বার নিয়ম ভাঙল মুম্বইয়ের জনপ্রিয় এই সিনেমা হল। শো শুরু হয় ১২টা থেকে। সময় পাল্টে সকাল ৯ টা থেকে শুরু হল শো। ছবির শেষে ওই হলেই অনুগামীদের সাথে দেখা করলেন অভিনেত্রী।
প্রসূন গুপ্ত: শাহরুখ খানের (Shahrukh Khan) পাঠান কি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্যিক ছবি, প্রশ্ন মুখে মুখে। কী এমন ঘটনার উপর দাঁড়িয়ে পাঠান যে, সিনেমাপ্রেমীরা উন্মাদ হয়ে গিয়েছে ছবির (Pathan) একটা টিকিট জোগাড় করতে? এমন কী হলো যে প্রথম দিনেই ১০০ কোটির বেশি বাণিজ্য (Box Office collection) করলো পাঠান। এরকম হাজারো প্রশ্ন কর্পোরেট অফিস থেকে চায়ের দোকানে। এই কলকাতায় ৫০-৬০-র দশকে ৪ বছর অশোক কুমারের 'কিসমত' ছবিটি ধর্মতলার রক্সি সিনেমায় চলেছিল। দুর্দান্ত হিট হিসাবে মোটেই নয় আসলে রক্সি হাউস বিক্রি হয়ে যাচ্ছিলো তাই জোর করে সিনেমাটি চালানো হয়েছিল।
এরপর বিগ হিট 'শোলে'। জ্যোতিতে কয়েক বছর চলেছিল, অবশ্যই সুপারহিট ছবি হিসাবে। এরপর মুম্বইয়ের মারাঠা মন্দিরে 'দিলওয়ালে দুলহনিয়া যে জায়েঙ্গে' ছবিটি ২৫ বছর ধরে শ্রেফ নুন শোয়ে চলেছে। পাঠান কি এদের থেকেও বড় হিট ছবি? ওভাবে আজকের সিনেমাকে বিচার করা যাবে না।
আজকের দিনে ভারতে সিনেমা হাউসের ৯০ শতাংশ উঠে গিয়েছে। এখন ছবি চলে মাল্টিপ্লেক্সে। এই মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে অনেকগুলি স্ক্রিন বা আলাদা হল আছে। এখানে নিয়ম কানুনের বালাই নেই। ৫-৬টি শো হয় একেকটা স্ক্রিনে। যদি বিক্রির বহর কম থাকে তবে অনায়াসেই কাঙ্খিত সিনেমা পাল্টিয়ে অন্য ছবি দেখানো যেতেই পারে। ওই যুগে টিকিটের দাম ছিল ৯০ পয়সা থেকে বড় জোর ৫ টাকা। হয়তো ভাববেন তক্ষকের আমল আর আজকের আমলে মস্ত তফাত।
কিন্তু তাই বলে ৫০০ বা ১০০০ টাকার টিকিট? তুলনায় হয় না। যার পোষাবে দেখবে, না পোষালে দেখো না। কিন্তু যেভাবেই হোক দেখছেই। একটি ছবির পিছনে ১৫০-২০০ কোটি টাকা ন্যূনতম খরচ। ছবি এই স্ক্রিনগুলিতে সারা ভারতে রিলিজ করলে দু'সপ্তাহের মধ্যে টাকা উঠে লাভের মুখ দেখে ডিস্ট্রিবিউটররা। পাঠান ছবিও তাই।
এমনভাবে বিভিন্ন শহরে স্ক্রিন নিয়ে নেওয়া হয়েছে, যে কয়েকশো কোটি টাকা লাভ করবে সিনেমাওয়ালারা এই ছবি থেকে। তার অর্থ এই নয় যে শোলে বা ডিডিএলজি-র থেকে জনমানসে হিট ছবি। পাশাপাশি বাংলা ছবি ওই স্ক্রিন পাচ্ছে না বলে জনতার সেন্টিমেন্ট আদায় করতে চাইছে। কিন্তু হিন্দি বা বাংলা সব ছবিই ব্যবসা করতে নেমেছে, এখানে সেন্টিমেন্টের কোনও মূল্য নেই। মানুষ বিপুল পয়সা খরচ করে সিনেমা দেখতে যাচ্ছে তাই নিজের পছন্দই বেছে নেবে।
প্রসূন গুপ্ত: ভারতবর্ষের সিনেমার ইতিহাসে বাণিজ্যিক প্রশ্নে বহু রেকর্ড আছে। ৭০ দশকের গোড়ায় 'তালাশ' নামে একটি হিন্দি ছবিতে ১ কোটি টাকা ঢালা হয়। তখনকার দিনে এই খরচ অভূতপূর্ব। টাকা কোনওমতে প্রযোজক তুলেছিলেন বটে, কিন্তু লাভের মুখ দেখতে পারেনি। এরপর রাজ কাপুর, 'মেরে নাম জোকার' প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করে দেউলিয়া হয়ে যান। আজকের দিনে ওসব এক কোটি-দু'কোটিতে সম্ভবত বাংলা ছবিও হয় না। আজকের দিনে প্রযোজক কয়েকশো কোটি ঢালে সিনেমায়। এ বিষয়ে অগ্রগণ্য অবশ্য দক্ষিণ ভারতীয় ছবি। কিন্তু খুব পিছিয়ে নেই হিন্দি সিনেমাও। এখন নাকি অক্ষয় কুমার একটি ছবির জন্য দাবি করেন ১২০ কোটি টাকা! খুব পিছিয়ে নেই শাহরুখ খান। প্রায় ৫ বছর বাদে তাঁর নতুন ছবি 'পাঠান' রিলিজ করতে চলেছে আগামী সপ্তাহে। টিকিট বিক্রির ট্রেন্ডে পরিষ্কার ছবির বাণিজ্যে নাকি লক্ষ্মী বসতে চলেছে।
