
এগরা (Egra) বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃতের (Dead) সংখ্যা বাড়ল। শুক্রবারই কটকের হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মূল অভিযুক্ত ভানু বাগের (Bhanu Bagh)। এবার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও এক আহত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম রবীন্দ্র মাইতি। জানা গিয়েছে, তাঁর শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছিল। উল্লেখ্য, এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এরপর ভানু বাগ-সহ মোট দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১।
জানা গিয়েছে, গত তিন দিন ধরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এগরার রবীন্দ্র মাইতি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। শেষপর্যন্ত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়। এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে খবর। এখনও এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পিঙ্কি মাইতি নামে আরও একজন। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে খবর।
কটকের হাসপাতালে মৃত্যু (Dead) এগরা বাজি কারখানা বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত (Accused) ভানু বাগের (Bhanu Bagh)। বৃহস্পতিবার ওড়িশার কটকের হাসপাতালে ভানুর খোঁজ পায় সিআইডি। সিআইডি সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে ভানুর শরীরের ৮০ শতাংশই অগ্নিদগ্ধ হয়ে যায়। ওই অবস্থায় ছেলের বাইকে চেপে চম্পট দেয় ভানু। বৃহস্পতিবার তার ছেলে পৃথ্বীজিৎ বাগ ও ভাইপো ইন্দ্রজিৎ বাগকেও গ্রেফতার করে সিআইডি। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার কাঁথি মহকুমা আদালত ভানুর ভাইপো ইন্দ্রজিৎকে আট দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
ইতিমধ্যেই শুক্রবার সকালে মৃত্যু হল ৩০ বছরের বাজি ব্যবসায়ী অর্থাৎ বাজিগর ভানু বাগের। ফলে এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডে যে নতুন মোড় নিল তা বলাইবাহুল্য। সিআইডি সূত্রে খবর, তার শরীরের ৮০ শতাংশই অগ্নিদগ্ধ থাকায় তাঁর থেকে কোনও বয়ানই নেওয়া সম্ভব হয়নি। এমনকি তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে রাজ্যেও আনা সম্ভব হয়নি। তাঁর শারীরিক অবস্থার একটু উন্নতি হলে তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে রাজ্যে আনা হবে বলে মনে করা হয়েছিল।
এগরার (Egra) বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ (Bhanu Bagh), তাঁর ছেলে ও ভাইপোকে বৃহস্পতিবার সকালেই গ্রেফতার করেছে সিআইডি (CID)। ওড়িশার কটকের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ভানু। এ ঘটনায় ভানুর ভাইপোকে ৮ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল কাঁথি মহকুমা আদালত।
বৃহস্পতিবার ভানুর ভাইপোকে তোলা হয় কাঁথি আদালতে। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ইন্দ্রজিৎ এগরাতেই ছিল।
উল্লেখ্য, এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু বাগ। কটকের রুদ্র নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণের জেরে ভানুর শরীরের ৭০ শতাংশের বেশি পুড়ে গিয়েছে। আহত অবস্থাতেই হাসপাতালে ভর্তি ছিল ভানু ও তার ছেলে ও ভাইপো। ওড়িশা থেকে সবাইকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সিআইডি সূত্রে খবর, শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে ভানুকে রাজ্যে আনা হবে।
