
দুবাই (Dubai) যাওয়ার পথে বাঁধা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) পত্নী (Wife) রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সোমবার সকালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় দুবাই যাওয়ার জন্য কলকাতা বিমানবন্দরে এলে তাকে বাধা দেয় অভিবাসন দফতর। সূত্রের খবর আদালতের রক্ষাকবচ থাকা সত্ত্বেও এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পত্নীকে বাধা দেওয়া হয়। এর পাল্টা তৃণমূল সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলা করে সুপ্রিমকোর্টে যেতে পারেন।
সূত্রের খবর, ইডির একটি মামলায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের স্ত্রীর নামে লুক আউট নোটিশ জারি করে ইডি। সেজন্যই তাঁকে বিমানবন্দরে আজকে দেওয়া হয় বলে খবর। এদিন সকালে দুবাই যাওয়ার জন্য অভিষ্যেক বন্দোপাধ্যায়য়ের স্ত্রী বিমানবন্দরে গেলে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়। এরপর কিছুক্ষন অপেক্ষা করে রুচিরা বিমানবন্দর ছেড়ে বেরিয়ে আসে।
অভিষেক বন্দোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)'নবজোয়ার' কর্মসুচীর আগেই খানাকুলে (Khanakul) সতর্ক বার্তার পোস্টার (Poster)। শনিবার এই ঘটনাটি ঘটে। পুলিস জানিয়েছে, খানাকুল থানার অন্তর্গত একটি ফুটবল মাঠে এই পোস্টারটি লাগানো হয়েছে। পোষ্টারে সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে, আগামী ৬ই জুন কয়লা, বালি, চাকরি চোর আসছে তাই ও দিন ভাইপো থেকে সতর্ক থাকুন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে শাসক দলের পক্ষ থেকে।
সূত্রের খবর, শনিবার সকালে খানাকুল ফুটবল মাঠ সংলগ্ন এলাকার বেশকয়েকটি জায়গায় পোষ্টারগুলি দেখতে পান স্থানীয়রা। যদিও পোষ্টারগুলি কাদের পক্ষ থেকে লাগানো হয়েছে এখনও তা স্পষ্ট নয়। তবে এই কর্মকাণ্ডের পিছনে বিজেপির চক্রান্ত আছে বলে দাবি, তৃণমুলের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপির সদস্যরা।
উল্লেক্ষ্য, আগামী মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জী 'নবজোয়ার' কর্মসূচিতে আসছেন আরামবাগে। হরিপাল থেকে শুরু করে মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার কর্মসূচি। খানাকুল মাঠেও থাকছে বিভিন্ন কর্মসূচি। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি জোরকদমে শুরু হয়েছে। দলের শীর্ষনেতা থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ পুলিসকর্তাদের কনভয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহকুমার বিভিন্ন এলাকা। এরই মাঝে তাঁদের নজর এড়িয়ে কে বা কারা এই পোষ্টার লাগাল তা নিয়ে খানাকুলজুড়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
অভিষেকের (Abhishek Banerjee) নবজোয়ারে ধাক্কা খেলেন রাজ্যের মন্ত্রী (Minister) অখিল গিরি (Akhil Giri)। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকে এই জনসংযোগ যাত্রায় রাজ্যের কারামন্ত্রীকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ নিরাপত্তরক্ষীদের বিরুদ্ধে। যার জেরে বুধবার কাঁথিতে সাময়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রাথমিকভাবে অখিল গিরিকে উত্তেজিত দেখালেও, পরে ঘটনার কথা অস্বীকার করেন তিনি। দাবি করেন কোনও গোলমাল হয়নি। ঘটনাস্থলে থাকা বাকি নিরাপত্তরক্ষীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিন দুপুরে অভিষেকের এই যাত্রা ঘিরে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায় শুভেন্দু অধিকারীর জেলায়। স্থানীয়দের দাবি এই ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হয় সাংসদে নিরাপত্তারক্ষীদের। এরমধ্যেই এই ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অভিষেক কাছাকাছি যেতে গিয়েই প্রাথমিক বাধা পান অখিল গিরি। তাঁকে ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলেই প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ করা হয়েছিল। যদিও পরে তা অস্বীকার করেন রাজ্যের কারামন্ত্রী।
