Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্ত: আমাদের মাধ্যমে দিনের পর দিন ধূপগুড়ি নিয়ে প্রতিবেদন পেশ করেছিলাম। যুক্তি একটাই এই উপনির্বাচনের ফলে বোঝা যাবে যে তৃণমূল কি উত্তরবঙ্গে জমি তৈরি করতে পারছে অথবা বিজেপি কি তাদের আসন্ন লোকসভাকে কেন্দ্র করে তাদের জমি ধরে রাখতে সক্ষম হবে। লড়াইটিতে যদিও সিপিএম ছিল কিন্তু আমরা জানিয়েছিলাম যে তাদের লালদুর্গ আজ ইতিহাসের পাতায় চলে গিয়েছে।
ধূপগুড়ি নির্বাচনে তৃণমূল প্রায় সাড়ে চার হাজার ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে এই অঞ্চল দখল করলো। ২০১৬ ছাড়া কোনও বড় নির্বাচনে ধুপগুড়িতে জায়গা করতে অক্ষম ছিল তৃণমূল কিন্তু ব্যতিক্রম হলো এবারেই। খুবই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। কখনও বিজেপি এগিয়েছে তো পরক্ষনেই তৃণমূল তাদের টপকে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত অধরা ধূপগুড়ি তৃণমূলের দখলে আসলো।
এই জয়কে নিঃসন্দেহে ব্র্যান্ড অভিষেক বলা যেতেই পারে। ২০২১ এর বিধানসভার পরে যতগুলি ভোট হয়েছে, এক সাগরদিঘি ছাড়া প্রতি উপনির্বাচনে অভিষেক শেষ মুহূর্তে প্রচারে গিয়ে বাজিমাত করেছেন। অবশ্যই আজকেও মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় দলের মুখ কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতিতে যে অভিষেক দায়িত্ব সম্পন্ন করতে পারেন তার সাবেকি প্রমান ধূপগুড়ি। সাগরদিঘিতে অভিষেক প্রচারে যান নি কিন্তু কংগ্রেসের সিম্বলে জেতা বায়রন বিশ্বাসকে তৃণমূলে নিয়ে আসার কৃতিত্ব কিন্তু অভিষেকেরই।
প্রশ্ন এবারে এই ভোটের ফলাফলে বাংলার রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থান কি হবে? প্রথমত তৃণমূল সম্বন্ধে বলা যেতে পারে তাদের দুর্বল স্থান ডুয়ার্স /তরাই এ ওই একপেশে ভোট আর হবে না বরং বিজেপির বিকল্প হিসাবে তৃণমূলকেই বেছে নেবে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার কিংবা কোচবিহার। দ্বিতীয়ত বিজেপির আগামী দিনকে নিয়ে ভাবনা বাড়বে। সংগঠন ছাড়া শুধুই মিডিয়া বা মঞ্চের ভাষণে শক্তিবৃদ্ধি করা যায় না। কাজেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ইত্যাদি নিয়ে তাদের ভাবনা বাড়বে। সবশেষে কমিউনিস্টদের উত্থান এই উত্তরবঙ্গ থেকেই মূলত। আজ জামানত হারিয়ে তারা মহেঞ্জোদারো বা হরপ্পার সময়ের দিকেই পা বাড়ালো। সুষ্ঠ ভোটেও যে জয়লাভ হয় এই শিক্ষাও পেলো তৃণমূল।