কাটছেই না ডেঙ্গির ভয়াবহতা। বেলেঘাটা আইডি হাপসপাতালে একই দিনে ৩ জন চিকিৎসাধীন ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে ফের তোলপাড় কলকাতা। সম্প্রতি ডেঙ্গি নিয়ে কড়া হয়েছে নবান্ন। আরও কড়া হয়েছে কলকাতা পুর-সংস্থা। সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ শুক্রবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, মৃতের মধ্যে ২ জন বনগাঁ এবং ১ জন ভাঙড়ের বাসিন্দা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বনগাঁর বাসিন্দা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত ওই ব্যক্তিদের নাম সঞ্জয় রায়(৩৪), সুস্মিতা বিশ্বাস(৩৭) এবং ভাঙড়ের বাসিন্দা ফতেমা বিবি(৫৬)র মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গি সংক্রমণ সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। সে সময় পাল্লা দিয়ে রাজ্যে বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুও। পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুক্রবার অবধি রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ৫০ হাজার টপকে গিয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যুও ৫০ পার। এ অবস্থায় ফের রাজ্যে একই দিনে ৩ জনের মৃত্যুতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য ভবনের।
কাজের তাগিদে কেরলে গিয়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant worker)। কেরলে (Kerala) থাকাকালীনই জ্বরে ভুগছিলেন। রাজ্যে ফিরে আবারও জ্বর আসায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। চিকিৎসকেরা নিপা ভাইরাস (Nipah virus) সন্দেহে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। যদিও বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের সুনির্দিষ্ট কোনও রকম উপসর্গ নেই। কিন্তু জ্বর, গা-হাত-পা ও গলায় ব্যাথা ও বমি ভাব থাকায় ঝুঁকি নিতে নারাজ স্বাস্থ্য দফতর। জানা গেছে ওই যুবক পূর্ব বর্ধমানের (East Bardhaman) বাসিন্দা। গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই যুবকের দুই সঙ্গীর কেরলেই অজানা জ্বরে মৃত্যু হয়েছে। তাই, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আজ, বুধবার মেডিক্যাল টেস্ট করা হবে। তারপর জানা যাবে ওই যুবক নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা।
জানা গিয়েছে, এই যুবকের প্রথম জ্বর আসে। তখন দু'দিন তিনি এনাকুলাম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ছুটি পেয়ে রাজ্যে ফেরার পরে ১০ তারিখ ফের জ্বর আসায় পরের দিন তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসোলেশনে রেখেই চলছিল চিকিৎসা। মঙ্গলবার তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কেউ নিপাতে আক্রান্ত হননি। ওই যুবকও স্থিতিশীল রয়েছেন।
ডেঙ্গির (Dengue) পাশাপাশি চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়াও (Malaria)। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু (Death) হল ৭১ বছরের এক বৃদ্ধের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাকসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বিধাননগরের দক্ষিণ দাড়ির বাসিন্দা ওই প্রবীণ ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫ই সেপ্টেম্বর ভর্তি হয়েছিলেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। আর ৬ই সেপ্টেম্বর বুধবার মৃত্যু হয় তাঁর।
এর আগে দক্ষিণ দমদমে ডেঙ্গির বলি হয়েছে ৪ জন। এবার দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ম্যালেরিয়ার বলি ১। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম রামবিদ্যা গুপ্ত। মৃত ব্যক্তি পেশায় হকার ছিলেন। তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে হলেও কাজের সূত্রে তিনি ও তাঁর পরিবার এখানে থাকতেন। প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ওই ব্যাক্তির।
এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, চলল গোলাগুলি (Fire), গুলিতে আহত এক ব্যক্তি। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিস (Police) বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছে বলে খবর। পুলিস জানিয়েছে, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গুলিও চলেছে। যদিও পুলিস এই গুলি চালানোর বিষয় নিয়ে কিছু বলেনি। এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
অভিযোগ, বেলেঘাটার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের অফিসে ভাঙচুর চালায় একদল লোক। শুধু পার্টি অফিস নয়, গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। রাজুর অভিযোগের তির এলাকার তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল। কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে? রাজুর কথায়, ‘গত ৪-৫ ধরে এমন অশান্তির পরিস্থিতি রয়েছে এলাকায়। একাধিক অভিযোগও জমা পড়েছে। যাঁরা বিজেপি থেকে তৃণমূলে এসেছে, তাঁরাই এই ঘটনা ঘটাচ্ছে।’ পাল্টা রাজুর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে বিরোধী গোষ্ঠী।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে থমথমে হয়ে আছে এলাকা। দোকানপাট বন্ধ, রাস্তায় লোক নেই বললেই চলে। এলাকায় রয়েছে বিশাল পুলিস বাহিনী। টহল দিচ্ছে তারা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করে পুলিস। এ ঘটনা নিয়ে এলাকার বিধায়ক বলেন, ‘ঘটনাটা সত্যিই। সকলেই ভোটে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেন। আমি পুলিসকে বলেছি যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।’ এখন দেখার পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হয়।
নতুন বছরে বাংলায় করোনায় প্রথম মৃত্যু। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ৭ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ট্যাংরার বাসিন্দা গিরিশ চন্দ্র দাসের। গিরিশবাবু দাস ট্যাংরা সেকেন্ড লেনের বাসিন্দা। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। ৫ জানুয়ারি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। গত বছর ২০ ডিসেম্বর করোনায় এই রাজ্যে শেষ মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
এদিকে, ওমিক্রনের নতুন উপপ্রজাতি উদ্বেগের কারণ হতে চলেছে। এমনটাই আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। চিনের করোনা পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। ইংরাজি নতুন বছরে সে দেশে সংক্রমণ বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল একটি মার্কিন সংস্থা। লন্ডনের এক গবেষণা সংস্থার দাবি, জানুয়ারির শেষ দিকে চিনে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছুঁতে পারে ২৫ হাজার। ২৩ জানুয়ারি করোনায় মৃত্যুর হার শিখর ছুঁতে পারে।
দেশে ফের একবার বাড়ল করোনার দৈনিক সংক্রমণ। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলিতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। চিনে প্রতিদিন প্রায় দশ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে ভারতে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে দিকে নজর রেখে একগুতচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
এদিকে, গত ২৬ তারিখ সোমবার, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এক বিদেশিনীকে। ভর্তির দিন থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিনই আরটিপিসিআর রিপোর্ট করা হয়। যেখানে তাঁর তৃতীয় রিপোর্টটি নেগেটিভ আসে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এরপরই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। ওই বিদেশী মহিলার শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্ট BF.7 জীবাণু বাসা বেঁধেছে কিনা, তা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পরই বোঝা যাবে। সেই রিপোর্ট পাওয়া যাবে সাত দিন বাদে।
উল্লেখ্য, ওই ব্রিটিশ মহিলা কুয়ালালামপুর থেকে কলকাতা হয়ে বুদ্ধগয়া যাচ্ছিলেন। রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাঁকে কলকাতা বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়। ওই বিমানে থাকা বাকি যাত্রীদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