বায়রন নিয়ে এবার উল্টো সুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) গলায়। বায়রন প্রসঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের স্পষ্ট দাবি, বায়রনের যোগদান নিয়ে আমি তেমন কিছু জানি না। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নবজোয়ার যাত্রায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস (Bayron Biswas)। মঙ্গলবার এই ব্যাপারে নিজের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে তিনি সরাসরি কিছু জানেন না। সবটাই তিনি খবরের কাগজ পড়ে জানতে পেরেছেন। এমনকী এই ব্যাপারে তাঁর দলের ব্লকের নেতারাই বলতে পারবেন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী।
এদিনই সাগরদিঘির বিধায়কের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে রাজ্য। সম্প্রতি তাঁর নিরাপত্তা চেয়ে সরকারের বিরুদ্ধেই আদালতে গিয়েছিলেন বায়রন। কারণ, তাঁর আশঙ্কা মুর্শিদাবার ফিরলেই তাঁর এবং তাঁর পরিবারের উপর হামলা হতে পারে। তাই সোমবার তৃণমূলে যোগ দিয়েই রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন বায়রন। সোমবার তিনি দাবি করেছিলেন, শুরু থেকেই তৃণমূল করতেন। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় তাঁর মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
এদিকে মঙ্গলবার সাগরদিঘিতে বায়রনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন কংগ্রেস কর্মীরা। বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। এমনকী তৃণমূলকে কটাক্ষ করে টুইট করেন দিল্লির কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশও।
ঝাড়গ্রামে অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কনভয়ে 'হামলা'র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ওই ঘটনার তদন্তভার নিল সিআইডি (CID)৷ ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার (SP) অরিজিৎ সিনহা এ কথা জানিয়েছেন। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ধৃতদের মধ্যে আছেন কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি রাজেশ মাহাতো এবং আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো। মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর। রবিবার রাতে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ নিশিকান্ত মাহাতো নামে আরও একজনকে আটক করেছে।
শুক্রবার ঝাড়গ্রামে নবজোয়ার যাত্রা করেন অভিষেক। সেখান থেকে লোধাশুলি হয়ে শালবনি যাওয়ার পথে তাঁর কনভয় আক্রান্ত হয়। অল্পবিস্তর আহত হন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। এই ঘটনায় অভিষেক এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুড়মি সমাজকে ক্লিনচিট দিলেও শুরু হয়েছে ধরপাকড়।
গত কয়েক মাস ধরে টানা আন্দোলন করছেন কুড়মিরা৷ তাঁদের দাবিদাওয়ার মধ্যে রয়েছে কুড়মালি ভাষার স্বীকৃতি, জনজাতির তালিকাভুক্তি৷ সারা ভারত কুড়মি সমন্বয় সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি অশোক মাহাতো জানিয়েছেন, তাঁদের আন্দোলন চলবে।
মণি ভট্টাচার্য: শুক্রবার রাতে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda), ও অভিষেকের (Abhishek Banerjee) কনভয়ে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র রাজনৈতিক তরজা ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। পুলিস জানিয়েছে এ ঘটনায় খুনের চেষ্টা সহ আরও বেশ কিছু জামিন অযোগ্য ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে, তদন্তে নেমে এখনও ৪ কুড়মি নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। শুক্রবার রাতে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুর করা হয় ঝাড়গ্রাম জেলার গড় শালবনিতে। ভাঙচুর করা হয় আরও ভিআইপির গাড়ি। কুড়মিদের নিয়ে অস্বস্তিতেই ছিল তৃণমূল, এর আগে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এলাকায় কুড়মিদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। এই আবহেই মন্ত্রীর কনভয়ে হামলা, গাড়ি ভাঙচুরে কুড়মি সহ বিজেপিকে দুষেছেন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুড়মি নেতৃত্ব ও বিজেপি জেলা নেতৃত্ব।
