সিবিআই নয়, সিট-এই ভরসা কলকাতা হাইকোর্টের। আনিস খান মৃত্যু মামলায় নিম্ন আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল না কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলবে। এই মুহূর্তে সিবিআই তদন্ত নয়। সিট তদন্তের কাজ চালিয়ে যাবে। ৯ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
মঙ্গলবার সিটের আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, সুমন বালা সাউ, সিটের প্রধান (আইপিএস) সম্প্রতি অবসর গ্রহণ করবেন। তাঁর জায়গায় নতুন সিটের প্রধান নিয়োগ করুক আদালত। এর পরই প্রধান বিচারপতি জানান, এই নির্দেশ জারি করেছিল ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। এই বিষয়ে ওই বৃহত্তর বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে বা বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখ্যপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। তাই প্রধান বিচারপতির পরামর্শ, 'সিটের পক্ষ থেকে অবসরের বিষয়টা জানিয়ে আপনারা রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানান যে সিটের ওই প্রধানের জায়গায় অন্য কোনও আইপিএসকে নিযুক্ত করা হোক।'
প্রসঙ্গত, আনিস খানের পরিবার প্রথম থেকেই ঘটনাটিতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে এসেছে। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার। কিন্তু বিচারপতি মান্থা সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন। আদালত জানিয়েছিল, এখনই এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রয়োজন নেই। তদন্ত করবে রাজ্যের সংস্থাই। এর পর আজ কলকাতা হাইকোর্টও সিবিআই নয় সিট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
হাওড়ার ছাত্র নেতা আনিস খানের মৃত্যুতে সরগরম হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য রাজনীতি। হাওড়ার ছাত্রনেতা আনিস খানের রহস্য মৃত্যুতে অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় প্রথম থেকেই আনিসের পরিবারের তরফে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়। যদিও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আনিসের পরিবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেও সেই আর্জি খারিজ করে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। এবার ওই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে সিঙ্গেল বেঞ্চের দ্বারস্থ মৃত ছাত্র নেতা আনিসের পরিবার। জানা গিয়েছে, ১ ডিসেম্বর বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসে শুনানির সম্ভাবনা।
অভিযোগ গভীর রাতে বাড়িতে পুলিশি অভিযানের মধ্যে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় হাওড়ার সারদা খাঁ পাড়ার ছাত্র নেতা আনিস খানের। এ ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে গোটা পরিবার। পরে অবশ্য এ ঘটনায় কতব্যে গাফিলতির অভিযোগে ৩ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। আনিসের মৃত্যুতে পরিবারের দায়ের মামলায় সিবিআই তদন্তের আবেদন খারিজ করে বিচারপতি মান্থার বেঞ্চ। বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ ছিল এখনই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই। এ ঘটনার তদন্ত করবে সিট। এরপর সিআইডি আনিসের মৃত্যুর তদন্ত করে চার্জশিট ফাইল করে। কিন্তু তদন্তে ত্রুটির যুক্তিতে পরিবার সিবিআই তদন্ত চেয়ে পিটিশন দাখিল করে। কিন্তু নিম্ন আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। ফলে ফের হাইকোর্টে আসে পরিবার। আজ সেই মামলার শুনানির দিন ঠিক করে দিল আদালত।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) মনোনয়নপত্র (Nomination) জমা দিয়েছেন আনিস খানের (Anis Khan) দাদা। এরপরই তৃণমূল হুমকি দিয়েছে আমতার ছাত্রনেতা আনিস খান খানের মেজোদাদা সামসুদ্দিন খানকে। এমনই অভিযোগ আনিস খানের বাবা সালেম খানের। নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করলেন তিনি। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানিয়েছেন সালেম খান। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
সালেম খান বলেন, পুলিস, নির্বাচন কমিশন ও মহামান্য আদালতের কাছে নিরাপত্তার জন্য আবেদন জানিয়েছি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সামসুদ্দিন আমতা ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ৪১ নম্বর আসন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সালেম খানের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ঠিকঠাক প্রচারেও যেতে পারছেন না। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিও জানান তিনি।
আনিস খানের খুনের (Anis Khan) প্রতিবাদে মঙ্গলবার ফের রাজপথে সিপিএম ছাত্র এবং যুব সংগঠন (SFI DYFI)। প্রথমে শহিদ মিনার চত্বরে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমায়েত বাড়তে থাকায় বদলাতে হয় সভাস্থল। ওয়াই চ্যানেল থেকে সভামঞ্চ সরে আসে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে। আনিস, সুদীপ্ত, মইদুল হত্যার প্রতিবাদ-সহ কর্মসংস্থান এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ সভা (Insaf Rally)। বক্তব্য রাখেন বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষ্মী মুখোপাধ্যায় (Minaxi Mukherjee), সৃজন ভট্টাচার্য-সহ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