গত প্রায় কয়েক বছর ধরেই রাজ্যজুড়ে মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে ডেঙ্গি (Dengue)। চলতি বছরেও একাধিকবার সামনে এসেছে বেলাগাম ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়া, কিংবা মশা বাহিত এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা। মূলত বর্ষাকালে (Monsoon Season) প্রকোপ বৃদ্ধি পায় এই মশাবাহিত মারণ রোগের। কিন্তু এবার বর্ষা (Monsoon) পেরিয়ে ডিসেম্বরেও কমছে না ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। একই সঙ্গে শীত চলে এলেও কমছে না ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা। এই নিয়ে পরপর দু'দিন দুই ডেঙ্গি আক্রান্তর মৃত্যুর খবর সামনে এল খোদ কলকাতার (Kolkata) বুকে। বেলেঘাটা আইডিতে (Beleghata ID Hospital) মৃত্যু হয়েছে দুই ডেঙ্গি আক্রান্তের। একজন বয়স ৫২-র বিন্দুদেবী দাস। তিনি বেলেঘাটারই রাজা রাজেন্দ্র লাল মিত্র রোডের বাসিন্দা বলে খবর। পরিবার সূত্রে খবর, ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় জন হলেন বয়স ৬২-র কমলা বসাক। তিনি রাজারহাট গোপালপুর পুরসভার চণ্ডীবেড়িয়া সারদা পল্লী এলাকার বাসিন্দা। ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। দুজনের ডেথ সার্টিফিকেটেই ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই নিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত চলতি বছরে ১০২ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। এদিকে ফের রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমত কপালে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্য দফতরের কপালে। কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে একাধিকবার ডেঙ্গি বিরোধী অভিযান এবং নানা রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও কেন এই ঘটনা, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনা চিংড়িঘাটায় (chingrighata)। আহত এক সিভিক ভলান্টিয়ার (Civic Volunteer)-সহ মোট ৮ জন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ নিকো পার্ক (Nico Park) থেকে বাইপাসের দিকে যাওয়ার সময় একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরপর কয়েকটি গাড়ি ও পথচারীদের ধাক্কা মারে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়রাই হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই গাড়ির চালককে আটক করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিস (police)।
স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি প্রাইভেট চারচাকা গাড়ি নিকো পার্কের দিক থেকে চিংড়িঘাটার দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরপর কয়েকটি গাড়িকে ধাক্কা মারে। বেশ কয়েকজন পথচারীকেও ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। এরপর যখন চিংড়িঘাটা মোড়ে সিভিক ভলান্টিয়ার আটকাতে যায় তাঁকেও ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় মোট ৮ জন আহত হয়েছেন। আহত সিভিক ভলেন্টিয়ার-সহ আহত দু'জনকে বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিদের চিত্তরঞ্জন ও এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কলকাতা পুলিসের (Kolkata Police) বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগে সরব পণ্ডিত রশিদ খানের স্ত্রী। প্রগতি ময়দান থানার ব্যবহারে বীতশ্রদ্ধ গায়কের পরিবার, এমনটাই জানা গিয়েছে। খবর, রশিদ খানের গাড়িকে বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ডে (Beleghata Traffick Guard) আটকানো হয়। হেনস্থা করা হয় গায়কের গাড়ির চালককে। লাইসেন্স কেড়ে চালককে প্রগতি ময়দান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ডেকে পাঠানো হয় রশিদ খানের (Rashid Khan) স্ত্রী জয়িতা বসু খানকে। থানায় চরম দুর্ব্যবহারের মুখে পড়েন জয়িতা দেবী। এখানেই শেষ নয়। এরপর নাকি পণ্ডিতজিকে ডেকে পাঠিয়ে দুর্ব্যবহার করে প্রগতি ময়দান থানা। সরাসরি এমনটাই অভিযোগ প্রগতি ময়দান থানার বিরুদ্ধে করেছেন রশিদ খানের স্ত্রী। এমনকি ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট থানার বিরুদ্ধে।
ঠিক কী হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে? ক্যালকাটা নিউজকে জয়িতা বসু খান বলেন, 'মঙ্গলবার খান সাহেবের এক অনুষ্ঠানের পর রাত সওয়া দুটো নাগাদ বাড়ি ফেরেন। তারপর পণ্ডিতজির কয়েকজন সহশিল্পীকে বিমানবন্দরে ছাড়তে যায় আমাদের একটি গাড়ি। সেই গাড়িকে বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ডে আটকানো হয়। পরপর অনেকগুলো গাড়ি, বাইক দাঁড় করানো ছিল, তাঁদের থেকে ঘুষ-টাকা নেওয়া হচ্ছিল। গাড়ির ভিতর থাকা পণ্ডিতজির সহশিল্পীকে উবের করে এয়ারপোর্ট পৌঁছতে হয়।'
তাঁর অভিযোগ, 'আমাদের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন চেক করার পর যখন উস্তাদজির নাম আসে, তখন দু'হাজারের জায়গায় ছয় হাজার টাকা দাবি করে পুলিস। আমাদের ম্যানেজার যখন বলে টাকা নেই, তখন ড্রাইভারের থেকে জোড় করে লাইসেন্স কাড়েন উপস্থিত এক পুলিসকর্মী। তাঁর সঙ্গে একজন সার্জেন্টও ছিলেন। কে সেই পুলিস, জ্যাকেট পরা থাকায় দেখা যায়নি। এরপর অপরিচিত একজন আমাদের গাড়ি প্রগতি ময়দান থানায় নিয়ে আসেন। গাড়ির চাবি বাজেয়াপ্ত করে আমাদের চালককে লকআপে ঢুকিয়ে রাখা হয়। পাশাপাশি আমাদের ম্যানেজারকে হুমকি দেওয়া হয় আমাদের উপর কথা বললে তোমাকেও পুলিসে ধরিয়ে দেব।'
জয়িতা দেবী বলেন, 'আমাকে ম্যানেজার ফোন করলে ফোনে ডিউটি অফিসার অকথ্য ভাষায় আমাকে বলেন কিছু বলতে চাইলে থানায় আসতেই হবে। অতএব আমি আর আমার ছোট মেয়ে ভোর ৪টে ১০ নাগাদ প্রগতি ময়দান থানায় যাই। থানায় গিয়ে পুলিসের মুখে যে ভাষা শুনি তা আমার ধারণা বাইরে। কলকাতা পুলিস এমন ভাষা বলবে, শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। ওই থানার ছোট বাবুকে যখন জিজ্ঞাসা করি কোন আইনে গাড়ি বাজেয়াপ্ত? উনি খারাপ টোনে বলেন যা জানার কোর্টে গিয়ে জানবেন। কেউ মহিলাদের সঙ্গে এভাবে কথা বলতে পারে জানা ছিল না।'
রশিদ খানের পরিবারের আরও অভিযোগ, 'খান সাহেবের নাম শুনে থানার ছোট বাবু বলেন আপনার ড্রাইভার গাড়ি চালাবে না, অন্য কেউ গাড়িটা চালিয়ে নিয়ে যাবে। যখন বলা হয় আপনি তো এই কথাটা আগে বলেননি। তখন উনি আরও রেগে যান। থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয় খান সাহেবকে। অত ভোরে ঠাণ্ডার মধ্যে খান সাহেব থানায় এলে তাঁকে কেউ বসার জন্যও বলেনি। এমনকি উনি নমস্কার করলে, কেউ প্রতি নমস্কার করে সৌজন্য দেখায়নি। এরপর পণ্ডিতজিকে গাড়ি নিয়ে যেতে বললে, উনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন এবং বলেন সকালে আইনজীবীর সঙ্গে এসে কথা বলবেন।'
রশিদ খানের স্ত্রীয়ের দাবি, 'এই ধরনের লোকের একটা শাস্তি হোক। এঁদের জন্য কলকাতা পুলিসের ভাবমূর্তি খারাপ হয়। দু'জনের বিরুদ্ধে আমি চাই কড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থা হোক। যে পুলিস অফিসাররা সহযোগিতা কাকে বলে জানে না, এঁরাই কলকাতা পুলিসের নাম খারাপ করছে। এঁদের একটা শাস্তি হোক।' যদিও এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রগতি ময়দান থানার পুলিস কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) মামলায় ফের সিজিও কমপ্লেক্সে (CGO Complex) হাজিরা দিলেন তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল। প্রায় আড়াই-তিন ঘণ্টা তিনি ছিলেন সিজিও কমপ্লেক্স। বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনের ঘটনায় তাঁকে (TMC MLA Paresh Pal) দ্বিতীয়বার তলব করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই তলবে সাড়া দিতেই বেলেঘাটার বিধায়কের এই হাজিরা। মূলত অভিজিৎ খুনে উসকানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। বিজেপি (BJP) কর্মীর পরিবার সেই অভিযোগ করেছে। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসার সবকটি মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে।
এদিন সিজিও থেকে বেড়িয়ে বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য, 'রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা চলছে। তবে সিবিআই যতবার ডাকবে, ততবার আসব। বেলেঘাটায় কাউন্সিলর বলুন বা বিধায়ক সব আমাদের। তাই ওরা কাউকে তো অভিযুক্ত করবেই।' মঙ্গলবার পরেশ পালকে অভিজিতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দী প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।'