এ বিষয়ে তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির জেলা সভাপতি তুফান মাহাতো সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'কোনও ভাবেই এই আন্দোলনের সঙ্গে বিজেপি যুক্ত নয়, মন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুরে বিজেপিকে দুষে কোনও লাভ নেই, কুড়মি আন্দোলনে বিজেপির পার্টি অফিসে ঢিল পড়েছে, দিলীপ ঘোষের বাড়িও ভাঙচুর হয়েছে।'
যদিও শনিবার সকালে সিএন ডিজিটালের তরফে ঝাড়গ্রাম জেলা কুড়মি আন্দোলনের আহ্বায়ক সুদীপ মাহাতোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'এই অভিযোগ মিথ্যে। কুড়মিরা কোনও ভাবেই এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।' তিনি আরও বলেন, 'যখন শাসক দলের কনভয় থাকে তখন জেলার কর্মীরা ওনাদের রাস্তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে থাকে, এ দৃশ্য নতুন নয়। তবে এ ঘটনা কে করেছে সেটা ধরার দায় পুলিস প্রশাসনের। প্রশাসনের গাফিলতিতেই এমন ঘটনা।' পাশাপাশি ৪ জন কুড়মি আন্দোলনকারীদের গ্রেফতারি নিয়ে বলেন, 'যতক্ষণ অবধি তাঁরা দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন, ততক্ষন তাঁদের সঙ্গে আছি। পুলিসের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা হল এর ডে পুলিশকেই নিতে হবে।'
শনিবার এ বিষয়ে ওই জেলার পুলিস সুপার রাহুল সিনহা সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'পর্যাপ্ত পুলিস রাস্তায় ছিল। বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ হয়েছে, কোথাও কম কোথাও আবার বেশি পুলিস ছিল, গোটা রাস্তায় কোথায় কিভাবে পুলিসি নিরাপত্তা ছিল সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। এখনও ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।'
অভিষেক (Abhishek Banerjee) ও কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) বিতর্কে এবার ভোল বদল কুন্তলের। কুন্তলের দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত পরিচয়’ নেই তাঁর। সিবিআই (CBI) সূত্রে খবর, জেরায় এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা। গত শনিবার অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তার ৩ দিন পর বুধবার প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে কুন্তলকে জেরা করেছে সিবিআই। সেই জেরাতেই অভিষেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ না থাকার কথা কুন্তল জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
সিবিআইয়ের জেরাতে অভিষেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ না থাকার কথা কুন্তল জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। গত শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিষেকও দাবি করেছিলেন যে, তিনি কুন্তলকে চেনেন না।
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছে কুন্তল। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। জেলবন্দি থাকার সময় অভিষেকের নাম জড়িয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কুন্তল। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরেই কুন্তল দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পরে ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন বহিষ্কৃত ওই তৃণমূল নেতা। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি পাঠান হেস্টিংস থানাতে। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। বিচারপতি অমৃতা সিন্হাও সেই পর্যবেক্ষণে সম্মতি দেন।
মণি ভট্টাচার্য: 'বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিবে পরান।' তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) সিবিআইয়ের (CBI) জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে এমনই দাবি বিরোধীদের। শুক্রবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ফের বড় ধাক্কা খেলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জাস্টিস সিনহার ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের নির্দেশে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ দিয়ে জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় বহাল রাখেন জাস্টিস সিনহা। সঙ্গে জাস্টিস সিনহা ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেয় অভিষেক ও কুন্তল ঘোষকে। ওই মামলার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন জানায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। যদিও ওই আবেদনের শুনানিতে শুক্রবার সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট।
