
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ব্যাটার হিসাবে একদিনের ক্রিকেটে ডবল সেঞ্চুরি। তিনি প্রথম যিনি ওপেন করতে না এসে একদিনের ক্রিকেটে দ্বিশতরান করলেন। কোনও একদিনের ম্যাচে রান তাড়ায় তাঁর ব্যাট থেকে গেল সর্বোচ্চ রান করার নজির। এই প্রথম কোনও একদিনের ম্যাচে রান তাড়ায় কোনও ব্যাটার ২০০ রানের মাইল ফলক তৈরি করলেন। মঙ্গলবার ওয়াংখেড়ে পরবর্তী সময়ে চুম্বকে এটাই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। যাঁকে বলা হচ্ছে, এক পায়ে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তোলার সম্রাট।
সেই ম্যাক্সওয়েল জানান, মুম্বইয়ের প্রচন্ড গরমে প্রথমে ফিল্ডিং করে তারপর ব্যাট করা মোটেই সহজ ছিল না। তাই কাহিল হয়ে যাচ্ছিলেন। যন্ত্রণা তাঁর শরীরে থাবা বসাছিল। মাঠে শুয়ে তার থেকে নিস্তার খোঁজার চেষ্টা করছিলেন। কারণ, যে পরিস্থিতি তিনি এসেছিলেন, আর যেখান থেকে তিনি মাঠ ছাড়লেন, তা একশো আশি ডিগ্রির পার্থক্য। ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স জানিয়েছেন, তাঁর দেখা একদিনের ক্রিকেটে এটাই সেরা ইনিংস।
১৯৮৩ সালে ট্রেন্ট ব্রিজ। নাকি ২০২৩ সালের মুম্বই। বিশ্বকাপের প্রেক্ষাপটে কোনটা সেরা। ওয়াংখেড়ে পরবর্তী সময়ে শুরু হয়ে গিয়েছে এই নিয়ে আলোচনা। কপিলের মহাকাব্য নাকি ম্যাড-ম্যাক্সের রূপকথা ? আলোচনা চলছে। তার মধ্যেই বিশ্বকাপের তৃতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া। আফগানিস্তানের হারে আপাতত স্বস্তির শ্বাস পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড শিবিরে। আর ভারত তাল ঠুকছে চার নম্বরে কে থাকবে, তার অপেক্ষায়।
বিশ্বকাপের মঞ্চে ইতিহাস গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ডবল সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়াকে তিন উইকেট ম্যাচ জেতালেন ম্যাড-ম্যাক্স। মঙ্গলবারের মুম্বই সাক্ষী বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের। ৭ উইকেটে ৯১ রান। এখান থেকে আফগানিস্তানকে একাই হারিয়ে দিলেন ম্যাক্সওয়েল। ১২৮ বলে ২০১ রানে অপরাজিত তিনি।
টার্গেট ২৯২। যা ওয়াংখেড়ের মাঠে সবচেয়ে বড় রানের টার্গেট। সেই রান তাড়া করতে নেমে স্টিভ স্মিথহীন অস্ট্রেলিয়া। আফগান স্পিনারদের দাপটে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে অজি টপ অর্ডার। প্রহর গোনা শুরু হয় আরও একটা অঘটনের। এখান থেকে শুরু ম্যাচ ঘোরানোর খেলা। অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে নিয়ে সেই শুরু করলেন। থামলেন ওভার বাউন্ডারি মেরে। চুম্বকে এটাই মঙ্গল সন্ধ্যায় ম্যাক্সওয়েল।
তাঁর এই যুদ্ধের সেনাপতির নাম অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। যাঁর অবদান ৬৮ বলে অপাজিত ১২ রান। রিকি পন্টিং, শেন ওয়ার্টসনরা মুগ্ধ কামিন্সের এই ধৈর্য্যে। আফগানিস্তানের এই হারের ফলে স্বস্তি এখন পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ড শিবিরে। মনে মনে তাদের ধন্যবাদ গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে।
বিশ্বকাপে জয়ের হ্যাটট্রিক করল আফগানিস্তান। শুক্রবার নেদারল্যান্ডসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিল তাঁরা। প্রথমে ব্যাট করে ১৭৯ রান করে নেদারল্যান্ডস। ৩১.৩ ওভারে ৩ উইকেটেই সেই রান তুলে নেয় আফগান ব্রিগেড। এই জয়ের পর বিশ্বকাপের পঞ্চম স্থানে উঠে এল আফগানিস্তান। আর এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন মহম্মদ নবি।
আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাসমাতুল্লা শাহিদি ৫৬ রান করেন। রহমাত শাহ ৫২ রান করেন। আফগানিস্তানের হয়ে তিন উইকেট নেন মহম্মদ নবি। আফগানিস্তান জেতায় পাকিস্তান ছয় নম্বরে নেমে গেল। আফগানিস্তানের জয়ের পর নিউজিল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিততেই হবে পাকিস্তানকে।
