চিরঞ্জিত চক্রবর্তীঃ জন্ম শতবর্ষ চলছে প্রয়াত চিত্র পরিচালক মৃণাল সেনের। একটা সময় কিংবদন্তী পরিচালকের নাম উচ্চারিত হতো ভারতের চলচ্চিত্রের মান বোঝাতে। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন। এদের মধ্যে বয়সে বড় সত্যজিৎ তারপর মৃণাল সবশেষে ঋত্বিক। তিনজনই প্রতিভাবান হলেও, তাঁরা নিজস্ব ভাবনার ছবি বানাতেন। অনেকের মতে ঘোরতর বামপন্থী মৃণালের ছবি ছিল পোস্টার ধর্মী,মানে অজস্র কাটশট এবং ছবির মধ্যে চলে আসা অসংখ্য পোস্টারের বক্তব্যই ছিল মৃণালের বিশেষত্ব। যদিও আম জনতার প্রাণের পরিচালক মৃণাল কোনও দিনই ছিলেন না।
তাঁর প্রথম দিকের দু-চারটি ছবি বাংলা গল্প বা উপন্যাস ভিত্তিক হলেও পরের দিকে একেবারেই রাজনৈতিক ধর্মী ছবি বানাতেন। সত্যজিৎ কখনই সরাসরি রাজনীতি করেননি। ঋত্বিক বামপন্থী বা বলা যায় জ্যোতিবাবুদের দলে থাকলেও পরে ছেড়ে দিয়ে কিছুটা নক্সালপন্থী হয়ে গিয়েছিলেন। মৃণাল কিন্তু বামফ্রন্টে বা সিপিএমের ঘরের লোক ছিলেন এবং তাঁর ছবি দেখতে বসলে অনেকটা সিপিএমের মুখপাত্র দেখে মনে হতো। এর বাইরে বেড়িয়ে যেতে চান নি। মৃণালের ছবিতে প্রেম হাস্যরসের প্রশ্নই থাকতো না যার কারণে ছবিকে পোস্টার ধর্মী বলে অনুযোগ করা হতো। মৃণালের কোনও ছবিই খুব ভাল ব্যবসায় সাফল্য পায়নি। ব্যতিক্রম ভূবন সোম।
ভূবন সোম সম্ভবত টেকনিকাল দিক ও পরিবেশনের গুণে বহু সিনেমা প্রেমীর কাছে সেরা মনে হয়েছে। এই ছবি অবশ্য বনফুলের গল্প থেকে নেওয়া এক আদর্শবান রেল অফিসারের এক পাখি শিকার নিয়ে সিনেমা। এই ছবি বহু পুরস্কার পেয়েছে এবং এই ছবি মুম্বইতে নুন শো-এ রজত জয়ন্তী করেছে এবং এই ছবিতে অমিতাভ বচ্চন কাজ করেছেন। কিন্তু অভিনয়ে নয় ভাষ্যপাঠে।
ভূবন সোম ছবিতে দৃশ্য বেশি কথা ডায়লগ কম। ছবিতে আবহ ভাষ্যপাঠের একটি বিষয় ছিল। এদিকে মৃণালের প্রথম হিন্দি ছবি। তিনি বলিউডের কাউকে তেমন চেনেন না। গিয়ে ধরলেন খাজা আহমেদ আব্বাসকে। খাজা কমিউনিষ্ট পার্টি করতেন। তখন সদ্য একটি ছবি করছিলেন খাজা নাম সাত হিন্দুস্থানী। যেখানে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান অমিতাভ বচ্চন। খাজা, মৃণালকে বলেন অমিতাভের কথা। মৃণাল কন্ঠস্বর শুনে বচ্চনকে দিয়েই কাজ করান। কিন্তু সেখানে তিনি বোবার চরিত্রে অভিনয় করেন। ওই প্রথম অমিতাভ সামান্য পারিশ্রমিক পান এবং ওটাই সিনেমা জগতে বিগ 'বি'র প্রথম রোজগার। (অনুলিখন-প্রসূন গুপ্ত)
এবারে মুম্বই পুলিসের (Mumbai Police) নজরে অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) ও অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা (Anushka Sharma)। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছে মুম্বই পুলিস। তবে প্রশ্ন উঠছে কী এমন করলেন তাঁরা? সোমবার অমিতাভ বচ্চনকে দেখা গিয়েছিল, কাজে ঠিক সময়ে পৌঁছতে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির গাড়িতে চেপে বসেন। অন্য়দিকে অনুষ্কাকেও নিরাপত্তারক্ষীর গাড়িতে দেখা যায়। তাঁদের এই ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। আর এই দেখেই শুরু হয়ে সমালোচনা। নেটিজেনদের প্রশ্ন, 'হেলমেট কোথায়? আইন সবার জন্যই এক হওয়া উচিত।' আর এই খবরই পৌঁছে গিয়েছে মুম্বই পুলিসের কাছে।
সোমবার বিগ বি-কে দেখা গিয়েছিল এক অজানা ব্যক্তির বাইকে চড়ে তাঁর শ্যুটিং-এর জায়গায় যেতে। তিনি নিজেই সেই ছবি শেয়ার করেছিলেন। আর এরপরেই তাঁকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। নেটিজেনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এতেই যে, বিগ বি-এর মাথায় নেই হেলমেট। আবার অন্যদিকে অনুষ্কাকেও দেখা গিয়েছে, যানজটের কারণে বডিগার্ডের বাইকে চড়ে শ্যুটিং-এর জায়গায় যেতে। তাঁর মাথাতেও ছিল না হেলমেট। এরপর এই নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় মুম্বই পুলিসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এই ছবিগুলো। আর এরপরেই মুম্বই ট্রাফিক পুলিস লিখেছে, 'আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে চলেছে তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।' ফলে এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, পরবর্তীতে বড়সড় কোনও পদক্ষেপই নিতে চলেছে মুম্বই পুলিস।
