
সেন্ট্রাল টেক্সাসের সান আন্তোনিওতে রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত একটি ট্রাক্টর-ট্রেলারের মধ্যে কমপক্ষে ৪৬ জন অভিবাসীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। সোমবার এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। অনুমান করা হচ্ছে, মৃতদেহগুলি পাচার করার উদ্দেশ্যেই ট্রাক্টরে তোলা হয়েছিল। এই ঘটনার পরে তিনজনকে পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রেল লাইনের ধারে দাঁড় করানো ছিল ট্রাক্টরটি। অনুমান করা হচ্ছে, শরণার্থীদের নিয়ে টেক্সাসে এসেছিল সেটি। তবে কী করে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয় পুলিস।
সান আন্তোনিও ফায়ার চিফ চার্লস হুড জানান, অত্যন্ত গরমের ফলেই মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। তিনি বলেন, আরও ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যাদের মধ্যে ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং চারজন শিশু। উদ্ধার করে আনার সময় তাদের শরীর গরম ছিল। তারা হিট স্ট্রোকে ভুগছিল। এমনকী গাড়িতে জলের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। জানা গিয়েছে, এটি একটি রেফ্রিজারেটেড ট্র্যাক্টর-ট্রেলার ছিল। তবে কোনও এসি ইউনিট ছিল না।
সূত্রের খবর, আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে মানুষ পাচারের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। মেক্সিকান সীমান্ত থেকে কয়েক ঘন্টা দূরে একই শহরে একই রকম ঘটনাবছর পাঁচেক আগে একবার ঘটেছিল। সেই সময় অর্থাত ২০১৭ সালে বেশ কয়েকজন অভিবাসী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করার সময় ভাঙা এয়ার কন্ডিশনার থাকায় শ্বাসরোধে ১০ জন মারা যায়। তবে কারও কারও মতে, শরণার্থী হিসাবে এরা আমেরিকায় আশ্রয় নিতে চেয়েছিল। সেই কারণেই ট্রাকে উঠছিল তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ছ’টা নাগাদ একজন স্থানীয় মানুষের আর্তনাদ শোনা যায়। তারপরেই ট্রাক্টরটির ভিতরে ঢুকে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ দেখা যায়। কয়েকজনের দেহে দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেই জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু পুলিস এই তথ্য অস্বীকার করে।
মেক্সিকো সরকার জানিয়েছে, অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা এটি। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে মেক্সিকোর একটি প্রতিনিধি দল। তবে মৃতরা আদৌ মেক্সিকোর নাগরিক কিনা, তা নিয়ে এখনও সন্দেহ রয়েছে। গত কয়েকদিন অ্যান্টোনিওতে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েকমাসে রেকর্ড সংখ্যক শরণার্থী মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্ত পেরিয়ে মার্কিন মুলুকে প্রবেশ করেছে।
সোমবারের এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সান আন্তোনিওর আর্চ বিশপ গুস্তাভো গার্সিয়া-সিলার টুইট করে লিখেছেন, "প্রভু তাদের প্রতি করুণা করুন। তারা আরও ভাল জীবনের আশা করেছিল।"
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের প্রশাসন একটি নতুন নীতি ঘোষণা করতে চলেছে। যেখানে বলা হয়েছে, উৎপাদনকারীদের সিগারেটে নিকোটিনের মাত্রা কমাতে হবে। মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সিদ্ধান্তে তামাক শিল্পে বড় প্রভাব পড়বে।
যদিও প্রশাসনের তরফে বলা হয়, এই প্রকল্প সফল হলে, শতাব্দীর শেষ নাগাদ লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁচতে পারে। এবং এমন একটি ভবিষ্যৎও তৈরি হতে পারে, যেখানে সিগারেট আর আসক্তি কিংবা কঠিন রোগের জন্য দায়ী থাকবে না। এই প্রকল্পের জন্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সাহায্যের প্রয়োজন হবে বলে বলে জানানো হয়েছে। পৰৱৰ্তীকালে একটি নিয়মাবলী প্রকাশ করা হবে।
