গার্ডেনরিচকাণ্ডে ঘা এখনও দগদগে রাজ্যবাসীর মনে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হওয়া বেশ কিছু ব্যক্তি। গরিবদের মাথার ছাদের ওপর বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও আসছে মৃত্যুর খবর। মঙ্গলবার ফের মৃত্যুর খবর এল গার্ডেনরিচকাণ্ডে আহত এক যুবকের। এসএসকেএম হাসপাতালে জখম অবস্থায় ভর্তি ছিলেন তিনজন। যাঁদের মধ্যে একজন বছর ২৩-এর মইনুল সর্দার। মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, এমনটাই হাসপাতাল সূত্রে খবর।
এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুসরাত জাহান এবং মহম্মদ সহিলউদ্দিন নামে আরও দুজন। অন্যদিকে গার্ডেনরিচ সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালেও ভর্তি রয়েছেন আরও ৬ জন।
প্রতিবাদী হলেই শাসক নেতার মুখে হারাবে মান? সন্দেশখালিতে নারীসম্ভ্রম লুঠের অভিযোগ উঠছে বারবার। পার্থ ভৌমিকের বড়বাজার থেকে মহিলা আনানোর মন্তব্যের পর এবার শওকত মোল্লা। কলকাতা থেকে ৫ হাজার, ১০ হাজারে মহিলা ভাড়া করা হচ্ছে। মহিলাদের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যে অভিযুক্ত ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। বিধায়কের মন্তব্যকে সমর্থন জানালেন মঞ্চে উপস্থিত আরেক নেতা।
ভাঙড়ের শানপুকুর অঞ্চলে একটি প্রস্তুতি সভা থেকে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন শওকত মোল্লা। সেই সভা থেকে তিনি আরও বলেন, 'আজ যে খবর প্রকাশ করা হচ্ছে, তার ৯০% মিথ্যা কথা, এটা আমি শপথ করে বলতে পারি। কেউ কেউ ঘোমটা দিয়ে কথা বলছে, কেউ কেউ সরাসরি কথা বলছে। পরবর্তীকালে দেখা যাচ্ছে এরা সিগারেট খাচ্ছে। এতদিন ওই এলাকায় এমন ঘটনা ঘটছে, কেউ ফোনে একটাও ছবি তোলেনি। পিছন থেকে বিজেপি সিপিআইএম উস্কানি দিচ্ছে।'
এরপরই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিজেপি নেতা বিকাশ সর্দার ও কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়।
অভিনব কায়দায় এটিএম থেকে টাকা তছরূপের দায়ে ২ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল ঠাকুরপুকুর থানার পুলিস। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বেহালার শিলপাড়ার ডায়মন্ড হারবার রোডের পাশে একটি ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা তোলার জন্য দুই ব্যক্তি সেখানে ঢুকেছিল। তবে বেশ কিছুক্ষণ ধরে তারা সেখানে থাকায় সিসি ক্যামেরায় বিষয়টি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
ওই এটিএমে কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। তড়িঘড়ি সেখানে অন্য ব্রাঞ্চ থেকে একজন নিরাপত্তারক্ষীকে পাঠানো হয়। নিরাপত্তারক্ষী পৌঁছে বাইরে থেকে এটিএম-এর শাটার নামিয়ে দেন। সেই সঙ্গে ঠাকুরপুকুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিস ঘটনাস্থলে এসে দুই ব্যক্তিকে হাতেনাতে পাকড়াও করে। পাশাপাশি, বেশকিছু নগদ অর্থও উদ্ধার করে পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, ধৃতরা এটিএম-এর যে অংশ থেকে টাকা বের হয়, সেখানে একটি টেপ লাগিয়ে বাইরে অপেক্ষা করত। গ্রাহকরা সেখান থেকে টাকা তুলতে এলেই ওই টেপে টাকা আটকে যেত। পরে গ্রাহকরা বেরিয়ে যেতেই ওই টাকা হাতিয়ে নিত অভিযুক্তরা। পুলিসের অনুমান, এভাবেই বেশকিছু এটিএম থেকে টাকা হাতিয়েছে ধৃতরা। ধৃত দুজনই বিহারের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। বুধবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিসের। ঘটনার তদন্তে নেমেছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিস।
রেশন বন্টন দুর্নীতির তদন্তে নেমে বাকিবুর ও বালুর সূত্র ধরে ইডির জালে ধরা পড়েছিল দাপুটে রাঘব বোয়াল বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। আর্থিক দুর্নীতি, বিদেশে মুদ্রা পাচার-সহ পরিবারের নামে একাধিক কোম্পানি এমনকি নিজের নামেও একাধিক FFMC কোম্পানি, সবেতেই যে দুর্নীতির কাণ্ডারি শঙ্কর, সেই তথ্যের সন্ধান মিলেছিল ইডির তল্লাশিতে। ইডির হাতে এসেছিল শঙ্করের ফরেন মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির খোঁজও। শঙ্কর ও তাঁর পুত্র শুভ আঢ্যের বিদেশি কোম্পানির হদিশও পেয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দামহল।