এদিন কোনও উইকেট পাননি রশিদ খান। তবে মহম্মদ নবি একই তিন উইকেট নিয়ে নেন। ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। ৩১ রানে ২ উইকেট নূর আহমেদের। ১ উইকেট নিয়েছেন মুজিব উর রহমান।
ইংল্যান্ডের পর এবার পাকিস্তান। না কোনও চমক নয়। রীতিমতো পরিকল্পনা মাফিক পার্টনারশিপ, উইকেটের গতি বুঝে বোলিং ও ফিল্ডিং। এক ওভার বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে বাবর ব্রিগেডকে হারাল আফগানিস্তান।
পরপর দুটি ম্যাচ হেরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন আফ্রিদিরা। এই ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে বড়সড় ধাক্কা খেলেন বাবরা। এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তোলেন তাঁরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে রহমাতুল্লাহ গুরবাজ ৬৫ রান করেন। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদ্রান করেন ৮৭ রান। ৭৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন রহমত শাহ। ৪৫ বলে ৪৮ রান করেন অধিনায়ক শাহিদি। খেলা শেষ করে ফেরে আফগানিস্তান।
ফের ভূমিকম্প (Earthquake) আফগানিস্তানে (Afghanistan)। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৬.৩। গত শনিবারই একাধিকবার কম্পন অনুভূত হয় আফগানিস্তানের হেরাত ও সংলগ্ন এলাকায়। গত ভূমিকম্পের ৪ দিনের মাথায় ফের শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হল আফগানিস্তানে। গত শনিবার আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে মৃত্যু হয় ৪ হাজাররের বেশি মানুষের। আগের ভূমিকম্পের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ভূমিকম্প হওয়ায় আতঙ্কে আফগানিস্তানের নাগরিকরা।
সূত্রের খবর, স্থানীয় সময় ভোর ৫ টা ১০ মিনিটে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তান। জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম আফগানিস্তানে কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৬.৩। হেরাত শহরের উত্তরে ২৯ কিমি দূরে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল।
গত শনিবার তিনটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার পর একাধিকবার আফটার শক অনুভূত হয়েছে। তীব্র কম্পনের ফলে হেরাতের প্রায় ১১টি গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্পে ভেঙে পড়েছে সে দেশের অন্তত ২,০০০ বাড়ি। মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চার হাজারের গণ্ডি পার করেছে। তবে এদিনের ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি। কিন্তু বারংবার ভূমিকম্পের ফলে আতঙ্কে রয়েছেন সেদেশের নাগরিকরা।
শনিবার পর পর তিনবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তানের (Afghanistan) হেরাত শহর। এর পর একাধিকবার আফটারশকও অনুভূত হয়েছে। কয়েক মিনিটের ভূমিকম্পে ধূলিসাৎ হয়েছে একাধিক গ্রাম। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে শুধু লাশের স্তূপ। ধুলোয় মিশে গিয়েছে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এই ভূমিকম্পের জেরে মাটিতে মিশে গিয়েছে প্রায় ১২টি গ্রাম। মৃতের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সূত্রের খবর, সেই দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০০ পেরিয়ে গিয়েছে।