১৯৭৫-এ হিন্দি ছবির বক্স অফিসে বিপ্লব এনে 'শোলে' রিলিজ করেছিল। প্রায় ৪ ঘন্টার ছবি। সেই সময় সারা ভারতে ৫ দিন আগে থেকে টিকিট বিক্রি হতো এবং ৩টি শো মিলিয়ে প্রেক্ষাগৃহে 'হাউস ফুল' বোর্ড ঝুলতো। এরপর এরকম রেকর্ড ব্রেকিং ওপেনিং করেছে দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙে বা ডিডিএলজি।
কিন্তু সেসব ছবির টিকিট বিক্রি আজ পাঠানের কাছে ক্ষুদ্র মাত্র। এই মুহূর্তে খবর ৩টি ভাষায় রিলিজ করছে পাঠান। হিন্দি, তামিল ও তেলেগুতে এবং সারা বিশ্বে সাব টাইটেল করে রিলিজ করছে একইসঙ্গে। বিদেশে বিক্রি সব থেকে বেশি নাকি ব্রিটেন এবং জার্মানিতে। ইতিমধ্যে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। মাল্টিপ্লেক্সে মূলত সিঙ্গল স্ক্রিনে ইতিমধ্যে ৯০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। সর্বোচ্চ মূল্য শোনা যাচ্ছে ২ হাজার টাকারও বেশি। প্রথম দিনের শোতে যশরাজ ফিল্মসের ঘরে আসতে পারে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা। পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ জানান, 'পাঠান' এক বাণিজ্যিক বিপ্লব নিয়ে আসছে ভারতের বাজারে।
প্রথম সপ্তাহে বক্স অফিসে ঢুকতে পারে ৩০০ কোটি টাকার বেশি। শাহরুখ কিন্তু চুপচাপ। কী হবে বা হতে পারে, তা নিয়ে রা কাটছেন না। যদি সত্যি এ ঘটনা ঘটে, তবে ভারতীয় সিনেমায় এ এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটতে চলেছে। যদিও দর্শকদের আগাম একটিই আফসোস যে 'বেশরম রং' গানটি সেন্সর কোপে ছবিতে দেখা যাবে না।
নানারকম বিপত্তি পেরিয়ে ৫ বছর পর ফের বড় পর্দায় শাহরুখ খান (Shahrukh Khan)। ২০২৩ সালে মেগা চলচ্চিত্র 'পাঠান' (Pathan)। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে ছবির টিজার, এমনকি গান ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। দীপিকা পাডুকোনের (Deepika Padukone) পোশাকের রং ও ধরণ নিয়েও বিতর্ক। ছবি নির্মাতারা আগে থেকেই তটস্থ ছিলেন যাতে কোনওরকম বির্তক ছাড়াই বড় পর্দায় মুক্তি পায় এই ছবি।
তবে টিকিটের অগ্রিম বুকিং দেখে ভরসা পাচ্ছেন নির্মাতারা। সময়ের আগেই যেভাবে টিকিট বুকিং হয়েছে তা ইতিমধ্যেই ১ লাখ ছাড়িয়েছে। ব্যবসায়ীদের অনুমান, ছবি মুক্তির দিন ২৫ কোটি টাকার উপরে ব্যবসা করবে পাঠান। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এই ছবি বিশ্বব্যাপী ৩০০ কোটির উপর বক্স অফিসে আয় করবে বলে আশা ফিল্ম সমালোচকদের। তবে এই ছবি শুধু হিন্দিতে নয়,তামিল,তেলেগু ভাষাতেও মুক্তি পাবে। তাতে ব্যবসা আরও বাড়ার সম্ভাবনা।
ইতিমধ্যেই নব্বই হাজারের উপর টিকিট বিক্রি হয়েছে প্রথম দিনের জন্য। দেশের এক মাল্টিপ্লেক্স চেনে বিক্রি হওয়া টিকিটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯ তারিখ রাতে ৩০ হাজারেরও বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। অপর একটি মাল্টিপ্লেক্স চেন প্রায় ৩৫ হাজরের মতো আর বাকিরা প্রায় ২৫ হাজারের মতো টিকিট বিক্রি করেছে। এভাবে টিকিট বিক্রি হতে থাকলে আশার আলো দেখছেন ছবি ব্যবসায়ীরা।