ইতিমধ্যেই, শুক্রবার নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হয়েছে রেশন বন্টন দুর্নীতিতে ধৃত শঙ্কর আঢ্য ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসকে। শনিবার ধৃত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর মামলা কলকাতার নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হয়। আলিপুর সংশোধনাগার থেকে ধৃত শঙ্কর আঢ্যকে আদালতে নিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বা বিশ্বজিৎ দাসকে চেনেন না, এমনই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন।
সাংবাদিক শঙ্কর আঢ্যকে প্রশ্ন করেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কালো টাকা বিশ্বজিৎ দাসের হাত ঘুরে আপনার কোম্পানিতে আসতো? শঙ্করের সাফ জবাব, 'চিনি না... আমি এদের কাউকেই চিনি না।'
এদিন ইডির বিশেষ আদালতে শঙ্কর আঢ্যের মামলা চলে ভারপ্রাপ্ত বিচারক শুভেন্দু সাহার অধীনে। শঙ্করের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী জাকির হুসেন এবং আইনজীবী শ্যামল ঘোষ। পাশাপাশি ইডির তরফে ছিলেন আইনজীবী ভাস্কর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, এদিন শঙ্কর আঢ্যর আইনজীবী, আদালতে সিজার লিস্ট এবং কেস ডাইরির আবেদন জানান। কোনও জামিনের আবেদন করা হয়নি শঙ্কর আঢ্যর আইনজীবীর তরফে। অন্যদিকে ইডির তরফে শঙ্কর আঢ্যর জেল হেফাজতের জন্য আবেদন করা হয়েছে আদালতে। তবে শনিবার আদালতে বিচারকের কাছে কাতর আবেদন ধৃত শঙ্কর আঢ্যর।
এখন গরিবের অন্ন নিয়ে ঠিক কত পরিমাণ দুর্নীতিতে মজেছিলেন শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকু? তা জানার অপেক্ষাতেই বঙ্গের ওয়াকিবহাল মহল।
শনিবার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ মিঠুন চক্রবর্তী। বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, নিউরোলজি, কার্ডিয়োলজি এবং গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজি বিভাগের চিকিত্সকদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল দল গঠন করা হয়েছে অভিনেতার চিকিৎসার জন্য। এই মেডিক্যাল দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন টলিউডের মহাগুরু।
জানা যাচ্ছে, অভিনেতা চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। ধীরে ধীরে কথাও বলছেন চিকিৎসকদের সাথে। হাসপাতাল সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, শনিবার রাতে পর্যাপ্ত ঘুমিয়েছেন অভিনেতা, তাই আপাতত বিপদমুক্ত মিঠুন, একথা বলাই যায়।
কার্যত, এদিন হাসপাতাল চত্বরে দেখা গেল বহু বিশিষ্ট জনের আসা যাওয়া। সকলের প্রিয় অভিনেতাকে দেখতে আসছেন তাঁর বহু শুভাকাঙ্খী। এদিন হাসপাতালে আসেন পরিচালক অতনু রায়চৌধুরী। জানান, ফুরফুরে মেজাজেই দেখলেন মিঠুন চক্রবর্তীকে।
হাসপাতালে মিঠুনকে দেখতে আসেন সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তীও। হাসপাতালে আসেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যও। তিনিও বললেন, উনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এমনকি, অনেক পুরোনো রাজনৈতিক গল্পেও যে তাঁরা কিছুক্ষণ মশগুল হয়েছিলেন, তাও জানান শমীক।
এছাড়াও হাসপাতালে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনি ভালো আছেন জেনেও, ওই যে বিপদে পাশে থাকার, দেখা দিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলে আসার টান- সেই টানেই মিঠুনকে দেখতে সুকান্ত মজুমদার আসেন হাসপাতালে। হাসপাতালে বেশ খোশ মেজাজে সুকান্তর সঙ্গে গল্পও করতে দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে।