যদিও পরেশ পালের গ্রেফতারির দাবিতে সরব অভিজিৎ সরকারের দাদা। তাঁর দাবি, 'এই খুনি-আসামি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এরপর তো আমি খুন হয়ে যাব। ভবিষ্যতে আরও মানুষ খুন হবে।' তিনি জানান তদন্তে সিবিআই নিশ্চয় আরও তথ্য প্রমাণ হাতে পেয়েছে তাই আবার ডেকেছে। ভাইয়ের মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে পরেশ পালের নাম রয়েছে।
শহর কলকাতায় ভর দুপুরেই বোমা বিস্ফোরণের (bomb blust) ঘটনায় আতঙ্কিত বেলেঘাটাবাসী। ঘটনায় গুরুতর আহত (injured) হন দুজন। তাঁদের মধ্যে একজন লোকমান মোল্লা, ও অন্যজন বীরেন দাস। তবে ঘটনার পর থেকেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠে আসছে। মঙ্গলবার বোমা কাণ্ডে আহত মিস্ত্রি লোকমান মোল্লাকে এনআরএস (NRS) হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁকে দঃ২৪ পরগনার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে প্রোমোটার বীরেন দাসকে টাকা দিয়ে এনআরএস হাসপাতাল (hospital) থেকে নার্সিং হোমে নিয়ে গিয়েছে পরিবার বলে জানিয়েছে, পরিবারের সদস্যরা।
জানা যায়, সোমবারের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন লোকমান মোল্লা, কিন্তু তাঁকে এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা সঠিক দেওয়া হচ্ছিল না। যে কারণের দীর্ঘক্ষণ ধরে হাসপাতালের বারান্দার ট্রলির উপরেই পড়েছিলেন লোকমান মোল্লা। অবশেষে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ার কারণের জন্য মধ্যরাতেই তাঁর পরিবার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করে।
তবে এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে একটাই, কীভাবে সরকারি হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনের এই রোগীকে দীর্ঘক্ষণ ধরে হাসপাতালের বারান্দায় এক কোণে টলির মধ্যেই রক্তক্ষরণ অবস্থায় ফেলে রাখা হল? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকরা কেন লোকমান মোল্লার অস্ত্র প্রচার করার ব্যবস্থা করলেন না।
বিহার পুলিসের (Bihar Police) নজর এড়িয়ে ডাকাতিতে অভিযুক্ত (Dacoity) এক বন্দি হাসপাতাল থেকে চম্পট দিল। মতিহারি সদর হাসপাতালের এই ঘটনায় সাসপেন্ড দুই হোমগার্ড। পলাতক বন্দির খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে জেলা পুলিস। জানা গিয়েছে, বাংলা এবং বিহার দুই রাজ্যেই ডাকাতির জন্য অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি। বেলেঘাটার এক আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতির পর কলকাতা পুলিস (Kolkata police) তাকে গ্রেফতার করেছিল। সেবারও কোর্টে তোলার আগে তাকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কলকাতার পুলিসের হাত ফসকে পালায় এই অভিযুক্ত। দীর্ঘ তল্লাশির পর বিহারে খোঁজ মেলে তার।
কলকাতা পুলিসের একটি দল বিহারে গিয়ে সেই অভিযুক্তর হেফাজত চাইলে, তাঁদের খালি হাতে ফিরতে হয়। সেই সময় বিহার পুলিস, কলকাতা পুলিসকে জানায় এই রাজ্যের ডাকাতিতে অভিযুক্ত সেই ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়ে জেরার প্রয়োজন রয়েছে। সেই থেকে মতিহারি জেলা পুলিসের হেফাজতে এই অভিযুক্ত। কিন্তু সম্প্রতি শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে চিকিৎসাধীন করা হয়েছিল। পাশাপাশি হাসপাতালে বেডের সঙ্গে তাকে বেঁধে রেখে নজরদারির জন্য রাখা হয়েছিল দুই হোমগার্ডকে। কিন্তু শুক্রবার সকালে তারা দেখেন বিছানার দড়ি কাটা, পলাতক সেই বন্দি। এরপরেই চকিয়া থানায় খবর যায়। ঊর্ধ্বতন অফিসাররা এসে খোঁজাখুঁজি করেও কোনও হদিশ মেলে না ওই অভিযুক্তর।
এরপর আলাদা করে এফআইআর দায়ের করে মতিহারি জেলা এবং রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি। পাশাপাশি কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ওই দুই হোমগার্ডকে ক্লোজ করে একবছর ডিউটি না করার শাস্তি দেওয়া হয়েছে।