রেশন দুর্নীতি মামলাতেও এবার মিডলম্যান যোগ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর গ্রেফতার হওয়া বাকিবুর রহমানের এজেন্টদের হাত ঘুরেই দুর্নীতির টাকা উঠত মন্ত্রীদের ঘরে। কোনও সরকারি দফতরে সরাসরি সেই টাকা যেত না, তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। বরং এজেন্টদের হাত ঘুরে টাকা পৌঁছনোর পর বাকিবুরকে জানানো হত ডেলিভারি হয়ে গিয়েছে।
এবার এই মিডল ম্যানদের জিজ্ঞাসাবাদের পথে হাঁটবে ইডি। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি, পুর দুর্নীতি কাণ্ডেও একেরপর এক সার্জিকাল স্ট্রাইক করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি।
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতির টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল সিনেমা প্রযোজনাতেও। প্রাথমিক তদন্তে এমনই তথ্য পেয়েছে ইডির-র গোয়েন্দারা। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পুরো কাজটি পরিচালনা করতেন ইডির হাতে ধৃত মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমান। এবং সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
অয়নের নথি হাতড়ে এবং ধৃত অয়নকে জেরা করে এজেন্টদের তথ্য বার করে ফেললো ইডি। এই তালিকায় রয়েছে একাধিক এজেন্ট দের নাম। যাদের মাধ্যম দিয়ে দুর্নীতি চালাত অয়ন। ইডির সূত্র অনুযায়ী, কানুদা, এমডি, তপনদা, লাল, কানুদা এসব নাম উদ্ধার করেছে ইডি। যদিও এদেরপরিচয় এখনও জানা যায়নি বলেই খবর, সেসব তথ্য, নথি, ইডি খুঁটিয়ে পরীক্ষার পর আরও নাম, এবং তথ্য উঠে আসবে বলেই দাবি করেছে ইডি। ইডির তালিকা থেকে আরও জানা যায় যে, এদের মধ্যে কেউ ৯৬ জন প্রার্থীর তালিকা পাঠিয়েছিল অয়নের কাছে। ওই চাকরিপ্রার্থীদের রোল নম্বর, পদ, পুরসভা, বিভাগ-সহ বিস্তারিত বিবরণও রয়েছে। এছাড়া জানা যায় ৬৮ জন প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠিয়েছে লাল। ৪৩ জন প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠিয়েছে এমডি, ১৫ জন ক্যান্ডিটেড নামের লিস্ট পাঠিয়েছেন তপনদা। এ সমস্ত লিস্ট আদালতেকে জানিয়েছে বলে দাবি ইডির।
সে সঙ্গেই উদ্ধার অয়নের সঙ্গে এক রহস্যময়ী নারীর যোগ। যে নারীই নাকি অয়নকে সমস্ত নথি সরিয়ে ফেলতে বলে মেসেজ করেছিল। সে মেসেজও ইডি উদ্ধার করেছে অয়নের ফোন থেকে। ইডি সূত্রেই খবর, অয়ন শীলের এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আছেন, যার নাম শ্বেতা চক্রবর্তী, যিনি নৈহাটি জেলাপাড়াতে থাকেন। তথ্য যাচাই করে ইডি জানতে পেরেছে যে, কামারহাটি পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করতো শ্বেতা। বাবা প্রাক্তন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী। সূত্রের খবর, শ্বেতা কে অয়ন শীল দামি গাড়ি উপহার দিয়েছিলো। সেই গাড়ির রিসিভ, অর্থাৎ স্বেতা চক্রবর্তীর নামে যে গাড়ি কেনা হয়েছিল তার বিল উদ্ধার করেছে ইডির কর্তারা। এছাড়া আরও খবর , অয়নের বাড়ি থেকে শ্বেতার ব্যাঙ্কে টাকা পাঠানোর রশিদ উদ্ধার হয়েছে। শ্বেতা-অয়ন শীলের প্রমোটারির ব্যাবসায় মদত দিত বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি সোমবার ইডি তল্লাশির পর জানিয়েছে, অয়নের ঘর থেকে মিলেছে বেশ কয়েকটি ডিপোজিট স্লিপও। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে আরও কয়েকটি মানি রিসিপ্ট, ধনেখালি, কেএলসি, ভাঙড় থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি জমি এবং দিল্লি এনসিআর এলাকায় কাকলি শীলের নামে কেনা সম্পত্তির নথি। পাশাপাশি সই করা চেকের পাতা, কয়েকটি ল্যাপটপ, কম্পিউটার, হার্ড ডিস্কও পেয়েছে ইডি।