এরপরেই তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছেন বিরোধী দল বিজেপির একাংশ। বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি শুক্রবার সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিবে পরান। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের এখন ওই অবস্থা। উনি সিবিআইকে কেন এত ভয় পাচ্ছেন যে গ্রেফতার হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে স্থগিতাদেশ চাইতে হচ্ছে। পাশাপাশি বিজেপি উচ্চ নেতৃত্বের মত, উনি যে অপরাধী সেটা বুঝতেই পারছে, নাহলে গ্রেফতারির আশঙ্কা প্রকাশ করে সিবিআইয়ের থেকে রেহাই চায়।' যদিও এ প্রসঙ্গে এখনও কোনও মতামত পাওয়া যায়নি তৃণমূলের।
রমেশ নন্দী বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি মামলায়, কুন্তল ঘোষের চিঠিতে অভিষেকের নাম থাকায় তাঁকে ডেকে প্রায় সাড়ে ৯ ঘটনা জিজ্ঞাসাবাদ চালায় সিবিআই। পাশাপাশি ওই ঘটনায় কুন্তলকেও হেফাজতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। যদিও জেরা সেরে বেরিয়ে এসে অভিষেকের নিশানা ছিল বিজেপিরই দিকে। তিনি আঙ্গুল তোলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দিকেও। যদিও এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ই জুলাই। আপাতত ১০ই জুলাই অবধি সিবিআই অভিষেককে জেরা করতে পারবে।
মালদহের (Maldah) পর এবার পশ্চিম মেদিনীপুর (West Medinipore)। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নবজোয়ায় যাত্রায় যোগ দেবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার শালবনিতে পৌঁচ্ছবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রা। সূত্রের খবর, শনিবার মেদিনীপুর সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এগরা হয়ে তিনি সম্ভবত শালবনি যাবেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির দাবি, শনিবার আসছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আগেই ঠিক ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকূল গ্রামে যাবেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু তা দফায় দফায় বাতিল হয়েছে। কিন্তু এই শনিবার ওই গ্রামে তিনি যাবেন। দেখা করবেন দুর্গতদের সঙ্গে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ভানু বাগের স্ত্রীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, ওই গ্রাম থেকেই তিনি শালবনি যাবেন। এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রায় যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। একইমঞ্চে তাঁর বক্তব্য রাখার কথাও রয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তলকে জেরা করেছে সিবিআই। তারপরেই অভিষেক এবং কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ইঙ্গিত মিলেছে। সিবিআই সূত্রে খবর, অভিষেককে জড়িয়ে কুন্তলের চিঠি এবং কুন্তলকে চেনেন না বলে অভিষেকের দাবির ব্যাপারে সত্য জানতেই দু'জনকে মুখোমুখি বসানো হতে পারে।
কুন্তলের বুধবারের বয়ান খতিয়ে দেখে তাঁকে আবার হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কুন্তলকে হেফাজতে পেলে ফের ডাকা হতে পারে অভিষেককে। অভিষেককে জেরা করার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি।
শনিবার অভিষেককে প্রায় সাড়ে ন'ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। এর আগে গত ৩১ মার্চ আলিপুরের বিশেষ আদালতের বিচারক এবং কলকাতা পুলিসের হেস্টিংস থানায় চিঠি দিয়ে কুন্তল দাবি করেছিলেন, সিবিআই এবং ইডি তাঁকে চাপ দিয়ে অভিষেকের নাম বলিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিষককে। কুন্তল ছাড়াও তৃণমূলের যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে।
