প্রথমে সামনে এসেছিল খড়দহ থানার পুলিসের (Khardaha Police) রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে লরি ও ট্রাক থেকে টাকা তোলার ছবি। এবার সরাসরি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল খড়দহ থানার পুলিসের বিরুদ্ধে। শনিবার এমনই এক অভিযোগ করা হয় ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারের দফতরে।
অভিযোগ, সোদপুর সুখচর গীর্জা এলাকার বাসিন্দা এক যুবক রাস্তায় বিস্কুট কিনতে বেরিয়ে পুলিসের নিগ্রহের শিকার হন। এমনকি গোটা রাত থানার লকআপে কাটাতে হয় তাঁকে। শুধু তাই নয় যুবকের ও তাঁর পরিবারের মারাত্মক অভিযোগ, তাঁকে মারধর করা হয় এবং তাঁর থেকে আড়াই হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে নেওয়া হয়। এই অভিযোগ নিয়ে শনিবার ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারের দ্বারস্থ হয় সোদপুর সুখচর গীর্জা এলাকার পাঁজা পরিবার।
পরিবার সূত্রে দাবি, পাঁজা পরিবারের সন্তান সমন্বয় পাঁজা গত ১৪ তারিখ রাতে পাশের বাড়ি থেকে বিস্কুট আনতে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় খড়দহ থানার একটি টহলদারী অটোতে দুইজন সিভিক ভলেন্টিয়ার ও একজন অফিসার এসে পৌঁছায় ওই স্থানে। এরপরেই শুরু হয় নিগ্রহের পর্ব। সমন্বয়ের দাবি, অটোর মধ্যে থেকে কেউ তাঁর মুখে বারবার টর্চ মারতে থাকেন। তখন সে বলেন যে, আলো তাঁর মুখে না মেরে, রাস্তায় একটু আলো ফেললে খুব ভালো হয়। এই কথা শোনা মাত্রই ওই অটো থেকে দুই জন সিভিক ভলেন্টিয়ার বেরিয়ে আসেন এবং তার ঘাড় ধরে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করলে তাঁকে বলপূর্বক অটোতে তুলে নেন।
অভিযোগ, অটোতে একজন খাকি উর্দি পড়া অফিসার বসে ছিলেন। কিন্তু তিনি দুইজন সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সংযত থাকতে বলেননি বরং নির্বাক দর্শক হয়ে সেদিন সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করছিলেন। এরপরেই তাঁকে অটোর মধ্যে চড় থাপ্পর মারে এবং অভব্য ভাষার ব্যবহার করে বলে দাবি সমন্বয়ের। এরইমধ্যে তাঁর মোবাইল থেকে আড়াই হাজার নগদ টাকা নিয়ে নেয় পুলিস বলে অভিযোগ।
সমন্বয়ের মা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, তাঁর ছেলেকে ওই রাতে খড়দহ থানায় নিয়ে গিয়ে সারারাত লকআপে আটকে রাখে। থানার তরফে বলা হয়, সকালে ছেড়ে দেওয়া হবে তাঁর ছেলেকে। সকাল আটটার পর তাঁর স্বামী খড়দহ থানায় গেলে, থানার ডিউটি অফিসার বলে তাঁর ছেলেকে কোর্টে পাঠানো হবে। সমন্বয়ের মা, তাঁর ছেলেকে বিনা কারণে মারধর করে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে দেওয়া এবং মিথ্যা মামলা দেওয়ার পাশাপাশি পুলিস যে নির্মম অত্যাচার করেছে তাঁর সুবিচার চেয়েছেন অভিযোগ পত্রে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, থানার আধিকারিকেরা এই সমস্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে রাতের অন্ধকারে সাধারণ মানুষদের উপর অন্যায় করছেন। রোজ তাঁদের বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিভিক এবং পুলিস অফিসার গাড়ি থেকে বেআইনিভাবে টাকা তুলছে। সেটারও প্রতিকার চেয়েছেন তিনি।
পুজোর আগে বড়সড় সাফল্য ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের (Barrackpore Police)। বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে (belgharia Expressway) থেকে ১১ কেজি সোনা (Gold Seize) উদ্ধার বেলঘড়িয়া থানার পুলিস। কমিশনারেট সূত্রে এমনটাই খবর। জানা গিয়েছে, বেলঘড়িয়া থানা তল্লাশি চালিয়ে ১১ কেজি সোনা একটি হুন্ডাই গাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিস গাড়ির চালক-সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। দক্ষিণেশ্বর সংলগ্ন ময়লাখলা এলাকায় বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যাওয়ার পথে টহলদারী পুলিসের সন্দেহ হওয়ায়, গাড়ি চেকিং করতেই ব্যাগের মধ্যে থেকে সোনার বাটগুলি উদ্ধার হয়। যার বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা। এই ঘটনায় নেতাজিরঞ্জন পাওয়ার, ময়ূর মনোহর পাটিল, গণেশ চৌহান এবং সুরজিৎ মুখার্জিকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। কোথা থেকে আসছিল আর কোথায় যাচ্ছিল, সেটা তদন্তাধীন। এমনটাই জানিয়েছে বেলঘড়িয়া থানার পুলিস।
এদিকে, দিন তিনেক আগেই কলকাতা বিমানবন্দরে উদ্ধার সোনা। শুল্ক দফতরের হাতে প্রায় ১ হাজার গ্রামের বেশি ওজনের সোনা-সহ আটক সিঙ্গাপুর ফেরত এক ভারতীয়। ধৃত যাত্রীর নাম মুকেশ আগরওয়াল।
শুল্ক দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দর শাখার আধিকারিকেরা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সিঙ্গাপুর ফেরত এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করেন। এরপরে তল্লাশি চালিয়ে ওই যাত্রী থেকে ২৭টি গোল্ড কয়েন ও তিনটি গোল্ড বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন প্রায় ১১৪০ গ্রাম। এর বাজার মূল্য ৫৬লক্ষ ৭৮হাজার ৬৯৪টাকা।
কাগজপত্র ঠিক না থাকায় দুধের গাড়ি চালককে কেস না দিয়ে টাকা নেন বলে অভিযোগ খড়দহ থানার (Khardah police station) দুই পুলিস অফিসারের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে ওই দুই পুলিস অফিসারকে সাসপেন্ড (suspend) করল বারাকপুর পুলিস কমিশনারেট (Barrackpore Police Commissionerate)।
সূত্র মারফত খবর, চেকিং-এর সময় সোদপুর (Sodepur) বি টি রোডে একটি দুধের গাড়ি থামিয়ে তার কাগজপত্র দেখতে চায় খড়দহ থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুজয় সরকার ও কনস্টেবল তাপস দাস। গাড়ির কাগজপত্রে কিছু ভুল থাকায় কেস না দিয়ে টাকা দাবি করে বসেন সাব ইন্সপেক্টর। সেইমতো রফা করে টাকাও নেন সাব-ইন্সপেক্টর সুজয় সরকার।
এরপর গাড়ির মালিক খড়দহ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ও ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের পুলিস কমিশনারকে বিষয়টি জানান। গাড়ির মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে সাব ইন্সপেক্টর ও কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়।
তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার সাব ইন্সপেক্টর সুজয় সরকার ও কনস্টেবল তাপস দাসকে সাসপেন্ড করল বারাকপুর পুলিস কমিশনার। পুলিস অফিসারদের মধ্যে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আনার জন্যই এই ধরনের সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।