মাত্র ১৫ দিন আগে কলকাতার গার্ডেনরিচে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে ১২ জনের মৃত্যু হয়। অন্য়দিকে বিরাটিতে বাড়ির কার্নিস ভেঙে মারা যান ১ জন। এবার উত্তর কলকাতার বৌবাজারেও ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুচিপাড়া থানা এলাকার রাম কানাই অধিকারী লেনের ৭ নম্বর বাড়ি ভেঙে বিগত প্রায় ৬ মাস ধরে প্রোমোটিং চলছে। পাশের লাগোয়া বাড়ির বাসিন্দারা এদিন সকালে ভারী কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখে ধুলোয় ভরে গিয়েছে গোটা এলাকা। পরে দেখা যায়, ৭ নম্বর এবং পাশের বাড়ির মধ্যেকার পাঁচিল এবং পিলারের একাংশ ভেঙে গিয়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রোমোটার নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা নিয়ম না মেনে কাজ করার ফলে ভেঙে পড়েছে বাড়ি।
যদিও প্রোমোটার নিযুক্ত ঠিকা সংস্থার সাইট ইন চার্জের বক্তব্য, তাঁরা নিয়ম মেনেই সাইটে কাজ করছেন। এর ফলে যদি কোনও আপত্তি ওঠে, তাহলে তাঁরা আলোচনা করতে রাজি আছেন। এদিকে বৌবাজারে বাড়ি ভাঙার খবর পেয়ে ঘটনাস্বলে যান ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে।
প্রকাশ্য রাস্তায় খুনের ঘটনায় দিনের পর দিন বাড়াচ্ছে মানুষের আতঙ্ক। এবার ইঁট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে এল খাস শহর কলকাতার বুকে, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে। খুন করা হয় বছর ২৬-এর যুবক, ফুটপাতে বসবাসকারী সঞ্জয় মল্লিককে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত সুমিতকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
অভিযোগ, আমচকা একটি ভারী পাথর দিয়ে সঞ্জয়ের মাথায় আঘাত করে সুমিত। গুরুতর জখম হন সঞ্জয়। ঘুমের মধ্যে লাঘাতার মাথায় আঘাত হওয়ায় তা ভয়ানক রূপ নেয়। তৎক্ষণাৎ স্থানীয় বাসিন্দারা আসেন, সঙ্গে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিসরাও। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘটনায় আতঙ্কিত অন্যান্য ফুটপাত বাসিন্দারাও।
যদিও পুলিস সূত্রে খবর, রাতেই পুলিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। সুমিতকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সুমিত অ্যাপ ক্যাবে করে সেখানে আসে। এসে আঘাত হানে সঞ্জয়ের ওপর। কেন এই খুন? নেপথ্য কাহিনী কী? বের হবে তদন্তে। তবে, কলকাতার মধ্যে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের মতো ব্যস্ততম জায়গায় প্রকাশ্যে এমন খুন, কলকাতাবাসীর নিরাপত্তা, সুরক্ষা নিয়ে ভাবাচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
স্ত্রীকে খুন করে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগে খাস কলকাতার বউবাজার থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিস। অভিযোগ, স্ত্রীয়ের মাথায় আঘাত করে খুন করেছিলেন তিনি। এরপর ফ্ল্যাটের মধ্যে আগুন লাগিয়ে দেন।
পুলিস সূত্রে খবর, গত ১৭ তারিখ বউবাজারে নিজের বাড়ি থেকে এক মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। নাম দীপ্তি শুক্লা। তাঁর দেহে আগুনে পোড়ার ক্ষত ছিল। দীপ্তির স্বামী সূর্যকান্ত দে জানিয়েছিলেন, ঘরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তাঁর স্ত্রী। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করতে ধরা পড়ে মাথার পিছনে ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এরপরই পুলিস তদন্তে নেমে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে পারে। গত চার মাস আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। দীপ্তি শুক্লার বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে। তবে কী কারণে স্ত্রীকে খুন করে আগুন ধরিয়ে দেন, তা এখনও জানা যায়নি। পুলিস ইতিমধ্যে অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে জেরা শুরু করেছে।
বউবাজারে (Bowbazar) ব্যবসার কাজে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ (missing) এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। দিনেদুপুরে এমন ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ব্যবসায়ীর পরিবার। ২৪ ঘণ্টা পার হলেও ব্যবসায়ীর খোঁজ না পেয়ে নরেন্দ্রপুর (Narendrapur) থানার দ্বারস্থ পরিবার। জানা গিয়েছে, নরেন্দ্রপুর থানার রাধানগর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ী।
পরিবার সূত্রে খবর, ওই ব্যবসায়ীর নাম রনজিৎ মণ্ডল। রাধানগর এলাকায় তাঁর একটি সোনার দোকান ছিল। সোমবার ১২টা নাগাদ থেকে রনজিৎ বাবুর কোনও সন্ধান পায়নি তাঁর পরিবার। এরপর মঙ্গলবার সকাল ১টা নাগাদ নরেন্দ্রপুর থানাতে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তদন্তে নামে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিস। পরিবার ও প্রতিবেশী সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি বিয়ে বাড়িতে অলংকার দেওয়ার কথা ছিল রনজিৎ বাবুর। আর সেই অলংকার আনার জন্য নগদ ২ লক্ষ টাকা ও ১ লক্ষ টাকার মতো পুরনো সোনা গলিয়ে সোমবার ১০টা নাগাদ বউবাজারের উদ্দেশ্য রওনা দেন তিনি। এরপর দুপুর ১২টার সময় স্ত্রীর সঙ্গে একবার কথা হয়। পরিবারকে জানায়, তিনি বউবাজারে খাওয়া-দাওয়া করছেন।
তারপরেই রনজিৎ বাবুর মোবাইল ফোন অফ হয়ে যায়। বিকাল থেকে সারারাত বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করা হলেও রনজিৎ বাবুর কোনও সন্ধান মেলেনি। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ নরেন্দ্রপুর থানায় ডায়রি করেন স্ত্রী মহুয়া মণ্ডল। প্রতিবেশী ও বন্ধুদের কথায়, যেহেতু রনজিৎ বাবুর কাছে টাকা-পয়সা ও সোনা-দানা ছিল, সেহেতু কোনও দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও পড়তে পারেন, এমনই সন্দেহ তাঁদের। স্বামীকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মহুয়া দেবী।
বউবাজার সুড়ঙ্গ (Tunnel Disaster) বিপর্যয়ের পর্যালোচনা বৈঠক শনিবার বিকেলে হয়েছে নবান্নে (Nabanna)। প্রথমে এই বৈঠক কলকাতা পুরসভায় আয়োজনের কথা থাকলেও পরে স্থান বদলিয়েছে। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, মেয়র, মেট্রো কর্তৃপক্ষ (KMRCL) এবং রেল বোর্ডের সদস্যরা। এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই বৈঠক শেষে বউবাজার ছোটেন মেয়র, সিপি, মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী এই পরিস্থিতির জন্য খুব উদ্বিগ্ন। তিনি বারবার স্থানীয়দের খোঁজ খবর নিয়েছেন। পাশাপাশি মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন সবপক্ষকে নিয়ে একতা হাইপাওয়ার বৈঠক করে এই সমস্যার সমাধান বের করতে। সেই মোতাবেক মেট্রো, কন্ট্রাক্টর, পুরসভা, রাজ্য প্রশাসন, কলকাতা পুলিস সবপক্ষকে নিয়ে মুখ্যসচিব বৈঠক করেন।'
তিনি জানান, এই বৈঠকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা ছিলেন। ভার্চুয়ালি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এই এলাকায় অবিলম্বে একতা ক্যাম্প খাঁটিয়ে কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে স্থানীয়দের সেটা দেখা। সেই ক্যাম্পে থাকবেন কাউন্সিলর, লোকাল থানার ওসি। পাশাপাশি KMRCL এই ধরনের কাজে আবার হাত দিলে আমাদের অন্তত আগাম জানাতেই হবে। বাড়িতে ফাটল এবং ভেঙে যাওয়ার পর মানুষকে বের না করে আগেভাগে বাসিন্দাদের স্থানান্তরিত করব।