পূর্বসূচি অনুযায়ী আজ অর্থাৎ সোমবার থেকে ফের 'নবজোয়ার' (Nabajoar) যাত্রা শুরু করবেন তৃণমূলের (TMC) সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সিবিআইয়ের তলবে হাজিরা দিতে বাঁকুড়া থেকে কলকাতা আসেন তিনি। সিবিআইয়ের অফিসে হাজিরা দেওয়ার পর অভিষেককে যে আরও উৎফুল্ল দেখিয়েছে সেটা গোটা রাজ্যই দেখেছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের দাবি সিবিআইয়ের হাজিরার পর অভিষেকের ও তৃণমূলের পালে আরও হাওয়া লাগবে। পাশাপাশি তৃণমূলের সিংহভাগ নেতৃত্বের অবশ্য দাবি 'নবজোয়ার' সফলই ছিল, এই ঘটনার পর আরও বৃহৎ চেহারা নেবে এই 'নবজোয়ার।'
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ চপারে ইন্দাসে পৌঁছবেন অভিষেক। প্রথমে সেখানে বজ্রপাতে মৃত এবং আহত তৃণমূল কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর জয়পুর এবং বিষ্ণুপুরে কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। তার আগে বিষ্ণুপুরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। ইন্দাসের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন খোদ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের দাবি, সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচিতে জনপ্লাবন হবে।
শুক্রবার দুপুরে সিবিআইয়ের তলব পেয়ে, রাতে বাঁকুড়া থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন রবিবার হাজিরা দিয়ে ফের সোমবার থেকে নবজোয়ার যাত্রা শুরু হবে। শনিবার রাতে সিবিআইয়ের এই তলব প্রসঙ্গে বিজেপিকে মূলত টার্গেট করেন অভিষেক। জেরা শেষে বেরিয়ে অভিষেক স্পষ্ট বলেন, 'নবজোয়ার যাত্রা দেখে বিজেপি সহ্য করতে পারছে না, তাই চক্রান্ত করে বিজেপি এই যাত্রাকে আটকানোর চেষ্টা করছে। পাশাপাশি তোপ দাগেন মোদি ও অমিত শাহকেও।' এই বিষয়ে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সিবিআইয়ের এই তলব প্রসঙ্গে বিজেপিকেই দুষছেন। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের দাবি মানতে নারাজ। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, 'চোর চুরি করেছে, সিবিআই তদন্ত করছে, এত ভয় পাওয়ার কী আছে।'
সাড়ে ৯ ঘণ্টার সিবিআই (CBI) জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য। শনিবার রাতে নিজ়াম প্যালেস থেকে বেরিয়ে এ কথাই বলতে শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। একহাত নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। তবে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনই ক্ষান্ত হতে চাইছে না সিবিআই। সূত্রের খবর, শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন করা হলেও এসএসসি দুর্নীতিতে উঠে আসা আরও বেশ কয়েকজনের নাম সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয় অভিষেকের কাছে। অভিষেকের পুরো বয়ানই রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। আগামীতে তাঁর সমস্ত কথাই পুনরায় খতিয়ে দেখা হবে।
সূত্রের খবর, চিঠি প্রসঙ্গে জেলে গিয়ে কুন্তলকে জেরা করবেন তদন্তকারীরা। মিলিয়ে দেখা হবে দু'জনের বয়ান। কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত কোথায়? এর জন্য ফিরে যেতে হবে মার্চ মাসে। গত ২৯ মার্চ কলকাতার শহিদ মিনারে তৃণমূলের যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখতে উঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'যবে থেকে সারদা হয়েছিল আক্রমণ ছিল আমার দিকে। মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন কাস্টডিতে ছিলেন। কী বলেছে জানেন এদের? অভিষেকের নাম নাও ছেড়ে দেব। সারদা থেকে শুরু করে নারদা। তারপর হল গরু, কয়লা, এসএসসি। আমার যদি কোথাও যোগসাজশ থাকে, প্রমাণ করতে পারেন আমি যুক্ত, আমার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগাতে হবে না। সারদা, নারদা, টেট, এসএসসি, কয়লা, গরু হোক এই শহিদ মিনারের মঞ্চে আমি মৃত্যুবরণ করব। কথা দিয়ে গেলাম।
ঠিক এর পরপরই আদালতে তোলার সময় তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত কুন্তল ঘোষ বলেছিলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চেষ্টা করছে। কে চেষ্টা করছে বলব না। চিঠি আকারে মহামান্য আদালতকে সবটা জানিয়েছি।' সেই চিঠি নিয়েই এত জলঘোলা। এই চিঠি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি-সিবিআই। নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরবর্তীতে সেই মামলা সরে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। তিনিও অভিষেকের আইনজীবীকে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলেছিলেন বিচারপতি সিনহা।
