বেলা ১২.১৫ থেকে ১২.৩০, বোলপুরের নিচুপট্টিতে অনুব্রত মণ্ডলের(Anubrata Mondal) বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন ৪ সদস্যের সিবিআই আধিকারিকের(CBI officials) প্রতিনিধিদল। বুধবার অনুব্রত কন্যাকে সম্পত্তি(property) সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। কিন্তু সূত্রের খবর, এদিন বাবার পর মেয়েও তদন্তে অসহযোগিতা(non co-operation) করেছেন। সিবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ফিরিয়ে দিলেন অনুব্রতকন্যা সুকন্যা। সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, তিনি জানিয়েছেন যে তিনি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। তিনি বলেছেন, "বাবা হেফাজতে, মাকে সদ্য হারিয়েছি। এই অবস্থায় কোনও কথা বলব না।" এই কথা শোনার পরই বেরিয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা।
অন্যদিকে, বাবার পাপের শাস্তি ভোগ করছে মেয়ে। দুর্নীতি ঢাকতে মেয়ের নামে একাধিক সম্পত্তি লিখিয়েছে বাবা। সুকন্যাকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে অধীর রঞ্জন চৌধুরী এভাবেই কটাক্ষ করেন।
তবে,সুকন্যাকে সিবিআই নোটিস দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারিকে যখন সিবিআই আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, ঘটনাচক্রে ঠিক সেই সময়ে বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছন অনুব্রতর আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ।
বাড়ির অনতিদূরেই কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (Primary School) শিক্ষিকা (Teacher) অনুব্রত কন্যা (Anubrata Daughter) সুকন্যা মণ্ডল। ২০১২ সালে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন স্কুলে না গিয়েই বেতন নিতেন, এমনটাই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। এমনিতেও অনেক দিন হল তাঁকে স্কুলে আসতে দেখছেন না স্থানীয়রা।
এদিকে সুকন্যা ছুটিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বীরভূম জেলার প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক। সূত্রের খবর, বাবার গ্রেফতারের পর নিয়োগ-বিতর্ক এড়াতে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সুকন্যা। যদিও, প্রলয় নায়েক জানাচ্ছেন, এমন কোনও খবর তাঁর কাছে নেই। তিনি ছুটিতে রয়েছেন বলে আমি জানি।
অন্যদিন স্কুলের বর্তমান শিক্ষকরা সুকন্যার বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। স্কুলের এক শিক্ষক জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে, সুকন্যার বিষয়ে কিছু না বলতে।
সিবিআইয়ের (CBI) পক্ষ থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) গ্রেফতার করার পর তাঁর একাধিক আবদার পূরণ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু তিনি বারংবার সিবিআই অধিকারিকদের জানান, তিনি তাঁর মেয়ের (Daughter) সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু তদন্ত চলাকালীন বাইরের কোনও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা যাবে না বলে জানিয়ে দেন তদন্তকারী আধিকারিক। সিবিআই সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়ার পর দুবার ফোনে তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু বারংবার তিনি চাইছেন তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে। সেটা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। শুধুমাত্র আইনজীবীর সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারবেন, এ কথাই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কোর্টের নির্দেশে ৪৮ ঘণ্টা পরপর অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষা (Medical Test) করাতে হবে। সেইমতো আজ অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁকে আজ পুনরায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে কমান্ড হাসপাতালে।
প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency) শনিবার পরিদর্শন করে ৮ জন ডাক্তারের একটি টিম। টিমের সদস্যরা সকলেই এসএসকেএমের চিকিত্সক বলে জানা গিয়েছে। মূলত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখতেই এই মেডিক্যাল টিম বলে জেল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে জেলেরই অন্য সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
খাওয়াদাওয়াও করছেন স্বাভাবিকভাবেই। গত দুদিনে পায়ের ব্যথা কিছুটা বেড়েছে। তাই মাঝেমধ্যেই সেলের বাইরে হাঁটাহাঁটি করছেন।
অন্যদিকে, গরুপাচার মামলায় সিবিআই-এর এবার নজর বীরভূম জেলার পুলিস কর্মীদের ওপর। গরু পাচারের লভ্যাংশ পেত পুলিস কর্মীরাও। এমন কয়েকজন পুলিস কর্মীকে তলব করতে চলেছে সিবিআই।