নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment corruption) মামলায় ফের ভুয়ো শিক্ষকের (Fake teacher) হদিশ। জানা গিয়েছে, কোচবিহারের শুভ মায়া সূর্য নারায়ণ হাই স্কুলের দুই শিক্ষক হলেন শ্বেতা সিং, লোকেশ ঝা। এই দুই জনের নাম বাতিল হওয়া ৯০২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার তালিকায় রয়েছে। স্কুল কতৃপক্ষ সূত্রে খবর, ওই দুই শিক্ষক একজন হিন্দি ভাষার ও অপরজন সংস্কৃত ভাষার শিক্ষক ছিলেন। পাশাপাশি সূত্রের খবর, ওই একই স্কুলে শিক্ষকতা করেন তৃণমূলের প্রভাবশালী শিক্ষক নেতা সুপ্রকাশ রায়। এ ঘটনা সামনে আসতেই গোটা কোচবিহার জেলায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে দাপুটে এই তৃণমূল নেতা তথা শিক্ষকের স্কুলে এমন ঘটনা ঘটল কিভাবে?
প্রসঙ্গত, ভুয়ো শিক্ষক তালিকায় দার্জিলিং জেলার ২২ জনের নাম থাকায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা সুপ্রকাশ রায়। তিনি জানান আগাগোড়াই তাঁরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছেন। এক্ষেত্রেও যদি ওই দুই শিক্ষক দোষী প্রমাণিত হন। তাহলে তাঁদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। তবে গত চার বছর ধরে সহকর্মী হিসাবে শিক্ষকতা করা কালীন তাঁদের ব্যবহারে কোনরকম অসঙ্গতি ধরা পড়েনি
শুক্রবার, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৯০২ জন শিক্ষকের নাম প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৬ সালে যারা একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে অর্থের বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগে উঠেছে। সেই তালিকায় বাগডোগরা শুভমায়া সূর্য নারায়ন হাই স্কুলের দুই শিক্ষকের নাম রয়েছে। যদিও কয়েকদিন ধরে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ওই দুই শিক্ষক স্কুলে আসেন নি। শনিবার ফোনে সংস্কৃত ভাষার শিক্ষক লোকেশ ঝা জানান, তার নাম এই তালিকায় থাকায় তিনি নিজেই আশ্চর্য হয়ে গেছেন। তিনি যে অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাননি তা তার ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ঘাটলেই পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওমকার সিং জানান ওই দুই শিক্ষকের বিষয়ে তিনি পরে জানতে পেরেছেন। তবে শিক্ষক হিসেবে তারা খুবই ভালো ছিলেন। দুর্নীতি মামলা ভুয়ো শিক্ষকের তালিকায় তাঁর স্কুলের নাম জড়ানোয় কিছুটা হলেও তিনি অস্বস্তিতে রয়েছেন বলে এদিন জানিয়েছেন।
সর্বসাকুল্যে বিদ্যালয়ে (school) সরকারি শিক্ষক মাত্র একজন। ছাত্র-ছাত্রীর (student) কথা ভেবে গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে একজন শিক্ষক (teacher) রেখেছেন বিদ্যালয়ে। একদিকে যখন শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, তখনই জুনিয়ার হাইস্কুলের এমনই চিত্র উঠে আসায় হুলুস্থুলু কাণ্ড শিক্ষা মহলে। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) সবয়ং-এর। বিদ্যালয়টি যেন একজন শিক্ষকেরই। শিক্ষার্থী প্রায় ৮০ জন বিদ্যালয়টি সরকারি তবুও নেই নজর। দিনে দিনে কমছে শিক্ষার্থী সংখ্যা। সবং ব্লকের মানিকড়া জুনিয়র হাইস্কুলে দীর্ঘদিন ধরে চলছে পাঠদান। এবার সেখানেও ভেঙে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। অভিভাবকরা হতাশায় রয়েছেন। ধীরে ধীরে ভেস্তে যাচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। গত ৮ মাসেও সাড়া পড়েনি কোনও কর্মকর্তার। এমনকী ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও পরিদর্শনে যাননি কোনও শিক্ষা কর্মকর্তা এমনই অভিযোগ। বর্তমানে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।
জানা গিয়েছে, এই স্কুলে আগে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্য অনেক বেশি থাকলেও শিক্ষকের অভাবে আর কেউ ভর্তি হচ্ছে না। তাহলে কি আস্তে আস্তে বন্ধের পথে এই স্কুল? চিন্তায় এলাকাবাসী থেকে বর্তমান ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবকরা। ২০২২ সালে ওই স্কুলের দায়িত্ব পান সন্দীপ পতি। প্রথম থেকে স্কুলে ছিলেন মোট ৪ জন শিক্ষক। কিন্তু উৎসশ্রী প্রকল্পের মধ্যে ৩ জন শিক্ষক অন্য স্কুলে চলে যাওয়ায় দায়িত্বভার পড়ে সন্দীপবাবুর উপর। এরপর থেকে একাকেই সামলাতে হয় স্কুলের সব দায়িত্ব। পড়ুয়ারা জানায়, স্কুলে শিক্ষকের অভাবে পড়াশুনোয় অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তারা চায় দ্রুত স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। কিছু অবিভাবকরা বর্তমান সরকারের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তের জন্য তাঁদের ছেলেমেয়ে পড়াশুনার ক্ষেত্রে ভীষণরকম সমস্যা হচ্ছে। তাঁরাও চান, দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ হোক এবং প্রতিষ্ঠান আরও এগিয়ে যাক।
গ্রামবাসীদের দাবি, ছাত্র-ছাত্রীর কথা ভেবে মাত্র আড়াই হাজার টাকায় একজন গেস্ট টিচার রাখা হয়েছে। কবে পাবে নতুন শিক্ষক নাকি প্রতিষ্ঠান বন্ধের দিকে যাবে, সেদিকেই তাকিয়ে এলাকার বাসিন্দা, অভিভাবক ও ছাত্র ছাত্রীরা।