মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পদত্যাগের পরই সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন ৭ই মার্চ। পূর্বা ঘোষণা মতোই বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপির সদর দফতর সল্টলেকের অফিসে পৌঁছন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অফিসের সামনে যেতেই তাঁকে পুষ্পবৃষ্টি, সঙ্গে শঙ্খ ও ঊলুধ্বনি নিয়ে সাদর আমন্ত্রণ জানান বিজেপি নেতৃত্বরা। এদিন শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগদান করেন।
বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূলের প্রতি তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তিনি বিজেপিতে এসেছেন। দল যা কাজ দেবেন তিনি সেই দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ইস্তফা পত্র দিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'শাসক দল আমাকে নানাভাবে অপমান করেছে। তৃণমূল আর বেশিদিন নেই, ভিতরে ভিতরে ভাঙছে। তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। দুর্নীতিগ্রস্ত দল। এটা একটা যাত্রাপার্টির দল। কয়েকজন ভালোমানুষ রয়েছেন তৃণমূল দলে, তাঁরা না বুঝেই ঢুকে পড়েছেন।'
ঘোষণামতোই মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি নিজের পদত্যাগ পত্র ডাকযোগে পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতির কাছে। কোনও রাখডাক না রেখেই ইস্তফা পত্র দিয়েই সাংবাদিক বৈঠকে জানান, 'আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি'। আগামী ৭ই মার্চ বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শাসক দলের অনুপ্রেরণাতেই রাজনীতির ময়দানে নামলেন বলে এদিন জানালেন।
তৃণমূলের প্রতি তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'শাসক দল আমাকে নানাভাবে অপমান করেছে। তৃণমূল আর বেশিদিন নেই, ভিতরে ভিতরে ভাঙছে। তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। দুর্নীতিগ্রস্ত দল। এটা একটা যাত্রাপার্টির দল। কয়েকজন ভালোমানুষ রয়েছেন তৃণমূল দলে, তাঁরা না বুঝেই ঢুকে পড়েছেন।'
অন্যদিকে মোদীর প্রশংসা শোনা যায় তাঁর কণ্ঠে। অত্যন্ত কঠোর, পরিশ্রমী একজন ব্যক্তি বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বিজেপিতে মানুষের হয়ে মানুষের জন্য কাজ করবেন বলে আশ্বাস দেন।
আমি বদলে গিয়েছি। আগের মতো আর নেই। ভগবান থেকে শয়তান হয়ে গিয়েছে। সোমবার এজলাসে বসে এক মামলকারীকে বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলার শুনানি চলাকালীন এক মহিলা এগিয়ে আসেন। তিনি বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, "ধর্মাবতার আমার কথা একটু শুনুন। আপনিই ভরসা।"
সেই মহিলার উদ্দেশে বিচারপতি প্রশ্ন, 'এখন তো মামলা মেনশনের সময় নয়। তাছাড়া এ ভাবে বলছেন কেন? এভাবে কি মামলা করা যায়?' মহিলার জবাব, 'বঞ্চিত হয়ে অনেক বছর ধরে ঘুরছি। কয়েকবার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম। বাচ্চার মুখের দিকে চেয়ে করতে পারিনি। এর আগে মামলা করেও কিছু হয়নি। আপনি সাহায্য করুন। আপনাকে আমরা ভগবানের মতো দেখি।' এরপরেই আক্ষেপের সুরে বিচারপতি জানান, 'আমি আর আগেই মতোন নেই। আর আমি ভগবান-টগবান নই। আমি শয়তান হয়ে গিয়েছে। ভগবান থেকে শয়তান!'
বিচারপতির মুখে এই মন্তব্য শুনে সেই মহিলার পাল্টা, 'এভাবে বলবেন না! আপনি যা দেশের জন্য যা করেছেন তা অতুলনীয়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।' বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আপনার মামলার নম্বর কত? দিয়ে যান বুধবার বিষয়টি দেখতে পারি।' বিচারপতির থেকে আশ্বাসবাণী শুনে এজলাস ছেড়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ পা পিছলে যান ওই মহিলা। কয়েকজন আইনজীবী তাঁকে ধরে সামাল দেন। মহিলা বলেন, "মাথা ঘুরে গিয়েছিল!" বিচারপতি বলেন, 'সাবধানে যান। মামলা হবে। চিন্তা করবেন না।'
যদিও গত সপ্তাহেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, আমার মন্তব্যের অন্য মানে করা হচ্ছে। আমি আর মন্তব্য করব না।