সরকারি হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে গর্বের অন্ত নেই বর্তমান রাজ্য সরকারের। অথচ এদিকে ফের সরকারি হাসপাতালে অমানবিকতার নজির। অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে মাত্র ৪ মাসের অসুস্থ শিশুকে কোলে নিয়ে বাবা-মাকে বসে থাকতে হল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। শনিবার রাতের এমন ছবি উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ হাসপাতালের সামনের।
শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিল ৪ মাসের ছোট্ট শিশু। বাবা-মা নিয়ে যায় হেমতাবাদ হাসপাতালে। বিপদ বাড়ে শিশুকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে রেফার করা হলে। অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স। বাধ্য হয়ে কোলের শিশুকে নিয়ে বসে থাকতে হয় ঠাণ্ডায়।
সূত্রের খবর, হেমতাবাদ হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স ৫ টি। তার মধ্যে সচল ৩ টি। কেন ২ টি অ্যাম্বুল্যান্স চলে না? ৩ টি সচল অ্যাম্বুল্যান্সের পরিষেবাও অমিল কেন? তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি।
শহরের ১১ জায়গায় থাকা বোমা বেলা দেড়টা নাগাদ ফাটবে! মঙ্গলবারে এহেন হুমকি ই-মেল ঘিরে হুলূস্থূল-কাণ্ড মুম্বই পুলিসে। হুমকি ই-মেলে উল্লিখিত জায়গাগুলোর মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ দুটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখাও রয়েছে। যদিও তড়িঘড়ি ১১ জায়গায় পৌঁছে যায় মুম্বই পুলিস।
বোমা বিস্ফোরণের একটি হুমকি ই-মেল আর তা ঘিরেই হূলুস্থূল মুম্বইজুড়ে। মুম্বই পুলিস সূত্রে খবর, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ-সহ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে ই-মেলে। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের হাতে থাকা সেই ই-মেলে লেখা, 'আমরা মুম্বইয়ের ১১টি ভিন্ন জায়গায় বোমা পেতে রেখেছি। আরবিআই-সহ একাধিক বেসরকারি ব্যাঙ্ক বড়সড় দুর্নীতিতে মদত দিয়েছে। এই দুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছেন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন-সহ একাধিক ব্যাঙ্ক কর্তা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।' হুমকি মেলে আরও লেখা, 'আমরা দাবি করছি, আরবিআই গর্ভনর এবং অর্থমন্ত্রী অবিলম্বে পদত্যাগ করুক আর প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে দুর্নীতির খতিয়ান সামনে আনুক। এই দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক সরকার', এমন দাবিও করা সেই হুমকি মেলে।
মুম্বই পুলিস সূত্রে খবর, হুমকি মেলে লেখা ১১টি বোমা শহরের একাধিক জায়গায় রাখা। RBI, নিউ সেন্ট্রাল বিল্ডিং ফোর্ট মুম্বই, HDFC হাউস, চার্চগেট, মুম্বই আর ICICI ব্যাঙ্ক টাওয়ার, বিকেসিতে রাখা বোম। এই বোমাগুলি দুপুর দেড়টা নাগাদ ফাটবে, এমন হুমকির উল্লেখ ই-মেলে। এই ই-মেলের গুরুত্ব বিচার করে মুম্বই পুলিস উল্লিখিত জায়গাগুলোতে পৌঁছলেও কোনও বিস্ফোরক উদ্ধার হয়নি, তদন্তের স্বার্থে মামলা রুজুও হয়েছে, এমনটাই মুম্বই পুলিস সূত্রে খবর।
এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ে একের পর এক অভিযোগ রোগীদের। সেখানে রাজ্যের সাধারণ মানুষ ভর্তি হতে গেলে শিকার হচ্ছেন হয়রানির। অথচ শাসক দলের নেতৃত্বদের জন্য সবসময় দরজা খোলা এসএসকেএমে। প্রশ্নের মুখে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবারও এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠে আসে একই অভিযোগ। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে রোগী এমারজেন্সিতে রয়েছে কিডনি, লিভার,হার্টের সমস্যা নিয়ে। তবুও হাসপাতালের তরফে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রোগীর পরিবারের। জানা গিয়েছে, রোগীর নাম হাসিনা বিবি(৩৮)। রাজারহাট থানার অন্তগর্ত মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বিহারের বাসিন্দা এক শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ভর্তি না নিয়ে বাইরে অ্যাম্বুলেন্সেই ফেলে রাখা হয় দীর্ঘক্ষণ। কারণ হিসেবে বলা হয় হাসপাতালে নাকি বেড নেই। পরবর্তীতে অবশ্য CN-এর খবরের জেরে একপ্রকার বাধ্য হয়ে শিশুটিকে ভর্তি করে তার চিকিৎসা শুরু করে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি গত শনিবার বেডের জন্য টানা ১৮ ঘন্টা হয়রানির শিকার হয়ে, এই এসএসকেএম-এর সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন, জগৎবল্লভপুরের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী আখলিমা বেগম। রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল বলা হয় এই এসএসকেএম-কে।
এই এসএসকেএম-এ ভর্তি রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। ভর্তি রয়েছেন মদন মিত্রও। রীতিমত এসএসকেএম-এর কার্ডিওলজি বিভাগে, শিশুর বেড দখল করে রয়েছেন 'ভদ্র' কাকু। ইডির হাত থেকে বাঁচতে এসএসকেএমের নিরাপদ আশ্রয়কেই বেছে নিয়েছেন তিনি। তাই বারংবার সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য ইডি, সিবিআইয়ের তরফে আবেদন জানানো হলেও, এসএসকেএমের দৌলতে তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছে না তারা।
আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি শুধুমাত্র রাজ্যের শাসকদলকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই রয়েছে, রাজ্যের প্রথম সারির এই হাসপাতাল? শাসকদলের নেতৃত্বরা সহজে বেড পেয়ে গেলেও, কেন সাধারণ মানুষকে এসএসকেএমে ভর্তি হতে গেলে, বারংবার হয়রানির শিকার হতে হবে? প্রাণের দাম কি শুধুই শাসকদলের নেতৃত্বদের? কেন বেডের অভাবে এসএসকেএমে ভর্তি হতে পারবেন না সাধারণ মানুষ? কেনই বা বারংবার বেঘোরে প্রাণ যাবে তাঁদের? একাধিক অভিযোগের পরেও, এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মুখে কুলুপ কেন? কাদের অঙ্গুলি হেলনে চলছে এই এসএসকেএম? প্রশ্নগুলো কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
আবারও হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠেছে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ। মেয়েকে সুস্থ করার দাবিতে মন্ত্রীর পায়ে ধরে কাতর আবেদন রোগীর আত্মীয়র। রবিবার সাতসকালে মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটেছে এই ঘটনা।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্য়া ৭ টা নাগাদ মেদিনীপুরের কলগাং এলাকার বাসিন্দা রিঙ্কু রায়ের মেয়েকে অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর রাত ১১ টা নাগাদ কোন কিছু পরীক্ষা না করিয়ে সোজা তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করা হয় বলে অভিযোগ।
আজ অর্থাৎ শনিবার সকালে আরও একটি অপারেশন করা হয় বলে অভিযোগ বাড়ির লোকের। আর তারপরে এই রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই রোগী। তারপরে তাকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় আইসিইউতে। এদিন ভোরবেলায় ওই রোগীর বাড়ির লোককে জানানো হয় মেয়ের অবস্থা খারাপ। এই কথা শোনা মাত্রই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর বাড়ির লোক।
অন্য়দিকে বিশেষ কাজে মন্ত্রী বীরবাহা হাসদা এসেছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালে। মন্ত্রীকে দেখা মাত্রই তাঁর কাছে আবেদন জানালেন ওই অসুস্থ মেয়েটির বাড়ির লোক। ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালে যে আউটপোস্ট রয়েছে সেখানে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ওই অসুস্থ মেয়েটির বাড়ির লোকজন।
এসএসকেএম-এর কার্ডিওলজি বিভাগে শিশুদের জন্য বরাদ্দ বেডে এই মুহূর্তে ভর্তি রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। আর এই কার্ডিওলজি বিভাগের বাইরের চত্বরে নজর রাখলে দেখা যাবে ২৭ বছরে এক যুবতী গলায় দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সার ও চোখে জল নিয়ে চেয়ে রয়েছেন পথ চলতি মানুষের দিকে। যুবতীর নাম ত্রিলোচনা। তিনি মুর্শিদাবাদ থেকে এসে ২৭ দিন ধরে হাসপাতাল চত্বরে অস্থায়ী ঠিকানা তৈরি করে চিকিৎসা চালাচ্ছেন নিজের। মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল এ রোগের চিকিৎসা এখানে করা সম্ভব নয়। তাই কলকাতায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।
