কেন্দ্রীয় সংস্থার জালে শাসকদলের আরও এক মন্ত্রী। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছর গ্রেফতার হন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর এবার রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলায় বাকিবুর রহমান নামে এক রেশন ডিলার গ্রেফতার হওয়ার পরই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর নাম সামনে আসে।তারপরই কার্যত নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারীকরা।
শুক্রবার কাকভোরে ইডির হাতে গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয়। আর তারপর থেকেই উত্তপ্ত বাংলার রাজনীতি। সোমবার খাদ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দক্ষিণ কলকাতা কংগ্রেস। তাদের দাবি শুধু জ্যোতিপ্রিয় নয়, এবার এই চক্রে আরও যারা যারা যুক্ত আছে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক। এটি একটি সংগঠিত অপরাধ। অনেকেই এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। বিক্ষোভস্থল থেকে আওয়াজ তোলেন কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রবিবার রাজ্যজুড়ে ব্লক স্তরে তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচি। পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক ব্লকে দুপুর ১২টা চলছে প্রতিবাদ। বিকেল ৪টে পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করছে তৃণমূল। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগে মোদী সরকারকে নিশানা করেছে তৃণমূল। চেতলায় ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বরানগরে ছিলেন তাপস রায়। ছিলেন কুণাল ঘোষ শশী পাঁজাও। রেলের অনুষ্ঠানে না গিয়ে কর্মসূচিতে হাজির হন শত্রুঘ্ন সিনহাও।
এদিকে গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের বিক্ষোভ কর্মসূচির মাঝেই এক বিজেপি বিধায়ক মঞ্চে উঠে যান। বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় তৃণমূলের মঞ্চে উঠে বলেন, কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে বকেয়া আদায় করুক রাজ্য। তাঁর এই মন্তব্যে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল তৈরি হয়েছে।
রবিবার ব্লকে ব্লকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান তৃণমূল নেতারা। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বিজেপি-শাসিত মণিপুরে যে ভাবে অশান্তি ছড়িয়েছে এবং কেন্দ্র যে ভাবে বিষয়টি দেখছে, তা নিয়েও সরব হন তৃণমূল নেতৃত্ব।
বৃহস্পতিবার চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি সল্টলেকে। এদিন সকাল থেকেই চাকরির দাবিতে আচার্য সদনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীরা। পুলিস সেখানে পৌঁছতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিসের। পরে বিক্ষোভকারীদের টেনে হিঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিস।
জানা গিয়েছে, দ্রুত নিয়োগের (Recruitment) দাবিতে সল্টলেকে আচার্য সদনের সামনে সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন উচ্চপ্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করার দাবি জানান তাঁরা। অভিযোগ, গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন চাকরিপ্রার্থীরা। নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের আটকে দেন। এরপর সেখানেই জামা খুলে গেঞ্জি পরে প্রতিবাদে রাস্তায় বসে পড়েন তাঁরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিধাননগর পুলিশের বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রীতিমতো জোর করে টেনে হিঁচড়ে বিক্ষোভকারীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিস।
৯০০ দিনের উপর হয়ে গেল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীরা। বুধবার সকালে প্ল্যাকার্ডে লেখা একগুচ্ছ দাবি দাওয়া নিয়ে এমএলএ হস্টেলের সামনে বিক্ষোভ দেখতে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। বুধবার রাজ্য অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের মন্ত্রী বিধায়কদের। কিন্তু বাইরের আন্দোলনের চাপে হস্টেলেই আটকে থাকতে হয় তাঁদের। প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘৯০০ দিন ধরে ধরনায় বসে থাকা বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আওয়াজ তুলুন। ‘ কিংবা কোনওটায় লেখা ‘ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই।’
বুধবার সকালে রাজ্যসভার অধিবেশনে যাওয়ার বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই বিক্ষোভ। যদিও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে বেলা ১১ টা নাগাদ এসে ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। বড় বাস, ভ্যানে আন্দোলনকারীদের একপ্রকার ‘বলপূর্বক’ তুলতে দেখা যায় রাজয়পুলিশকে। আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের জের পড়ে বিধানসভার অধিবেশনেও।