তিনি বলেন, 'দুর্গা পিতুরি লেনে প্রায় ৭১টি বাড়ি ভেঙে পুনর্নির্মাণ করা হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই কাজ সম্পন্ন করবে KMRCL। এখান থেকে যারা বেড়িয়ে গিয়েছেন তাঁদের ৫ লক্ষ টাকা পাবেন। বিশেষ করে যারা ৩০ দিনের বেশি বাড়ির বাইরে থাকবেন তাঁরা ৫ লক্ষ টাকা আর একমাসের কম যারা বাড়ির বাইরে থাকবেন, তাঁদের ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। যারা দোকান মালিক প্রতি ১০০ বর্গফুট বিচারে তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।'
মদন দত্ত লেনের পর এবার বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট (BB Ganguly Street)! সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের (Tunnel Mishap) দ্বিতীয় দিনে বউবাজারে নতুন করে আরও ৩৪টি বাড়িতে ফাটল। দু'দিনে ওই এলাকার মোট ৪৪টি বাড়িতে ফাটল (Crack in Wall)। আজও বেশ কিছু বাড়ি খালি করার কাজ চলছে। আপাতত বন্ধ সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। ইতিমধ্যেই একপ্রস্থ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লিখিত আশ্বাস দিয়েছে KMRCL কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার মধ্যরাতে ১৮৬ বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে বাড়ির ছাদে ফাটল দেখা যায়। আগেই অন্য বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৫০ জন বাসিন্দাকে নিরাপদে সরানো হয়েছে।
পাশাপাশি বউবাজারে বাড়িতে ফাটল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক নবান্নে। বিকেলের এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের মুখ্যসচিব। বৈঠকে থাকবেন মেট্রো রেল কর্তারা। ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা। একটি সূত্রের খবর, ক্ষতিগ্রস্তদের আগামি ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। প্রতি ১০০ বর্গফুটে দেওয়া হবে এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ। তবে যারা ঘরছাড়া তাঁরা ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোনও সরকারি আশ্বাস পায়নি। সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁরা। এদিন বেলা বাড়ার পর ঘরছাড়া বাসিন্দাদের মদন দত্ত লেনে দেখা গিয়েছে। মূলত জরুরি কাগজপত্র, জামাকাপড় নিতেই সাময়িক ভাবে ফেরা।
এদিকে, বউবাজার এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলোতে নতুন করে জল ঢোকা বন্ধ হয়েছে। মাটি শক্ত করার কাজ চলছে। টিল টুইটার দিয়ে চলছে পরীক্ষা। মাটির নিচের পাশাপাশি উপর কতটা ক্ষতিগ্রস্ত, খতিয়ে দেখছে তাঁরা। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর দুটি টানেল-এর মাঝে সেফটি টানেল তৈরি হচ্ছে। রেলওয়ে সেফটি বোর্ডের নির্দেশে প্রতি ২৫০ মিটার অন্তর উর্বি ও চণ্ডী এই দুই টানেলের মধ্যে সেফটি টানেল। এই সেফটি টানেল তৈরির কাজ যখন বউবাজার অঞ্চলে চলছে, তখনই বিপর্যয় ঘটছে। এর আগে মে মাসে ওই সেফটি টানেল তৈরির জন্য যে গর্ত খোঁড়া হয়েছিল সেই সময় বিপত্তি ঘটেছিল। এবারেও একই ব্যাপার।