আফগান সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, রবিবার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০০-এরও বেশি। তবে শেষ পর্যন্ত, এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, হেরাত প্রদেশের অন্তত ১২টি গ্রাম ভূমিকম্পে পুরো মাটিতে মিশে গিয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে জানানো হয়েছে, অন্তত ৪৬৫টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আরও ১৩৫টি বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুর ১২টা ১১ মিনিটে প্রথম কম্পন হয় পশ্চিম আফগানিস্তানের হেরাতে। কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.১। দ্বিতীয় কম্পনটি হয় ১২টা ১৯ মিনিটে। এর তীব্রতা ছিল ৫.৬। তৃতীয় কম্পনটি ছিল আরও জোরালো। তীব্রতা ছিল ৬.৩। দুপুর ১২টা ৪২ মিনিটে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তান। এই কম্পনের উৎসস্থল ছিল হেরাত থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। এর পরই জানা যায়, ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন ভয়াবহ ভূমিকম্পে। কিন্তু এই সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভয়াবহ ভূমিকম্প (Earthquake) আফগানিস্তানে (Afghanistan)। হেরাত ও সংলগ্ন এলাকায় কয়েক মিনিটে পর পর মোট পাঁচ বার কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রথমবার যে ভূমিকম্প হয়, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৩। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু এবং ৭৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর পরই পর পর চারবার আফটারশক অনুভূত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কম্পের মাত্রা ছিল ৫.৫, ৪.৭, ৫.৯ ও ৪.৬।
সূত্রের খবর, শনিবার দুপুর ১২টা বেজে ১১ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। পরের ভূমিকম্প হয় ১২টা ১৯ ও ১২টা ৪২ মিনিটে। ভূমিকম্পটির উৎসস্থল ছিল হেরাত শহর থেকে ৪০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে। এদিন কম্পনের জেরে পশ্চিম আফগানিস্তানের হেরাত শহরের একাধিক বাড়ির দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় মিলেছে ধসের খবরও। একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, এই ভূমিকম্পে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৭৮। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০২১ সালের অগাস্টে তালিবানরা (Taliban) আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল নেওয়ার পর থেকেই সেখানকার নারীদের স্বাধীনতায় একের পর এক কোপ বসিয়েছে। তালিবানরা আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নারীদের স্বাধীনতা পদে পদে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবারে নারীদের বিউটি পার্লারে (Beauty Parlour) যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালিবানরা। আর এর ফলে এবারে বহু সংখ্যক মহিলা বেকার হয়ে পড়েছে বলে খবর। তাই এবারে আর চুপ না থেকে এর প্রতিবাদে নেমেছে আফগানিস্তানের মহিলারা।
তালিবানরা আফগানিস্তানে আসার পর থেকেই একে একে নারীদের উচ্চশিক্ষা, বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এরপর সেখানকার মহিলাদের জিম-পার্কে যাওয়াও বন্ধ করেছে। আর এবারে তাঁদের বিউটি পার্লারে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে ফরমান জারি করেছে তালিবান সরকার। ফলে এর প্রতিবাদে নেমেছে আফগান মহিলারা।
ফরমানে বলা হয়েছে, পার্লারে মহিলারা বাজে খরচ করে। তাই তৎক্ষণাৎ পার্লার বন্ধ করতে হবে। শুধু ফরমান জারি করা নয়, কড়া হাতে বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে, বিউটি পার্লারে কাজ করেন দেশের ৬০ হাজারেরও বেশি মহিলা। তালিবানি এই ফরমান জারির ফলে কাজ হারাতে বসেছেন তাঁরা। এরই প্রতিবাদে এবার রাস্তায় নামল তাঁরা। রীতিমতো পোস্টার, ব্যানার নিয়ে তালিবানি ফরমানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে রাজধানী কাবুলের বুচার স্ট্রিটে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে প্রায় ৫০ জন মহিলা। তাদের পোস্টারে লেখা রয়েছে, 'আমার রুটি, জল ছিনিয়ে নিও না।' আর সেই প্রতিবাদের ভিডিওই বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