গোটা প্রচেষ্টাটি সফল হতে বেশ কয়েক বছর লাগতে পারে বলে আশা করছে বাইডেন প্রশাসন। কারণ এর বিরুদ্ধে অনেকে মামলা করবেন। সেই কারণে বিলম্বিত হতে পারে প্রকল্পের কাজ। তামাকের মধ্যে থাকা হাজার হাজার রাসায়নিক পদার্থ এবং এর ধোঁয়া ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের রোগ, ডায়াবেটিস এবং আরও অনেক রোগের জন্য দায়ী।
যদিও ধূমপান ইউরোপের তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কম। প্রতি বছরই হ্রাস পাচ্ছে ধুমপানকারীদের সংখ্যা। তবুও রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের মতে, দেশে বছরে ৪৮০,০০০ জন সিগারেটের কারণে মারা যান। সিডিসি-র তথ্য অনুসারে, সমস্ত মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ১৩.৭ শতাংশ বর্তমানে ধূমপায়ী। মার্কিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সিগারেটের নিকোটিনের পরিমাণ কমানো বহু বছর ধরে আলোচনার বিষয়।
সিডিসির রিপোর্র্ট অনুসারে ধূমপানের মোট অর্থনৈতিক ব্যয় বছরে ৩০০ বিলিয়নের বেশি। যার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রত্যক্ষ চিকিৎসায় ২২৫ বিলিয়নেরও বেশি খরচ হয়। এবং অকাল মৃত্যু, ধূমপানের সংস্পর্শে আসার কারণে ক্ষতি হয় অনেকের। যার জন্য খরচ হয় ১৫৬ বিলিয়নেরও বেশি।
করোনা নির্মূল না হতেই মাঙ্কিপক্সের প্রকোপ। মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্স শনাক্ত করা কঠিন। মার্কিন শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জোর দিয়েছিল যে, রোগের বিস্তার রোধে রোগীকে শনাক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে শনাক্ত হওয়া মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক লক্ষণগুলি দেখা যায় না। ফলে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। সাধারণত মাঙ্কিপক্স শরীরের শুধুমাত্র সীমিত অংশে হয়ে থাকে।
সিডিসি-র প্রধান রোচেল ওয়ালেনস্কি বলেছেন, সবসময় ফ্লুর মতো উপসর্গ দেখা যায় না, যেমন জ্বর, শরীরে ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া গ্রন্থি যা সাধারণত রোগের বৈশিষ্ট্য ফুসকুড়ি হওয়ার আগে দেখা যায়। যদিও এই ফুসকুড়িগুলি সাধারণত সারা শরীরে দেখা যায়, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই শরীরের নির্দিষ্ট এলাকায় তা সীমাবদ্ধ থাকে। মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে এটিই উদ্বেগের কারণ বলে জানান তিনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই ৪৫ টি মাঙ্কিপক্স নথিভুক্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, গত সপ্তাহের চেয়ে যা দ্বিগুণ। তবে কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। ৯ জুন পর্যন্ত, বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৩০০ কেস শনাক্ত করা হয়েছে।
সংক্রমণ রোধে টিকাকরণের প্রয়োজন। দেশে ACAM2000 ভ্যাকসিনের ১০০ মিলিয়ন ডোজ রয়েছে। তবে আরও একটি আধুনিক ভ্যাকসিন, জিনিওস-এর ডোজ পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক ডন ও'কনেল বলেছেন, মে মাসের শেষে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ওষুধের মাত্র ১০০০ ডোজ ছিল, আজ তা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজারে। আগামী সপ্তাহে আরও ৩০০,০০০ ডোজ আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আমেরিকায় ফের বন্দুকবাজের হানা। বৃহস্পতিবার মেরিল্যান্ডের এক কারখানায় এক বন্দুকবাজের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিস বাহিনী। পুলিসের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে আহত হয় ওই বন্দুকবাজ। আহত হয়েছেন এক পুলিস কর্মীও।
তবে কী কারণে এই হামলা তা জানা যায়নি। ওয়াশিংটন কাউন্টির শেরিফের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বন্দুকবাজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী কারণে গুলি চালাল তা তদন্তের মাধ্যমে জানা হবে। আপাতত বিপদমুক্ত সকলে। আহত বন্দুকবাজকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সেন্ট্রাল মেক্সিকোয় ব্যারন কমিউনিটিতে হামলা চালায় বন্দুকবাজরা। তিনজন কিশোর ও দু’জন কিশোরী গুলিতে লুটিয়ে পড়ে। তাদের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। মারা যান ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধাও। তার ঠিক কয়েকদিন আগেই টেক্সাসের এক প্রাথমিক স্কুলে আচমকা হামলা চালায় এক ১৮ বছরের কিশোর। তার ছোঁড়া গুলিতে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ১৯ জন পড়ুয়া। পরে পুলিসের গুলিতে নিহত হয় ওই বন্দুকবাজ কিশোর।
পূর্ব লাদাখের সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণের (এলএসি) লাইন নিয়ে গত বছরের এপ্রিল থেকে ভারত ও চিনের মধ্যে বিরোধ চলছে। তবে দু'দেশের মধ্যে ধারাবাহিক বৈঠকের পর অতীতের সেই উত্তেজনা কিছুটা হ্রাস পেয়েছিল। ফের সীমান্তের কাছে চিনা সেনাবাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে বলে দাবি করলেন মার্কিন সেনার প্যাসিফিক কমান্ডের প্রধান জেনারেল চার্লস এ ফ্লিন।
মঙ্গলবার দু’দিনের সফরে ভারতে এসে জেনারেল ফ্লিন বলেন, চিনা ফৌজ 'ড্রাগন' এর তোড়জোড় সংঘাতেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাশাপাশি ভারতকে সাবধান হতে বলেন। এদিন তিনি ভারতের সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন। উদ্দেশ্য ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে সামরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা। সেখানেই চিনা সেনার ভারতীয় সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, একাধিকবার ভারত ও চিনের সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা নিয়ে বৈঠক হলেও একাধিক উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, চিন লাদাখ সীমান্তে একের পর এক পরিকাঠামো তৈরি করছে। প্যাংগংয়ের উপর একটি আস্ত সেতু বানানোর প্রক্রিয়াও চলছে। যুদ্ধের সময় যুদ্ধযান ভারতীয় সীমান্তে সহজে নিয়ে আসা যাবে এই সেতু দিয়ে। তাই এই সেতু তৈরি করছে। এমনটাই জানিয়েছিল কূটনৈতিক মহল।
চিনের এই কর্মকাণ্ড মোটেও ভালো চোখে দেখছে না আমেরিকা। বস্তুত, ভারত এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে একাধিকবার অভিযোগও করেছে।
আমেরিকার স্কুলে লাগাতার বেড়েই চলেছে বন্দুকবাজের হামলা। একের পর এক স্কুলে প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হচ্ছে পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর। এতে ভীতসন্ত্রস্ত অভিভাবকরা। ভয়ে তাঁরা স্কুলে পাঠাচ্ছেন না বাচ্চাদের। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে বেরোচ্ছে দেখে দেশটির ওহিও প্রদেশে নতুন আইন আনতে চলেছে প্রশাসন।
ওই আইনে বলা হয়েছে, সুরক্ষার স্বার্থে স্কুলের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা নিজেদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে পারবেন। বিশেষ করে স্কুলে থাকাকালীন সব সময় শিক্ষকদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে হবে। তবে তার আগে শিক্ষকদের আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তারপরই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে বন্দুক।
এই সিদ্ধান্তে খুশি কেউ কেউ। অনেকে বলছেন, এতে স্কুলগুলিতে হামলা কমবে। নিরাপত্তা বাড়বে পড়ুয়াদের। তবে একাংশ মনে করছেন, এতে হামলা বাড়বে। স্কুলগুলির উপর আক্রমণ দ্বিগুণ হবে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই টেক্সাসের এক প্রাথমিক স্কুলে আচমকা হামলা চালায় এক ১৮ বছরের কিশোর। তার ছোঁড়া গুলিতে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ১৯ জন পড়ুয়া। পরে পুলিসের গুলিতে নিহত হয় ওই বন্দুকবাজ কিশোর।
টেক্সাস ও ওকলাহামার পর বন্দুকবাজের জোড়া হামলায় বিধ্বস্ত আমেরিকা। বৃহস্পতিবার আইওয়া ও উইসকনসিনে বন্দুকবাজের হানায় প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। একের পর এক বন্দুকবাজের সহিংসতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় জন্য পুলিস এবং আইন রক্ষার্থীদের অনুরোধ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