শুক্রবার ভোররাতে যখন সেফটি টানেল খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। নিচের দিক থেকে শক্ত মাটি খুঁড়ছিলেন মিস্ত্রিরা, সেসময় গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় হু-হু করে জল বের হতে থাকে। তাতেই ঘটেছে বিপত্তি। বাড়িতে দেখা গিয়েছে ফাটল। এই প্রেক্ষিতে একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, মেট্রো রেল সূত্রের খবর, এরপর বউবাজার এলাকায় আরও চারটে এই রকম সেফটি সুড়ঙ্গপথ তৈরি বাকি আছে। আবারও কি তবে বিপর্যয় ঘটবে বউবাজার এলাকায়? তবে সমস্যা যাই হোক, একটা স্থায়ী সমাধান চাইছেন স্থানীয় বাসিন্দা-সহ ব্যসায়ীরা। নিজের ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা ছেড়ে থাকা কতটা দুঃসহ, সেই অভিজ্ঞতা সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো।
দুর্গা পিতুরি লেনের পর মদন দত্ত লেন। পাঁচ মাস পর ফের বৌ বাজারে (Bowbazar) মেট্রোর কাজের জন্য একাধিক বাড়িতে ফাটল। শুক্রবার ভোররাতের এই ঘটনায় আতঙ্ক, হুড়োহুড়ি। হাতের সামনে যা ছিল, তা নিয়েই ভোর থেকে রাস্তায় মদন দত্ত লেনের বাসিন্দারা। অনেক বাড়িতে ফাটলের পাশাপাশি জল ঢুকতেও দেখা গিয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেট্রো কর্তৃপক্ষের (KMRCL) অনুমান, দুটি টানেলের কাজ চলাকালীন সুড়ঙ্গ দিয়ে জল বেরোনোয় এই সমস্যা। এখনও পর্যন্ত কয়েকটি দোকান-সহ অন্তত দশটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ২০১৯-২০২২, তিন বছরের মধ্যে ফাটল আতঙ্ক বারবার ঘুরেফিরে এসেছে বউ বাজারের বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট (BB Ganguly Street) সংলগ্ন এই এলাকায়। আর রাজনৈতিক স্বার্থে মেট্রোর রুট বদলকে কাঠগড়ায় তুলছে বিরোধীরা।
শুধু ফাটল বা সুড়ঙ্গের জল ঢোকা নয় ১৮৫/১ বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের একাধিক প্রিন্টিং প্রেসের চাঙর ভেঙে পড়েছে। সেই দোকানগুলো পরিদর্শন করে নিরাপত্তার খাতিরে সাময়িক ভাবে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ঘটনার খবর পেয়ে মদন দত্ত লেনে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে, স্থানীয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। প্রাথমিক ভাবে কয়েকজন স্থানীয় অবস্থান বিক্ষোভ করেন। তাঁদের ভবিষ্যৎ কী? না জানা পর্যন্ত এলাকা ছাড়বেন না, এমন দাবি তুলতে থাকেন। পরে পুলিস, মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
আপাতভাবে গৃহহীন মানুষগুলোকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের ধারে হোটেলগুলোয় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা এসে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো পরিদর্শন করবেন। পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। এমনটাই কেএমআরসিএল সূত্রে খবর। দু'সপ্তাহের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে বলেও জানায় তাঁরা। স্থানীয়রা আবার গোটা ঘটনার জন্য মেট্রোর কাজকেই দুষেছেন। এক স্থানীয়ের বক্তব্য, 'এদিন সকালে তাঁদের বাড়ির সিঁড়ি এবং ঘর ফাটলের কারণে আলাদা হয়ে যায়। ফলে প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে হয়েছে।' অনেকে আবার এক কাপড়েই বেড়িয়েছেন বাড়ি থেকে।
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে জানান, মেট্রো রেল লিখিত দিয়েছেন আমি এবং কলকাতা পুলিস যাঁদের নাম পাঠাবো, সেই মোতাবেক ক্ষতিপূরণ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'মেট্রোর সর্বোচ্চ স্তরের আধিকারিকরা এসে একটা সিদ্ধান্ত নিক। নয়তো এই জোড়াতাপ্পি কাজে স্থানীয় লোকেদের সমস্যা হচ্ছে। যে এলাকায় মূল সমস্যা ওখানে সব বাড়ি ভেঙে মেট্রো কাজ সম্পূর্ণ করে নতুন বাড়ি করে দিক। তারপর বর্গফুট বিচারে ক্ষতিগ্রস্তদের সেই বাড়িতে পুনর্বাসন দেওয়া হোক। আমরা যাদবপুরের বিশেষজ্ঞদের ডেকেছি ওরা আজ নয়তো কাল এসে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবে।'