ফের আফগান (Afghan) মহিলাদের স্বাধীনতা খর্ব করতে আরও এক বড় পদক্ষেপ নিল তালিবানরা (Taliban)। এবারে কোনও রেস্তোরাঁ ও সবুজ গাছপালায় ভরা প্রশস্ত বাগান ধরণের জায়গায় মহিলা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করল তালিবান। তালিবানদের দাবি, আফগান মহিলারা এখন হিজাব না পরেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাই একাধিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। এর ফলেই তালিবানরা মহিলাদের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্রের খবর, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে (Afghanistan) এখন মহিলারা কোনও নিয়ম মেনেই চলাফেরা করছেন না। তাঁরা হিজাব পরছেন না। এমনকি ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে ঘোরাফেরা করছেন, একসঙ্গে রেস্তোরাঁ, হোটেলে দেখা করছেন। ফলে নারী-পুরুষের মেলামেশা বন্ধ করার জন্যই এই পদক্ষেপ তালিবানদের। তবে এই নিষেধাজ্ঞা এখন শুধুমাত্র হেরাত নামক জায়গার জন্য়ই প্রযোজ্য। হেরাতে বিভিন্ন রেস্তোরাঁ বা প্রশস্ত বাগান-সহ হোটেলে শুধুমাত্র ছেলেরাই যেতে পারবেন। এমনকি পরিবার-সহ গেলেও পুরুষ ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না রেস্তোরাঁয়।
তালিবানদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তবে হেরাতের সমস্ত রেস্তোরাঁয় মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা নেই। যেসমস্ত রেস্তোরাঁয় বাগান-পার্ক রয়েছে, যেখানে ছেলে-মেয়ে দেখা করতে পারেন, সেসব জায়গায় ঢুকতে দেওয়া হবে না মহিলাদের। তবে তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য রেস্তোরাঁগুলোর উপর নজর রাখা হচ্ছে, সেখানেও যদি ছেলে-মেয়ে দেখা করেন, সেখানেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে তালিবানরা আফিগানিস্তানের উপর দখল নেওয়ার পর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে চলেছে তারা। আফগান মহিলাদের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য তারা এর আগেই শিক্ষা, বিনোদন, চাকরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এরপর পার্ক ও জিমে প্রবেশে নিষেধ করার পর এই তালিকায় এখন রেস্তোরাঁও যুক্ত হল।
মহিলা স্বনির্ভরতা প্রশ্নে বরাবর 'সংস্কারী' তালিবান (Taliban Government)। ফের আফগানিস্তানে (Afghanistan Law) চালু হয়েছে প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা। এবার দুই মহিলা-সহ ১১ জনকে জনসমক্ষে চাবুক মারলো প্রশাসন। তালিবান সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, শুক্রবার আফগানিস্তানের বাদখশানের ফৈজাবাদের খেলার মাঠে ওই ১১ জন চাবুক মারা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ব্যভিচার। আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এনেছে।