এসএসকেএম হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পেয়েছেন ত্রিলোচনা, গলায় অস্ত্রপচারও করা হয়েছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই দীর্ঘ চিকিৎসা চালাতে গেলে তাঁকে শহর কলকাতার কোথাও থাকতে হবে। টাকার অভাবে বাড়ি ভাড়া করতে পারেননি। স্বামীকে সঙ্গে করে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগের বাইরের চত্বরে ঠিকানা হয়েছে ত্রিলোচনা ভাস্করের।
ত্রিলোচনা মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা। মুখে টিউমার হয়েছিল। সেই টিউমারের চিকিৎসা করতে যান মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। তারপর সেখান থেকে শিয়ালদহের আর আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ। সেখানে ভুল চিকিৎসার পর তিনি চলে আসেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই চলছে তাঁর চিকিৎসা। অনেকটা সুস্থ হয়েছেন কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। যতদিন না সুস্থ হয়ে উঠছেন ততদিন হয়ত তাঁকে এই এসএসকেএম হাসপাতালের বাইরে এভাবেই দিন কাটাতে হবে। আর কলকাতার হাসপাতালগুলি বাইরের চত্বরে এভাবেই দিন কাটাছেন হাজারও ত্রিলোচনা, শুধু অপেক্ষা করছেন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার।
বেশ কয়েকদিন ধরেই নতুন করে চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি চোখে ইনফেকশন জনিত সমস্যার কারণে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আজ, শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টা নাগাদ দমদম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন ডায়মন্ডর হারবারের তৃণমূল সাংসদ। তৃণমূল সূত্রে খবর, চোখের চিকিৎসা করতে হায়দরাবাদ উড়ে যাচ্ছেন অভিষেক।
উল্লেখ্য, এর আগেও হায়দরাবাদে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া পুজোর আগেও প্রায় একমাস আমেরিকায় থেকে চোখের চিকিৎসা করিয়েছেন। শনিবার কলকাতা বিমানবন্দরে গাড়ি থেকে নেমে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের দিকে হাত নেড়ে বিমানবন্দরে ভিতর ঢুকে যান তৃণমূল নেতা। তাঁর চোখে এখন কেমন রয়েছে, সেই নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি অভিষেক। কেমন আছেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে অভিষেক জানান তিনি ভাল আছেন।
ঘটনার ঘনঘটায় প্রায়ই গরম থাকে ভাঙড়ের হাওয়া। এবার ফের সেই দ্বন্দ্বই যেন ফের উস্কে দিল একটা কালিমাখা পোস্টার। কালিতে মাখামাখি বিধায়ক শওকত মোল্লার পোস্টার। বাসন্তী হাইওয়ের বালিগাদা মোড়ে এই ছবি দেখেই দিন শুরু হল ভাঙড়বাসীর। কিন্তু, কে বা কারা করল এই কাজ? যদিও সেই ব্যাপারে স্পিক টি নট এলাকাবাসী।
১৮ নভেম্বর থেকে ক্যানিংয়ে চলছে এমএলএ কাপ। সেই কারণেই বাসন্তী হাইওয়ের বালিদা মোড় সহ একাধিক জায়গায় তোরণ লাগানো হয়েছে। তার মধ্যে, সেই বালিদা মোড়েই দেখা গেল এই ঘটনা। কালি মাখা পোস্টার নিয়ে আইএসএফকে একহাত নিতে ছাড়ল না তৃণমূল। ছবি ছিঁড়ে লাভ নেই, ভাঙড়ের মনে মমতা, দাবি শওকতের।
পোস্টারে পড়ছে কালি। তাও কিনা আবার বিধায়কের ছবিতে। এমন কাণ্ড করল কারা সেই রহস্য তো আছেই। এই সুযোগে আবার দুই দলে যুদ্ধ বাধে নাকি সেটাই দেখার।
শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির এক সরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম লুঠের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার এক যুবক। জানা গিয়েছে, ধৃত যুবক সেনাবাহিনীর জওয়ান। অভিযুক্তের নাম রিশভ প্রধান। বাড়ি নকশালবাড়ির বাবুপাড়া এলাকায়। আজ, সোমবার ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে এটিএম লুঠের অভিযোগ দায়ের করা হয় নকশালবাড়ি থানায়। ধৃতকে আজ শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়।
