এবার রাজশেখর মান্থার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতিকে চিঠি বার অ্যাসোসিয়েশনের। সংগঠনের দাবি, শুভেন্দু অধিকারী-সহ বেশ কিছু মামলায় আইন না মেনে স্থগিতাদেশ দিয়ে দিচ্ছেন বিচারপতি মান্থা। তিনি কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করছেন। অর্থাৎ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর এবার এক শ্রেণীর আইনজীবীদের রোষে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এদিকে, দিন কয়েক আগেই এই বার অ্যাসোসিয়েশনের আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। তিনি এজলাসে দেরিতে বসেন। এই অভিযোগপত্র বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল প্রধান বিচারপতির কাছে। যা ঘিরে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে জানান, যারা এই চিঠি লিখেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (contempt of court) মামলা করা হবে। তার আগে তাঁদের হলফনামা (affidavit) দিয়ে আদালত জানতে চাইবে এই চিঠিতে সই করার কী কারণ।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই বার্তা পেয়ে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। অরুণাভ ঘোষের দাবি, যত দিন যাচ্ছে বিচারপতি-আইনজীবীদের সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। এর প্রত্যুত্তরে প্রধান বিচারপতি জানান, আদালতের গরিমা রক্ষার দায়িত্ব বিচারপতি এবং আইনজীবী উভয়েরই।
পাশাপাশি আইনজীবীদের দাবি, কোর্টে সংবাদমাধ্যমের অবাধ বিচরণ বিচারব্যবস্থাকে ক্ষুণ্ণ করছে। কোর্টরুমের প্রসিডিং ভিডিওগ্রাফি করছে সংবাদমাধ্যম। সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার আবেদনও জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
তাঁদের এই আবেদনও ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
সম্প্রতি, ভরা এজলাসে একের পর এক উত্তপ্ত কথোপকথনে জড়িয়ে পড়েন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। সুকন্যা মণ্ডল শুনানিতেও উত্তেজক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। এই বাগযু্দ্ধের জেরে আইনজীবীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত চত্ত্বরে ব্যানারও পড়েছিল। এবার অভিযোগ স্বয়ং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনায় দ্বিধাবিভক্ত বিচারব্যবস্থা।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার বচসায় জড়িয়েছেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ (Arunava Ghosh) এবং হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। সেই বাগযুদ্ধ সর্বজনবিদিত। এবার অরুণাভ ঘোষ সম্পর্কে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'উনি কেন এমন করছেন জানি না। দেখি কী করা যায়!'কয়েকদিন আগে অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের আদালতে (High Court) হাজিরা নিয়ে সরগরম ছিল রাজ্য রাজ্যনীতি। সেই সময়েও বেশকিছু বিষয়ে এজলাসেই তরজায় জড়িয়েছিলেন বিচারপতি এবং আইনজীবী ঘোষ। সেই তরজার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সিএন ডিজিটাল।
সেই প্রসঙ্গে এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'অনেকেই বলেন, আমি আইনের এ,বি,সি জানি না। আমি কেন সেকশন ১৬৫-এর কথা বলি? এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সব থেকে মজার বিষয়, আমি পোর্টব্লেয়ারের এক কন্ট্রাক্টচুয়াল কর্মীকে চাকরি ফেরত পাইয়ে দেওয়ার জন্য একটা অর্ডার দিয়েছিলাম। সেই অর্ডার উনি (পড়ুন অরুনাভ ঘোষ) একটি মামলার জন্য রেফারেন্স হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন। আমার এজলাসেই সেই রেফারেন্স টেনেছিলেন। সেই সময় যখন আমি লেবার কোর্টের মামলা নিতাম।'
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, অরুনাভ দার সঙ্গে আমার কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তাও কেন উনি আমার সাথে এমন করছেন আমি জানি না। লোকজনও নিয়ে আসছেন।
দেখি কী করা যায় ভাবছি!
শুক্রবারও একটি মামলার শুনানিতে সেকশন ১৬৫ এর বিষয়টি উঠে আসে। তারপরেই আদালতে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য সেকশন ১৬৫-তে উল্লেখ আদালত প্রয়োজনে সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পারে।