তালিবান প্রশাসনের এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, উত্তর বাদাখশানের এক খেলার মাঠে ১১ জনের শাস্তি দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু মানুষ। ছিলেন তালিবান প্রশাসক, শিক্ষাবিদ থেকে বিশিষ্ট জনরা। দক্ষিণ হেলমন্দ প্রদেশের গ্রিশক জেলার এই ঘটনায় স্পষ্টতই আতঙ্ক। সাম্প্রতিককালে গোটা আফগানিস্তানে তালিবানদের নির্দেশে ২৫০ জনকে চাবুক মারা হয়েছে বিভিন্ন অভিযোগে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, বিয়ের আগে সহবাস আফগানিস্তানে নিষিদ্ধ করেছে তালিবান সরকার। জানিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের আচরণ সহ্য করা হবে না। সম্প্রতি পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার তিন যুবককে ‘ব্যভিচার’-এর অভিযোগে মোট ৩৯ বার চাবুক মারা হয়েছে। নানগারহার প্রদেশের তালিবান প্রশাসকের তরফে জানানো হয়েছে, এই তিন যুবক একটি বাড়িতে থাকেন।
মঙ্গলবার কান্দাহারের (Kandahar) আহমদ শাহি স্টেডিয়ামে ডাকাতির অভিযোগে জনসমক্ষে ৪ আফগান নাগরিকের (Afghanisthan) হাত কেটে দেয় তালিবানিরা। এই অভিযোগে প্রথমে নয় জনকে বেত্রাঘাত করে তালিবান (Taliban) পুলিস এবং তারপর ওদের মধ্যে চারজনের হাত কেটে দেওয়া হয়। এই ঘটনার সময় সমাজের নানা ক্ষেত্রের মানুষ ভিড় জমিয়েছিল আহমদ শাহি স্টেডিয়ামে। ছিলেন তালিবান প্রশাসনের কর্তা, ধর্মগুরু, বৃদ্ধজন এবং আমজনতা। সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ওই নয় জনকে ৩০-৩৫ বার বেত্রাঘাত করা হয়েছিল।
মানবাধিকার আইনজীবি এবং আফগান পুনর্বাসন এবং শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রীর প্রাক্তন নীতি উপদেষ্টা শবনম নাসিমি ফুটবল স্টেডিয়ামে বসে থাকা ওই নয়জনের ছবি ট্যুইট করে জানান, "এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন।" এর আগে ডিসেম্বরে তালিবানিরা হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত একজনকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে এটাই ছিল তাদের প্রথম দেওয়া প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড।
রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা এভাবে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত ও মৃত্যুদণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন। এই চাবুক মারা শাস্তি নিয়ে সমালোচনা সুর রাষ্ট্র সংঘের গলায়। অবিলম্বে সব ধরনের নারকীয় এবং অবমাননাকর শাস্তি বন্ধের নির্দেশ তালিবানকে দিয়েছে সংঘ।
আফগানিস্তানের ফের ফিরেছে তালিবানরাজ (Taliban Government)। প্রাথমিক ভাবে কিছুটা ছাড় দেওয়া হলে সময় যত গড়িয়েছে আফগান মহিলাদের (Afghan Woman) উপর তত বেড়েছে নিষেধাজ্ঞা। মহিলাদের খেলাধুলোয় অংশগ্রহণ থেকে পঠনপাঠন। নানাক্ষেত্রে এসেছে তালিবানি রক্তচক্ষু। ২০২২-এ আফগানিস্তানের সংস্কৃতিমন্ত্রী আহমেদুল্লা ওয়াশিক স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, 'যেকোনও খেলা (Sports), যাতে শরীর দেখা যায় তা মহিলাদের জন্য নিষিদ্ধ।' তবে কঠোর এই বিধিনিষেধের ফাঁক গলেও গোপন অনুশীলন জারি রাখেন আফগান জাতীয় দলের অনেক মহিলা ক্রীড়াবিদ।
কিন্তু সম্প্রতি তাঁরা অনেকেই ফোনে হুমকি পাচ্ছেন। অনেক মহিলা ক্রীড়াবিদের আশঙ্কা, তাঁরা তালিবান নিপীড়নের শিকার হতে পারেন। মহিলাদের হাত-পা এভাবে বেঁধে দেওয়ার উদ্দেশে তালিবানের যুক্তি, মহিলাদের জন্য খেলা জরুরি ব্যাপার নয়। কারণ খেলতে গিয়ে অনেক সময়ই তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ উন্মুক্ত হয়ে যায়, ইসলামে যা বারণ।
কয়েক মাস আগে আফগানিস্তান সরকার মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বেসরকারি সংস্থায় মহিলাদের কাজ করা, পার্ক এবং জিমে প্রবেশের ক্ষেত্রে রয়েছে একাধিক বিধিনিষেধ।
