২০০১ সালে মুক্তি পেয়েছিল গদর (Gadar); এক প্রেম কথা। ২০২৩ সালে মুক্তি পেল সেই সিনেমার দ্বিতীয় পর্ব। হিন্দি সিনেমা জগতে হইচই ফেলে দিয়েছে সিনেমাটি। ৪০০ কোটির সীমা পেরিয়ে এবার ৫০০ কোটির পথে ছবির উপার্জন। এমন সময়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে তাহলে কী 'গদর সিনেমার তৃতীয় পর্ব আসবে?' আর সেই ছবিতেও অপরিবর্তিত থাকবে সানি দেওল ও আমিশা পাটেলের (Ameesha Patel) জুটি? এমনই সময়ে অভিনেত্রীর গলায় অভিমানের সুর শোনা গেল। স্পষ্ট করেই বললেন, 'যদি শাকিনাকে (গদরে আমিশার চরিত্রের নাম) পর্দায় বেশি সময় দেখানো হয়, তবেই রাজি হব'।
গদর এবং গদর ২ সিনেমার পরিচালক অনিল শর্মার বিরুদ্ধে আগেই পারিশ্রমিক না দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন আমিশা। সম্পর্কের উত্তাপ আরও বেড়েছে দিন দিন। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের সামনে আমিশা বলেন, 'অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন মিস্টার অনিল শর্মার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কেমন। আমার উত্তর ওঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক কোনওদিনই ভালো ছিল না। কিন্তু তিনি আমার কাছে পরিবারের মতো। যেমন অনেকের সঙ্গে মতপার্থক্য হলেও পরিবার হিসেবে থেকে যান।'
অভিনেত্রী আরও অভিযোগ তোলেন, গদর সিনেমার জন্য পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিলেন গোবিন্দা এবং মমতা কুলকরণী। তবে প্রযোজক সংস্থার ইচ্ছেতেই তিনি সানি দেওল এবং আমিশা প্যাটেলকে নেন। আমিশা জানিয়েছেন, একমাত্র প্রযোজনা সংস্থা এবং সানি দেওলের জন্যই তিনি সিনেমায় কাজ করেছেন। অভিনেত্রী কৃতিত্ব দিয়েছেন 'শাকিনা' চরিত্রটির লেখককেও।
অন্যদিকে অভিনেত্রীর সব অভিযোগ উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন সিনেমার পরিচালক অনিল শর্মা। সিনেমার প্রমোশনে কিংবা সামাজিকতায় একে অপরের প্রতি আনুষ্ঠানিক বাক্য বিনিময় করলেও যে তাঁদের সম্পর্ক আদৌ ঠিক নেই, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
বলিউড (Bollywood) এবং দর্শক, সকলেই ধরে নিয়েছিলেন বক্স অফিসে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল (Ameesha Patel)। ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'কহো না প্যায়ার হ্যায়' এবং ঠিক তার পরের বছর মুক্তি পাওয়া ছবি 'গদর' ছাড়া আমিশা অভিনীত আর কোনও উল্লেখযোগ্য ছবির কথা মনেই করতে পারেন না কেউ। এরপর আমিশা বহু ছবিতেই অভিনয় করেছেন, কিন্তু সাফল্য তাঁর থেকে যেন লক্ষ যোজন মাইল দূরে। এতগুলো বছর পর যখন বলিউড সিনেমার দর্শকেরা তাঁর নাম মনেই করতে পারেন না, তখনই অভিনেত্রীর ঘর ওয়াপসি। গদর ছবির দ্বিতীয় পর্ব দিয়েই বক্স অফিসে বেড়ে চাল চালেন।
গদর-২ বক্স অফিসে টিকতে পারবে বলেই ভাবেননি অনেকে। কিন্তু অগাস্ট মাসে মুক্তি পাওয়া সবকটি ছবিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যান সানি ও আমিশা। শুধু তাই নয়, ৮০ কোটি টাকা দিয়ে তৈরী হওয়া সিনেমার এখনও পর্যন্ত উপার্জন ৪০০ কোটি টাকা। হিন্দি সিনেমা জগতে এই অর্জন বেশ প্রশংসনীয়। অভিনয় জগতে এই সফল প্রত্যাবর্তনের পর আমিশা এবার ফিরে তাকালেন অতীতে। তাঁর অভিনীত যে ছবিগুলি বক্সঅফিসে সফল হয়নি তার মধ্যে কয়েকটি ছবি ভালো ফল করতে পারত বলে দাবি অভিনেত্রীর। সলমান খানের সঙ্গে অভিনীত ছবি 'ইয়ে হ্যায় জলওয়া'-এর কথা নিয়ে প্রকাশ্যে সলমানকে বিঁধলেন আমিশা।
এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছেন, 'ইয়ে হ্যায় জলওয়া ডেভিড ধাওয়ানের অন্যতম ভালো সিনেমা। সলমানকে এর থেকে বেশি হ্যান্ডসাম কোথাও লাগেনি, সবকিছুই ঠিক ছিল। তবে সেইসময় দর্শক তাঁর পছন্দের অভিনেতাকে নিয়ে কোনওরকম নেতিবাচক খবর শুনতে রাজি ছিলেন না। সলমানের ঘটনাটি তখন সদ্য ঘটেছিল। ফলে সিনেমাটি গুরুত্ব হারায়। আমার মনে হয় সিনেমাটি ভালো ফল করতে পারত।'
বলিউডে (Bollywood) একসময় বহু সিনেমা করেছেন অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল (Ameesha Patel)। তারপর বেশ কিছু বছর একেবারে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন সিনেমার পর্দা থেকে। শোনা গিয়েছিল, তাঁকে নিয়ে নাকি সিনেমা বানাতে চাইছেন না, অন্যান্য পরিচালকেরা। এরপর নিজে সিনেমা বানাতে চেয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু সেই সিনেমাও দর্শকদের হলে টানতে পারেনি। সম্প্রতি অভিনেত্রী চর্চায় উঠে এসেছেন তাঁর আসন্ন সিনেমা গদর-২ এর জন্য।
বলিউডে একসময় গুঞ্জন শুরু হয়েছিল আমিশা প্যাটেলের সঙ্গে পরিচালক বিক্রম ভাটের সম্পর্ক নিয়ে। সম্প্রতি অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, বিক্রমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের প্রভাব কী অভিনেত্রীর কেরিয়ারে পড়েছে? উত্তরে বিস্ফোরক হয়ে ওঠেন আমিশা। তিনি বলেন, 'এই ইন্ডাস্ট্রিতে সততাকে স্বাগত জানানো হয় না। আমি এমন একজন যে খবই সৎ। আমি এমন একজন যে হৃদয় হাতে রাখি। আমার মনে হয় সেটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অপূর্ণতা। আমার দুটি সম্পর্কই আমি জনসমক্ষে এনেছিলাম। সেই দুটি সম্পর্কই আমার কেরিয়ার শেষ করেছিল।'
অভিনেত্রী আরও বলেন, 'অভিনেত্রীদের সিঙ্গেল থাকা দর্শকদের আকর্ষিত করে। তাঁরা মনে করেন আপনি সিঙ্গেল আছেন মানেই কোনও তারকার সঙ্গে প্রেম করছেন। এই ধারণাই কেরিয়ারের জন্য লাভের হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। বরং আমার কেরিয়ারে সেই প্রভাব পড়েছে। তবে ভুল থেকেই মানুষ শেখে।'
বিপাকে পড়লেন 'কহো না প্যায়ার হ্যাঁয়' খ্যাত অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল (Ameesha Patel)। নিজের প্রোডাকশন হাউসের ব্যানারে সিনেমা বানাতে ধার নিয়েছিলেন অর্থ। সেই টাকা ফেরত দিতে না পেরে আইনি জটে মুশকিলে পড়লেন তিনি। এক ব্যক্তি এফআইআর করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে। জল এতদূর গড়িয়েছে যে আদালত (Ranchi Court) আমিশার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
রাঁচি নিবাসী অজয় কুমার সিং, আমিশা প্যাটেল এবং তাঁর ব্যবসায়ী শরিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। মামলাকারী বলেছেন, এক দশক আগে আমিশা তাঁকে 'দেশি ম্যাজিক' সিনেমায় বিনিয়োগের কথা বলেন। এরপর ওই ব্যক্তি আমিশাকে আড়াই কোটি টাকা দেন। কথা ছিল, সিনেমা মুক্তি পেলেই আমিশা এবং তার ব্যবসায়ী শরিক সুদ-সহ সেই অর্থ ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু আজও সেই অর্থ ফেরত পাননি ওই ব্যক্তি।
আমিশাকে বারংবার তাগাদা দিতে থাকেন ওই ব্যক্তি। আমিশাও তাঁকে এড়িয়ে যান। পরে আড়াই কোটি টাকার চেক দেন ওই ব্যক্তিকে। কিন্তু সেই চেক বাউন্স হয়ে যায়। এরপরেই আমিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
এর আগেও আমিশাকে কোর্টে হাজিরা দেওয়ার সমন পাঠানো হয়। তবে আমিশা বা তাঁর উকিল যাননি আদালতে। তাই আমিশার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে রাঁচি কোর্ট। আইপিসির ৪২০ এবং সিআরপিসি-র ১২০ ধারায় প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে আমিশার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই অভিনেত্রীর নিন্দায় সরব হয়েছে নেট দুনিয়া। মামলা কোনদিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার।