লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দিনই প্রাণ গেল এক সিপিআইএম কর্মীর। শুক্রবার নিজের দলের নির্বাচনী বুথ অফিসেই মৃত্য়ুর মুখে ঢলে পড়লেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে ধূপগুড়ি ব্লকের বিনয় শা মোড় এলাকায় ১৫/১২৪ নং বুথের বাইরে।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই দলীয় কর্মীর নাম প্রদীপ দাস(৫৮)। এদিন ভোট দেওয়ার উদ্দেশ্য়ে সিপিআইএমের অস্থায়ী ক্যাম্পে বসে ছিলেন তিনি। তখন আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালের মধ্য়েই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কর্মীরা। তবে কীভাবে মৃত্যু ঘটল তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিপিআইএম নেতারা জানিয়েছেন, দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মীর মৃত্যু ঘটেছে। যা অত্যন্ত শোকের।
সোমবার সাতসকালে প্রগতি ময়দান সংলগ্ন ধাপায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ভস্মীভূত হয়ে যায় হাসপাতালের বর্জ্য পদার্থ মজুত রাখা একটি গোডাউন ও তার ঠিক পাশের একটি প্লাস্টিক গোডাউন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পাঠানো হয় দমকলে। সঙ্গে সঙ্গে ৩টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। কিন্তু ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় কাজ করতে অসুবিধায় পড়েন দমকল কর্মীরা। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে আসল কারণ ঠিক কী ছিল তা স্পষ্ট নয় এখনও। ঘটনার আকস্মিকতায় আতঙ্কে গোটা এলাকা।
বাসিন্দাদের দাবি, ঘনজনবসতিপূর্ণ এলাকায় দাহ্যবস্তুর গোডাউন হওয়ায় বড় কোনও দুর্ঘটনা যেকোনও সময় ঘটতে পারে। সেই কারণেই গোডাউন মালিককে একাধিক বার আপত্তি জানিয়েছিলেন। তবে তাতে কেউ কর্ণপাত করেননি। এমনকি গোডাউন ভাড়া নিতে বারণ করা হয়েছিল। আরও অভিযোগ, এলাকাবাসীর অপত্তি থাকা সত্ত্বেও প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস ধরে এই গোডাউন ব্যবহার করেছে ওই গোডাউন মালিক। সোমবার অগ্নিকাণ্ডের পর গুদামের মালিক বা কর্মীদের কাউকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
হাতে গোনা আর কয়েকটা মাত্র দিন। তারপরেই শুরু হতে চলেছে দিল্লির কুরসি দখলের লড়াই। রবিবাসরীয় সকালে কলেজ স্কোয়ারে মর্নিং ওয়াক থেকে শুরু করে চায়ে পে চর্চার মাধ্যমে জনসংযোগ সারেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। চায়ের আড্ডায় যোগ দিয়ে বিজেপির দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগের কথাও শোনেন তিনি।
উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে মূলত গণতন্ত্রের সম্মানের লড়াই হতে চলেছে। এদিন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাম না করে আক্রমণ করেন তাপস রায়। সংসদে কোনওদিন উত্তর কলকাতার মানুষদের দাবিদাওয়ার কথা জানাননি সাংসদ, অভিযোগ বিজেপি প্রার্থীর।
কলেজ স্কোয়ারে প্রচার সেরে বেলেঘাটার সিআইটি রোডে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। এদিন হুড খোলা জিপে চড়ে নির্বাচনী প্রচার সারেন তিনি। উত্তর কলকাতায় জয় নিশ্চিত, জানান জয়ের বিষয় আত্মবিশ্বাসী তাপস।
এনআই-এর উপর হামলার ঘটনায় তৃণমূলকে নিশানা করেন তাপস রায়। এছাড়াও উত্তর কলকাতার একাধিক বেআইনি নির্মাণের বিষয়েও চিন্তাপ্রকাশ করেন তিনি।
প্রতিপক্ষ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কখনও দুর্নীতিগ্রস্ত তো কখনও সুবিধাবাদী বলে কটাক্ষ করেছেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। এর থেকেই স্পষ্ট যে লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। তবে শেষ হাসি কে হাসবে তা জানতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে রাজ্যবাসীকে।
লোকসভা আবহে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। গ্রীষ্মের দাবদাহকে উপেক্ষা করেই চলছে নির্বাচনী প্রচার। শুক্রবার সকাল সকাল প্রচার সারলেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। বেলেঘাটার লোহাপোল এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ সারেন তিনি। সেখানে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগের কথাও শোনেন তিনি।
উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে কোনও লড়াই-ই নেই। তিনিই জিতছেন এই কেন্দ্র থেকে, নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে জানালেন জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তাপস। এর আগেও একাধিকবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
প্রতিপক্ষ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কখনও দুর্নীতিগ্রস্ত তো কখনও সুবিধাবাদী বলে কটাক্ষ করেছেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। এর থেকেই স্পষ্ট যে লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। তবে শেষ হাসি কে হাসবে তা জানতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে রাজ্যবাসীকে।
প্রসূন গুপ্তঃ পশ্চিমবঙ্গের আদি শহরের অংশ সুতানটি, যাকে এখন উত্তর কলকাতা বলা হয়। একদিকে বেলগাছিয়া/ কাশিপুর থেকে সেই চৌরঙ্গী। এখানে স্কুল, কলেজে, মেডিকেল কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সব সুবিধাই আছে। স্বাধীনতা পূর্ব যুগে কত শত গল্প যে উত্তর কলকাতার বাবু সংস্কৃতি নিয়ে পাই তার বিবরণ বিখ্যাত সাহিত্যিকরা লিখে গিয়েছেন। উত্তর কলকাতায় চিরকাল কংগ্রেসের আধিপত্য ছিল যা এখন দখল নিয়েছে তৃণমূল। শিক্ষিত কলকাতার মানুষ নিজের নিজের জীবন নিয়েই থাকতে ভালোবাসে। দুর্নীতি বা কেলেঙ্কারি নিয়ে রকে সন্ধ্যার পর আসর গরম হলেও শেষ পর্যন্ত তারা ওই তৃণমূলকেই জিতিয়ে এসেছে। এবারে কি কঠিন লড়াই এই লোকসভায়?
আসুন দেখে নি করা বসবাস করে এই উত্তর কলকাতায়। প্রথমত এখানে বাঙালিদের ৮৫ শতাংশই 'ঘটি' বা এদেশীয়। মোহনবাগান সমর্থক। এছাড়া ২৫-৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু বা মুসলিমদের বাস। অবাঙালি হিন্দু ব্যবসায়ীদের ৬-৭% এখানেই বাস করে তথা চৌরঙ্গী অঞ্চলে বিভিন্ন ভাষাভাষীর বাস। ২৫/৩০ বছর ধরে এখানে প্রথমে কংগ্রেস পরে তৃণমূলের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। একটা সময়ে উত্তর কলকাতা দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। উত্তর পূর্ব এবং উত্তর পশ্চিম। উত্তর পূর্বে দাঁড়াতেন অজিত পাঁজা। অজিতবাবু আর ডিমিলিটেশন দেখে যেতে পারেন নি। এবারে একসময়ের ছাত্র পরিষদের সভাপতি এবং সদ্য তৃণমূলত্যাগী তাপস রায় এবারে এখানে বিজেপির প্রার্থী এবং কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য। প্রদীপবাবু যথেষ্ট বৃদ্ধ, এখন তেমন দৌড়ঝাঁপ করতে পারেন না কাজেই বলা যেতে পারে লড়াই সুদীপ ও তাপসের।
তাপস একপ্রকার সুদীপের উপর ক্ষোভে দল ছেড়েছেন। ব্যক্তি জনপ্রিয়তায় তিনি কমতি যান না। একরোখা সিপিএম বিরোধী লড়াকু নেতা। পক্ষান্তরে সুদীপবাবু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে থাকেন। তাঁর ইতিবাচক দিক দীর্ঘদিন সাংসদ থেকেছেন এবং অনেকেই বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের প্রিয় বিরোধী নেতা। খোদ প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের মুখ সুদীপবাবু কিন্তু লড়াই তো পছন্দের উপর চলবে না। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে সুদীপ পেয়েছিলেন মাত্র ৩৫.৯৪ % ভোট এবং জিতেছিলেন। পরের বার কিন্তু তিনিই ৪৯.১৮ % পেয়ে অনেকটাই শক্তি বৃদ্ধি করেছিলেন। এখন প্রশ্ন কে এগিয়ে? লড়াকু তাপস দাবি করেছেন তিনি সুদীপকে হারাবেন। কিন্তু আবেগ নির্ভর তাপসকে অনেক অঙ্ক পার করতে হবে যা যথার্থই কঠিন।
প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ, শক্তিস্বরূপা তকমা, রাতারাতি যেন সেলিব্রেটি রেখা পাত্র। মোদীর ফোনের পরদিনই সন্দেশখালিতে পা রেখা পাত্রর। গ্রামে খবর পৌঁছেছিল আগেই, রেখাকে দেখতে সন্দেশখালি ফেরিঘাটে ভিড় জমিয়েছিলেন কাতারে কাতারে মানুষ। পোস্টার বিরোধিতা অতীত, প্রথমদিনে রেখাকে জড়িয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসল সন্দেশখালি। আবেগে চোখে জল রেখার।
বিজেপি সূত্রের খবর, সন্দেশখালির আন্দোলন-প্রতিবাদের মুখ রেখা পাত্রকে প্রার্থী হিসেবে বেছেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। নদীপাড়ের পথ ধরেই এবার আরও বড় আন্দোলনের পথে এগোচ্ছেন রেখা। সন্দেশখালি পৌঁছে প্রণাম করলেন মাটিতে লুটিয়ে।
কোথাও আবির, কোথাও মালা, কোথাও ফুল। গ্রামের মেয়েকে বরণ করতে নাচ-গানে সামিল গোটা সন্দেশখালি। লোকসভা ভোটের ফলের পর আনন্দ হবে আরও, দাবি রেখার। রেখা পাত্রই বিজেপির অন্যতম 'মাস্টারস্ট্রোক' হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।
রেখা পাত্র। সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ। বর্তমানে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী। রেখার মেসেজ পেয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোন করলেন রেখাকে। 'শক্তি স্বরূপা' বলে সম্বোধন করে বলেন রেখার সাহসিকতার জন্যই সন্দেশখালির ত্রাস এখন গরাদের ওপারে।
সন্দেশখালির মা, বোনেদের পাশে থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান রেখা। রেখার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর সন্দেশখালির মানুষের কী প্রতিক্রিয়া তা রেখার কাছে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। রেখা জানান, সন্দেশখালিতে যে কয়েকজন তৃণমূলের সমর্থন করছিল, রেখা প্রার্থী হওয়ার পর তাঁঁরা বিরোধীতা করেছিলেন। তাঁরাও এখন মেনে নিয়েছেন। তাঁরা তাঁকে জানিয়েছেন, তৃণমূলের উস্কানিতেই তাঁরা এসব করেছেন। তাঁরা যা করেছেন, সে সবের জন্য তাঁরা ক্ষমাও চেয়েছেন।’
রেখা প্রধানমত্রীকে আরও জানিয়েছেন, কীভাবে ২০১১ সালের পর থেকে সন্দেশখালির মানুষ ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এবার যেন তারা নিরাপত্তার সঙ্গে ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেটা দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান রেখা। প্রধানমন্ত্রী রেখাকে আশ্বস্ত করে বলেন, রেখার কথা নিশ্চয় নির্বাচন কমিশনের কানে পৌঁছবে। সন্দেশখালির মানুষের পাশে থাকবে কমিশন, যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পারে।
রেখা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, সন্দেশখালির সকল মানুষের জন্য তিনি কাজ করতে চান। এমনকি যাঁরা বিরোধীতা করেছেন তাঁদের জন্যও। প্রধানমন্ত্রী এ কথা শোনার পর খুশি হন, রেখাকে বলেন, বিজেপি সঠিক প্রার্থী বাছাই করেছে। একদিন দেশ রেখার এই ভাবনার জন্য গর্বিত হবে।
রেখা বলেছেন, 'সন্দেশখালিতে মা-বোনেদের অত্যাচারের পাশাপাশি পুরুষদের উপরেও আক্রমণ হচ্ছে। মারধর করা হয়। কিন্তু তাঁরাও আমার ভাই। তাঁদের সুরক্ষার জন্যও আমি লড়াই করব।'
রাজনীতির অভিজ্ঞতা না থাকা রেখা, খেটে খাওয়া কষ্টে দিন কাটানো রেখা, সন্দেশখালির উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে, কন্যাসন্তানকে কোলে নিয়ে মিছিলে হাঁটা রেখা। তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠা রেখার আত্মবিশ্বাস মুগ্ধ করে প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস রেখা নির্বাচনে জয়লাভ করে দিল্লিতে পৌঁছবেই।
লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে বড় ধাক্কা। প্রায় ২৬ বছর পর তৃণমূল ছাড়লেন তাপস রায়। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এই বর্ষীয়ান সৈনিক। তীব্র অভিমানের থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। সোমবার সকালে বিধানসভায় স্পিকারের ঘরে গিয়ে সমস্ত পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তাপস রায়। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিলেন ইস্তফা পত্র। তাহলে কি এবার বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন? জল্পনা তুঙ্গে।
সোমবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযানে আসে। কিন্তু দল তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। তাঁর পরিবারের কাউকে ফোন করেনি। একই সঙ্গে আরও বিস্ফোরক উক্তি,'এত দুর্নীতি, তারপর সন্দেশখালি, এগুলো আমাকে তাড়না দিয়েছে। আমাকে বোঝাতে আসার জন্য কুণালকে শোকজ করেছেন সুব্রত বক্সী। ৫২ দিন হল মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ডাক আসেনি। তৃণমূলের অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের বাড়িতে ইডি গেলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। এমনকি ইডি অভিযানের পর শেখ শাহজাহানের কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় উল্লেখ করলেও তাঁর নামটুকুও বলেননি। এই ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত।'
উল্লেখ্য, ১২ জানুয়ারি ইডি অভিযান চালিয়েছিল তাপস রায়ের বাড়িতে। বাড়িতে ইডি হানার সময় তিনি একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সেই সময় প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, 'আমার বাড়িতে ইডি আসার পিছনে হাত সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।' এরপর বেশ কয়েকদিন কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া না গেলেও, রবিবার রাত থেকে তাঁর ইস্তফা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। সোমবার সকালেই সেই অনুমান সত্যি হয়।
তৃণমূল ছাড়লেন তাপস রায়? দলের উপর তীব্র অভিমান প্রকাশ করে দল থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক। সোমবার অথবা মঙ্গলবারই বিধানসভায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন এমনই জল্পনা উঠেছিল। ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টায় সোমবার সকলে তাঁর বাড়িতে গিয়েছেন তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু ও কুণাল ঘোষ।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযানে আসে। কিন্তু দল তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। তাঁর পরিবারের কাউকে ফোন করেনি। ক্ষোভ উগরে দিলেন তাপস রায়। তাপসের আরও বিস্ফোরক উক্তি,'এত দুর্নীতি, তারপর সন্দেশখালি, এগুলো আমাকে তাড়না দিয়েছে। আমাকে বোঝাতে আসার জন্য কুণালকে শোকজ করেছেন সুব্রত বক্সী। ৫২ দিন হল মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ডাক আসেনি। তৃণমূলের অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের বাড়িতে ইডি গেলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। এমনকি শেখ শাহজাহানকে টার্গেট করেছে বলে বিধনসভায় উল্লেখও করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে অন্য ছবি দেখা গিয়েছে।'
এরপরই সটান জায়গা ছেড়ে উঠে পড়েন তাপস রায়। সূত্র মারফত খবর, এই বর্ষীয়ান নেতা বেরিয়ে পড়েন বিধানসভার উদ্দেশ্যে। ইতিমধ্যে পৌঁছন বিধানসভায়।
কীভাবে জামিন পাওয়ার পরও কাউকে গ্রেফতার করা যায়? সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিআইএম নেতা নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করে রাজ্য পুলিসকে তীব্র ভর্ৎসনা বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের। গোটা ঘটনায় পুলিস সুপারের রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট।
শতাধিক নারীর অভিযোগ যার বিরুদ্ধে, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস গ্রেফতার করেছিল সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদকে। ১৭ দিন ধরে জেলে ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ যথেষ্ঠ বোকা বোকা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে নিরাপদকে। এভাবে কোনও নাগরিককে কি গ্রেফতার করা যায়? রাজ্যের আইনজীবী রুদ্রদীপ নন্দীর কাছে জানতে চান বিচারপতি।
নিরাপদের নামে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয় ৯ ফেব্রুয়ারি। তবে তাঁর নামে জেনারেল ডায়েরী করা হয় ১০ ফেব্রুয়ারি। এফআইআর-এর পর একই অভিযোগের ভিত্তিতে কীভাবে জেনারেল ডায়েরীহল? পুলিস তা নিল কীভাবে? এই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। এমনকি, যাঁরা নিরাপদকে অযাচিতভাবে গ্রেফতার করলেন, সেই পুলিস অফিসারদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কেন গ্রেফতারি নয়? এতগুলো দিন তাঁর জেলে থাকার দরুন ক্ষতিপূরণই বা দেবে কে? বিচারপতির এমন প্রশ্নে যে চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য এবং রাজ্য পুলিস, তা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই যখন সন্দেশখালির নারীরা রাস্তায় বেরিয়ে শিবু হাজরার গ্রেফতারির দাবি তুলেছিল, তখন অন্তরালে থেকেই শিবু হাজরা ১১১ জনের নামে এফআইআর দায়ের করেন থানায়। যে ১১১ জনের নামের মধ্যে প্রথম নাম ছিল এই নিরাপদ সর্দার। তখনই, পুলিস এক অভিযুক্তর অভিযোগের ভিত্তিতে অতিসক্রিয়তা দেখিয়ে গ্রেফতার করে নিরাপদকে। বিচারের বাণী শেষমেশ আলো দেখালো। রাজ্য পুলিসের একতরফা অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও বাড়ছে সন্দেশখালির, মত ওয়াকিবহাল মহলের।
রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ বাঁশদ্রোণীর ছেলের বাড়ি থেকে আটক হয়েছিলেন সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দার। মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন ধরে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের সন্ধান পায় বাঁশদ্রোণী থানার পুলিস। তাঁকে প্রায় ঘণ্টা পাঁচেক আটক করে রাখার পর বসিরহাট জেলা পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয় নিরাপদ সর্দারকে। বেলা আড়াইটের কিছু পর তাঁকে গ্রেফতার করে বসিরহাট জেলা পুলিস। তিনটের পর সন্দেশখালির উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয় সিপিএম নেতাকে। সেই সময় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিসের, ওঠে স্লোগানও। জানা গিয়েছে, সোমবার আদালতে তোলা হবে তাঁকে।
পুলিসের 'অতিসক্রিয়তা'কে কাঠগড়ায় তুলে ছুটির দিনের সকাল থেকেই উত্তেজনা বাঁশদ্রোনী থানা চত্বরে। থানার সামনে জমায়েত হয়ে স্লোগান-শাউটিং চালান সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। রবিবার থেকেই একনাগাড়ে রাজ্যের প্রতি থানার ঘেরাও করবে সিপিএম, স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। জঙ্গলরাজের অভিযোগের সরব তাঁরা। এদিকে কোনওরকম নথি না দেখিয়েই সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্যকে জোর করে থানায় তুলে আনে পুলিস। কার্যত এই অভিযোগে সরব ছিলেন ধৃত সিপিএম নেতার স্ত্রী দীপা সর্দার। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, আইপিসির একাধিক ধারায় গ্রেফতার সিপিএম নেতা। গ্রেফতারি দেখানো হয়েছে দুপুর ২টো বেজে ৫০ মিনিটে। কিন্তু প্রায় ৫ ঘণ্টা তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, সন্দেশখালির প্রভাবশালী শাসক নেতা শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শিবু হাজরার এফআইআর-এর সূত্রে গ্রেফতার নিরাপদ সর্দার। সন্দেশখালিতে জনরোষ আছড়ে পড়ার ঘটনায় এবং তৃণমূলে নেতার বাড়ি-পোলট্রি ফার্মে হামলা-কাণ্ডে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। আর এই এফআইআর-এর একদম এক নম্বরে নাম ধৃত সিপিএম নেতার নাম। ঘটনাচক্রে এই শিবু হাজরা এই মুহূর্তে অন্তরালে। তবে সন্দেশখালির জনতা শিবুর বিরোধিতায় সোচ্চার। শাসক নেতার অত্যাচারের প্রতিবাদে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সন্দেশখালি। শিবুর বাড়ি, পোলট্রি ফার্মে হামলাও হয়েছে। উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরার বিরুদ্ধে গুরুতর নারী নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। জনতার কাঠগড়ায় থাকা সেই শাসক নেতার অভিযোগের বিরুদ্ধে কীভাবে অতিসক্রিয় পুলিস, প্রশ্ন তুলছেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা।
সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার নিরাপদ সর্দার। ঘটনার দিন রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সিপিএম নেতা, দাবি সেলিমের। সাধারণ মানুষের জল-জমি দখল করেছেন শাসক নেতারা, মন্তব্য সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের। দলের নেতার গ্রেফতারির প্রতিবাদে আইনি পথে লড়াইয়ে ডাক দেন সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। পুলিসের আইন মেনে কাজ করা উচিত, মন্তব্য সিপিএম সাংসদের। বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, জমায়েত করা, অশান্তি তৈরি করা, লুটপাঠের ধারায় গ্রেফতার নিরাপদ, জানান বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
যিনি অভিযুক্ত, উল্টে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার সিপিএম-এর প্রাক্তন সাংসদ, কটাক্ষ সিপিএম-র। মূলত সন্দেশখালিতে শাসক-বিরোধী প্রতিবাদ দমনেই পুলিসমন্ত্রীর নির্দেশে এহেন কাজ করা হয়েছে, এভাবেই তৃণমূল সরকার এবং শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্ষৌভ উগড়ে দেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা।
সন্দেশখালিতে আছড়ে পড়েছে জনরোষ, প্রশাসনিক তরফে জারি ১৪৪ ধারা। আর আছড়ে পড়া জনরোষের পিছনে ইন্ধন সিপিএম নেতা তথা সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের। তিনি নাকি গ্রামবাসীদের উত্তেজিত হতে ইন্ধন জুগিয়েছেন। তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবু হাজরার এহেন অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার সকালে ছেলের বাড়ি থেকে নিরাপদ সর্দারকে গ্রেফতার করে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিস।
ঘটনাচক্রে সন্দেশখালির মানুষের কাঠগড়ায় দুই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরা। বকলমে এঁরা অন্তরালে থাকা অপর এক তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। জনরোষে শিবুর পোলট্রি ফার্ম আগুনে জ্বলেছে, বাড়িতে চলেছে ভাঙচুর। এবার জনতার কাঠগড়ায় থাকা সেই শিবু হাজরার দায়ের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে কলকাতা পুলিসের হাতে গ্রেফতার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক। আর এতেই তেড়েফুঁড়ে বাঁশদ্রোণী থানার সামনে জমায়েত থেকে স্লোগান-শাউটিং সিপিএম নেতৃত্ব থেকে কর্মী-সমর্থকদের। সুদুত্তর না পেলে চলবে থানার সামনে জমায়েত, স্লোগানিং, বলছে সিপিএম নেতৃত্ব। স্বাভাবিকভাবেই ছুটির সকালে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁশদ্রোণী থাকা এলাকায়।
যদিও বাঁশদ্রোণী থানার দাবি, বসিরহাট জেলা পুলিসকে সহযোগিতা করতে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন বিধায়ককে। বসিরহাট জেলা পুলিসের প্রতিনিধি এসে সিদ্ধান্ত নেবেন। সূত্রের খবর, টাওয়ার লোকেশন দেখেই ছেলের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় নিরাপদ সর্দারকে। উল্লেখ্য সন্দেশখালিকাণ্ডে মোট ১১১ জনের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছে, আর একদম একনম্বরে নাম প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের।
যদিও প্রাক্তন বিধায়কের দাবি, সন্দেশখালিতে জনতার বিক্ষোভের সময় তিনি এলাকাতেই ছিলেন না। নানা জায়গায় দলীয় কাজে ব্যস্ত ছিলেন নিরাপদবাবু। প্রাক্তন বিধায়কের স্ত্রীর মন্তব্য, পুলিস এসে নিরাপদবাবুকে থানায় নিয়ে যায়। সিএন-র কাছে প্রাক্তন বিধায়ককে ফাঁসানোর অভিযোগে সরব নিরাপদ সর্দারের স্ত্রী।
এদিকে প্রাক্তন বিধায়কের হয়ে সওয়াল করতে বাঁশদ্রোণী থানায় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। বাইরে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখান সিপিএম নেত্রী মধুজা সেন রায়, শতরূপ ঘোষ থেকে কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতৃত্ব। প্রত্যেকেই বাংলাজুড়ে জঙ্গলরাজের অভিযোগে তুলে সন্দেশখালিতে নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে সরব ছিলেন। মধুজা সেন রায়ের মন্তব্য, নিরাপদ সর্দারকে গ্রেফতার করে রাখলে গোটা রাজ্যে পথে নামবে সিপিএম। ক্ষমতা থাকলে পুলিস প্রশাসন আটকে দেখাক, এভাবেই চড়া সুর সিপিএম নেত্রীর। অপর এক সিপিএম নেতা তথা তরুণ মুখ শতরূপ ঘোষেরও সুর চড়া।
এবার পুলিসের জালে ইংরেজিতে এমএ পাশ চোর। এই অদ্ভুদ ঘটনায় হতবাক পুলিস কর্মীরাও। ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর শহরের বিধান নগর এলাকায়। ঘটনার তদন্তে নেমে সৌমাল্য চৌধুরী নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিস। বুধবার তাকে মেদিনীপুর কোর্টে তোলা হয়৷
জানা গিয়েছে, গত একমাস আগে মেদিনীপুরের বিধান নগর এলাকায় একটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই গত চারদিন আগে বাঁকুড়া থেকে সৌমাল্য চৌধুরী নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া অনেক সোনার গহনা। এ পর্যন্ত কমবেশি প্রায় দুই শতাধিক চুরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অভিযুক্ত সৌমাল্য। তবে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে একেবারে অবাক পুলিস।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও অভিযুক্ত ওই যুবক বিভিন্ন জেলায় একাধিক চুরি করেছে। এমনকি সে চুরির ঘটনা স্বীকারও করেছে। তবে এত শিক্ষিত হয়েও সৌমাল্য কেন চুরির পেশাকে বেছে নিয়েছে, তা নিয়ে ধন্ধে পুলিস।
চাকরির সুপারিশ পাওয়ার ২ বছর পরও মেলেনি নিয়োগ। ঘটনায় গাফিলতি স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সেক্রেটারি। ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অনুকম্পা জনিত নিয়োগের জন্য উমা প্রামানিক নামে এক প্রার্থীকে বাঁকুড়ার শালতোড়া গার্লস স্কুলে ক্লার্ক পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু তারপর প্রায় ২ বছর কেটে গেলেও তাকে নিয়োগ না দেওয়ার কারণে পর্ষদের সেক্রেটারির কাছে জবাব তলব করে কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না? সেই প্রশ্নের উত্তরে সোমবার নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন পর্ষদ সেক্রেটারি। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কর্মীদের গাফিলতির জন্য এই ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সেক্রেটারির পাঠানো ওই ক্ষমাপত্র গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি কোন ক্ষেত্রে কত শূন্য পদ আছে তা নির্ধারণের জন্য শিক্ষা দফতর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নিজেদের মধ্যে বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসু। ওই বৈঠকে যে তথ্য উঠে আসবে তা আদালতে জানাতে হবে। তারপরই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। আগামী ২২ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
দুর্নীতির জালে ইতিমধ্যে কালিমালিপ্ত গোটা বাংলা। নিয়োগে কারচুপিসহ একাধিক অরাজকতায় বেসামাল বঙ্গ রাজনীতি। আদালতে থরে থরে জমে দুর্নীতির মামলা। এই আবহে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্নের মুখে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা। আদালতের রায়ে আগামীদিনে দুর্নীতিমুক্ত বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি হয় কিনা এখন সেটাই দেখার।
রাজ্যে অন্যায় রুখতে গিয়ে ফের কলকাতায় আক্রান্ত পুলিস। সম্প্রতি আমরা দেখেছি দুর্নীতির তদন্তে নেমে মার খেতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। এবার এন্টালির ১৫৭ আনন্দপালিত রোডে মধ্যরাতে একটি আবাসনের ছাদে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে চলছিল জন্মদিন পালন। শব্দতাণ্ডব সহ্য করতে না পেরে লালাবাজারে অভিযোগ জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছয় এন্টালি থানার পুলিস আধিকারিক সহ বেশ কয়েকজন পুলিস কর্মী। সাউন্ডবক্স বন্ধ করতেই পুলিসের উপর চড়াও হন কয়েকজন মদ্যপ যুবক। বেধড়ক মারধর করা হয় এন্টালি থানার সার্জেন্ট ও এসআই সহ একাধিক পুলিস কর্মীকে। শনিবার মাঝরাতের এই ঘটনায় ইতিমধ্যে দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
ইতিমধ্যেই এন্টালি থানার আক্রান্ত সার্জেন্ট সায়ন্তন মিত্রের বক্তব্যের ভিত্তিতে দায়ের হয় অভিযোগ। শুরু হয় পুলিসি তদন্ত। গ্রেফতার করা হয় ২ অভিযুক্ত প্রভাত সরকার ও বাপি সরকার। তবে ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা বাকি অভিযুক্তরা। রবিবার ধৃতদের আদলতে পেশ করার পর নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া জারি রাখার সিদ্ধান্ত পুলিসের। কখনও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা তো কখনও আবার খোদ পুলিস আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় হতবাক বাংলা তা বলাইও বাহুল্য। এখন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে আগামীদিনে প্রশাসন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেটাই দেখার।