টেক্সাস এবং নিউ ইয়র্ক রাজ্যে সাম্প্রতিক গণহত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের মতো আক্রমনাত্মক অস্ত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানিয়েছেন তিনি।
বাইডেন ১৭ মিনিটের ভাষণে বলেছেন, অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর আইন প্রয়োজন। গণহত্যা দেখতে আর ইচ্ছুক নন। আমেরিকান জনগণকে হতাশ করলে হবে না। তিনি আরও বলেন, আইন প্রণেতাদের বয়স অন্তত ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করা উচিত, যা স্কুল ও হাসপাতালগুলোকে 'হত্যাক্ষেত্রে' পরিণত করা ব্যাপক সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করার জন্য একটি পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে টেক্সাসের রক এলিমেন্টারি স্কুলের ঘটনায় শোকসন্তপ্ত, ক্ষুব্ধ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্কুলে গিয়ে বলেন, ''মনে হচ্ছে আমার হৃদয়, আমার আত্মার একটা অংশ কেউ ছিঁড়ে নিয়েছে। আর কবে আমেরিকা গান লবির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে?'' টেক্সাসের ঘটনায় জাতীয় শোকও ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতও রাখা হয় এদিন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনওভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না বন্দুক হামলার। এবার ওকলাহামায় টুলসার একটি মেডিক্যাল সেন্টারে বন্দুক হামলায় চারজন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে সংবাদ সংস্থা সূত্রে। বুধবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও মারা গেছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। তবে ঠিক কী কারণে এই হামলা, তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট ফ্রান্সিস মেডিক্যাল ক্যাম্পাসে সশস্ত্র এক ব্যক্তি রাইফেল নিয়ে গোলাগুলি শুরু করে। বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনের সময় টুলসা পুলিস বিভাগের উপ-প্রধান এরিক ডালগলিশ মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন এবং বলেছেন, সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও মারা গেছে। তার কাছে একটি রাইফেল ও একটি হ্যান্ডগান ছিল। সন্দেহভাজন ওই বন্দুকধারীর নাম প্রকাশ করেনি পুলিস। তবে তাঁর বয়স ৩৫ থেকে ৪০ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, গোলাগুলির খবর পাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যেই পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মিনিট পাঁচেক পরই হামলাকারীকে শনাক্ত করে তারা। পুলিস জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। এদের মধ্যে দু'জন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার তদন্তে ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
হাসপাতালের নাতালি ভবনের তৃতীয় তলায় গোলাগুলি হয়। সেখানে চিকিৎসকদের অফিস ও অর্থোপেডিক সেন্টার ছিল। নিহতদের মধ্যে রোগী ও হাসপাতালের কর্মচারী রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিস।
তবে হিংসার বিরুদ্ধে সরব আমেরিকার নাগরিকরা। ইতিমধ্যেই মার্কিনিরা ব্যক্তিগত অস্ত্র আইন সংস্কারের দাবি জানান। এছাড়া বন্দুক হামলা বন্ধে অস্ত্রবিরোধী বিভিন্ন ব্যানার ও স্লোগানের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান তাঁরা।
ফের বন্দুকবাজের হানা আমেরিকায় (America)। এবার আমেরিকার টেক্সাসের (Texas) একটি প্রাথমিক স্কুলে গুলি (Shoot) চালাল ১৮ বছরের এক যুবক। হামলায় মৃত্যু (Death) হয়েছে ১৮ জন পড়ুয়া সহ মোট ২১ জনের । জখম বহু। ঘটনাটি ঘটেছে টেক্সাসের স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার। পুলিস (Police) ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারী যুবককে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোঁড়ে। তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই অভিযুক্ত কিশোর বন্দুকবাজের।