এই মিছিল থেকে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, 'পুলিস বলেছিল, মূলত কালীঘাট বলেছিল ধর্মতলায় মিছিল করতে দেব না। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য ছিল ধর্মতলায় মিটিং করব।' সিপিএম যুবনেত্রী মীনাক্ষ্মী মুখোপাধ্যায় জানান, কাজ পেতে হবে। যতক্ষণ না কাজ পাচ্ছি ধারাবাহিক লড়াই চলবে। ইনসাফ চেয়ে এই প্রতিবাদ সভা ছিল। ইনসাফ না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। আনিস খান খুনে অভিযুক্তদের সাজা প্রসঙ্গে মিনাক্ষ্মী মুখোপাধ্যায়ের খোঁচা, 'স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলবেন কেন এখনও অভিযুক্তরা শাস্তি পেল না। আমরা তো প্রশ্ন করব।'
যদিও বাম ছাত্র-যুবদের এই মিছিলকে সিপিমূল-র মিছিল বলে তোপ দাগেন বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কটাক্ষ, 'পুলিসকে বলে দেওয়া ছিল যারা মিছিলে আসবেন, তাঁদের জন্য কোনও অসুবিধা না হয়।' তবে এই মিছিলকে বৃহত্তর সভা আখ্যা দিয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'বামেদের মিছিলের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। ওরা পৃথক সভা ডেকেছে কর্মসূচি করেছে। তবে সভা-সমাবেশ দেখে যা মনে হয়েছে ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটাই বৃহত্তর সমাবেশ।'
ছাত্রনেতা আনিস খানের (Anis Khan) মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় বাংলার রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে আক্রান্ত আনিস খানের খুড়তুতো ভাই। শনিবার উলুবেড়িয়া (Uluberia) হাসপাতাল থেকে হঠাৎ ছুটি ঘোষণা সলমান খানের। আনিস খানের মূল সাক্ষী সলমান খান। উলুবেড়িয়া হাসপাতাল (hospital) থেকে শনিবার স্পষ্টত জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সলমানকে তিন-চার দিনের আগে সিসিইউ (CCU) থেকে ছাড়া যাবে না। এরপর হঠাৎই রবিবার সকালে কর্তৃপক্ষ জানায়, তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নই এখন সবার মনে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এদিনই উপস্থিত হন কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক ও সলমান খানের পরিবার।
প্রসঙ্গত, আনিস হত্যাকাণ্ডের পর আনিসের কাকার ছেলে অর্থাত্ সলমান ও তাঁর পরিবারের কাছে বারবার হুমকি আসছিল। বারবার আমতা থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করলে কোনও সুরাহা মেলেনি, ফলে হুমকির পর হুমকি শুনতে হয়েছে। এরপরই প্রাণঘাতী হামলা। পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১ টা ৩০ মিনিট, সলমানের বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে বেশ কিছু দুষ্কৃতী। তারা চপার দিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত করে সলমানের। পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি সলমানকে নিয়ে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে যায়। সেখানে গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁকে উলুবেড়িয়া মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
অভিযোগ ওঠে, বারবার এই হুমকির বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও বলা কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ঠিক একই রকমভাবেই আনিসের মতই সলমানকেও সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। আনিস হত্যাকাণ্ডের পর প্রমাণ লোপাটের জন্যই আবার আনিসের কাকার ছেলের উপর এই হামলা, এমনটাই অনুমান পরিবারের। পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিল পরিবার।
ছাত্রনেতা আনিস খানের (Anis Khan) মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় বাংলার রাজ্য রাজনীতি। কেটেছে বহু মাস তবুও, জট যেন কাটতেই চাইছে না। এরই মধ্যে আক্রান্ত আনিস খানের খুড়তুতো ভাই। শুক্রবার রাতে তাঁর ভাই সলমান খানের (Salman Khan) উপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগের তীরে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। অন্যদিকে আনিস খানের হত্যা কাণ্ডে অন্যতম সাক্ষী হলেন এই আহত সলমান। শুক্রবার এই ঘটনাটি আমতার (Amta) সারদা গ্রামের।
পরিবার সূত্রে খবর, আনিস হত্যাকাণ্ডের পর আনিসের কাকার ছেলে অর্থাত্ সালমান ও তাঁর পরিবারের কাছে বারবার হুমকি আসছিল। বারবার আমতা থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করলে কোনও সুরাহা মেলেনি, ফলে হুমকির পর হুমকি শুনতে হয়েছে। এরপরই প্রাণঘাতী হামলা। পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১টা ৩০ মিনিট, সলমানের বাড়ির ভিতরে ঢুকে বেশ কিছু দুষ্কৃতী চপার দিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত করে। এরপর পরিবারের লোকজন সালমানকে নিয়ে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে যায়। সেখানে গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁকে উলুবেড়িয়া মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। তাঁর অবস্থা খুবই গুরুতর বলে জানিয়েছে পরিবার।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বারবার এই হুমকির বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও বলা কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঠিক একই রকমভাবেই আনিসের মতই সলমানকেও সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলে মনে করছে পরিবার। আনিস হত্যাকাণ্ডের পর প্রমাণ লোপাটের জন্যই আবার আনিসের কাকার ছেলের উপর এই হামলা, এমনটাই অনুমান পরিবারের। পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে পরিবার। দোষীদের সঠিক শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার। দ্রুত এই ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা জড়িত খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছে পরিবার।