ব্রক্ষাস্ত্র সিনেমা ৯-ই সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে এবং ইতিমধ্যে এই ছবি ৩৬০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। এই ছবির অনেক রিভিউ পেয়েছেন আলিয়া ভাট। তিনি জানান, একটিও রিভিউ পড়েন না। কখনও কখনও শুধু হেডলাইন পড়েন। আসলে তিনি রিভিউ পরে বুঝতে পারেন না আদৌ ছবি হিট হয়েছে কিনা। কোথায় ভালো বা কোথায় খারাপ হয়েছে, সে নিয়ে মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে। তাই তিনি সকলের সামনে ছবি সম্পর্কে ভালো-মন্দ শুনতে পছন্দ করেন।
তারঁ ছবি ভালো হয়েছে কিনা বা ভালো না লাগার কী কারণ, তাও তিনি সবাইকে প্রশ্ন করেন। তবে আলিয়ার উল্টো পথের পথিক পরিচালক করণ জোহর। তার মতে,দর্শকের থেকে যা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়, তার ফলে অনেক নতুন জিনিস জানতে পারা যায়। কিন্তু নায়িকা আলিয়া ভাট তা বিশ্বাস করেন না তিনি বরং সিনেমা সম্পর্কে দর্শকের কাছে সরাসরি জানতে পছন্দ করেন। সেটা ছবি মুক্তির প্রথম দিন হোক বা মুক্তির ১০ দিন পর হোক। আপাতত আলিয়া ভাট সন্তান সম্ভবা এবং রাজা মৌলির পরবর্তী ছবি এসএসএমবি-২৯-এ কাজ করবেন।
মুক্তির প্রথম দু'দিন হতাশাজনক পারফরম্যান্স ছিল আমির খানের (Aamir Khan) লাল সিং চাড্ডার (Lal Singh Chadda)। কিন্তু শনিবার সামান্য ঊর্ধ্বমুখী বক্স অফিস গ্রাফ (Box Office Collection)। ইতিমধ্যে ন্যূনতম দর্শক অনুপস্থিতির কারণে দেশব্যাপী একাধিক প্রেক্ষাগৃহ ছবির স্ক্রিনিং বাতিল করেছিল। কিন্তু শনিবার একধাপে ২০% বেড়ে গোটা দেশে প্রায় ৯ কোটির ব্যবসা করেছে এই ছবি।
তবে এই বক্স অফিস বৃদ্ধির শতাংশ ৪০ হলে প্রথম দু'দিনের ব্যর্থতা পুষিয়ে দিত। এমনটাই বলছেন চলচ্চিত্র সমালোচক তরণ আদর্শ। তিনি নিজের সোশাল মিডিয়া পেজে লাল সিং চাড্ডার প্রথম তিনদিনের বক্স অফিস সংগ্রহের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। সেখানেই এই তথ্য দিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, অদ্বৈত চন্দন পরিচালিত এই ছবির দেশব্যাপী মোট আয় ২৭.৭১ কোটি টাকা।
এক প্রতিবেদনে উল্লেখ, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং পূর্ব পঞ্জাব থেকেই মূলত ৪০ শতাংশ আয় হচ্ছে ছবির। অন্য দিকে মহারাষ্ট্র, গুজরাতের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত।
এদিকে, স্বাধীনতার ৭৫-এ সময় একদমই ভালো যাচ্ছে না মিস্টার পারফেকশনিস্টের। এই ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র অর্থাৎ আমির খান অভিনীত লাল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মী। তার ক্রিয়াকলাপ দেশের আইনের চোখে ‘অসঙ্গত’ বলে অভিযোগ বিনীত জিন্দাল নামে দিল্লির এক আইনজীবীর। এই দাবিতে পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরার কাছে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর সশস্ত্র বাহিনীকে ‘অসম্মান’ করেছে এই ছবি। মূলত এমনটাই অভিযোগ ওই আইনজীবীর। পাশাপাশি দাঙ্গা বাঁধানোর উদ্দেশে ইন্ধন, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা তৈরি করা, কোনও ব্যক্তির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মতো ধারায় এফএইআর দায়ের করেন তিনি।