ওই রাজ্যের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট (Greg Abbott) এই খবর একটি বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছেন। ওই বন্দুকবাজ যুবকের নাম সালভাদর র্যামোস। মঙ্গলবার একটি হ্যান্ডগান (HandGun) এবং রাইফেল (Rifle) নিয়ে স্কুলে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে সে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হল ২১ জন। যাঁদের মধ্যে ১৮ জন শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহতের সংখ্যা অনেক। তৎপরতার সঙ্গে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকজনের অবস্থা সংকটজনক বলে টেক্সাস প্রশাসন সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন পূর্বেই দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার চার্চে (Church) ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি (Shooting) চালায় বন্দুকবাজ এক যুবক। হামলায় মৃত ১। আহত হয়েছেন ৫ জন। এর ঠিক কয়েকদিন আগে নিউ ইয়র্কের (New York) সুপার মার্কেটে (Super Market)। হামলা চালায় ১৮ বছরের এক যুবক। অনুমান, বর্ণবিদ্বেষের জেরেই এই হামলা চালিয়েছে ওই যুবক।
এখনও দেশ পুরোপুরি কোভিডমুক্ত (Covid-Free) হয়নি। তার মাঝেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স (Monkey Fox)। ভারতে এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাস থাবা না বসালেও ইউরোপ ও আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর হদিশ মিলেছে। গত ১৩ মে থেকে ১২টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কি পক্স। এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৯২ জন। আফ্রিকা থেকে ইউরোপ এবং আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে, উদ্বেগ বাড়িয়ে জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ফলে সতর্কবার্তা দিল হু (WHO)।
মাঙ্কি পক্স কী? এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত। এই ভাইরাসটি সংক্রামক (contagious)। নাক-মুখ-চোখের পাশাপাশি আক্রান্তের জামা-কাপড় থেকেও সংক্রমিত হতে পারে। মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর শুরুতে জ্বর (Fever), মাথাব্যথা (headache), ঠান্ডা লাগা, শরীর ব্যথা, ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এরপর মুখে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে বেদনাদায়ক ফুসকুরি এবং ঘা-এর মতো দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরল এই মাঙ্কি পক্সের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি নেই। মূলত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে এই ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তবে এর নাম মাঙ্কি পক্স হলেও একাধিক বন্যপ্রাণীর মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সবচেয়ে বেশি এই সংক্রমণ ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে।
হু-র তরফে বলা হয়েছে, এখনই এ নিয়ে বিশেষ সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ছাড়াও ইউরোপের অন্তত ৯টি দেশে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে ব্রিটেন, পর্তুগাল এবং স্পেনের মতো দেশ সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত। এছাড়া বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, ইটালি এবং সুইডেনে ছড়িয়ে পড়েছে এই বসন্ত। যদিও এই পক্সে আক্রান্ত কারও মৃত্যুর খবর এখনও পর্যন্ত মেলেনি।
কথায় রয়েছে, যেমন কর্ম তেমন ফল। তবে কুকর্মের সঙ্গে সঙ্গে কেউ ফল পাবে, এটা হয়ত একটু বিস্ময়কর। সম্প্রতি আমেরিকায় (America) ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা অবাক করে দিয়েছে সকলকে। গলায় ফাঁস দিয়ে নৃশংসভাবে প্রেমিকাকে হত্যা (Murder) করে বৃদ্ধ (Old Man)। এরপর দেহ লোপাট করতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। বাড়ির পিছনে মৃতদেহ সমাধিস্থ করতে গিয়ে হৃদরোগে (Heart Attack) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। পরে পুলিস (Police) ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের (autopsy) জন্য পাঠায়।
ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার সাউথ ক্যারোলিনায়। মৃত প্রৌঢ়ের নাম জোসেফ ম্যাককিন (৬০) (Joseph McKinn)। প্রেমিকা প্যাট্রিকা ডেন্টের (৬৫) সঙ্গে লিভ ইন (Live In) সম্পর্কে ছিলেন তিনি। প্যাট্রিকার যমজ বোন পামেলা ব্রিগস বেশ কয়েকদিন ধরে কোনও খোঁজখবর পাচ্ছিলেন না। তারপরই সন্দেহ হয় তাঁর। এরপর পামেলা পুলিসকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পুলিস জোসেফের বাড়িতে যায়। তখনই বাগানে জোসেফের দেহ পড়ে থাকতে দেখে।
এরপর তদন্ত শুরু করতেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিসের। গোটা বাগান তন্নতন্ন করে খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, একটি কবর খোঁড়া রয়েছে। আর সেই কবরে (grave) প্লাস্টিকে মোড়া প্যাট্রিকার দেহ (DeadBody)পড়ে রয়েছে। সবে যে কবর দেওয়া হয়েছে, তা মাটি দেখেই বুঝতে পেরেছে পুলিস। তারপরই দুজনের দেহ পরীক্ষা করা হয়। আর রিপোর্টে উঠে এসেছে ওই চাঞ্চল্যকর তথ্য। গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে প্যাট্রিকাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জোসেফের মৃত্যু হয়।
ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। বোনের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পামেলা।
প্রসূন গুপ্ত: আরও একটা বিশ্বকাপ এসে গেল। ফুটবল বিশ্বকাপ চিরকাল মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে হত। কিন্তু এবার মধ্যপ্রাচ্যে খেলা, দায়িত্বে কাতার। এশিয়ার এই দেশ গ্রীষ্মপ্রধান। মে-জুন জুলাইতে প্রচণ্ড গরম থাকে, তাই খেলা পড়েছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে। ওই সময়ে গরম অনেকটা কম থাকে। নিয়মানুযায়ী এশিয়া, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলেশিয়া ইত্যাদি মহাদেশ থেকে ৩২টি দল চূড়ান্ত পর্যায়ে খেলে। যুগ যুগ ধরে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি এবং ইতালি চূড়ান্ত পর্বে চিরকাল খেলে এসেছে, অবশ্যই যোগ্যতা অনুযায়ী। এর মধ্যে ব্রাজিল ৫ বার জার্মানি ও ইতালি ৪ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি এবারে চূড়ান্ত পর্বে খেলছে না। ২০১৮-র রাশিয়া বিশ্বকাপের মতোই এবারও তারা যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
এবার লক্ষ টাকার প্রশ্ন, লাতিন আমেরিকার দলগুলি কী করবে? শেষবারের মতো এই উপমহাদেশের ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০০২ জাপান বিশ্বকাপে। কিন্তু তারপর থেকেই তারা হারিয়ে গিয়েছে, সবুজ গালিচাজুড়ে নেই সাম্বার ছন্দ। শেষবার, ২০১৪ সালে ফাইনাল যেতে পেরেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু লড়েও ফাইনালে তারা জার্মানির কাছে পরাজিত হয়েছিল। অথচ এই লাতিন আমেরিকান ফুটবল দেখতেই টিভির সামনে ভিড় জমায় ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের দর্শকরা। বিশ্বে এই দর্শক সংখ্যাই সব থেকে বেশি এবং এই দর্শকদের দিকে তাকিয়ে বিশ্বকাপ কর্তারা খেলার সময় ধার্য করে।
গতবারের বিশ্বকাপের ফাইনাল হয়েছিল মস্কোতে, ভারতীয় দর্শকদের কথা মাথায় রেখে রাশিয়া ফাইনালের সময় রেখেছিল তাদের ঘড়ি অনুযায়ী বিকেল ৪.০৫ এ। অর্থাৎ ভারতীয় সময় তখন রাত ৮.৩০। এবারেও বড় খেলা সবই রাত ৮.৩০ -এ। সেসব ঠিক আছে, কিন্তু ভারতীয়রা খেলা দেখতে বসে লাতিন আমেরিকার ফুটবলের শিল্পের ছোঁয়া কি এবার দেখতে পারবে ফুটবল বিশ্ব? সেই খেলা দেখানোর দায়িত্ব এখন মেসিদের উপরেই বর্তায় কি?