সিআইডির (CID) হাতে গ্রেফতার (Arrest) এগরায় বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ (Bhanu Bagh)। বৃহস্পতিবার সকালে ওড়িশা থেকে গ্রেফতার করা হয় ভানু এবং তাঁর পুত্র বিশ্বজিৎ বাগকে। সূত্রের খবর, কটকের এক হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি ছিলেন ভানু। সেখান থেকেই ধরা হয়েছে তাঁদের। সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছেন ভানুর ভাইপো ইন্দ্রজিৎ বাগও। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ এগরা ১ নং ব্লকের সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিকুল গ্রামের এগরার বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় ন’জন নিহত হন। সেই কারখানার মালিক ভানু ওরফে কৃষ্ণপদ বাগ ঘটনার পর থেকেই ছিলেন পলাতক।
বৃহস্পতিবার সকালে পাকড়াও হয় ভানু। সূত্রের খবর, ভানু ৩০ বছর ধরে বাজি তৈরির সঙ্গে যুক্ত। ক্রমেই ভানু হয়ে ওঠেন এলাকার ‘সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী’দের অন্যতম। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ধীরে ধীরে শাসকদলের নেতাদের সঙ্গে ভানুর ওঠাবসা শুরু হয় বলে দাবি স্থানীয়দের।
মঙ্গলবারের বিস্ফোরণের ঘটনার পর কার্যত রাজ্য-রাজনীতির ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে এগরা। অন্য দিকে, এগরায় বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দমকলের থেকেও রিপোর্ট নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার বিস্ফোরণণ্ডের কিছুক্ষণ পরেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান তিনি। একই সঙ্গে স্থানীয় পুলিসের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভানু বাগকে কালীপুজোর সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তিনি জামিন পেয়ে যান। কী ভাবে তিনি জামিন পেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ওড়িশা সীমানার কাছাকাছি বেআইনি ভাবে চালানো হচ্ছিল ওই বাজি কারখানাটি। বিস্ফোরণের পর কারখানা মালিক ওড়িশায় পালিয়ে গিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
বাজিসম্রাট কোথায়? গোটা পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলায় এখন এই একটাই প্রশ্ন। মঙ্গলবারের পর বুধবারও এগরারা বেআইনি বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগের খোঁজে পুলিস। কিন্তু কীভাবে বাজিসম্রাট হলেন ভানু? এলাকার মানুষের দাবি, বাজির মশলা বানানো ছিল তাঁর বাঁ-হাতের খেলা। ভানুর তৈরি বিভিন্ন বাজি জেলার গণ্ডি পেরিয়ে পড়শি রাজ্য থেকে সুনাম এনেছে। একাধিক পুরস্কারও পেয়েছিলেন ভানু বাগ (Bhanu Bagh)। আজ তাঁকেই খুঁজছে পুলিস। এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়েছে বোমস্কোয়াড। তদন্ত শুরু করেছে সিআইডিও (CID)।
গ্রামবাসীদের দাবি, বাজিই ছিল ভানুর সবকিছু। পাঁচ বছর আগে প্রথমবার বিস্ফোরণে স্ত্রী ও ভাইকে হারিয়েছিলেন মঙ্গলবারের ঘটনার মূল অভিযুক্ত। তাতেও পিছিয়ে আসেনি। সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার নতুন করে শুরু করেছিলেন বাজির ব্যবসা। পঞ্চায়েতের উপর চাপ তৈরি করে কারখানার রাস্তা পাকা করিয়েছিলেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কারখানায় মোট ৩০ থেকে ৩২ জন কাজ করলেও ঘটনার সময় ১৮ থেকে ২০ জন কাজ করছিলেন। যার মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা।
তবে ভানু তৃণমূল করতেন, এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছে শাসক দল। ভানুর নাম জড়িয়ে তৃণমূলকে ছোট করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই দাবি করেছেন জেলার নেতারা। স্থানীয় বিধায়ক তরুণ মাইতি জানিয়েছেন, পুলিসকে আরও কড়া হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভানু গ্রেফতার হবে বলেই দাবি বিধায়কের। ওদিকে ভানুর খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। এছাড়া এ ঘটনায় পুলিসের করা এফআইআর নিয়ে উঠছে অভিযোগ। সূত্রের খবর, এতবড় একটা বিস্ফোরণেও কেন বিস্ফোরক দাহ্য মজুদের ধারা দিলো না পুলিস। বিরোধীদের অভিযোগ এনআইএ তদন্ত থেকে বাঁচতে এমনটা করছে পুলিস।