আফগানিস্তান (Afghanistan) এবং পাকিস্তান (Pakistan) সীমান্তে নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় নিহত পাকিস্তানের ৬ নাগরিক। এই গুলি চালনার ঘটনায় ১৭ জন গুরুতর আহত। বালুচিস্তানের (Balochistan) চমন জেলায় সীমান্তের ওপারে রবিবারের এই ঘটনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, এই হামলায় আফগান বাহিনীর তরফে কামান এবং মর্টার-সহ অন্যান্য ভারী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিরক্ষার জন্য পাকিস্তানের তরফেও পাল্টা হামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গুলিবর্ষণে ছয় পাকিস্তানি নাগরিক নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুলিস এলাকা ঘিরে রেখেছে। পাকিস্তান সরকার পরিস্থিতির ভয়াবহতা জানাতে কাবুলে আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
গুলি চালানোর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনী চারটি ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশ (আইএস-কে) জঙ্গিদের আফগান সীমান্তের কাছে আটকানোর এবং তাদের হত্যা করার মাত্র ২৪ ঘণ্টা পরে সীমান্তে রবিবারের এই ঘটনা ঘটে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। চমন সীমান্ত ক্রসিংটি 'ফ্রেন্ডশিপ গেট' নামেও পরিচিত। যা বালুচিস্তান প্রদেশকে আফগানিস্তানের কান্দাহারের সঙ্গে সংযুক্ত করে। গত মাসে একটি সশস্ত্র বাহিনী আফগান সীমান্তের পাশ দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করে এবং নিরাপত্তা সৈন্যদের উপর গুলি চালায়। একজন সৈন্য নিহত এবং অন্য দু'জন আহত হয়েছে ঘটনায়।
গোটা বিশ্বের মধ্যে আফগানিস্তান (Afghanistan) ও পাকিস্তান (Pakistan) এই দুটি দেশে পোলিও রোগের টিকাকরণ একেবারে কচ্ছপের গতিতে এগোচ্ছে। দুটি দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলা (Terrorist attack) এবং সেখানকার মানুষের অন্ধবিশ্বাসের জেরে সেখানে টিকাকরণ (Polio Vaccination) প্রায় অব্যাহত। এবার ফের জঙ্গি হামলার শিকার হল পাক স্বাস্থ্যকর্মীদের কনভয়। ঘটনাটি ঘটেছে খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে। এই ঘটনায় টিকাকর্মীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চার পুলিসকর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
গত এপ্রিল মাস থেকে পাকিস্তানে পোলিওর ১৪টি নতুন মামলা সামনে এসেছে। আর সব ক’টির উৎসস্থল হচ্ছে পাক-আফগান সীমান্তের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে দ্রুত টিকাকরণ চালাচ্ছে পাক প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে বারবার তা ধাক্কা খাচ্ছে এই ধরনের নৃশংস হামলার ঘটনায়।
শুক্রবার ওই প্রদেশের গুল ইমান অঞ্চলে আচমকাই হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। যে পুলিস মোবাইল ভ্যানটি দরজায় দরজায় গিয়ে টিকা দিচ্ছিল, তার উপরে হামলা চালায় তারা। এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে পুলিসের উপরে। গুলিবিদ্ধ হয়ে চার পুলিসকর্মীর মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। আহত দুই। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে পুলিস এলাকায় তল্লাশি শুরু করে। দীর্ঘ সময় ধরে হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিসের গুলির লড়াই চলার কথা জানা গিয়েছে।
এদিকে, এখনও পর্যন্ত এই হামলার দায় কোনও জঙ্গি সংগঠন স্বীকার করেনি। তবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মতে, হামলার নেপথ্যে হাত তেহরিক-ই-তালিবানের হাত থাকতে পারে। কারণ, পাকিস্তানের জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে এর আগে টিকাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে তারা। জঙ্গি গোষ্ঠীটি মনে করে, পোলিও টিকাকরণ ‘ইসলামে নিষিদ্ধ’। তাই প্রশাসনের শত চেষ্টা সত্ত্বেও জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে পোলিও নির্মূল করা একটি বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা বিশ্বকে এই দুই দেশের কারণেই এখনও পোলিওমুক্ত করা যায়নি।