অভিযোগ, শনিবার গভীর রাতে নকশালবাড়ি বাজারে অবস্থিত এক সরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে সাইরেন আওয়াজ শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নকশালবাড়ি থানার পুলিস। এটিএম মেশিন ভেঙে টাকা লুটের চেষ্টা করেন অভিযুক্ত ওই যুবক। অনুমান মেশিন থেকে টাকা বের করার পরিকল্পনা ছিল ধৃতের। ঘটনাস্থল থেকে পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। পাথর দিয়ে এটিএমের দরজায় আঘাত করা হয় বলে অনুমান। ধৃত যুবক রিশব প্রধান, গোর্খা রেজিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। ধৃত মদ্যপ অবস্থায় এই কাজ করেছেন বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্য সরকারের গাফিলতিতে ৬ মাস ধরে আটকে ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা।অভিযোগ, সরকারের কাছে সাহায্যের আর্জি জানালেও মেলেনি চিকিৎসার টাকা। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে বছর ২৬-এর কৌশিক বর্মন নামে এক যুবক ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। ধূপগুড়ির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। আর্থিক অবস্থা খুব বেশি সচ্ছল নয়। দরিদ্র পরিবারে মা বাবা ও দুই দাদাকে নিয়ে থাকতেন সে। কিন্তু এক বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত থাকায় আরও বিপদে পড়ে যায় ওই পরিবার। এরপর জলপাইগুড়িতে চিকিৎসা না হওয়ায়, ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান প্রতিবেশীরা। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা-পয়সা দিয়ে চিকিৎসা জন্য বেঙ্গালুরু পাঠায় ওই ক্যান্সার আক্রান্ত যুবককে।
এরপর জলপাইগুড়িতে ফিরে বেসরকারি হাসপাতালে শুরু হয় ওই ক্যান্সার আক্রান্ত যুবকের কেমো থেরাপি। অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ২ টো কেমোর সাহায্য পেলেও কিন্তু আরও কেমো দেওয়ার জন্য আবারও প্রতিবেশীদের কাছে টাকা চাইতে হয় ওই পরিবারকে। ক্যান্সার আক্রান্ত হবার পর থেকে চিকিৎসার জন্য প্রায় ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এরপর হাসপাতাল থেকে জানানো হয় ফের অপারেশন করতে হবে ওই ক্যান্সার আক্রান্ত যুবককে।
পরিবারের অভিযোগ, প্রায় ছয় মাস আগে চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইতে মুখ্যমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ডের জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু আবেদন করার ছয় মাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সাহায্য পায়নি ওই পরিবার। যারফলে এখন পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ক্যান্সারে আক্রান্ত বছর ছাব্বিশের কৌশিক বর্মনের চিকিৎসা। কবে মুখ্যমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ডের টাকা তাঁরা পাবে এবং কবে অপারেশন হবে সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার।
মাছ চুরি করা নিয়ে অশান্তি। আর তার জেরে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানার গোতানের কামারহাটি গ্রামে।
জানা গিয়েছে ঘটনার সূত্রপাত সোমবার দুপুরে। মন্ত্রীর বাড়ির পুকুর থেকে মাছ চুরি করার অভিযোগ ওঠে আদিবাসী এক যুবকের বিরুদ্ধে। এদিকে তাঁকে পালটা মারধর করার অভিযোগও ওঠে ওই পুকুরের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে পালটা মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। বাড়ির কাচ, বারান্দা ও দরজা ভেঙে দেয় একদল জনতা।
সোমবার ওই আদিবাসী যুবককে মারধর করার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ভর্তি করা হয় স্থানীয় আরামবাগ হাসপাতালে। এরপর সোমবার রাতে গ্রামে বিক্ষোভ দেখান উত্তেজিত জনতা। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিলেও মঙ্গলবার ফের তাঁরা জড়ো হয়ে ভাঙচুর চালান। পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।