রুশ সেনার আগ্রাসন আজ ২১ তম দিনে পৌঁছেছে। একের পর এক ইউক্রেনের শহর ধ্বংস করে চলেছে রাশিয়ান সেনা (Russia-Ukraine War) । এমতাবস্থায় রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে (Russian President Valadimir Putin) 'যুদ্ধপরাধী' বলে ঘোষণা করল আমেরিকার সেনেট। রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বিষয়টি প্রথম বলেন। আর তাঁর এই প্রস্তাবকে সমর্থন করলেন দলের দুই সেনেটর। তারপরই আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত চালানো হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুদ্ধেও রুশ সেনাদের অপরাধ বিচার করে দেখা হবে বলে জানানো হয়।
এই প্রসঙ্গে ডেমোক্র্যাট সেনেটর চাক স্কামার বলেন, ইউক্রেনের উপর হওয়া রাশিয়ার নৃশংসতার দায়ভার প্রেসিডেন্ট এড়াতে পারবেন না। এবং তা নিশ্চিত করতেই তাঁরা ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান দল নির্বিশেষে এই সভায় উপস্থিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাতেউস মোরাউইকি, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট পেত্র ফিয়ালা ও স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানেজ জানসা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতে কিয়েভ যান। ওয়ারশ থেকে ট্রেনে করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জিয়েভ সফরে যান ন্যাটো জোটের তিন সদস্যদেশের প্রধানরা। এই সফর ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
প্রসঙ্গত, রুশ আগ্রাসনের একেবারে শুরু থেকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যভুক্ত করার আবেদন জারি করেছিলেন। কিন্তু সদস্যপদ তো দূর, ইউক্রেনকে কেবলমাত্র অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেই দায় সেরেছে ন্যাটো। এমনটাও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এবার মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে জেলেনস্কি জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেন আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো গোষ্ঠীর সদস্য হবে না। আর তা দেশবাসীর মেনে নেওয়া উচিত। তাঁর এই বক্তব্যের পরই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তাহলে কি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সমঝোতার পথে এগোচ্ছেন!
ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অবশেষে শুরুই হয়ে গেল। ইউরোপের এই সংঘাত বিশ্বকে কোন দিকে নিয়ে যাবে, সেটাই এখন লক্ষ্যণীয়।
রাশিয়াকে (Russia) যখন অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন রাশিয়ার পাশে চিন (China) রয়েছে বলে বেজিং থেকে জানানো হয়েছিল। আর সেই চিনকেই এবার কড়া হুঁশিয়ারি দিল আমেরিকা (America)। রাশিয়াকে যদি আর্থিকভাবে সাহায্য করে চিন, তাহলে তার ফল খারাপ হবে বলে জানিয়ে দিলেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। আর এই বিষয় নিয়ে জ্যাক আজ অর্থাৎ সোমবার বৈঠকে বসতে পারেন চিনা প্রতিনিধি ইয়াং জিয়েচিত সঙ্গে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বন্ধে সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্র সহ গোটা পশ্চিমী বিশ্ব। রাশিয়ার বিপক্ষে ঐক্যবদ্ধ একাধিক দেশ। রাশিয়াকে দমাতে নানান ক্ষেত্রে বয়কট করা হচ্ছে। সেই তালিকায় রয়েছে রাশিয়ান ভদকা, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি। এমনকি অলিম্পিক, বিশ্বকাপ থেকেও বাদ পড়েছে রাশিয়ার নাম।
রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধ থামানোর কথা বারবার বলা হলেও কারোর কথা শুনতে নারাজ তিনি। তাই আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, জাপান, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে বহিস্কার করেছে রাশিয়াকে। কিছুদিন আগে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা করেছিল বাইডেন। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। কারণ রুশ অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি এই জ্বালানি রপ্তানি।
এমতাবস্থায় চিন রাশিয়ার পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার ইউক্রেনে হামলা চালাতে চিনের থেকে হাতিয়ার চেয়েছে রাশিয়া বলে খবর। এছাড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কমাতেও সাহায্যের হাত বাড়ানোর কথা বলে চিনকে। শোনা যাচ্ছে, রাশিয়া ইউক্রনের উপর এবার জৈব অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারে। আর তার ফল ভয়াবহ হবে বলেই আশঙ্কা।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ১৬ দিন পার। যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। ইউক্রেন(Ukraine)-র উপর ক্রমশ আঘাত হানছে রাশিয়া (Russia)। এবার সরাসরি যুদ্ধে ‘না’! রাশিয়াকে ‘চরম মূল্য চোকানো’র হুঁশিয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই হুঁশিয়ারি দেন। ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে আহ্বান করবে। এমনই হুঙ্কার দিয়ে সরব হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডো বাইডেন। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের একাধিক শহরে আরও আগ্রাসন বাড়াতে হামলার ছক বিস্তার করেছে পুতিন বাহিনী। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলের জন্যও তারা উদ্যত। এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো সুর চড়িয়ে আমেরিকা নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিল।
শুক্রবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden) জানান, যদি ইউক্রেনে রাশিয়া কেমিক্যাল অস্ত্র (Chemical Weapon) ব্যবহার করে, তবে তাদের ভারী মূল্য চোকাতে হবে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার জন্য মস্কো যাতে উসকানি না দেয়, তা নিয়েও সতর্ক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই রাশিয়া দাবি করে, ইউক্রেন ও আমেরিকা জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করছে। এরই জবাবে শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন হুঁশিয়ারি দেন। উল্লেখ্য় রাশিয়ার অনুরোধেই শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ। ওই বৈঠকে রাশিয়ার অভিযোগ ছিল ইউক্রেন দেশের ভিতরেই জৈব অস্ত্র তৈরি করছে।
শুধু হুঁশিয়ারি দিয়েই থেমে থাকেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তিনি নতুন করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সঙ্গে যাবতীয় বাণিজ্যে ইতি টানা হবে।
রাশিয়া ইউক্রেনের উপরে হামলা শুরুর পর থেকেই আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেছে। একে একে আর্থিক অনুদান, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করছে মার্কিন মুলুক। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থাও, যাদের মধ্যে অধিকাংশই আমেরিকান, তারাও রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাশিয়া থেকে নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে।
আমেরিকা সহ একাধিক পশ্চিমী দেশ কয়েক লক্ষ ডলারের অস্ত্র-শস্ত্র পাঠিয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ার জন্য। বাকি পশ্চিমী দেশের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও দাঁড়িয়েছে ইউক্রেনের পাশে। শুক্রবারও রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে না জড়ানোর সিদ্ধান্তের ব্য়াখ্যা দিয়ে বাইডেন বলেন, “আমরা ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়াই করব না। ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে, তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হতে পারে, যা আমরা সবাই-ই চাই যেন না হয়।”