মনি ভট্টাচার্য: দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ, পাল্টা অভিষেকের (Abhishek Banerjee) হুঙ্কার, পাশাপাশি আইনি সাহায্য নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের (Central Agency) মোকাবিলার চেষ্টা। কুন্তলের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায়, সিবিআই বনাম অভিষেকের সিনেমায় অভিষেক কি নায়ক হয়ে গেল! যদিও দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টা পর নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে মমতার পথে হেঁটে বিজেপিকেই টার্গেট করেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
কিন্তু অভিষেক নায়ক কিভাবে! গত তিনবছর আগে ইডির জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বেরিয়ে অভিষেক একই রকম ভাবে বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন। শনিবারও ঠিক তেমনই লাগল অভিষেককে। অভিষেক নিজেই স্পষ্ট করলেন তাঁকে কেন ডাকা হয়েছিল। কুন্তল ঘোষের চিঠিতে তাঁর নাম থাকায় তাঁকে ডাকা হয়। তিনি বেরিয়েই বললেন,'যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁদেরও সময় নষ্ট, আর আমারও সময় নষ্ট।' কিন্তু কেবল কোনও অভিযুক্তের চিঠিতে তাঁর নাম পেলেই তাঁকে ডাকা হবে কেন! অভিষেক কিন্তু এখানেই বিঁধলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।
অভিষেককে মূলত রমেশ নন্দী বনাম পশ্চিমবঙ্গের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তলব করেছিল সিবিআই। যে মামলাটি গত বছর মে মাসে ৯ তারিখে দায়ের করা হয়। ওই মামলাটিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারা সহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৭,৭এ ও ৮ নম্বর ধারা রয়েছে। আইনজীবীদের মতে চাকরির প্রতারণা, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত দুর্নীতি হলেই এই ধারা গুলি প্রযোজ্য। এই মামলায় ১৬০ সিআরপিসি অনুযায়ী অভিষেককে সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডাকা হয়েছে। সিবিআইয়ের তলবে এক রাতেই হাজিরা দিয়েছেন অভিষেক। যদিও এই মামলায় অভিষেককে তলব করার মধ্যে তেমন কিছুই কিন্তু দেখছে না আইনজীবী মহল। বরং আইনজীবী মহল মনে করছেন এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতেই পারে, সেটা অতি ক্ষুদ্র বিষয়।
তবে প্রশ্ন উঠছে অভিষেক কেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ভিত্তিতে বারবার আদালতে ছুটছেন। সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। তাতে বারবার আদালতের দ্বারস্থ হবার কি দরকার ছিল? যদিও বিজেপি এটাকে ভয় হিসেবেই দাবি করেছেন। কিন্তু একজন সাধারন মানুষ হিসেবে অভিষেক কিন্তু বারবার বলেছে,'আমি এই মামলায় কোনও ভাবেই নেই, এই মামলার ত্রিসীমানায় নেই। তবে আমাকে কেন ডাকা হবে।' যদিও সিবিআইয়ের জেরা থেকে বেরিয়ে অভিষেক বিজেপিকে দুষে বলেন,'সারদায় সুদীপ্ত সেন তো অধীর, শুভেন্দু, সুজন বাবুদের নাম লিখেছিল চিঠিতে, তাঁদের ডাকা হয়েছে? আমাকে ডাকা হলো কারণ আমি বিজেপির কাছে বশ্যতা স্বীকার করি নি।' একদিকে অভিষেক সিবিআইকে তদন্তে সাহায্য করলেন, অন্যদিকে আইনি পথে জাস্টিস গাঙ্গুলি সহ সিবিআইকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করলেন। মোটের উপর সিবিআইয়ের জেরা সেরে বেরিয়ে এসে অভিষেক যে আপাতত নায়ক সেটা কিন্তু রাজনৈতিক মহলের দাবি।
প্রথমত, অভিষেক জেরা শেষে বেরিয়ে এসেই বলেছে, 'পারলে সিবিআই আমাকে অ্যারেস্ট করুক।' যেমন টা তিন বছর আগে বলেছিলেন। এই বক্তব্যটুকু বর্তমানে চলা সমস্ত বিতর্কে জল ঢালার জন্য যথেষ্ট। ঠিক তেমনই এই মন্তব্য অভিষেক অনুগামীদের বাড়তি অনেকটা অক্সিজেন দেবে সেটা সবারই জানা।
দ্বিতীয়ত, 'নবজোয়ার'। নবজোয়ার নিয়ে একটু হলেও অস্বস্তিতে ছিল তৃণমূল। কারণ সিংহভাগ জায়গাতেই অভিষেক বেরিয়ে যাওয়ার পর ব্যালট নিয়ে মারপিট, ও বিশৃঙ্খলা হয়েছে, যা অভিষেকের অপছন্দ ছিল। সেকারণে অভিষেক মেজাজও হারিয়েছেন বেশ কিছু বার। কিন্তু ঘটনাচক্রে অভিষেকের এই সিবিআই হাজিরা বাড়তি প্রাণ দেবে নবজোয়ারে। সেজন্যই বোধহয় বিজেপিকে দুষলেন এবং বললেন, 'নবজোয়ারের উন্মাদনা দেখেই, চক্রান্ত করে এই যাত্রা বন্ধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি।' ফলে এখানেই নবজোয়ারের বাড়তি অক্সিজেন জোগানের কাজ সেরে রাখলেন অভিষেক।
গোটা ঘটনার ফলশ্রুতি হিসেবে শনিবার রাতে অভিষেকের হুঙ্কার যে গরুপাচার, কয়লাপাচার, শিক্ষা দুর্নীতিতে অস্বস্তিতে থাকা তৃণমূলকে অনেকটা পুনর্জীবিত করবে সেটা যেমন ঠিক। তেমনই সিবিআই, জাস্টিস গাঙ্গুলি, জাস্টিস সিনহা ও বিরোধীদের প্লটে আপাতত অভিষেক যে নায়ক সেটা কিন্তু স্পষ্ট।
সকাল থেকেই কিন্তু অভিষেককে (Abhishek Banerjee) চাঙ্গাই লেগেছে। যদিও বেশি চাঙ্গা লাগলো সিবিআই (CBI) জেরা সেরে বেরিয়ে যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টার সিবিআই জেরা সেরে বেরিয়ে তুলোধনা করলেন বিজেপিকে (BJP)। নিশানায় থাকলেন বাম-কংগ্রেস ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। শুক্রবার কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার বেলা ১১ টায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমি দিল্লির কাছে হার মানিনি তাই আমার বিরুদ্ধে এজেন্সি লাগানো হয়েছে। দিল্লির পোষা কুকুর হবো না, বাংলার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হয়ে থাকব।'
নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে এসে অভিষেক বিজেপিকে তীরে বিঁধলেন ও হাঁটলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়য়ের পথে, বললেন, 'বিজেপি নবজোয়ার যাত্রায় লোকের উন্মাদনা সহ্য করতে পারছে না, তাই এই নবজোয়ার যাত্রা বানচাল করার জন্য এত কিছু।' যেমনটা শুক্রবার মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেরার শেষে বেরিয়ে এসে প্রথমেই বললেন, 'যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাদের সময় নষ্ট। আর আমারও সময় নষ্ট।' একার্থে তিনি বুঝিয়ে দিলেন এই জিজ্ঞসাবাদের ফলাফল শূন্য। এমনকি মুখেও তিনি বললেন এই ফলাফলের কথা। বললেন, 'এই জেরার নির্যাস শুন্য। একটি অস্টডিম্ব বেরিয়েছে।'
মোটের উপর সিবিআইয়ের এই হাজিরার পর যে অভিষেকের নবজোয়ারে নতুন পাল এলো সেটা কিন্তু তিনি বুঝিয়েই দিলেন। শনিবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও তুলোধনা করতে ছাড়েন নি অভিষেক। অভিষেক সিবিআইকে টার্গেট করে বলেন, '৩ বছর আগে আমাকে ডেকেছিল, আমি আগে যা বলেছি তিন চার বছর পরে তাই-ই বলব। সিবিআই তো গরু পাচার, কয়লা পাচার, শিক্ষায় দুর্নীতির তদন্ত করছে ফলাফল কি?' তিনি আরও বলেন, 'সিবিআই তো জ্ঞানেশ্বরীর তদন্ত করছে, ১৫ বছর ধরে নোবেল চুরির তদন্ত করছে ফলাফল কি?' সব শেষে হুঙ্কারের সুরেই বললেন, 'ইডি-সিবিআই লাগবে না, অভিযোগ থাকলে তথ্য প্রমান আনুন অন্যদিকে ফাঁসির মঞ্চ তৈরী করুন।'
শনিবার অভিষেক মোদী ও অমিত শাহকেও ছাড়েন নি। নিজের দলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'তৃণমূল একমাত্র দল যে দলের মন্ত্রী থাকা কালীন গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বহিস্কার করেছে,আর চোর ও দুষ্কৃতীরা বিজেপির সম্পদ।' মোটের উপর গোটা ঘটনায় বাড়তি অক্সিজেন পাচ্ছে তৃণমূল সেটা কিছুটা স্পষ্ট শনির সন্ধ্যার পর। '
নিজাম প্যালেস (Nizam Place) থেকে বেরিয়ে হুঙ্কার অভিষেকের (Abhishek Banerjee)। প্রায় সাড়ে নয় ঘন্টা জিজ্ঞাসা বাদের পর নিজাম প্যালেস থেকে বার হলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই (CBI) সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রায় তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে তার থেকে বয়ান এবং পুরো জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও রেকর্ডিং হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রায় সাড়ে ৯ ঘন্টা পর নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে অভিষেক হুঙ্কার দেন। এবং গোটা প্রক্রিয়ায় বিজেপিকে টার্গেট করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথেই হেটে তিনি বলেন, 'নবজোয়ার' যাত্রা সফল, এটা বিজেপির সহ্য হচ্ছে না। এটার জন্যই বিজেপির চক্রান্ত এটা। পাশাপাশি শনিবার রাতে তিনি সিবিআইকে টার্গেট করে আরও বলেন, 'পারলে সিবিআই আমাকে অ্যারেস্ট করুক।'