বিগ-বি অর্থাৎ অমিতাভ বচ্চনকে (Amitabh Bacchan) নিয়ে বর্তমানে উদ্বেগ তুঙ্গে। কিছুদিন আগেই এক শ্যুটিং চলাকালীন চোট পেয়েছিলেন তিনি। ফলে এখন সময় কাটছে বাড়িতে বসেই। তবে তিনি ঘরবন্দি হয়ে থাকলেও এমনিই বসে নেই। ফাঁকা সময়ে তাই হাতে তুলে নিয়েছেন কলম। তাঁর শরীর অসুস্থ, তবুও তিনি তাঁর ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তাঁর ব্লগ (Blog) পোষ্টের মাধ্যমে। সেই ব্লগগুলোতে কখনও তিনি তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন, আবার কখনও শৈশবের নানা গল্প লেখেন ব্লগে। এবারে তাঁর ব্লগে উঠে এসেছে মদ্যপান (Drinking) ও ধূমপান (Smoking)। কীভাবে তিনি এই দুই'য়ের নেশা থেকে বেরিয়ে এসেছেন সেই নিয়ে লিখেছেন। আবার অন্যদের পরামর্শও দিয়েছেন যে, কীভাবে নেশা থেকে মুক্তি পেতে পারেন মানুষ।
অমিতাভ বচ্চন জানিয়েছেন, যখন তিনি কলকাতায় তাঁর কাজ শুরু করেন তখন তিনি কীভাবে মদ ও সিগারেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি ব্লগে লিখেছেন, কর্মজীবনের প্রথমটা কেটেছে কলকাতায়। তখন তিনি সেখানে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে হলেই মদ খেতেন। তবে কখন যে অনুষ্ঠানগুলোতে মদ খেতে খেতে মদের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়লেন, তা তিনি নিজেই জানেন না। তবে তিনি পরে বুঝতে পেরে নিজের ইচ্ছাতেই মদের নেশার থেকে দূরে চলে এসেছেন।
আবার ধূমপানের ক্ষেত্রেও তিনি একই কথা জানিয়েছেন, তাঁর সিগারেটের প্রতিও নেশা ছিল। যদিও তিনি অবশেষে তা ছাড়তে সক্ষম হয়েছেন। তবে তিনি আক্ষেপ করেছেন যে, নেশা আরও আগে ছাড়তে পারলে আরও বেশি ভালো হত। তিনি তাঁর ব্লগের মাধ্যমে কীভাবে নেশা ছাড়বেন সেই পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'যখন ঠোঁটের ফাঁকে সিগারেটে টান ধোঁয়া ছাড়ছেন, সেই মুহূর্তেই সিগারেটকে বিদায় জানান। যত বাজে অভ্যাস যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, ছেড়ে ফেলা উচিত। বিশেষ করে যা ক্যানসারের দিকে ঠেলে দেয়, তাকে জীবন থেকে সরিয়ে ফেলুন।'
সিনেমাপ্রেমী (Cinema) মানুষদের কাছে বরাবরই বাড়তি আকর্ষণ হয়ে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহ্যমণ্ডিত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলি। সেক্ষেত্রে শহর তিলোত্তমায় (Kolkata) আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসব ঘিরে সব সময় উন্মাদনা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু গত বছরগুলিতে করোনার (Corona) জন্য তাল কেটেছিল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (Kolkata International Film Festival)। কিন্তু আবার মারণ ভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে ফের ধীরে ধীরে নিউ নর্মালে ফিরেছে পৃথিবী। আর তাই পুনরায় চলতি বছরের শুরু থেকেই বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে দেখা যাচ্ছে সেই পুরনো আমেজের ছবি। তার ব্যতিক্রম নয় চলচ্চিত্র উৎসবের ক্ষেত্রেও।
২৮ তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আনন্দে মেতে উঠতে চলেছে সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিকের শহর। ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। আর প্রতিবারই কিছু না কিছু নয়া চমক থাকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালকে ঘিরে। সেই মোতাবেক এই বছরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে চলেছেন বিগ বি অমিতাভ বচ্চন এবং সেই সঙ্গে থাকবেন জয়া বচ্চনও। উল্লেখ্য, জয়া হলেন লেখক তরুণ ভাদুরির কন্যা এবং বাংলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক জন্ম এবং পরিবার সূত্রেই। সেক্ষেত্রে জয়া বচ্চনের উপস্থিতি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবকে এক অন্য মাত্রা দেবে বলেই আশা উদ্যোক্তাদের।
বিভিন্ন দেশ বিদেশের একগুচ্ছ ছবি প্রদর্শিত হতে চলেছে চলচ্চিত্র উৎসবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই উৎসব চলবে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।